fbpx

 

আপনি এখানে শিখবেন এই অধ্যায়ে এবং বিষয়ের ফাউন্ডেশন অংশটা, এই বিষয়টিকে সহজ-সরলভাবে পড়িয়েছেন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ভিডিও লেকচার এর মাধ্যমে এবং এই পুরো অধ্যায়কে চার ভাগে খন্ডিত করে আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে

  • প্রথম খন্ডে আপনি শিখবেন ফাউন্ডেশন অংশটা যেখানে অধ্যায়ের ব্যাপারে আপনাকে বোঝানো হয়েছে তার মানে definitions,basics  গুলো সহজভাবে.  এবং এটাকে আপনি বুঝতে পারবেন যেটা আপনাকে পরীক্ষার জন্য ক্রীপের করতে সাহায্য করবে
  • দ্বিতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন MCQ মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন যেটা সাধারণত এক Marks’er আসে পরীক্ষায়
  • তৃতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন শর্ট অ্যানসার এবং কোয়েশ্চেন, যেটা আপনার পরীক্ষার সাজেশন মধ্যে পড়ে এবং এটা 3-4 marks’er  প্রশ্ন আসে আপনার পরীক্ষা
  • চতুর্থ মডিউল আপনি শিখবেন লং আনসার এবং questions যেটা সাধারণত 5-6 marks er হয়

আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন যাতে কি আপনাকে আমরা সাহায্য করতে পারি

Table of Contents

ভূমিকা :

 

ইতিহাস মানেই চিরাচরিত ভাবে সেই রাজ রাজাদের কাহিনী ।

তাদের ব্যাক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক, সামাজিক সকল কথাই ইতিহাসে প্রকাশ পায়। গুহামানব জীবন থেকে আজকের এই ইন্টারনেট যুগের উন্নত সমাজ সবই ইতিহাসের বিবর্তন।

প্রাচীন যুগের বহু জিনিসপত্র যেমন, সে আমলে ব্যবহার করা নানান আসবাব পত্র থেকে শুরু করে পোশাক, দলিল, নথিপত্র, চিঠিপত্র এমনকি খাদ্যাভাস ও বর্তমান যুগের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহার হয়।

এখনকার ইতিহাসে কেবলই রাজ রাজাদের কাহিনি আলোচিত হয় না, বরং তাদের জীবনযাত্রার যে দিক গুলি বর্তমান সময়ে গোষ্ঠী মানুষের উন্নতিসাধন করতে পারে তাও লক্ষ্য করা হয়।

 

নতুন সামাজিক ইতিহাস

 

নতুন সামাজিক ইতিহাসে কেবল মাত্র রাজা ও উচ্চবিত্ত দের আলোচনা নয়, সমাজের নিম্নবর্গীয় মানুষের সাধারণ জীবনযাত্রার কথা গুরুত্ব পায়।

১৯৬০ এর দশক থেকে অ্যানাল গোষ্ঠীর উদ্যোগে সমাজের সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকা, ক্রিয়াকলাপ নিয়ে ইতিহাসে যে আলোচনা করা হয় তাকে নতুন সামাজিক ইতিহাস বলা হয়।

১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে ভারতে নিম্নবর্গের ইতিহাস চর্চা শুরু করেন রঞ্জিত গুহা তাঁর  ‘On Some Aspects of the Historiography of Colonial India’ গ্রন্থে।  

আরো পরে সুমিত সরকার, দীপেশ চক্রবর্তী, গৌতম ভদ্র, পার্থ চ্যাটার্জী প্রমুখ ব্যাক্তিরা এই ধারা কে এগিয়ে নিয়ে যান।

সমাজ সংস্কার মুলক ইতিহাস নয় খেলাধুলার ইতিহাস, খাদ্যাভাসের ইতিহাস, পোশাকের ইতিহাস প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ।

ইতিহাস চর্চায় খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন

মানব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল মানুষের খাদ্যাভ্যাস। মানুষের খাদ্য উৎপাদক সময়কাল থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ের খাদ্যাভ্যাস নানান বিবর্তনের সাক্ষী।

রাজ রাজাদের সময়( পাল বা সেন যুগে ) রাজকীয় ঘরানার খাবার তৈরি হত। তারপর সুলতানি শাসন চালু হয় বাংলার খাদ্যাভ্যাস অনেকটাই বদলে যায় ।

পর্তুগিজদের দের দ্বারা ভারতে আলুর চাষ প্রচলিত হয় এবং এই দেশের গোল মরিচ সারা বিশ্বের কাছে ছড়িয়ে পড়লে রন্ধন প্রণালী তে পরিবর্তন ঘটে ।

প্রাচ্যের দেশগুলিতে ওটস , কেক জাতীয় খাবারের প্রচলন ছিল।

স্কটল্যান্ডকে কেকের দেশ ও বলা হয়।  কিন্তু বঙ্গ জীবনের রসগোল্লা , মিষ্টান্ন ছিল সবচেয়ে প্রসিদ্ধ । খাদ্য চর্চার ইতিহাসে রিয়াই টান্নাহিল এর ‘ ফুড ইন হিস্ট্রি ‘ , তপন রায়চৌধুরীর ‘ মোগল আমলের খানাপিনা ‘ প্রভৃতি বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য ।

ইতিহাস চর্চায় খেলাধুলার প্রভাব

 

কোন জাতির পরিচয় ঘটে সেই জাতির খেলাধুলার মাধ্যমে। এই খেলাধুলাকে কেন্দ্র করেই কখনো সাম্প্রদায়িকতার ঝড় উঠেছে আবার কখনো সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে।

বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে মেলবন্ধনের মাধ্যম রুপে কাজ করে খেলাধুলা । তাই সমাজ সংস্কৃতির ইতিহাসে খেলা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

প্রাচীন গ্রিসের অলিম্পিয়া নগরীতে প্রথম অলিম্পিক গেমস চালু হয় এবং তারপর থেকেই ইংল্যান্ডে ক্রিকেট খেলা শুরু হয়। আজ ক্রিকেট জগত বিখ্যাত ।

 ১৯৮৯ সালে প্রথম ইন্টার ন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল গঠিত হয় ।

গৌতম ভট্টচার্জের ‘ বাপি বাড়ি যা’ এবং কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর ‘ খেলা যখন ইতিহাস’ গ্রন্থগুলি উল্লেখযোগ্য।

ইতিহাস চর্চায় পোশাক- পরিচ্ছদের ভূমিকা

 

পোশাক মানুষের রুচির পরিচায়ক। আত্মসচেতনতার নিদর্শন স্বরুপ পোশাক ব্যবহার হয়। দেশ ভেদে তথা রাজ্য ভেদে মানুষের পোশাকের পরিবরতন লক্ষ্য করা যায় । পোশাক নির্বাচন দেশের জলবায়ুর ওপর ও কিছুটা নির্ভরশীল ।

চীনের মানুষের পোশাক থেকে বোঝা যায় তারা রেশম তৈরির কৌশল রপ্ত করেছিল । এমনকি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দার পোশাকে পার্থক্য রয়েছে ।

বাংলায় বহু প্রাচীন কাল থেকেই মেয়েদের শাড়ী পরার রীতি প্রচলিত ছিল । তবে সেই শাড়ীর কায়দা ছিল ভিন্ন। বর্তমানে যেভাবে শাড়ী পরা হয় তা ব্রোমাহিকা পদ্ধতি নামে পরিচিত যার প্রচলন ঘটেছিল জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলে। বিয়ের পোশাকের ক্ষেত্রেও নানান বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় ।

কার্ল কোহলারের ‘ পোশাকের ইতিহাস ‘ , মাইকেল ডেভিসের ‘ আর্ট অব ড্রেস ডিজাইনিং প্রভৃতি পোশাক সম্পর্কিত উল্লেখযোগ্য বই ।

ইতিহাস চর্চায় শিল্প

ইতিহাস চর্চায় শিল্প :  প্রাচীন সময়কাল থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত যে বিষয়টি অপরিবর্তনশীল তা হল শিল্প । কোন জাতি সাংস্কৃতিক দিক থেকে কত পরিপূর্ণ তা জানা যায় শিল্পের মাধ্যমে । শিল্পের বিভিন্ন ভাগ রয়েছে,

See also  Chapter 5 পরিবেশ তার সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ : The Environment Is Its Resource and Their Preservation Life Science জীবন বিজ্ঞান WBBSE Madhyamik Class 10

 সঙ্গীতভারতে সঙ্গীতের প্রচলন সেই প্রাচীন কাল থেকেই । আমির খসরুকে কাওয়ালী জনক বলা হয়মোগল আমল থেকে শুরু করে বাংলার পল্লী গান সকল ক্ষেত্রেই নানা বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় ।

ভারতীয় সংগীতের ইতিহাসচর্চায় কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল-

  •  রাজকুমার-এর এসেজ অন ইন্ডিয়ান মিউজিক
  • প্যাট্রিক মৌতালের কম্পারেটিভ স্টাডি অব হিন্দুস্তানি রাগাস প্রভৃতি
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গীতচিন্তা,
  • সুকুমার রায়ের বাংলা সঙ্গীতের রুপ ,
  • দিলীপ কুমার রায়ের সাঙ্গীতিকা,
  • মান্না দে-র লেখা আত্মজীবনী ‘জীবনের জলসাঘরে’ সংগীতের ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

ইতিহাস চর্চায় নৃত্য

ইতিহাস চর্চায় নৃত্য – নৃত্য শিল্পচর্চার একটি অন্যতম অংশ হল নৃত্যকলা । বহুকাল আগে থেকেই ভারতীয় নৃত্যকলা পাশ্চাত্যের কাছে সমাদৃত হয়েছে ।

ভারতের বিভিন্ন স্থানের নাচে বিভিন্নতা দেখা যায়, তামিলনাড়ুর ভারতনাট্টম, উত্তর ও পশ্চিম ভারতের কথক, কেরালায় কথাকলি ও মোহিনীয়াট্যম, অন্ধ্রপ্রদেশে কুচিপুরি, পূর্বভারতের ছৌ প্রভৃতি নৃত্যধারা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

নৃত্যকলায় পণ্ডিত বিরজু, উদয় শংকর রুক্মিণী দেবী, অমলা শঙ্কর, প্রমূখ বহু ভারতীয় সারা বিশ্বের খ্যাতি অর্জন করেছেন।

কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল –

  • গায়ত্রী চট্টোপাধ্যায়ের ভারতের নৃত্যকলা
  • আকৃতি সিনহার লেটস নো ডান্সেস অফ ইন্ডিয়া
  • রাগিনী দেবীর ডান্স ডায়ালেট অফ ইন্ডিয়া প্রভৃতি

ইতিহাস চর্চায় নাটক

ইতিহাস চর্চায় নাটক: অষ্টাদশ-ঊনবিংশ শতকে ইউরোপের পাশাপাশি ভারতে তথা বাংলায় নাট্যচর্চার বিস্তার ঘটে। এদেশে জাতীয়তাবাদের প্রসারও ঘটে নাটকের মধ্য দিয়ে । বাংলা নাট্যচর্চায় মধুসূদন দত্ত, গিরিশচন্দ্র ঘোষ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, শিশির ভাদুড়ী, শম্ভু মিত্র প্রমুখ উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব।

