fbpx

Chapter 09- মানচিত্র ও স্কেল Maanchitra O Scale Geography Bhugol Subject WBBSE Class 9

আপনি এখানে শিখবেন এই অধ্যায়ে এবং বিষয়ের ফাউন্ডেশন অংশটা, এই বিষয়টিকে সহজ-সরলভাবে পড়িয়েছেন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ভিডিও লেকচার এর মাধ্যমে এবং এই পুরো অধ্যায়কে চার ভাগে খন্ডিত করে আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে

  • প্রথম খন্ডে আপনি শিখবেন ফাউন্ডেশন অংশটা যেখানে অধ্যায়ের ব্যাপারে আপনাকে বোঝানো হয়েছে তার মানে definitions,basics  গুলো সহজভাবে.  এবং এটাকে আপনি বুঝতে পারবেন যেটা আপনাকে পরীক্ষার জন্য ক্রীপের করতে সাহায্য করবে
  • দ্বিতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন MCQ মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন যেটা সাধারণত এক Marks’er আসে পরীক্ষায়
  • তৃতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন শর্ট অ্যানসার এবং কোয়েশ্চেন, যেটা আপনার পরীক্ষার সাজেশন মধ্যে পড়ে এবং এটা 3-4 marks’er  প্রশ্ন আসে আপনার পরীক্ষা
  • চতুর্থ মডিউল আপনি শিখবেন লং আনসার এবং questions যেটা সাধারণত 5-6 marks er হয়

আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন যাতে কি আপনাকে আমরা সাহায্য করতে পারি

মানচিত্রের ভূমিকা :

মানচিত্র বা ম্যাপ শব্দটি ল্যাটিন শব্দ ‘ম্যাপা’ থেকে এসেছে যার অর্থ ‘কাপড়’ ।

একটি মানচিত্র সমগ্র পৃথিবী বা এর যেকোনো অঞ্চলের একটি দ্বি-মাত্রিক জ্যামিতিক চিত্র ।

ভূপৃষ্ঠের কোনো নির্দিষ্ট অংশের বিভিন্ন উপাদান ও বিষয়কে যে সমতল কাগজের ওপর জ্যামিতিকভাবে চিত্রিত করে উপস্থাপিত করা হয় তাকে মানচিত্র বলে । পৃথিবী বা পৃথিবীর কোনো অংশের দ্বিমাত্রিক জ্যামিতিক উপস্থাপন হলো মানচিত্র ।

ভূপৃষ্ঠের কোনো অংশকে সমতল কাগজের ওপর প্রকৃতভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব নয় সেক্ষত্রে স্কেলের সাহায্যে পৃথিবীর কোনো অংশকে ছোট করে দেখানো হয় । প্রকৃত পৃথিবী ও মানচিত্রে অঙ্কিত অনুরূপ পৃথিবীর মধ্যে স্কেল সেতুবন্ধনের কাজ করে ।

মানচিত্র নির্দিষ্ট গাণিতিক ও জ্যামিতিক নিয়ম অনুযায়ী আঁকা হয় । মানচিত্রের অঙ্কনবিদ্যাকে ‘কার্টোগ্রাফি’ এবং অঙ্কনের পদ্ধতিসমূহকে ‘কার্টগ্রামস’ বলে ।

মানচিত্র তৈরির ইতিহাস : 

বিশ্বের প্রাচীনতম মানচিত্রটি ২৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মিশরের ব্যাবিলনে রাজস্ব সংগ্রহের কারণে তৈরি হয়েছিল ।

প্রাচীন গ্রীক পণ্ডিতরা ছিলেন আধুনিক মানচিত্র তৈরির পূর্বপুরুষ ।  প্রাচীন গ্রীক পণ্ডিত ক্লডিয়াস টলেমি (৯০-১৬৮ খ্রিস্টাব্দ) পৃথিবীর যে মানচিত্র তৈরী করেন ।

মানচিত্রের উপাদান : 

