প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণ – চতুর্থ অধ্যায়: শিল্পবিপ্লব, উপনিবেশবাদ, সাম্রাজ্যবাদ – Class 9 Itihas WBBSE Madhyamik

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণ

উগ্র ও অতৃপ্ত জাতীয়তাবাদ

বিংশ শতাব্দীর শুরুতে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে উগ্র এবং সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদী চিন্তাধারা বেড়ে ওঠে। প্রত্যেক জাতি নিজেদের শ্রেষ্ঠ এবং অন্য জাতিকে নিকৃষ্ট মনে করতে থাকে। রাশিয়া, ফ্রান্স, এবং জাপানসহ অন্যান্য দেশগুলিতেও এই ধরনের জাতীয়তাবাদ ছড়িয়ে পড়ে।

  • বলকান অঞ্চলের দেশগুলো, যেমন বুলগেরিয়া, রুমানিয়া, গ্রীস, এবং সার্বিয়া, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সন্তুষ্ট ছিল না।
  • বসনিয়া এবং হারজিগোভিনা অস্ট্রিয়ার সঙ্গে থাকলেও সার্বিয়ার সাথে যুক্ত হতে চেয়েছিল।
  • ফ্রান্স তাদের প্রাশিয়ার দখলে থাকা আলসাস এবং লোরেন অঞ্চলকে মুক্ত করার দাবি জানায়।
  • ইতালীয়রা ট্রিয়েস্টট্রেনটিনো অঞ্চল পেতে সংগ্রাম করে।
  • ডেনমার্কের অধিবাসীরা শ্লেসউইগ অঞ্চল পাওয়ার জন্য লড়াই শুরু করে।
  • আয়ারল্যান্ডের মানুষ ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামিল হয়।

ঔপনিবেশিক ও বাণিজ্যিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা

ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স সর্বপ্রথম শিল্পায়ন ঘটিয়ে এশিয়া এবং আফ্রিকায় উপনিবেশ বিস্তার করতে থাকে। পরবর্তীতে জার্মানি এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোও শিল্পায়নের পথে পা বাড়ায়।

  • শিল্পজাত পণ্যের বাজার দখলে রাখার উদ্দেশ্যে এই দেশগুলো নতুন উপনিবেশ অধিকারের প্রতিযোগিতায় নামে।
  • জার্মান সম্রাট দ্বিতীয় উইলিয়াম তাদের আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে বিশাল নৌবহর তৈরিতে উদ্যোগী হন।
  • এতে ইংল্যান্ডও প্রতিরক্ষার্থে বিপুল নৌশক্তি বাড়ানো শুরু করে।

সমরসজ্জা

শিল্প বিপ্লবের ফলে অস্ত্র এবং যুদ্ধাস্ত্র উৎপাদনে একটি বিরাট পরিবর্তন সাধিত হয়।

  • এই সময়ে প্রতি মিনিটে ২০ থেকে ৩০টি গুলি ছুড়তে পারে এমন বন্দুক আবিষ্কৃত হয়।
  • ১৯০০ সালে ফ্রান্স এবং ১৯০৬ সালে জার্মানি সাবমেরিন তৈরি করতে সমর্থ হয়।
  • এছাড়া গ্রেভ নট নামক এক ধরনের যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণ করা হয়।
  • ১৯০৬ সাল থেকে বিভিন্ন দেশের মধ্যে নৌবাহিনী গড়ার প্রতিযোগিতা তীব্র হয়ে ওঠে।

কাইজার উইলিয়ামের দায়িত্ব

জার্মানির সম্রাট কাইজার উইলিয়াম সাম্রাজ্যবাদী নীতি অবলম্বন করেন এবং পূর্বের শান্তিবাদী আদর্শ পরিত্যাগ করেন।

  • তিনি জার্মানির নৌবাহিনীর শক্তি বাড়ানোর জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
  • এছাড়া রাশিয়ার সাথে স্বাক্ষরিত রি-ইনসিওরেন্স চুক্তি বাতিল করে দেন।
    এই ধরনের পদক্ষেপের কারণে অন্যান্য দেশের সাথে জার্মানির বিরোধ ক্রমশ বেড়ে যেতে থাকে, যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিকা তৈরি করে।

পরস্পরবিরোধী শক্তিজোট

বিসমার্ক, ফ্রান্সকে বিচ্ছিন্ন রাখার রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করে জার্মানির ঐক্য সাধনের পর, তিনি দেশটিকে ‘পরিতৃপ্ত দেশ’ হিসেবে অভিহিত করেন।

  • তিনি অস্ট্রিয়া, ইতালি, এবং জার্মানির মধ্যে ত্রিশক্তি জোট গঠন করেন।
  • ১৯০৭ সালে ব্রিটেন, ফ্রান্স, এবং রাশিয়া ত্রিপল আঁতাত তৈরি করে।
    এটি ইউরোপকে দুটি বিরোধী শিবিরে বিভক্ত করে।
  • একপাশে জার্মানি, অস্ট্রিয়াইতালি, অপরপাশে ফ্রান্স, ব্রিটেন, রাশিয়া

বলকান সমস্যা

বলকান অঞ্চলের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল।

  • রাশিয়া প্যান-স্লাভিক জাতীয়তাবাদ এবং অর্থোডক্স খ্রিস্টধর্মের মাধ্যমে স্থানীয় স্লাভ জনগণের প্রতি প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছিল।
  • অস্ট্রিয়ার সাথে বিরোধ এবং দার্দানেলস প্রণালিতে রুশ যুদ্ধ জাহাজের চলাচল নিয়েও সংঘর্ষ হয়।

সেরাজেভো হত্যাকান্ড (প্রত্যক্ষ কারণ)

প্যান-স্লাভিক জাতীয়তাবাদীরা অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাবের বিরুদ্ধে ছিল।

  • ১৯১৪ সালের ২৮শে জুন, সার্বিয়ান তরুণদের গুলি চালিয়ে ফ্রান্জ ফার্দিনান্ড হত্যা করেন।
  • অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সার্বিয়াকে দায়ী করে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কঠোর শর্ত পূরণের নির্দেশ দেয়।
  • সার্বিয়া কিছু শর্ত মেনে নিলেও, জাতীয় অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে এমন দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান করে।
    এই ঘটনা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সরাসরি কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়।

Join our membership to access all the study materials for Class 9 ITIHAS WBBSE MADHYAMIK and enhance your preparation.
Visit: https://skillyogi.org/student-registration-cbseGet the study notes for better understanding and comprehensive preparation for exams.
Visit: https://skillyogi.org/wbbse-class-10-itihas-history-study-notes

error: Content is protected !!
Scroll to Top
×