নাট্যচর্চা কে সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলেন ভারতীয় গণনাট্য – এর সদস্যরা যেমন পৃথ্বীরাজ কাপুর, ঋত্বিক ঘটক, উৎপল দত্ত, বিজন ভট্টাচার্য, সলিল চৌধুরী প্রমুখ।

এ বিষয়ে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল-

  •  আশুতোষ ভট্টাচার্যের বাংলা নাট্য সাহিত্যের ইতিহাস,
  • সত্য জীবন মুখোপাধ্যায় দৃশ্যকাব্য পরিচয় প্রভৃতি।

ইতিহাস চর্চায় চলচ্চিত্র

ইতিহাস চর্চায় চলচ্চিত্রবর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে বিনোদনের সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হল চলচ্চিত্র । ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম নির্বাক ছবি ‘রাজা হরিশচন্দ্র দাদাভাই ফালকে পরিচালনা করেন ।

পরবর্তীকালে সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেনের মতো বিশিষ্ট চিত্র পরিচালকদের আগমন ঘটে । চলচ্চিত্র ইতিহাসে পথের পাঁচালি, হিরক রাজার দেশে এক একটি মাইলস্টোন ।

এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ গুলি হল-

  1. সত্যজিৎ রায়ের ‘একেই বলে শুটিং’ ও ‘বিষয় চলচ্চিত্র’
  2.  ঋত্বিক ঘটকের ’ চলচ্চিত্র, মানুষ এবং আরো কিছু’
  3. তপন সিংহের ‘চলচ্চিত্র আজীবন’ প্রভৃতি গ্রন্থের নাম.

ইতিহাস চর্চায় স্থাপত্য-র ভূমিকা

 

অতীতকালের বিভিন্ন স্থাপত্য ইতিহাস স্মৃতির বাহক ।

  1. আগ্রার ‘তাজমহল’
  2. দিল্লির ‘বাহাই লোটাস টেম্পল’
  3. গুজরাটের ‘গোদাল প্রাসাদ’
  4. হরিয়ানার ‘পদম্ প্রাসাদ’
  5. বাংলার পাহাড়পুরে ‘সোমপুর মহাবিহার’
  6. গৌড়ে ‘বড়ো সোনা মসজিদ’ও ‘ছোটো সোনা মসজিদ’
  7.  মুর্শিদাবাদে ‘হাজার দুয়ারী প্যালেস’
  8. ঢাকায় ‘ঢাকেশ্বরী মন্দির’
  9. চন্দ্রকেতুগড়, মহাস্থানগড় বিষ্ণুপুর
  10. কালনা-সহ বহু মন্দির-অট্টালিকা প্রভৃতি এদেশের উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য নিদর্শন।

ব্রিটিশ আমলের ‘ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ’ ‘হেস্টিংস হাউস, ‘এশিয়াটিক সোসাইটি’ (১৭৮৪ খ্রি.), টাউন হল’ (১৮১৩ খ্রি.), ‘অক্টারলোনি মনুমেন্ট (১৮২৮ খ্রি.), ‘দক্ষিণেশ্বর কালিমন্দির (১৮৫৫ খ্রি.), ‘হাইকোর্ট (১৮৭২ খ্রি.), ‘ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল’ (১৯২১ খ্রি.) প্রভৃতি হল কলকাতার উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য নিদর্শন।

ইতিহাস চর্চায় দৃশ্যশিল্পের প্রভাব

 

ছবি আঁকার ক্ষেত্রে প্রভাব – ছবি আঁকার প্রচলন সেই প্রাচীনকাল থেকেই । মানুষ পাহাড়ের গায়ের  দেওয়ালে, এমনকি পুথিপত্রেও ছবি আঁকত। ভারতে সুলতানি, চোল, বিজয়নগর, মোগল  আমলে দরবারি চিত্রকলার প্রকাশ ঘটে।

পঞ্চদশ শতকে ইতালিতে লিওনার্দো দ্য ভিঞি, রাফায়েল, মাইকেল অ্যাঞ্জেলো প্রমুখ ব্যক্তিবর্গের চিত্র ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য।

আধুনিক বাংলায় অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নন্দলাল বসু, যামিনী রায় প্রমুখ ভারতীয় চিত্রকলা বিশ্ব ইতিহাসে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা দিয়েছে ।

এবিষয়ে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল-

  •  অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বাগেশ্বরী প্রবন্ধমালা।
  • অশোক মিত্রের ‘ভারতের চিত্রকলা’
  •  বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়ের ’ চিত্রকলা ‘ প্রভৃতি

ফোটোগ্রাফির প্রভাব :

  • আধুনিক সময়ে চিত্রের পরিবর্তে ফোটোগ্রাফির চল খুবই বেশি । আলেকজান্ডার ওয়ালকট ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে ক্যামেরা আবিষ্কারের পর ভারতে ফোটো তোলার যন্ত্রপাতি আসে ১৮৫০-এর দশকের গোড়ার দিকে ।
  • তারপর মন্বন্তর, নৌবিদ্রোহ, দাঙ্গা, দেশভাগ প্রভৃতির বিভিন্ন ফোটোগ্রাফ ইতিহাসচর্চায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
  • বর্তমানে ফোটোগ্রাফির ইতিহাসচর্চায় কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল— জন ওয়েড-এর ‘এ শর্ট হিস্ট্রি অব দ্য ক্যামেরা, আর ডগলাস নিকেলের ‘হিস্ট্রি অব ফটোগ্রাফি প্রভৃতি ।

ইতিহাস চর্চায় যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অবদান

 

