ভারতে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য পুনর্গঠনের উদ্যোগ ও বিতর্ক – অষ্টম অধ্যায় – Class 10 Itihas WBBSE Madhyamik

ভারতে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য পুনর্গঠনের উদ্যোগ ও বিতর্ক – অষ্টম অধ্যায় : উত্তর ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব: (১৯৪৭-১৯৬৮ খ্রি:) – Class 10 Itihas WBBSE Madhyamik

ভারত স্বাধীন হওয়ার পর, রাজ্যগুলোর সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভাষাসংস্কৃতির প্রতি গুরুত্ব না দেওয়া নিয়ে সাংস্কৃতিক সংকট দেখা দেয়। অনেক নেতৃবৃন্দ আশা করেছিলেন যে, মাতৃভাষার ভিত্তিতেই রাজ্যগুলোর সীমারেখা আঁকা হবে। ১৯৪৭-এ ভারত স্বাধীন হওয়ার পরপরই এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়।

ভাষাভিত্তিক প্রদেশ কমিশন এবং মতামত

১৯৪৮ সালে বিচারপতি এস কে দারের নেতৃত্বে ‘ভাষাভিত্তিক প্রদেশ কমিশন’ গঠন করা হয়। তবে, কমিশন মত দেয় যে, ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য গঠন হলে জাতীয় ঐক্য এবং প্রশাসনিক কাজে ব্যাঘাত ঘটবে। এরপরেও, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতে ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের আন্দোলন দানা বাঁধতে থাকে

জেভিপি কমিটি ও পট্টি শ্রীরামালুর আন্দোলন

১৯৪৮-এ জওহরলাল নেহরু, বল্লভভাই প্যাটেলপট্টাভি সীতারামাইয়াকে নিয়ে কংগ্রেস ‘জেভিপি কমিটি’ গঠন করে, যারা এই দাবির বিরোধিতা করে। এরই মধ্যে, পট্টি শ্রীরামালু মাদ্রাজ প্রদেশে ভাষাভিত্তিক অঞ্চল গঠনের দাবিতে ৫৮ দিন অনশন করে মারা যান, যা সমাজে দুর্গতির সৃষ্টি করে।

তেলেগু ও তামিল ভাষাভাষীদের সংঘর্ষ

১৯৫২-তে, তেলেগুতামিল ভাষাভাষীদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ ও ধর্মঘট ছড়িয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতির পর, তেলেগু ভাষাভাষী অঞ্চল নিয়ে আলাদা অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তামিল অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে আলাদা তামিলনাড়ু রাজ্য গঠন করা হয়।

ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন (১৯৫৬)

১৯৫৬ সালে, ভাষার ভিত্তিতে ব্যাপক রাজ্য পুনর্গঠন করা হয়। এর পরবর্তী সময়ে মুম্বই আন্দোলন এর মাধ্যমে মুম্বই প্রদেশ ভেঙে মহারাষ্ট্রগুজরাট প্রদেশ গঠিত হয়। এছাড়া, মালাবার, ত্রাবাঙ্কুর ও কোচিন মিলিয়ে আলাদা কেরালা রাজ্য হয়।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য এবং গোয়া

১৯৫৭ থেকে ১৯৭২-এর মধ্যে, অসম থেকে নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, মিজোরাম এবং ‘উত্তর-পূর্ব সীমান্ত অঞ্চল’ (NEFA) আলাদা হয়। ১৯৭২-এ NEFA-র নাম বদলে ‘অরুণাচল প্রদেশ’ রাখা হয়। ১৯৬১-এ গোয়া, দমন, দিউ পর্তুগিজ শাসন থেকে মুক্ত হয়ে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৬৩-এ নাগাল্যান্ড এবং ১৯৭১-এ হিমাচল পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পায়। ১৯৬৬-এ PEPSU ভেঙে আলাদা পাঞ্জাব, হরিয়ানাহিমাচল গঠন হয়।

ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠনের প্রভাব

ভাষাভিত্তিক এই রাজ্য পুনর্গঠনের ফলে আন্তঃরাজ্য সমস্যা যেমন নদীর গতিপথজলবন্টন নিয়ে বিরোধ বেড়ে যায়। তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষক রজনী কোঠারি এবং ঐতিহাসিক বিপিন চন্দ্র এর মতে, ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্বিন্যাস ভারতের জাতীয় সংহতি আরও দৃঢ় করেছে

For full access to Class 10 Itihas WBBSE study materials, become a member:
https://skillyogi.org/student-registration-cbse
Also, buy the Itihas History Study Notes for your exam preparation:
https://skillyogi.org/wbbse-class-10-itihas-history-study-notes

error: Content is protected !!
Scroll to Top
×