fbpx

Chapter 03 পদার্থ : গঠন ও ধর্ম Podartho: Gothon O Dhormo Physical Science Bhouto Bigyan – Class 9 WBBSE Notes

আপনি এখানে শিখবেন এই অধ্যায়ে এবং বিষয়ের ফাউন্ডেশন অংশটা, এই বিষয়টিকে সহজ-সরলভাবে পড়িয়েছেন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ভিডিও লেকচার এর মাধ্যমে এবং এই পুরো অধ্যায়কে চার ভাগে খন্ডিত করে আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে

  • প্রথম খন্ডে আপনি শিখবেন ফাউন্ডেশন অংশটা যেখানে অধ্যায়ের ব্যাপারে আপনাকে বোঝানো হয়েছে তার মানে definitions,basics  গুলো সহজভাবে.  এবং এটাকে আপনি বুঝতে পারবেন যেটা আপনাকে পরীক্ষার জন্য ক্রীপের করতে সাহায্য করবে
  • দ্বিতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন MCQ মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন যেটা সাধারণত এক Marks’er আসে পরীক্ষায়
  • তৃতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন শর্ট অ্যানসার এবং কোয়েশ্চেন, যেটা আপনার পরীক্ষার সাজেশন মধ্যে পড়ে এবং এটা 3-4 marks’er  প্রশ্ন আসে আপনার পরীক্ষা
  • চতুর্থ মডিউল আপনি শিখবেন লং আনসার এবং questions যেটা সাধারণত 5-6 marks er হয়

আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন যাতে কি আপনাকে আমরা সাহায্য করতে পারি

তরল ও বায়ুর চাপ

তরল ও গ্যাসীয় পদার্থ যেহেতু প্রবাহিত হয় তাই তাদের প্রবাহী (fluid) বলা হয় । কঠিন পদার্থকে যেখানে রাখা হয় সেখানেই থাকে এবং যেহেতু তার ওজন আছে, তাই সেটি তলের ওপর চাপ দেয়। আবার প্রবাহিত হওয়ার প্রবণতা থাকায় তরল এবং গ্যাস শুধু নীচের দিকেইনয়, সব দিকেই চাপ দেয়।

বাস্তব অভিজ্ঞতা  

একটি ছিদ্রযুক্ত লম্বা পাত্র জলপূর্ণ করলে ছিদ্র দিয়ে জল সবেগে বেরিয়ে যায়। আঙ্গুল দিয়ে সেই ছিদ্র চেপে ধরলে জলের চাপ অনুভব করা যায়।  কোনো তলের একক ক্ষেত্রফলে লম্বভাবে প্রযুক্ত বলকে চাপ বলে। 

অর্থাৎ –

চাপ (P) = লম্বভাবে প্রযুক্ত বল  ক্ষেত্রফল = FA 

সমগ্রতলের উপর লম্বভাবে প্রযুক্ত বলকে ঘাত বলে। অর্থাৎ, ঘাত (F) = P x A = চাপ x ক্ষেত্রফল

বলের একক দ্বারা ঘাত পরিমাপ করা হয় । প্রবাহীর ক্ষেত্রে, এই ধারণাটি ব্যবহার করলে বলা যায়-

ক্ষেত্রফলের ওপর প্রযুক্ত ঘাত = তরলের ওজন, অর্থাৎ, F = w

অর্থাৎ, তরলস্তম্ভের তলদেশে চাপ (P) = w/A

চাপের CGS একক : dyne/cm2; SI একক: newton/m2, pascal (pa)
ঘাতের CGS একক: dyne;  SI একক : newton
চাপের মাত্রা-সংকেত : [ML-1 T-2];

ঘাতের মাত্রা সংকেত : [MLT-2] 

চাপ ও ঘাতের মাত্রা বলের সাহায্যে প্রকাশ করা হয় বলে বল ও ঘাতের  মাত্রা-সংকেত এবং মাত্রা একই হয়।

তরলের মধ্যে কোনো বিন্দুতে চাপের পরিমাণ 

যদি একটি পাত্রে S-ঘনত্বের তরল রাখা হয় তবে তরলের পৃষ্ঠ থেকে h গভীরতায় A বিন্দুতে তরলের চাপ হবে-