সমস্ত মানচিত্র বিভিন্ন প্রকার বিষয়, তথ্য ও পরিসংখ্যান নিয়ে তৈরী করা হয় । মানচিত্রের বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেতে গেলে এই সকল বিষয়কে অনুধাবন করতে হবে । সেক্ষেত্রে কতকগুলো উপাদানের সমন্বয়ে মানচিত্র তৈরী করা হয় যার ফলে মানচিত্র পাঠ সহজতর হয়ে ওঠে । উপাদানগুলি হলো –

  1. উপস্থাপিত অঞ্চলের অবস্থানের জন্য মানচিত্রে অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার জাল অঙ্কন 
  2. বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায় মানচিত্রের শিরোনাম  দ্বারা
  3. উপস্থাপিত অঞ্চলের বিভিন্ন দিকের ধারণা পাওয়া যায়  মানচিত্রে নির্দেশিত দিকচিহ্ন  দ্বারা
  4. মানচিত্রের নির্দিষ্ট দুটি স্থানের দূরত্ব জানা যায়  মানচিত্রে ব্যবহৃত স্কেল  দ্বারা
  5. মানচিত্রে ব্যবহৃত প্রতীক চিহ্ন, রং, সংকেত প্রভৃতির অর্থ বুঝতে সাহায্য করে  মানচিত্রের নির্দেশিকা

স্কেল :

স্কেল, মানচিত্র অঙ্কনের অপরিহার্য অঙ্গ । ভূগোলশাস্ত্রে ভূপৃষ্ঠের প্রকৃত দূরত্ব ও কাগজের ওপর অঙ্কিত সমপরিমাণ দূরত্বের অনুপাত বোঝাতে স্কেল ব্যবহৃত হয় ।

পৃথিবীপৃষ্ঠে দুটি স্থানের প্রকৃত দূরত্ব এবং মানচিত্রে উপস্থাপিত ওই দুটি স্থানের মধ্যে দূরত্বের অনুপাতকে স্কেল বলে ।

সুতরাং, স্কেল = মানচিত্রের দুটি নির্দিষ্ট স্থানের মধ্যে দূরত্ব : পৃথিবীপৃষ্ঠে ওই দুটি স্থানের প্রকৃত দূরত্ব ।

মানচিত্র অঙ্কনের সময় স্কেল অনুসারে পৃথিবীপৃষ্ঠকে নির্দিষ্ট অনুপাতে ছোটো করে নিয়ে সমতল কাগজের ওপর আঁকা হয় এবং স্কেলের সাহায্যে জানা যায় পৃথিবীপৃষ্ঠকে কতগুণ ছোটো করা হয়েছে ।

মানচিত্র :

স্কেল অনুসারে সমগ্র পৃথিবী কিংবা পৃথিবীর কোনো ক্ষুদ্র অংশের জ্যামিতিকভাবে দ্বিমাত্রিক উপস্থাপনা হলো মানচিত্র । স্কেলের অনুপাতে মানচিত্র ছোটোবড়ো হয় । যেমন – ছোটো স্কেলের ভারতের মানচিত্রে পশ্চিমবঙ্গকে ছোটো দেখায় কিন্তু বড়ো স্কেলের পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্রে বিভিন্ন জেলা শহর ভালোভাবে দেখানো হয় ।

মানচিত্রের প্রকারভেদ : মানচিত্রের স্কেল, মানচিত্রের ব্যবহারের উদ্দেশ্য বা কার্যকারিতা এবং বিষয়বস্তুর উপর ভিত্তি করে মানচিত্রগুলিকে তিন প্রকারে বিভক্ত করা হয়, যথা-

  • স্কেল অনুযায়ী মানচিত্রের শ্রেণীবিভাগ
  • ব্যবহারের উদ্দেশ্য বা কার্যকারিতা অনুযায়ী  মানচিত্রের শ্রেণীবিভাগ
  • বিষয়বস্তু অনুযায়ী  মানচিত্রের শ্রেণীবিভাগ

স্কেল অনুযায়ী মানচিত্রের শ্রেণীবিভাগ : 