কোনো জাতির জীবনধারার ধরন নির্ভর করে যাতায়াত ব্যবস্থার উপর । যাতায়াতের তিনটি মাধ্যম হল স্খলপথ, জলপথ এবং আকাশ পথ।  তবে আধুনিক যুগের মানুষ বিভিন্ন যান্ত্রিক যানবাহন ব্যবহার করছে।

১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডে ট্রামের সুচনা হয় এরপর থেকেই ইউরোপে ও আমেরিকার বিভিন্ন শহরে ট্রামগাড়ির সূত্রপাত ঘটে। কলকাতায় ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে ঘোড়ায় টানা ট্রাম এবং ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে বৈদ্যুতিক ট্রামযাত্রা শুরু হয়, এর ফলে বিভিন্ন শহরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটে।

প্রাচীনকালের জল পথে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম ছিল নৌকা, ভেলা, ডিঙি প্রভৃতি। রাইট ভ্রাতৃদ্বয় কর্তৃক এরোপ্লেন আবিষ্কার করার পর আকাশপথে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক অগ্রগতি ঘটে.

এ বিষয়ে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল-

  1. সুনীল কুমার মুন্সির ‘জিওগ্রাফি অফ ট্রান্সপোর্টেশন ইন  ইস্টার্ন ইন্ডিয়া আন্ডার ব্রিটিশরাজ’ 
  2.  নীতিন সিনহার ‘পূর্ব ভারতের পরিবহন ও যোগাযোগ বিষয়ক গ্রন্থ’ প্রভৃতি

স্থানীয় ইতিহাস চর্চা

 

কোনো একটি বিশেষ স্থানের ইতিহাসও আধুনিক ইতিহাসচর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে।ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম স্থানীয় ইতিহাস, মূলত কাশ্মীরের স্থানীয় ইতিহাস কাশ্মীরি কবি কল্হনের ‘রাজতরঙ্গিনী’ তে আলোচিত হয়েছে।

পরে রাজস্থান, গুজরাট, পাঞ্জাব, কেরল, মহারাষ্ট্র, বাংলা প্রাকৃতিক অঞ্চলের স্থানীয় ইতিহাস নিয়েও চর্চা হয়েছে । সেই সকল অঞ্চলগুলির  লোক সংস্কৃতি , শিল্প স্থাপত্যের বিকাশ, আর্থসামাজিক অবস্থা  প্রভৃতি হল স্থানীয় ইতিহাসচর্চার আলোচ্য বিষয়।

এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ গুলি হল-

  1. কালিনাথ চৌধুরীর ‘রাজশাহীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’
  2.  নীহাররঞ্জন রায়ের ‘বাঙালির ইতিহাস’
  3.  রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এর ‘বাংলার ইতিহাস’ প্রভৃতি

 

শহরের ইতিহাস চর্চা

 

শহরের ইতিহাস চর্চার অর্থ হল ওই শহরের পতন, নগরায়ণ, আধুনিকতা, শহরের জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক অবস্থা, ওই শহরের শিল্প সংস্কৃতি-রাজনীতির চর্চা, সেখানকার স্থাপত্য ও ব্যাবসাবাণিজ্য প্রভৃতির বিস্তারিত আলোচনা।

কলকাতার ইতিহাস নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তি চর্চা করেছেন। এই বিষয়ে পূর্ণেন্দু পত্রী, নিখিল সরকার, সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, রাধারমন মিত্র, রাধাপ্রসাদ গুপ্তর মতো বাঙালি  শহরের ইতিহাসচর্চার উল্লেখযোগ্য নাম ।

See also  পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ (Physical and Chemical Properties) Physical Science Bhouto Bigyan - Class 10 Madhyamik WBBSE

এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ গুলি হল-

  • ‘সংস্কৃতির শহর’ কলকাতাকে নিয়ে লেখা রাধারমণ মিত্র-র ‘কলিকাতা দর্পণ
  • ড. সৌমিত্র শ্রীমানী সম্পাদিত ‘কলিকাতা কলকাতা
  • যতীন্দ্রমোহন রায়ের ‘ঢাকার ইতিহাস’ প্রভৃতি

সামরিক ইতিহাস চর্চা

 

প্রাচীনকালেই  যুদ্ধের প্রচলন এবং সমাজজীবনে যুদ্ধের প্রভাব অনস্বীকার্য। সেই সময় লাঠি, তরোয়াল, গদা, তীর-ধনুক নিয়ে দল বেঁধে সেনাদের সাথে যুদ্ধ হতো । সামরিক বিভাগের বৈশিষ্ট্য ছিল পদাতিক বাহিনী, হস্তিবাহিনী, অশ্ববাহিনী, রথবাহিনী, উষ্ট্রবাহিনী, গোলন্দাজ বাহিনী প্রভৃতি।

1857 সালের মহাবিদ্রোহের পর  ‘ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মি ‘ ‘ইন্ডিয়ান নেভি’ ও ‘ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স’ গড়ে ওঠে ।

এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ গুলি হল-

  1. সামরিক ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সুবোধ ঘোষ-এর ‘ভারতীয় ফৌজের ইতিহাস’
  2. কৌশিক রায়-এর ‘ দ্য আর্মি ইন ব্রিটিশ ইন্ডিয়া’ গ্রন্থ
  3. যদুনাথ সরকারের ‘মিলিটারি হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়া’ প্রভৃতি

ইতিহাস চর্চায় পরিবেশ

 

বর্তমানে বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশবিদ্যা নিয়ে চর্চা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মানবসভ্যতার উপর পরিবেশবিদ্যার এবং জলবায়ুর পরিবর্তন ইতিহাসচর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে । বিভিন্ন ধরনের পরিবেশ আন্দোলন গড়ে উঠেছে।