A-বিন্দুর চারিদিকে একটি ক্ষুদ্র বৃত্তাকার অনুভূমিক তলের (O) ওপর লম্বভাবে একটি তরলস্তম্ভ RQPS  কল্পনা করলে, ওই কল্পিত তরলস্তম্ভের ওজন O ক্ষেত্রফলের ওপর লম্বভাবে প্রযুক্ত বল (বা ঘাত), F । 

RQPS তরলস্তম্ভের ওজন = ভর x g (g = অভিকর্ষজ ত্বরণ) = আয়তন x ঘনত্ব x g = (O x h) x S x g

∴ A বিন্দুতে তরলের চাপ = একক ক্ষেত্রফলে ক্রিয়াশীল বল = F/O = OhSg/O = hSg

অর্থাৎ, তরলের ভেতরের কোনো বিন্দুতে তরলের চাপ= গভীরতা x ঘনত্ব x অভিকর্ষজ ত্বরণ

এ থেকে বলা যায়- একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে (g ধ্রুবক), এবং 

  1. যখন একই ঘনত্বের তরল স্থির তখন তরলের ভিতরে কোনো বিন্দুতে চাপ গভীরতা (h) 
  2. যখন বিভিন্ন ঘনত্বের তরল নেওয়া হয়, এবং গভীরতা (h) স্থির থাকে, তখন যে  তরলের ঘনত্ব যত বেশি, তার চাপ তত বেশি হবে অর্থাৎ চাপ ঘনত্ব (d)

নদী বাঁধের অথবা নদীর স্তম্ভের অভ্যন্তরে নীচের দিকটা চওড়া করা হয় কেন : গভীরতা বাড়ার সাথে সাথে তরলের চাপ বৃদ্ধি পায়। বাঁধ বা স্তম্ভের তলদেশে জলের গভীরতা বেশি, এমনকি পার্শ্বচাপও বেশি । সেই অত্যাধিক চাপ যাতে সহ্য করতে পারে এবং ভেঙে না যায়, সেজন্য বাঁধের নিচের দিকের বেধ বেশি করা হয়।

তরলের চাপের বৈশিষ্ট্য বা, প্রকৃতি :

  • স্থির তরলের মধ্যে কোনো বিন্দুতে চাপ এবং ওই বিন্দুর গভীরতা সমানুপাতিক হয়।
  • স্থির তরলের ভেতরের যে কোনো বিন্দুতে তরল সব দিকেই সমান চাপ প্রয়োগ করে।
  • স্থির তরলের অভ্যন্তরীণ কোনো অনুভূমিক তলের সব বিন্দু গুলিতেই তরলের চাপ সমান হয়। 
  • পাত্রের আকৃতির ওপর তরল মধ্যস্থ কোনো বিন্দুতে তরলের চাপ নির্ভর করেনা।
  • তরলের ঘনত্ব এবং তরল-মধ্যবর্তী কোনো বিন্দুতে চাপ সমানুপাতিক হয়।
  • পাত্রের দেয়ালের উপর তরল লম্বভাবে চাপ দেয়।

বায়ুচাপ ও ব্যারোমিটার

পৃথিবীকে চারিদিক থেকে ঘিরে রাখা গ্যাসীয় আবরণকে বায়ুমণ্ডল  বলা হয়। এই আবরণ বিস্তৃতি সঠিক বলা না গেলেও, 400 কিলোমিটার ধরে নেওয়া হয় । যেহেতু পৃথিবীর আকর্ষণ শক্তির জন্য বায়ুর অণুগুলি মহাশূন্যে যেতে পারে না তাই পৃথিবী পৃষ্ঠের নিকটতম বায়ুস্তর ঘন, এবং  যত উপরে যাওয়া হয়, বায়ুস্তর তত লঘু হয়। 

উপরের স্তরগুলির ওজনের জন্য ভূপৃষ্ঠের সংলগ্ন  সবথেকে নিচের বায়ুস্তরে একটি চাপ পড়ে। একক ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট ভূমির ওপর বায়ুমণ্ডলের উর্ধ্বসীমা পর্যন্ত যে বায়ুস্তম্ভ রয়েছে, তার ওজনকে বায়ুচাপ বলা হয় ।

বায়ুমণ্ডলের চাপ : কোনো বিন্দুকে ঘিরে কল্পিত একক ক্ষেত্রফলের ওপর বায়ুমণ্ডল তার ওজনের জন্য লম্বভাবে যে বল প্রয়োগ করে, তাকে ঐ স্থানের বায়ুমণ্ডলের চাপ বলে । 