মানচিত্র অঙ্কনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট স্কেল অনুপাতে ভূপৃষ্ঠের কোনো অংশকে ছোটো বা বড়ো করে দেখানো
হয় । স্কেলের এই ভিত্তি অনুযায়ী মানচিত্রকে তিনভাগে ভাগ করা হয় –

    1. ক্ষুদ্র স্কেলের মানচিত্র : পৃথিবী বা পৃথিবীর কোনো অংশকে স্কেল অনুপাতে ছোট করে দেখানো হয় যে মানচিত্রে, তাকে ক্ষুদ্র স্কেলের মানচিত্র বলে । অ্যাটলাস, দেয়াল মানচিত্র, গ্লোব প্রভৃতি ক্ষুদ্র স্কেলের মানচিত্র । ১ : ১,২৫,০০০,০০ স্কেলে অঙ্কিত মানচিত্রে উপস্থাপিত ভূমিভাগের বিশদ বিবরণ দেওয়া সম্ভব নয় ।
    2. মাঝারি স্কেলের মানচিত্র : ১ : ৫০,০০০ স্কেলে প্রকাশিত মানচিত্রকে ভারতীয় সর্বেক্ষণ বিভাগ (Survey of India) মাঝারি স্কেলের মানচিত্র হিসাবে অভিহিত করেছেন । এই মানচিত্রে ভূমিভাগের উপাদান কিছুটা বিশদে উপস্থাপন করা হয় ।
    3. বৃহৎ স্কেলের মানচিত্র : ভূপৃষ্ঠের কোনো ক্ষুদ্র অংশ বা স্থানকে স্কেল অনুপাতে অনেকগুণ বড়ো করে যে মানচিত্রে দেখানো হয় তাকে বৃহৎ স্কেলের মানচিত্র বলে । ১ : ৫০,০০০-এর কম স্কেলে উপস্থাপিত মানচিত্রে প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক উপাদানসমূহের বিবরণ থাকে । এই মানচিত্রগুলি হলো –
      1. মৌজা মানচিত্র বা ক্যাডাস্ট্রাল মানচিত্র : ‘Cadastral’ শব্দটি ফরাসি শব্দ ‘Cadestre’ থেকে এসেছে যার অর্থ ‘ভূসম্পত্তি নথিভুক্তকরণ’ । যে মানচিত্র ভূসম্পত্তি নথিভুক্তিকরণের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয় তাকে ক্যাডাস্ট্রাল মানচিত্র বলে । এই মানচিত্র মৌজা নাম পরিচিত কারণ ভারতের সর্বনিম্ন প্রশাসনিক একক মৌজাকে এই মানচিত্রে উপস্থাপন করা হয় । সাধারণত ১৬ ইঞ্চিতে ১ মাইল স্কেলে এই মানচিত্র আঁকা হয় । এই ধরনের মানচিত্র সাধারণত প্রশাসনিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয় ।
      2. ভূসংস্থানিক মানচিত্র বা টপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্র : যে মানচিত্রে প্রতীক চিহ্ন, সংকেত, রং ও রেখার মাধ্যমে কোনো অঞ্চলের অঞ্চলের প্রাকৃতিক (ভৌগোলিক, নদী, জলাশয়, উদ্ভিদ এবং প্রাণী) এবং সামাজিক (জনবসতি, পরিবহন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা) উপাদানসমূহ উপস্থাপন করা হয়, তাকে   টপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্র বলে । এই ধরনের মানচিত্র একটি নির্দিষ্ট এলাকা সতর্কতার সাথে জরিপ করে তৈরি করা হয়। এই মানচিত্রটি সাধারণত ১ : ১,২৫,০০০ স্কেলে  এবং ১ : ৫০,০০০ স্কেলে আঁকা হয় ।
      3. ত্রিমাত্রিক মডেল : দৈর্ঘ্য-প্রস্থ-বেধের সমন্বয়ে পৃথিবীরপৃষ্ঠের কোনো অঞ্চলের ক্ষুদ্র ভূমিরূপ, নদনদী, সাগর-মহাসাগরের তলদেশ পৃবৃতি দেখানোর যে মডেল তৈরী করা হয় তাকে ত্রিমাত্রিক মডেল বলে ।