যেমন—1974 সালের চিপকো আন্দোলন, 1985 সালের নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন ইত্যাদি। বাস্তুতন্ত্র, আবহবিজ্ঞান, বনাঞ্চলের ইতিহাস এসবই এখন ইতিহাসচর্চার আলোচ্য বিষয়। এ বিষয়ে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গবেষণা হল র‍্যাচেল কারসন-এর ‘দ্য সাইলেন্ট স্প্রিং’ ।

ইতিহাস চর্চায় বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও চিকিৎসা বিজ্ঞান

 

বিজ্ঞান প্রযুক্তির অবদান  -বর্তমানকালে চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস নিয়ে যথেষ্ট চর্চা হচ্ছে। ‘কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ভারতে আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যার সূত্রপাত ঘটে ৷ সম্প্রতি টমাস কুহন রচিত ‘দ্য স্ট্রাকচার অব সায়েন্টিফিক রেভোলিউশন্স’ এবং জে ডি বার্নাল রচিত সায়েন্স ইন হিস্ট্রি’ বিজ্ঞানের ইতিহাসে বিস্ময়কর সৃষ্টি । সমর সেন-এর ‘ বিজ্ঞানের ইতিহাস’ প্রভৃতি বিশেষ উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।

চিকিৎসাবিদ্যার অবদান : প্রাচীন কাল থেকেই ইউরোপ তথা ভারতে চিকিৎসাবিদ্যার ধারাটি বর্তমান । খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দে  চিকিৎসকরা যে হিপোক্রেটিক এর শপথ নেন তার উদ্ভব হয় । প্রাচীন ভারতে চরক, সুশ্রুত, ধন্বন্তরী প্রমুখ চিকিৎসাবিদ্যা চর্চার উল্লেখ্যযোগ্য ব্যক্তিবর্গ ।

এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ গুলি হল-

  • আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের হিস্ট্রি অফ কেমিস্ট্রি গ্রন্থের রসায়ন শাস্ত্র চর্চার ইতিহাস রয়েছে
  • তপন চক্রবর্তী ‘চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাস’
  • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় ‘প্রাচীন ভারতের চিকিৎসা বিজ্ঞান’

ইতিহাস চর্চায় নারী

 

পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা ছিল সব সময়ই উপেক্ষিত । অথচ সমাজ, রাজনীতি, শিক্ষা, আন্দোলন প্রভৃতি ক্ষেত্রে নারীদের অবদান কোনো অংশেই কম নয় ।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সরলাদেবী চৌধুরানী, বাসন্তী দেবী, মাতঙ্গিনী হাজরা, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, বীণা দাস, শান্তি দাস, কল্পনা দত্ত প্রমুখের অবদান চিরস্মরণীয় ।

স্বাধীন ভারতের পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে ও নারীদের অবদান চিরস্মরণীয় যেমন চিপকো আন্দোলনের গৌরী দেবী নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনের মেধা পাটেকর প্রভৃতি ।

উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ গুলি হল-

  1.  নীরা দেশাইয়ের উওম্যান ইন মডার্ন ইন্ডিয়া’
  2. জেরাল্ডিন ফোর্বসের ‘উইমেন ইন মর্ডান ইন্ডিয়া’
  3. কমলা ভাসিনের ‘হোয়াট ইজ পেট্রিয়ার্কি’ প্রভৃতি

১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে ‘আন্তজার্তিক নারীবর্ষ’ এবং ১৯৭৫-১৯৮৫-এর দশকে ‘নারীদশক’ হিসেবে পালিত হয়েছে। 

ইতিহাস চর্চায় সরকারি নথিপত্রের ভূমিকা

 

সরকারের বিভিন্ন আদেশ, উদ্যোগ, পদক্ষেপ, প্রতিবেদন প্রভৃতির নথিপত্রকেই সরকারি নথিপত্র বলে । এইসব নথির মাধ্যমে ঔপনিবেশিক শাসন আমল থেকে আধুনিক ভারত ইতিহাসের বিভিন্ন  চর্চা সম্ভব হয়। দিল্লির জাতীয় মহাফেজখানায় এরকম অজস্র নথি রয়েছে।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান রহস্য সম্পর্কে নানান তথ্য সরকারি নথিপত্র থেকেই জানা সম্ভব হয়েছে । আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে এই উপাদানগুলি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।

১৯০৫ এর ২রা ফেব্রুয়ারি ভারত সচিব জন ব্রোডরিখকে লেখা লর্ড কার্জনের চিঠি অনুযায়ী জানা যায় বাংলায় ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়, সেই উদ্দেশ্যেই বাংলা ভাগ করা হয়েছিল। এই ভাবেই আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চায় এই সমস্ত উপাদানগুলির বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

যেমন ব্রিটিশ সরকারকে দেওয়া গান্ধীজীর 93 টি চিঠি, গান্ধীজিকে দেওয়া 48 টি চিঠি, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির চিঠিপত্র লর্ড মেকলের  চিঠিপত্র প্রভৃতির  উল্লেখ পাওয়া যায়।

ইতিহাস চর্চায় আত্মজীবনী এবং স্মৃতিকথা

 

সমকালীন ইতিহাস তথা বর্তমানের আত্মজীবনী একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক উপাদান ।

কয়েকটি আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থ হল-

  • বিপিনচন্দ্র পালের লেখা ‘সত্তর বৎসর’
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘জীবনস্মৃতি’
  • সরলাদেবী চৌধুরানির লেখা ‘জীবনের ঝরাপাতা
  • মহাত্মা গান্ধির লেখা ‘দ্য স্টোরি অব মাই এক্সপেরিমেন্ট উইথ টুথ
  • সুভাষচন্দ্র বসুর লেখা ‘অ্যান ইন্ডিয়ান পিলগ্রিম’ (অসমাপ্ত)
  •  জওহরলাল নেহরুর লেখা ‘অ্যান অটোবায়োগ্রাফি
  • ড. রাজেন্দ্র প্রসাদের লেখা ‘আত্মকথা প্রভৃতি