বায়ু সবদিকেই চাপ  দেয়। ইতালীয় বিজ্ঞানী টরিসেলি বায়ুচাপ মাপার উপায় উদ্ভাবন করেছিলেন। বায়ুমণ্ডলীয় চাপ প্রায় 76 সেমি উচ্চ পারদস্তম্ভের চাপের সমান তা টরিসেলির পরীক্ষা থেকে জানা যায়।  

1 m (100 সেমি) লম্বা এবং একটি 1 cm2  প্রস্থছেদ বিশিষ্ট, এক মুখ খোলা পারদপূর্ণ কাঁচের নলকে একটি পারদপাত্রে উলটোভাবে দাঁড় করালে দেখা যাবে বায়ুচাপ পারদস্তম্ভকে প্রায় 76 সেমি উঁচুতে ধরে রাখে। বায়ুচাপ বাড়লে বা কমলে পারদস্তম্ভের উচ্চতার বৃদ্ধি বা হ্রাস ঘটে। এই উচ্চতা বায়ুচাপ নির্দেশ করে। 

টরিসেলির পরীক্ষায় পারদস্তম্ভের উপরে নলের খালি স্থানকে টরিসেলির শূন্যস্থান বলে। এখানে সামান্য পারদ বাম্প থাকে, যার চাপ নগণ্য। নলটা কাত করলে টরিসেলির শূন্যস্থানের আয়তন কমে, তবে পারদ স্তম্ভের উল্লম্ব উচ্চতা একই থাকে।

বায়ুমণ্ডলের প্রমান চাপ : সমুদ্রপৃষ্ঠে 45° অক্ষাংশে, 0°C উষ্ণতায় 76 cm উচ্চতা বিশিষ্ট পারদস্তম্ভ যে চাপ দেয়, সেই চাপকেই বায়ুমণ্ডলীয় চাপ বা 1 atm বলে। 

বায়ুচাপ = একক ক্ষেত্রফলে পারদস্তম্ভের ওজন। 

SI-তে প্রমান বায়ুচাপ (P) = 1.013105N/m2=1.013105Pa [1 Pa=1N/m2

CGS-এ 1 atm = [(76 cm1cm2)13.6 g cm-3980 cm s-2] per cm2=1.013106dyne/cm2

ব্যারোমিটার: বায়ুর চাপ যে যন্ত্রের সাহায্যে মাপা হয় তাকে ব্যারোমিটার বলে। পরীক্ষাগারে, ফর্টিনের (Fortin’s) ব্যারোমিটারের ব্যবহার হয়। টরিসেলির কিছু পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তন করে এই ব্যারোমিটার তৈরি করা হয়েছে।

চাপ নির্ণয় : 

  1. পারদস্তম্ভ উচ্চতা (h cm) নির্ণয় করা হয় মূল স্কেলের পাঠ ও ভার্নিয়ার স্কেলের পাঠ থেকে 
  2. চার্ট থেকে ঘরের উষ্ণতায় পারদের ঘনত্ব জানা যায়। 

যদি এই ঘনত্ব হল d g/cm3 হয় তবে,

বায়ুর চাপ (P) হবে : hdg dyne/cm2 (g = ওই স্থানের অভিকর্ষজ ত্বরণ )।

বায়ুর চাপের মান থেকে আবহাওয়ার প্রাথমিক পূর্বাভাস : 

ব্যারোমিটারের পারদস্তম্ভের উচ্চতা – 

  • ব্যারোমিটারের পারদস্তম্ভের উচ্চতা ক্রমাগত হ্রাস পেলে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়ে। কারণ, জলীয় বাষ্প বাতাসের চেয়ে হালকা হয় । অর্থাৎ সেই মুহূর্তে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে ।
  • ব্যারোমিটারের পারদস্তম্ভের উচ্চতা দ্রুত কমতে থাকলে, বায়ুর চাপও দ্রুত কমবে। অর্থাৎ, নিম্নচাপ  সৃষ্টি হবে এবং উচ্চচাপযুক্ত অঞ্চলে থেকে বাতাস ওই জায়গায় ছুটে যাবে। ঝড়, ঘূর্ণিঝড় বা অন্যান্য দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • ব্যারোমিটারের পারদস্তম্ভের উচ্চতা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে তবে বায়ুরচাপ ক্রমশ বাড়বে, অর্থাৎ বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমবে । অর্থাৎ, আবহাওয়া সম্ভবত শুষ্ক এবং স্বাভাবিক হবে।
  • যদি ব্যারোমিটারের পারদস্তম্ভের উচ্চতা দ্রুত উপরে উঠতে থাকে তবে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ দ্রুত কমবে। অর্থাৎ বৃষ্টি শীঘ্রই থেমে যাবে এবং সাময়িক ভাবে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাবে।