ব্যবহারের উদ্দেশ্য বা কার্যকারিতা অনুযায়ী মানচিত্রের শ্রেণিবিভাগ : 

ব্যবহারের উদ্দেশ্য কার্যকারিতার উপর ভিত্তি করে মানচিত্রটিকে তিনটি বিভাগে বিভক্ত করা হয় ।

  • সাধারণ বিষয়ভিত্তিক মানচিত্র :  ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও সামাজিক  উপাদানের অবস্থান প্রদর্শনের জন্য যে মানচিত্র আঁকা হয়, তাকে সাধারণ বিষয়ভিত্তিক মানচিত্র বলে ।
  • নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক মানচিত্র : যে মানচিত্র কোনো ভৌগোলিক অঞ্চলের বিশেষ কোনো নির্দিষ্ট বিষয় বা থিমের ভিত্তিতে আঁকা  হয় তাকে নির্দিষ্ট বিষয় ভিত্তিক মানচিত্র বলে । জনসংখ্যা বণ্টন, জনসংখ্যার ঘনত্ব, শস্যের ঘনত্ব এবং আরও অনেক কিছু ছায়া, বিন্দু, আনুপাতিক চিহ্ন,
  • মানচিত্র চার্ট : জল ও আকাশপথে নির্দিষ্ট্য পথ ধরে যাতায়াতের উদ্দেশ্যে যে মানচিত্র তৈরি করা হয় তাকে মানচিত্র চার্ট বলে ।

বিষয়বস্তু অনুযায়ী মানচিত্রের শ্রেণীবিভাগ : 

বিষয়বস্তু অনুযায়ী মানচিত্রকে তিন ভাগে ভাগ করা হয় । যথা- প্রাকৃতিক মানচিত্র, সাংস্কৃতিক মানচিত্র, সেনাবাহিনীর মানচিত্র ।