এছাড়া নিরোদ সি চৌধুরীর ‘অটোবায়োগ্রাফি অব অ্যান আননোন ইন্ডিয়ান‘, মুজাফ্ফর আহমেদের ‘আমার জীবন ও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি’ প্রভৃতি আত্মজীবনী উল্লেখ্যযোগ্য ।

এছাড়াও মণিকুন্তলা সেনের ‘সেদিনের কথা’, দক্ষিণারঞ্জন বসুর ‘ছেড়ে আসা গ্রাম’, প্রভাষচন্দ্র লাহিড়ীর ‘পাক ভারতের রূপরেখা’ প্রভৃতি গ্রন্থ থেকে আধুনিক ভারতের ইতিহাসের প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।

বিপিনচন্দ্র পালের গ্রন্থ সত্তর বৎসর

 

বিপিনচন্দ্র পালের সত্তর বৎসর গ্রন্থে তিনি বিপ্লবী ভাবধারার ভিত্তিতে তৎকালীন সময়ের ইতিহাস বিশ্লেষণ করেছেন।

এই গ্রন্থে তৎকালীন সময়ের কলকাতা, ব্রাহ্ম সমাজের ইতিহাস, ধর্মভীরু বাঙালির জাতীয়তাবাদের দীক্ষা গ্রহণের ইতিহাস ফুটে ওঠে।

এই গ্রন্থের দ্বারা বিপিনচন্দ্র পালের বংশ পরিচয় তার বাল্যকাল স্কুলের পর, উচ্চশিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশ্যে কলকাতায় আগমন, ব্রাহ্মসমাজে যোগদান, স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য রাজনৈতিক আন্দোলনে যোগদান, এমনকি শিবনাথ শাস্ত্রী, আনন্দমোহন বসু ও সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সান্নিধ্যে আসার কথাও জানিয়েছেন।

রবীন্দ্র ঠাকুরের জীবনস্মৃতি গ্রন্থ

রবীন্দ্র ঠাকুরের জীবনস্মৃতি গ্রন্থ  :- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মজীবনী ‘জীবনস্মৃতি’ ভারতের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলের সমকালীন সমাজের ইতিহাস হিসেবে জীবনস্মৃতি রচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাঙালির চেতনার উন্মেষ পর্বের জীবনস্মৃতি সৃষ্টি। এই রচনায় স্বদেশী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ঠাকুরবাড়ির এবং নিজের অভিজ্ঞতা লিখেছেন।

এই রচনায় রাজনারায়ণ বসু, নবীনচন্দ্র সেন প্রমুখ এবং জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের ও রাজনারায়ণ বসুর  সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্বাদেশিকতার সভা, স্বদেশী দেশ্লাই কারখানা , কাপড়ের কল প্রতিষ্ঠা যুবকদের উদ্যোগ প্রভৃতির উল্লেখ পাওয়া যায়.

জীবনের ঝরাপাতা

 

জীবনের ঝরাপাতা গ্রন্থটি স্বাধীনতা সংগ্রামের সৈনিক সরলা দেবী চৌধুরানীর আত্মজীবনী। সরলা দেবী স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য সহিংস বিপ্লব অবলম্বন করেছিলেন।

এই গ্রন্থে সাধারণ নীলচাষী খেটে খাওয়া মানুষদের ওপর ব্রিটিশদের অত্যাচার দেশের অর্থনৈতিক শোষণ এ বিষয়ে উল্লেখ আছে পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ক্ষেত্রে কিভাবে ঠাকুরবাড়ির শিশুরা অভ্যস্ত হত, সেসব তথ্য দেওয়া রয়েছে।

See also  বীজগণিত Bijgonit Class 10 Maths WBBSE Notes Suggestions

‘জীবনের ঝরাপাতা’ দ্বারা সরলা দেবীর লক্ষীর ভান্ডার গঠন করা এবং ভারতে স্ত্রী মহামন্ডল প্রতিষ্ঠা করার কথা জানা যায়।

ইতিহাস চর্চায় চিঠিপত্রের ভূমিকা

 

ইতিহাসের বিভিন্ন উপাদান হিসেবে  কিছু গুরুত্বপুর্ণ চিঠিপত্র হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বিভিন্ন চিঠিপত্র, প্রমথ চৌধুরীর পত্রাবলি ।

তবে আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় চিঠিপত্রের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ্য হল ‘লেটার্স ফ্রম আ ফাদার টু হিজ ডটার’। চিঠিতে তিনি পৃথিবীর উৎপত্তি, জীবজন্ধুর আবির্ভাব, আদিম মানুষের বিবর্তন, সমাজ-সভ্যতা-রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠা ও বিকাশ, ধর্মীয় চেতনার উদ্ভব, ভারতে আর্যদের আগমন, রামায়ণ-মহাভারতের যুগ-সহ বিশ্ব ইতিহাসের নানা বিষয় সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন । এসব চিঠিপত্র আধুনিক কালের ইতিহাস রচনার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে উঠেছে ।

ইতিহাস চর্চায় সাময়িক পত্র ও সংবাদপত্রের অবদান

 

প্রতিবেদন সবসময় নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে রচিত হয় তা নয় বরং সাধারণ জনমতেরও প্রতিফলন সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্রে দেখা যায়। এগুলি থেকে ব্রিটিশ ভারতের সমাজ, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, ব্রিটিশদের অত্যাচারী শাসননীতি, ভারতীয়দের প্রতিরোধ প্রভৃতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় ।

