১৮৫৭-র মহাবিদ্রোহ বা সিপাহী বিদ্রোহ
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ, যা সিপাহী বিদ্রোহ বা প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম নামেও পরিচিত, ভারতীয় ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি পলাশির যুদ্ধে (১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ) ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিজয়ের পর শুরু হয়েছিল। ব্রিটিশরা ভারতীয় মহাদেশে তাদের শাসন প্রতিষ্ঠা করার পর থেকে অর্থনৈতিক শোষণ এবং স্বৈরাচারী শাসন চালু করে, যার ফলে ভারতীয় শিল্প, বাণিজ্য, এবং কৃষকদের অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে।
ব্রিটিশরা ভারতীয়দের সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করলেও তাদের প্রতি বৈষম্য এবং অপমান চালিয়ে যায়। এতে ভারতীয় সিপাহিরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং তাদের মধ্যে বিক্ষোভ এবং অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে, ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে এই ক্ষোভ একটি বৃহৎ বিদ্রোহে পরিণত হয়।
ব্রিটিশরা সেনাবাহিনীতে এনফিল্ড রাইফেল ব্যবহারের জন্য প্রবর্তন করে, যার খোলস তৈরি হয় গরু এবং শূকরের চর্বি দিয়ে। এই বিষয়টি নিয়ে গুজব রটে, যা হিন্দু ও মুসলিম সিপাহিদের মধ্যে ধর্মীয় বিতর্ক সৃষ্টি করে। তারা এই রাইফেল ব্যবহার করতে অস্বীকার করে। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৬ ফেব্রুয়ারি মুর্শিদাবাদে বহরমপুর সেনানিবাসের সিপাহিরা প্রথম বিক্ষোভ করে, যা এক পর্যায়ে বিপ্লবের রূপ ধারণ করে।
২৯ মার্চ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে, বারাকপুরের সিপাহী মঙ্গল পান্ডে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন এবং প্রথম শহীদ হন। এর পরপরই, এই বিদ্রোহ মিরাট, দিল্লি, ফিরোজপুর, মুজাফরনগর, পাঞ্জাব, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, লখনৌ ইত্যাদি স্থানে ছড়িয়ে পড়ে।
এই বিদ্রোহের প্রভাব ছিল ব্যাপক এবং দীর্ঘস্থায়ী। যদিও সিপাহী বিদ্রোহ শেষ হয়েছিল, তবে এটি ভারতীয় জনগণের মধ্যে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াই করার সাহস এবং প্রেরণা জুগিয়েছিল।
এই বিদ্রোহ ছিল ভারতীয় জনগণের সংগ্রামের অগ্নিপরীক্ষা, যা পরবর্তীতে ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করে।
For more detailed study and exclusive access to content, join our membership at:
https://skillyogi.org/student-registration-cbse
To purchase the study book for Class 10 History (WBBSE), click here:
https://skillyogi.org/wbbse-class-10-itihas-history-study-notes