  • প্রাকৃতিক মানচিত্র : যে মানচিত্রে প্রাকৃতিক পরিবেশের নানান বিষয় উপস্থাপিত করা হয় তাকে প্রাকৃতিক মানচিত্র বলে । প্রাকৃতিক মানচিত্র নানান ধরণের হয় যেমন –
    • ভূ-প্রাকৃতিক মানচিত্র : এই মানচিত্রে শেড, রং, রেখা প্রভৃতির মাধ্যমে ভূপ্রাকৃতিক বিভিন্ন উপাদান যেমন – পাহাড়, মালভূমি, সমভূমি, নদ-নদী উপস্থাপিত করা হয় ।
    • ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র : এই প্রকার মানচিত্রে ভূত্বকের বিভিন্ন শিলার উৎপত্তি ও ভূপৃষ্ঠে তাদের অবস্থান দেওয়া থাকে ।
    • জলবায়ু মানচিত্র : জলবায়ুর বিভিন্ন উপাদানসমূহ যে মানচিত্রে পৃথিবীর বা কোনো অঞ্চলের ভিত্তিতে প্রদর্শিত থাকে ।যেমন – উষ্ণতা, চাপ, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহের দিক ইত্যাদি ।
    • আবহাওয়া মানচিত্র : এই মানচিত্রে আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানের অবস্থাসমূহ নানান ধরণের কোডের মাধ্যমে দেখানো থাকে ।
    • স্বাভাবিক উদ্ভিদ মানচিত্র : এই মানচিত্রে সমগ্র পৃথিবী বা যে কোনো অঞ্চলের স্বাভাবিক উদ্ভিদের আঞ্চলিক বন্টন দেখানো হয় ।
    • মৃত্তিকা মানচিত্র : সমগ্র পৃথিবীর বা কোনো অঞ্চলের বিভিন্ন ধরনরে মৃত্তিকার বন্টন এই মানচিত্রে দেখানো হয় ।
  • সাংস্কৃতিক মানচিত্র : মানচিত্রে সাংস্কৃতিক উপাদানের বিভিন্ন বিষয়বস্তু উপস্থাপন করা থাকে ।
    • জনসংখ্যা মানচিত্র : এই ধরণের মানচিত্র জনসংখ্যা বন্টন, জনসংখ্যার ঘনত্ব, পরিব্রাজন প্রভৃতি বিষয় দেখানো হয় ।
    • ভাষা মানচিত্র : সমগ্র পৃথিবী বা যে কোনো অঞ্চলের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের আঞ্চলিক বন্টন উপস্থাপন করা হয় ।
    • সম্পদ মানচিত্র : প্রতীক চিহ্ন, শেড, রং বা রেখা প্রভৃতির মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবী বা যে কোনো অঞ্চলের বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক সম্পদের আঞ্চলিক বন্টন দেখানো হয় ।
    • রাজনৈতিক মানচিত্র : যে মানচিত্রে বিভিন্ন প্রশাসনিক এককের সীমানাকে (দেশ, রাজ্য, জেলা, গ্রাম পঞ্চায়েত, মৌজা)  নির্দিষ্ট করে দেখানো হয় তাকে রাজনৈতিক মানচিত্র বলে ।
  • সেনাবাহিনী মানচিত্র : দেশের সেনাবাহিনী এবং নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা ব্যবহৃত উল্লেখযোগ্য মানচিত্রের মধ্যে রয়েছে-
    • স্ট্র্যাটেজিক মানচিত্র : যে মানচিত্র কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামরিক পদক্ষেপের আগে পরিকল্পনা করতে ব্যবহৃত হয়, তাকে স্ট্র্যাটেজিক মানচিত্র বলে । ১ : ১,০০০,০০০ স্কেলে এই মানচিত্রগুলি তৈরি করা হয় ।
    • ট্যাকটিক্যাল মানচিত্র : দেশের সীমান্ত অঞ্চলের সেনাবাহিনীর কোনো ছোটো দলের মোতায়েন করার ক্ষেত্রে বা যাতায়াতের ক্ষেত্রে যে মানচিত্র ব্যবহৃত হয় তাকে ট্যাকটিক্যাল মানচিত্র বলে । ১ : ৫০০,০০০ বা তার কম স্কেলে আঁকা হয় ।
    • এয়ার মানচিত্র : বিভিন্ন প্রকার স্ট্র্যাটেজিক ও ট্যাকটিক্যাল তথ্য প্রচলিত প্রতীক চিহ্নের সাহায্যে যে মানচিত্রে অঙ্কন করা হয় তাকে এয়ার মানচিত্র বলে।

মানচিত্রের ব্যবহার ও তাৎপর্য : 

  1. পৃথিবীর কোনো অংশকে উপস্থাপিত করার জন্য ক্ষুদ্র স্কেলের মানচিত্র ব্যবহার করা হয় ।
  2. পৃথিবীর কোনো ক্ষুদ্র অঞ্চল সম্পর্কে বিশদে জানার জন্য বৃহৎ আকৃতির মানচিত্র ব্যবহার করা হয় ।
  3. শিক্ষার্থীদের ভূগোলপাঠ অনুশীলনের ক্ষেত্রে ত্রিমাত্রিক মডেলের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
  4. সাধারণ বিষয়ভিত্তিক মানচিত্রের সাহায্যে ভূপ্রকৃতি, নদনদী, রাস্তাঘাট প্রভৃতির প্রদর্শন এবং কোনো ভৌগোলিক অঞ্চলের বিশেষ কোনো বিষয়ের উপস্থাপনের ক্ষেত্রে ।
  5. গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কাজে ক্যাডাস্ট্রাল বা মৌজা মানচিত্র এবং প্রাকৃতিক উপাদানের সঙ্গে অর্থ-সামাজিক উপাদানের সম্পর্ক নির্ধারণের ক্ষেত্রে টপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্র ব্যবহার করা হয় ।
  6. একটি দেশের বা অঞ্চলের রাজনৈতিক অবস্থা, সম্পদের বণ্টন, জনসংখ্যা এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব চিত্রিত করতে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক মানচিত্র ব্যবহার করা হয় ।
  7. জাতীয় প্রতিরক্ষায় সেনাবাহিনীকে সাহায্য করার জন্য স্ট্র্যাটেজিক ও ট্যাকটিক্যাল মানচিত্রের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।

