শক্তিসাম্য নীতি | তৃতীয় অধ্যায়: ঊনবিংশ শতকের ইউরোপ: রাজতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারার সংঘাত | Class 9 Itihas WBBSE Madhyamik

শক্তিসাম্য নীতি:

শক্তিসাম্য নীতি (Balance of Power Policy) হল একটি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ধারণা, যার মাধ্যমে কোনো একটি দেশকে অতিরিক্ত শক্তিশালী হয়ে উঠতে বা বিস্তারনীতি অনুসরণ করতে বাধা দেওয়া হয়। এটি নিশ্চিত করে যে প্রতিটি দেশ তার প্রতিবেশী দেশের তুলনায় সামরিক বা রাজনৈতিকভাবে অত্যধিক শক্তিশালী না হয়ে উঠুক, যেন কোনো দেশ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের স্থিতিশীলতা এবং শান্তি ভঙ্গ না করতে পারে।

ভিয়েনা সম্মেলন (1815) এই নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে ফ্রান্সকে দুর্বল করার চেষ্টা করে, যেহেতু ফ্রান্স নেপোলিয়ন বোনাপার্ট-এর নেতৃত্বে ইউরোপের অধিকাংশ অঞ্চল জয় করেছিল এবং এটি অতিরিক্ত শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। এই নীতি অনুযায়ী, ফ্রান্সের সীমানা পূর্ববর্তী অবস্থায় ফেরত আনা হয়, যাতে ফ্রান্সের প্রভাব সীমিত থাকে এবং ভবিষ্যতে বিস্তারবাদী মনোভাব না তৈরি হয়।

ফ্রান্সের সেনাবাহিনী ভেঙে দেওয়া হয় এবং যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করা হয়। এর ফলে, ফ্রান্সের সামরিক শক্তি এবং অর্থনৈতিক অবস্থান দুর্বল হয়, যাতে তা পুনরায় ইউরোপে কোনো বড় ধরনের অশান্তি সৃষ্টি না করতে পারে।

এছাড়া, ফ্রান্সের চারপাশে শক্তিশালী রাষ্ট্রের বেষ্টনী গঠন করা হয়। এই বেষ্টনীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল:

  • উত্তর-পূর্বে হল্যান্ড ও বেলজিয়াম,
  • পূর্বে প্রাশিয়া ও রাইনল্যান্ড,
  • দক্ষিণে সার্ডিনিয়া ও জেনোয়া,
  • এবং দক্ষিণ-পূর্বে সুইজারল্যান্ডকে একটি নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়, যাতে ফ্রান্সের আক্রমণের সম্ভাবনা কমে আসে।

এই শক্তিসাম্য নীতি মূলত ইউরোপে রাজনৈতিক ভারসাম্য এবং শান্তি বজায় রাখার জন্য একটি সুরক্ষিত কাঠামো তৈরি করার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়েছিল।


To access all our detailed study materials and notes, become a member today at: https://skillyogi.org/student-registration-cbse.
To buy the History Study Notes for Class 10 WBBSE, visit: https://skillyogi.org/wbbse-class-10-itihas-history-study-notes.

error: Content is protected !!
Scroll to Top
×