গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যঙ্গচিত্র ও ঔপনিবেশিক সমাজের সমালোচনা
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের সদস্য এবং ব্রিটিশ শাসনকালে বাংলার খ্যাতনামা চিত্রশিল্পী এবং কার্টুন শিল্পী ছিলেন। তিনি এবং তার ভাই অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯০৭ সালে ‘ইন্ডিয়ান সোসাইটি অফ অরিয়েন্টাল আর্ট’ প্রতিষ্ঠা করেন, যা ভারতীয় শিল্পের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিত্রকলা ও কার্টুনের মাধ্যমে তিনি ঔপনিবেশিক সমাজের সমালোচনা এবং স্বদেশপ্রেম প্রচার করেন।
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যঙ্গচিত্রগুলোতে তিনি অভিজাত ও ধনী শ্রেণীর কর্মকাণ্ডকে বিদ্রূপ করেছেন। তার কিছু উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে ‘অদ্ভুত লোক’ (১৯১৫), ‘বিরূপ বস্ত্র’ (১৯১৭), এবং ‘নয়া হুল্লোড়’ (১৯২১)। এই ব্যঙ্গচিত্রগুলির মাধ্যমে তিনি সেই সময়কার রাজনৈতিক এবং সামাজিক অস্থিরতার ছবি তুলে ধরেন, যেখানে শিক্ষিত বাঙালি সমাজ একদিকে ইউরোপীয় সংস্কৃতির প্রতি অনুকম্পা প্রদর্শন করছিল, অন্যদিকে নিজেদের বাংলীয় পরিচয় ভুলে যাচ্ছিল।
এছাড়া, ‘খল ব্রাহ্মণ’ চিত্রে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ধর্মীয় কুসংস্কার ও সামাজিক ভেদাভেদ কে ব্যঙ্গ করেন। এই চিত্রে তিনি এমন এক ব্রাহ্মণের খল রূপ প্রদর্শন করেছেন, যে ধর্ম পালনের পরিবর্তে মাছ, মাংস, মদ, এবং মহিলায় আসক্ত। তিনি এক অন্য চিত্রে বাঙালি নারীকে ইউরোপীয় জুতো এবং বাংলা শাড়ি পরিধান করে ইউরোপীয় পুরুষের সাথে নৃত্যরত অবস্থায় চিত্রিত করেছেন, যা ঐ সময়ের সামাজিক দ্বন্দ্ব এবং ঔপনিবেশিক সংস্কৃতির প্রতি অনুরাগকে প্রকাশ করে।
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যঙ্গচিত্র ছিল ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে মোহনবাগান ক্লাবের আইএফএ শিল্ড জয়ের ঘটনাকে নিয়ে। তিনি ঔপনিবেশিক শাসন এবং স্বদেশী আন্দোলন এর মিশ্রণে একটি নতুন রূপ সৃষ্টি করেন, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে জাতীয়তাবোধ এবং স্বদেশপ্রেমকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল।
গগনেন্দ্রনাথের ব্যঙ্গচিত্রগুলো শুধু ঔপনিবেশিক শাসনের সমালোচনাই করেনি, বরং তা স্বদেশী আন্দোলন এবং ভারতের সামাজিক পরিবর্তনের প্রতি এক প্রেরণাদায়ক বার্তা প্রদান করেছিল।
For more detailed study and exclusive access to content, join our membership at:
https://skillyogi.org/student-registration-cbse
To purchase the study book for Class 10 History (WBBSE), click here:
https://skillyogi.org/wbbse-class-10-itihas-history-study-notes