মানচিত্র স্কেল : 

স্কেল মানচিত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান । স্কেল ছাড়া মানচিত্র অঙ্কন সম্ভব না । নির্দিষ্ট স্কেল অনুপাতে ভূপৃষ্ঠের কোনো অংশকে ছোটো বা বড়ো করে তার প্রতিরূপ মানচিত্রে উপস্থাপন করা হয় ।

মানচিত্রে স্কেল প্রকাশের পদ্ধতি : স্কেল সাধারণত দুটি পদ্ধতিতে প্রকাশ করা হয়

    1. ব্রিটিশ পদ্ধতি বা FPS পদ্ধতি : এই পদ্ধতির দ্বারা মানচিত্রে দুটি নির্দিষ্ট স্থানের দূরত্বকে ইঞ্চিতে এবং ভূপৃষ্ঠে ওই দুটি স্থানের দূরত্বকে ফুট, গজ, মাইল প্রভৃতি এককে প্রকাশ করা হয়, এই এককগুলিকে ইম্পিরিয়াল একক বলা হয় । যেমন- ১” তে ১ মাইল অর্থাৎ মানচিত্রে ১ ইঞ্চি দূরত্বে এবং পৃষ্ঠে ১ মাইল প্রকৃত দূরত্বকে বোঝায় ।
    2. ফ্রেঞ্চ পদ্ধতি বা CGS পদ্ধতি : এই পদ্ধতি দ্বারা, একটি মানচিত্রের দুটি নির্দিষ্ট স্থানের  মধ্যে দূরত্বকে সেন্টিমিটার (সেমি) দ্বারা প্রকাশ করা হয় এবং ভূমিতে সেই দুটি স্থানের  প্রকৃতদূরত্বকে  কিলোমিটার (কিমি), মিটার (মিটার) এ প্রকাশ করা হয় ।  মানচিত্রে প্রকাশিত এই একককে মেট্রিক একক ০ বলা হয় ।

স্কেলের প্রকারভেদ :

মানচিত্রে প্রকাশ করার ভঙ্গির ভিত্তিতে স্কেলকে প্রধানত তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়।

  • বিবৃতিমূলক স্কেল (STATEMENT SCALE) : মানচিত্রে স্কেল যখন কথায় লিখে বা বিবৃতির মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তাকে বিবৃতিমূলক স্কেল বলে । এই ধরনের স্কেলে বামদিকের সংখ্যা মানচিত্রের দূরত্ব এবং ডানদিকের সংখ্যা ভূমিভাগের প্রকৃত দৃূরত্বকে নির্দেশ করে ।
    যেমন – মানচিত্রের স্কেল –  ১ সেমিতে ২ কিমি। অর্থাৎ মানচিত্রে ১. সেন্টিমিটার দূরত্বে ভূমিভাগের ২ কিলোমিটার প্রকৃত দূরত্বকে নির্দেশ করে।
  • ভগ্মাংশসূচক স্কেল (representative fraction) :  মানচিত্র দূরত্ব এবং ভূমিভাগের প্রকৃত দূরত্বের অনুপাতকে ভগ্মাংশে প্রকাশ করা হলে তাকে সংখ্যামূলক অনুপাতের মাধ্যমে প্রকাশিত স্কেল বলে। সাধারণত এই ধরনের স্কেলকে ভগ্মাংশসূচক স্কেল বা স্কেলসূচক ভগ্নাংশ বা সংখ্যাসূচক ভগ্মাংশ বা প্রতিভূ ভগ্নাংশ বলা হয়ে থাকে ।  ইংরেজিতে এই স্কেল representative fraction বা সংক্ষেপে R.F. নামে পরিচিত ।
  • লৈখিক স্কেল (GRAPHICALE ) :  যখন মানচিত্রের দূরত্ব এবং ভূমিভাগের প্রকৃত দূরত্বের অনুপাত এক বা একাধিক সরলরেখার দ্বারা অথবা লেখচিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তাকে লৈখিক স্কেল বা Graphical Scale বলে ।
    এই ধরনের স্কেল সাধারণত চার প্রকারের হয়, যথা- (a) রৈখিক স্কেল, (b) তুলনামূলক স্কেল, (c) ভার্নিয়ার স্কেল এবং (d) ডায়াগোনাল স্কেল ।

