প্যারি কমিউন
প্যারি কমিউন বিশ্বের ইতিহাসে সর্বপ্রথম সর্বহারা শ্রেণীর রাষ্ট্রশক্তি ছিল। এটি মাত্র বাহাত্তর দিন স্থায়ী ছিল এবং ফরাসি বিপ্লবের শ্রেষ্ঠ অবদান হিসেবে বিবেচিত হয়। ১৮৭১ সালের ২৮ মার্চ, প্যারিসের শ্রমিক শ্রেণী বুর্জোয়া শাসনব্যবস্থা কে চূর্ণ করে ক্ষমতা দখল করে এবং তাদের নতুন শাসন ব্যবস্থা গঠন করে।
ফ্রাঙ্কো-প্রাশিয়া যুদ্ধ এবং প্যারি কমিউনের জন্ম
ঐতিহাসিক পটভূমি এ দেখতে গেলে, ফ্রাঙ্কো-প্রাশিয়া যুদ্ধ (১৮৭০) এ ফ্রান্স পরাজিত হলে থিয়ার্সের নেতৃত্বে বুর্জোয়া সরকার ক্ষমতায় আসে। এই সময়ে জার্মানির সাথে চুক্তি করে প্যারিসের শ্রমিক শ্রেণীকে নিরস্ত্র করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে, শ্রমিকরা বিপ্লব শুরু করে। শ্রমিকদের প্রতিবাদ ও রুখে দাঁড়ানোর কারণে, বুর্জোয়া শ্রেণী এবং সর্বহারা শ্রেণীর মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।
প্যারি কমিউনের গঠন
এই সংগ্রামের মাধ্যমে, প্যারিসের শ্রমিকরা পুরানো রাষ্ট্রব্যবস্থা ধ্বংস করে নতুন এক সমাজ ব্যবস্থা গঠন করে, যা প্যারি কমিউন নামে পরিচিত। এটি ছিল শ্রমিকদের পরিচালিত সরকার, যা বুর্জোয়া শাসনব্যবস্থা এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিল এবং শ্রমিক শ্রেণীর অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ছিল। প্যারি কমিউন ছিল একটি কমিউনিজমের প্রথম বাস্তব প্রয়োগ, যেখানে সর্বহারা শ্রেণী নিজেদের শাসন প্রতিষ্ঠা করে।
প্যারি কমিউনের পতন
থিয়ার্সের নেতৃত্বে ফরাসি বুর্জোয়া এবং বিসমার্কের প্রাশিয়া বুর্জোয়া শ্রেণী একত্রিত হয়ে প্যারি কমিউন এর উপর আক্রমণ চালায় এবং তা ধ্বংস করে। প্যারি কমিউন এর পতন ছিল শ্রমিক আন্দোলনের জন্য এক ভয়াবহ পরিণতি। তবে, প্যারি কমিউনের প্রভাব পুরো বিশ্বের শ্রমিক আন্দোলন এবং কমিউনিজম এর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
প্যারি কমিউনের ইতিহাসে গুরুত্ব
প্যারি কমিউন ছিল বিশ্বের প্রথম শ্রমিক শ্রেণীর শাসন ব্যবস্থা, যা প্রমাণ করে যে, শ্রমিক শ্রেণী তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং সমাজের বুর্জোয়া শ্রেণীর শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে পারে। এর পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাপী শ্রমিক আন্দোলন এবং কমিউনিজম এর ধারণা বৃদ্ধি পায়, যা সমাজতান্ত্রিক রাজনৈতিক আন্দোলন এর অগ্রভাগে চলে আসে।
For full access to the content, take membership now at https://skillyogi.org/student-registration-cbse.
To buy the book for Class 10 History, visit https://skillyogi.org/wbbse-class-10-itihas-history-study-notes.