পাশ্চাত্যবাদী বনাম প্রাচ্যবাদী বিতর্ক
১৮১৩ সালের সনদ আইন অনুযায়ী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতীয় শিক্ষাখাতে বার্ষিক এক লক্ষ টাকা ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই অর্থ কোন খাতে ব্যয় হবে তা নিয়ে পাশ্চাত্যবাদী ও প্রাচ্যবাদীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
মেকলে, রাজা রামমোহন রায়, আলেকজান্ডার ডাফ প্রমুখ পাশ্চাত্যবাদীরা ইংরেজি ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম বানানোর এবং পাশ্চাত্যের জ্ঞান-বিজ্ঞানকে শিক্ষার বিষয় করার পক্ষে ছিলেন। তারা বিশ্বাস করতেন যে পাশ্চাত্য শিক্ষা ভারতকে অধুনিক ও অগ্রসর করবে। তারা ইংরেজি ভাষা ও পাশ্চাত্যের বিদ্যা কে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন।
অন্যদিকে, প্রাচ্যবাদীরা প্রাচ্য শিক্ষার গুরুত্ব এবং সংস্কৃত, আরবি-ফারসি ভাষা প্রচলন ধরে রাখার পক্ষে মত দেন। তাদের মতে, ভারতীয় সংস্কৃতি ও ধর্মীয় শিক্ষার সাথে পাশ্চাত্য শিক্ষা মিশিয়ে চলা সম্ভব নয়। প্রাচ্যবাদীরা বিশ্বাস করতেন যে, ভারতীয় ঐতিহ্য ও ধর্ম রক্ষা করতে হবে এবং আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা তার সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে।
এই বিতর্ক ‘পাশ্চাত্যবাদী বনাম প্রাচ্যবাদী বিতর্ক’ নামে পরিচিত হয়। এতে দুই পক্ষই একে অপরের যুক্তি অস্বীকার করে এবং শিক্ষা পদ্ধতির দিকে দুইটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করে।
পাশ্চাত্যবাদী মতবাদ ভারতীয় শিক্ষায় ইংরেজি ও পাশ্চাত্য দর্শন গ্রহণের পক্ষী হলেও, প্রাচ্যবাদীরা ভারতীয় সংস্কৃতি ও পূর্বাঞ্চলীয় জ্ঞানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তার সমর্থন করতেন। তাদের মতে, উভয় শিক্ষাদর্শকে মেলানো একটি সম্মিলিত দৃষ্টিভঙ্গি হওয়া উচিত।
এই বিতর্ক শুধু শিক্ষাব্যবস্থা এর পরিবর্তন নিয়ে ছিল না, বরং এটি ভারতীয় সংস্কৃতি এবং জাতীয় পরিচিতি প্রতিষ্ঠায় এক নতুন দিকনির্দেশনা তৈরি করেছিল।
এ সময়ের এই বিতর্ক ভারতের জাতীয় আন্দোলন ও শিক্ষা সংস্কারে বিশাল ভূমিকা পালন করে। এই যুগান্তকারী বিতর্কের ফলস্বরূপ, ইংরেজি শিক্ষা ভারতীয় সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠে এবং সংস্কৃত ও আরবি ভাষার গুরুত্বও বৃদ্ধি পায়।
To explore more on this topic and access detailed content, join our membership at https://skillyogi.org/student-registration-cbse. Don’t forget to purchase your WBBSE Class 10 Itihas History Study Notes at https://skillyogi.org/wbbse-class-10-itihas-history-study-notes to enhance your exam preparation!