    • রৈখিক স্কেল ( Linear scale ) : মানচিত্রের দূরত্ব এবং ভূমিভাগের অনুপাতকে প্রকাশের জন্য যে স্কেলে একটি সরলরেখাকে নিদিষ্ট হিসাব অনুসারে কতকগুলি মুখ্যভাগ ও গৌণভাগে বিভিক্ত করে লেখচিত্র অঙ্কন করা হয়, তাকে রৈখিক স্কেল বলে । রৈখিক স্কেলের প্রধান অংশ  হল মুখ্যভাগ এবং মুখ্যভাগের ক্ষুদ্র অংশ হল গৌণভাগ ।
    • তুলনামূলক স্কেল : মানচিত্রের যে স্কেলে, ব্রিটিশ পদ্ধতিতে ইম্পিরিয়াল একক (ইঞ্চি, ফুট, গজ, মাইল এবং ফ্রেঞ্চ পদ্ধতিতে মেট্রিক একক (সেমি, মিটার, কিমি) উভয়ই একই সঙ্গে প্রকাশ করা হয় তাকে তুলনামূলক স্কেল বলে ।
    • ভার্নিয়ার স্কেল : এই স্কেলের সাহায্যে কোনো সরলরেখা বা বৃত্তচাপের ওপর অঙ্কিত মুখ্যস্কেলের পাশে একই সঙ্গে মুখ্যস্কেলের একক বিভাজনকারী গৌণভাগ অঙ্কন করা হয় ।
    • ডায়াগোনাল স্কেল : যে স্কেল বর্গক্ষেত্র বা আয়তক্ষেত্রের পরস্পর বিপরীত কোণদ্বয়ের সংযোজক সরলরেখা বা কর্ণের সাহায্যে আঁকা হয় তাকে ডায়াগোনাল স্কেল বলা হয়।

স্কেলের ব্যবহার এবং গুরুত্ব : মানচিত্র এবং জরিপে ব্যাপকভাবে স্কেল ব্যবহৃত হয় । যেমন-

  1. মানচিত্রে দুটি স্থানের দূরত্ব পরিমাপের দ্বারা স্কেলের সাহায্যে ভূপৃষ্ঠের ওই দুটি স্থানের মধ্যেকার প্রকৃত দূরত্ব পরিমাপ করা যায় ।
  2. যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থার মানচিত্র, রাস্তার মানচিত্র, ভুসংস্থানিক মানচিত্র এবং গবেষণার কাজে অঙ্কিত মানচিত্রে রৈখিক স্কেল ব্যবহার করা হয় ।
  3. প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক মানচিত্রের ক্ষেত্রে লৈখিক স্কেলের ব্যবহার হয় ।
  4. বিবৃতিমূলক স্কেলের ব্যবহার সাধারণত মৌজা মানচিত্রের ক্ষেত্রে হয় ।
  5. মানচিত্রের কোনো বিশাল অঞ্চলকে ছোটো করে দেখানোর জন্য ‘ছোটো স্কেলের মানচিত্র’ এবং ছোট অঞ্চলকে বড়ো করে দেখানোর জন্য ‘বড়ো স্কেলের মানচিত্র’ আঁকা হয় । এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভগ্নাংশসূচক স্কেল ব্যবহার হয় ।

SOLVED QUESTIONS & ANSWERS of মানচিত্র ও স্কেল Maanchit ra O Scale

1 MARKS QUESTIONS of মানচিত্র ও স্কেল Maanchit ra O Scale

1. যে মানচিত্রে কোনো ভৌগোলিক উপাদানের পরিমাণগত দিক প্রকাশ করা হয়, তাকে কী বলে?
Ans. পরিমাণগত মানচিত্র।