এরকম  কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র হল—

  • হিকি-র ‘বেঙ্গল গেজেট’ বা ‘হিকির গেজেট’ (ভারতের প্রথম সাপ্তাহিক সংবাদপত্র),
  •  মার্শম্যানের ‘দিগদর্শন’ ও ‘সমাচার দর্পণ’
  • রামমোহন রায় সম্পাদিত ‘সংবাদ কৌমুদী ও ‘মিরাত্-উল্-আখবর্’
  • নব্যবঙ্গ গোষ্ঠীর উদ্যোগে প্রকাশিত ‘জ্ঞানান্বেষণ’
  • দেবেন্দ্র নাথ ঠাকুর রচিত ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’
  • ঈশ্বর গুপ্তের “সংবাদ প্রভাকর’
  • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টপাধ্যায়ের ‘বঙ্গদর্শন’
  • দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ-র ‘সোমপ্রকাশ’
  • হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’
  • কৃয়কুমার মিত্র সম্পাদিত ‘সঞ্জীবনী’
  • বিপিনচন্দ্র পাল সম্পাদিত ‘‘ইয়ং ইন্ডিয়া’ ও ‘ইন্ডিয়ান মিরর্’
  • সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘ বেঙ্গলি’
  • অরবিন্দ ঘোষ সম্পাদিত ‘বন্দেমাতরম্’ প্রভৃতি

বঙ্গদর্শন পত্রিকা

 

বঙ্গদর্শন পত্রিকাটির জনপ্রিয়তা ছিল অপরিসীম। এই পত্রিকাটির দ্বারা তৎকালীন সময়ে বাংলায় ইংরেজ সরকার ও জমিদারদের শোষণ, সাধারণ মানুষের অবস্থা , রাজনীতি , সাহিত্য, সামাজিক পরিস্থিতি প্রভৃতি সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।

প্রথম সমাজতান্ত্রিক চিন্তা ভাবনার আঁতুড়ঘর ছিল এই পত্রিকাটি। আবার এই পত্রিকাতেই আনন্দমঠ উপন্যাস এবং বন্দেমাতরম সঙ্গীতটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।

তৎকালীন সময়ে বাঙালির জীবনধারার বাহক বঙ্গদর্শন পত্রিকাটি।

সোমপ্রকাশ পত্রিকা

 

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ সম্পাদনায় সোমপ্রকাশ পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়।  এটি একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা। পত্রিকাটি প্রতি সোমবার প্রকাশিত হওয়ার কারণেই এর নাম সোমপ্রকাশ। এটি ছিল বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম রাজনৈতিক পত্রিকা।

পত্রিকাটির উদ্দেশ্য হলো দেশবাসীকে সচেতন করা ইংরেজদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আবার বিধবা বিবাহ প্রচলন ও স্ত্রী শিক্ষা প্রসারে তৎকালীন সমাজের ভাবনা চিন্তায় সোমপ্রকাশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।

SOLVED QUESTIONS & ANSWERS of ইতিহাসের ধারণা Itihaser Dharona

1 MARKS QUESTIONS of ইতিহাসের ধারণা Itihaser Dharona

১. “ সোম প্রকাশ” পত্রিকা কে সম্পাদনা করেন ?

উত্তর-  দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ।

২. কে ‘বঙ্গদর্শন’ সাময়িকপত্র প্রবর্তন করেন?

উত্তর-  বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

৩. ভারতে ফুটবল খেলার প্রবর্তক কারা ছিলেন?

উত্তর- ইংরেজরা।

৪. সত্তর বৎসর কার আত্মজীবনী ?

উত্তর- বিপিন চন্দ্র পাল-এর ।

৫. কত সালে বঙ্গদর্শন প্রকাশিত হয়?

উত্তর- ১৮৭২ সালে।

৬. ‘ মায়ের দেওয়া মোটা কাপড় ‘ গানটি কে রচনা করেন?

উত্তর- রজনীকান্ত সেন ।

৭. কত সালে ‘ দ্যা আনাল্যাস ‘ পত্রিকা প্রকাশিত হয়?

উত্তর- ১৯২৮ সালে।

৮. গৌতম খেলাধুলা বিষয়ক গ্রন্থটির নাম কি?

উত্তর- বাপি বাড়ি যা ।

৯. ‘একেই বলে শুটিং’ কার রচনা?

উত্তর- সত্যজিৎ রায়  ।

১০. প্রথম ভারতীয় ফুটবল ক্লাব কোনটি ?

উত্তর- কলকাতা এফ সি।

Multiple Choice Questions – 1 marks of ইতিহাসের ধারণা Itihaser Dharona

ভারতে ফুটবল খেলার প্রবর্তক ছিল-

  1. ওলন্দাজরা
  2. ইংরেজরা
  3. পর্তুগীজরা
  4. মিশরীয়রা

Answer: ইংরেজরা   

ভারতীও নিম্ন বর্গীও ইতিহাস চর্চার স্রষ্টা ছিলেন-

  1.   ডঃ সুরেন্দ্রানাথ সেন
  2.   ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদার
  3. ডঃ রণজিৎ গুহ
  4. ডঃ নিধিরাম সেন

