মেটারনিক ব্যবস্থার প্রয়োগ | তৃতীয় অধ্যায়: ঊনবিংশ শতকের ইউরোপ: রাজতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারার সংঘাত | Class 9 Itihas WBBSE Madhyamik

মেটারনিক ব্যবস্থার প্রয়োগ

মেটারনিক ব্যবস্থা ১৮শ শতাব্দীর শেষে এবং ১৯শ শতাব্দীর শুরুর দিকে ইউরোপে রাজতন্ত্রের শাসন বজায় রাখতে এবং জাতীয়তাবাদগণতন্ত্রের আন্দোলন দমন করতে প্রবর্তিত হয়। এই ব্যবস্থাটি মূলত অস্ট্রিয়া এর চ্যান্সেলর মেটারনিক কর্তৃক পরিচালিত হয়েছিল।

১৮শ শতাব্দীর জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এবং ইউরোপের অন্যান্য অঞ্চলে মুক্তচিন্তা এবং জাতীয়তাবাদের প্রসার ঘটছিল। এর ফলে, মেটারনিক সিদ্ধান্ত নেন যে এসব ভাবধারা যেন ইউরোপের রাজনীতি এবং সমাজে প্রভাব ফেলতে না পারে। তার এই নীতির প্রয়োগ হিসেবে ‘কার্লসবাড ডিক্রি’ জারি করা হয়, যা ছাত্র এবং অধ্যাপকদের উদারপন্থী কার্যকলাপ এবং সংগঠন নিষিদ্ধ করেছিল। এছাড়া, বিদেশি বইপত্র এবং সংবাদপত্র এর প্রসার নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

মেটারনিকের রাজতান্ত্রিক শাসন প্রক্রিয়া ভিয়েনা চুক্তির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার জন্য ইউরোপীয় শক্তি সমবায় গঠন করে। এটি মূলত মেটারনিকের রাজতন্ত্রের শাসন বজায় রাখার চেষ্টা ছিল, যাতে জাতীয়তাবাদ এবং গণতন্ত্র এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।

মেটারনিকের রাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ইতালিতে রাজতন্ত্র বিরোধী আন্দোলন দমনে অস্ট্রিয়া সামরিক হস্তক্ষেপ করে। এই সময়কালে, ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন সক্রিয় ছিল, তবে ১৮৪৮ সালে, ইতালি, জার্মানি এবং অস্ট্রিয়া সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলন এতো তীব্র হয়ে ওঠে যে, মেটারনিক ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যায়।

মোটকথা, মেটারনিকের রাজতান্ত্রিক শাসন এবং বিপ্লবী চিন্তাভাবনা দমন করার চেষ্টা ছিল যুগবিরোধী এবং অনৈতিক, যা পুরাতনপন্থী চিন্তাভাবনা দ্বারা পরিচালিত ছিল। তার এই ব্যবস্থা শেষ পর্যন্ত ইউরোপের রাজনৈতিক সংস্কারে বাধা সৃষ্টি করে, এবং জাতীয়তাবাদীগণতান্ত্রিক চেতনার প্রতি সারা বিশ্বে আরও শক্তিশালী প্রতিবাদ সৃষ্টি হয়।


To access all our detailed study materials and notes, become a member today at: https://skillyogi.org/student-registration-cbse.
To buy the History Study Notes for Class 10 WBBSE, visit: https://skillyogi.org/wbbse-class-10-itihas-history-study-notes.

error: Content is protected !!
Scroll to Top
×