2. কর্ণীয় স্কেলে মুখ্য, গৌণ ও ______ ভাগ থাকে। (শূন্যস্থান পূরন করো)
Ans. প্রগৌণ

3. টোপোগ্রাফিকাল মানচিত্রে প্রাকৃতিক ও ______ উপাদানের পারস্পরিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হয়। (শূন্যস্থান পূরন করো)
Ans. সাংস্কৃতিক

4. দেয়াল মানচিত্র কী ধরনের মানচিত্র?
Ans. ক্ষুদ্র স্কেল মানচিত্র।

5. তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মানচিত্রকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
Ans. দুইভাগে।

6. ______ স্কেলে একটি ভাগের ভগ্নাংশকে নির্ভুলভাবে পরিমাপ করা যায়। (শূন্যস্থান পূরন করো)
Ans. ভার্নিয়ার

7. একটি বৃহৎ স্কেল মানচিত্রের উদাহরণ দাও।
Ans. মৌজা মানচিত্র।

8. সমবর্ষণ রেখার মানচিত্র হল ______। (শূন্যস্থান পূরন করো)
Ans. পরিমাণবাচক মানচিত্র

9. সমপ্রেষ রেখা সমন্বিত মানচিত্র হল একধরনের ______ মানচিত্র। (শূন্যস্থান পূরন করো)
Ans. তথ্যভিত্তিক

10. আবহাওয়া মানচিত্র একধরনের ______ মানচিত্র। (শূন্যস্থান পূরন করো)
Ans. বিষয়মূলক

multiple choice questions – 1 marks of মানচিত্র ও স্কেল Maanchit ra O Scale

1. রাজস্ব আদায়ের সবচেয়ে নীচের স্তরের প্রশাসনিক একক হল—
A. গ্রাম B. শহর C. ব্লক D. মৌজা
Ans. D

2. ভৌগোলিকদের কাছে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় মানচিত্র হল—
A. ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র B. মৌজা মানচিত্র C. রাজনৈতিক মানচিত্র D. ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র
Ans. A

3. প্রথম মানচিত্র বই প্রকাশ করেন—
A. মার্কেটর B. আর্যভট্ট C. হেকাটিয়াস D. হেরোডোটাস
Ans. A

4. চৌম্বকীয় কম্পাস নিদের্শ করে—
A. উত্তরদিক B. দক্ষিণদিক C. পূর্বদিক D. পশ্চিমদিক
Ans. A

5. গ্লোব আঁকা হয়—
A. ক্ষুদ্র স্কেল মানচিত্রে B. বৃহৎ স্কেল মানচিত্রে C. মাঝারি স্কেল মানচিত্রে D. কোনোটিই নয়
Ans. A

6. ইংরেজি ‘ম্যাপ’ কথাটি এসেছে লাতিন শব্দ—
A. ম্যাপিয়া B. ম্যাপ্পা C. ম্যাপ্পো D. ম্যাপিন থেকে
Ans. B

7. ম্যাপ্পা বলতে বোঝায়—
A. একখণ্ড কাগজ B. একখণ্ড পৃথিবী C. একখণ্ড কাপড় D. একখণ্ড মাটি
Ans. C

8. NATMO-এর সদর দপ্তর অবস্থিত –
A. দিল্লিতে B. কলকাতায় C. দেরাদুনে D. রাঁচিতে
Ans. B

9. ম্যাপ্পা বলতে বোঝায়—
A. একখণ্ড কাগজ B. একখণ্ড পৃথিবী C. একখণ্ড কাপড় D. একখণ্ড মাটি
Ans. C

10. J. L. নম্বর দেওয়া থাকে –
A. টোপোগ্রাফিকাল ম্যাপে B. মৌজা ম্যাপে C. অ্যাটলাসে D. কোনোটিই নয়
Ans. B

error: Content is protected !!
Scroll to Top

আজকেই কেনো পরীক্ষার শর্ট নোটস

এখন সহজে পরীক্ষার প্রস্তুতি নাও – আজকেই ডাউনলোড করো পিডিএফ বা বই অর্ডার করো আমাজন বা ফ্লিপকার্ট থেকে