Answer: ডঃ রণজিৎ গুহ

‘ইতিহাস একটি বিজ্ঞান- কম ও নয়, বেশি ও নয় ‘ – বলেছিলেন-

  1. বিউরি
  2. এইচ. কার
  3. মার্ক ব্লখ
  4. জুবিলাইন

Answer:   বিউরি

কেকের দেশ নামে ডাকা  হয়-

  1. ফ্রান্সকে
  2. স্কটল্যান্ডকে
  3. আয়ারল্যান্ডকে
  4. ভারতকে

Answer: স্কটল্যান্ডকে

রেজুলেশন অনুযায়ী বিধবা বিবাহ আইন পাশ হয়-

  1. ১২
  2. ১৮
  3. ১৫
  4. ১১

Answer: ১৫

মোহনবাগান আই.এফ.এ শিল্ড জয়ী হয় –

  1. ১৯১৩খ্রিস্টাব্দে
  2. ১৯২০খ্রিস্টাব্দে
  3. ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে
  4. ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে

Answer: ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে

‘Twenty Two Yards to Freedom’  এর লেখক ছিলেন-

  1. কপিল দেব
  2. টনি ম্যাথন
  3. বোরিয়া মজুমদার
  4. আশীষ নন্দী

Answer: বোরিয়া মজুমদার

পৃথিবীর সবথেকে পুরনো খেলা হল-

  1. ক্রিকেট
  2. কুস্তি
  3. হকি
  4. মানাকালা

Answer:  মানাকালা

সত্যজিত রায় অস্কার জিতেছিলেন-

  1. ফেলুদা
  2. পথের পাঁচালি
  3. চিড়িয়াখানা
  4. গুপি বাঘা ফিরে এল

Answer: পথের পাঁচালি

বাইশ গজের খেলা হিসেবে পরিচিত

  1. ফুটবল
  2. সকার
  3. ক্রিকেট
  4. টেনিস

Answer: ক্রিকেট

Short Questions – 2-3 marks of ইতিহাসের ধারণা Itihaser Dharona

১. ইতিহাস চর্চায় পরিবেশের গুরুত্ব কি?

উত্তর- আধুনিক কালের ইতিহাসে পরিবেশের সংকটময় দিক, বিপর্যয়, তার ভয়াবহতা প্রভৃতি সম্পর্কে মানুষকে জানানোই হচ্ছে ইতিহাস চর্চায় পরিবেশের গুরুত্ব ।

২. নতুন সামাজিক ইতিহাস বলতে কি বোঝ?

উত্তর –  ১৯৬০ এর দশক থেকে অ্যানাল গোষ্ঠীর উদ্যোগে সমাজের সাধারন মানুষের জীবন জিবিকা, ক্রিয়া কলাপ নিয়ে ইতিহাসে যে আলোচনা  করা  হয় তাকে  নতুন সামাজিক ইতিহাস বলা হয়।

৩. ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে  কেন ‘ সোম প্রকাশ ‘ পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায় ?

উত্তর – ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে দেশীয়  ভাষায় প্রকাশিত  পত্রপত্রিকা গুলির ওপর লর্ড লিটন ভার্নাকুলার অ্যাক্ত এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন জারি করা হয় । এই আইনের জন্য  ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে  ‘ সোম প্রকাশ ‘ পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায় ।

৪.  স্থানীয় ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব কি ?

উত্তর-  কোন ছোট ঘটনার বিবরন হিসেবে স্থানীয় ইতিহাস চর্চাকে  গুরুত্ব দেওয়া হয়।

৫. খেলাধুলার ইতিহাস চর্চার সাথে যুক্ত দুজন ঐতিহাসিকের নাম লেখ।

উত্তর-   আশিস নন্দী ও বোরিয়া মজুমদার ।

৬. ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসেবে স্মৃতিকথা ও আত্মজীবনীকে কিভাবে ব্যাক্ত করা হয় ?

উত্তর- স্মৃতিকথা ও আত্মজীবনী হল কোন বিশিষ্ট ব্যাক্তি বর্গের সারা জীবনের অভিজ্ঞ্যতা যা ঐতিহাসিক উপাদান হিসেবে কাজ করে। এছাড়া সমকালীন রাজনৈতিক, সামাজিক উপাদান হিসেবেও কাজ করে ।

৭. খেলা ধুলার ইতিহাস বিষয়ক দুটি ঐতিহাসিক গ্রন্থের নাম লেখ ।

উত্তর – গৌতম  ভট্টচার্জের  ‘ বাপি বাড়ি যা’ এবং কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর ‘ খেলা যখন ইতিহাস’।

৮. ঐতিহাসিক উপাদান ‘ চিঠিপত্র’ — গুরুত্ব লেখ ।

উত্তর – সরকারি দপ্তর, কর্মচারী ও অফিস কাচারির নানান চিঠিপত্র আধুনিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয় ।

৯. ইতিহাসে ‘ জীবনের ঝরাপাতা’ গ্রন্থটির ভুমিকা কি?

উত্তর-  জীবনের ঝরাপাতা গ্রন্থতিতে তৎকালিন সময়ের ঠাকুর বাড়ির অন্দরমহল, ঠাকুর পরিবারের স্বাদেশিকতার পরিচয় এবং তাদের ব্যাক্তিগত জীবন সম্পর্কেও নানান তথ্যের ধারনা পাওয়া যায়।

১০. কবে, কিভাবে মোহনবাগান আই. এফ. এ শিল্ড জয় করে?

উত্তর- ১৯১১ সালে ব্রিটিশদের ইয়র্ক ক্লাবকে হারিয়ে মোহনবাগান আই. এফ. এ শিল্ড জয় করে।

long questions – 5 marks of ইতিহাসের ধারণা Itihaser Dharona

error: Content is protected !!
Scroll to Top

আজকেই কেনো পরীক্ষার শর্ট নোটস

এখন সহজে পরীক্ষার প্রস্তুতি নাও – আজকেই ডাউনলোড করো পিডিএফ বা বই অর্ডার করো আমাজন বা ফ্লিপকার্ট থেকে