সাইফন (Siphon) : সাইফন হল একটি উল্টানো U-আকৃতির নল যার দুটি খোলা মুখ এবং অসম বাহু রয়েছে। এটি একটি পাত্রে থাকা তরলকে একটি উচ্চ স্থান থেকে নীচে রাখা অন্য পাত্রে (বিপরীত দিকে নয়) নড়াচড়া ছাড়াই পরিবহন করে। এই পদ্ধতিটি সাইফন পদ্ধতি হিসাবে পরিচিত।
একটি কেরোসিন-ভর্তি রাবার বা প্লাস্টিকের নল দুটি প্রান্তে আঙুল দিয়ে বন্ধ করা হয় এবং একটি প্রান্ত একটি বিশাল তেল পূর্ণ পাত্রে ডুবানো হয়। অন্য প্রান্তটি যে পাত্র থেকে তেল নেওয়া হবে সেখানে রাখা হয় । তারপর আঙুল তুলে নিলে স্বাভাবিকভাবেই তেল বেরিয়ে আসবে। এই প্রক্রিয়াটি চলতে থাকবে যতক্ষণ ওই ছোট নল তরলে নিমজ্জিত থাকবে।

সাইফন-ক্রিয়ার শর্ত :

  1. তরল বাতাসের চাপে নলের মধ্যে ওঠে, তাই-
  • ছোট  বাহুর উল্লম্ব উচ্চতা ব্যারোমিটারের উচ্চতার চেয়ে কম হওয়া উচিত। অন্যথায়, সাইফন কাজ করবে না; উদাহরণস্বরূপ,  জলের ক্ষেত্রে h1 এর মান 34 ফুট-এর চেয়ে বেশি হলে, সাইফন কাজ করবে না। 
  • বায়ু নেই এমন স্থানে সাইফন কাজ করে না।
  1. দুটি পাত্রের তরল-পৃষ্ঠের উচ্চতা ভিন্ন না হলে সাইফন কাজ করে না।
  2. যদি সাইফনের ছোট বাহুতে একটি ছিদ্র থাকে, তবে এটি দিয়ে বাতাস প্রবেশ করবে এবং তরলকে উপরে উঠতে বাধা দেবে। তবে, বড়ো বাহুর যে অংশ উপরের পাত্রের তরল পৃষ্ঠের নীচে থাকে সেখানে ছিদ্র থাকলে সাইফন ক্রিয়া চলতে থাকবে । যদিও তরল-প্রবাহের হার কিছুটা কমবে।

আর্কিমিডিসের নীতি (Archimedes’ principle)

বাস্তব অভিজ্ঞতা ও প্লবতা : যখন কোনো বস্তু সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নিমজ্জিত থাকে তখন সেই বস্তুর উপর তরল যে ঊর্ধ্বঘাত প্রয়োগ করে তাকে প্লবতা বলা হয়। যেমন- 

  • জলে একটি বড় কাঠের গুঁড়ি টেনে আনা বেশ সহজ।
  • জলের বালতি কুয়োর জলে ডুবে থাকা পর্যন্ত টেনে তোলা সহজ, তবে এটি পরে ভারী হয়ে যায়। 

নিমজ্জিত বস্তুর উপর জলের উর্ধ্বঘাতের প্রভাবের কারণে জিনিসটির ওজন কমে গেছে বলে মনে হয়। জল থেকে কোনো বস্তু সরিয়ে নিলে তার ওজন বেড়ে যায়। 

  • ঊর্ধ্বঘাত বস্তুর ওজনজনিত নিম্নগামী বলের একাংশকে প্রশমিত করে বলে বস্তু হালকা বলে মনে হয়। ফলস্বরূপ, বস্তুর আপাত ওজন = প্রকৃত ওজন – তরল (বা গ্যাসের) প্লবতা। প্লবতা যত বেশি হবে বস্তু তত হালকা মনে হবে। অন্য কথায়, ওজনের আপাত-হ্রাসও বেশি হবে।

ধরা যাক, PQRS বেলনটি d ঘনত্বের একটি তরলে নিমজ্জিত। সমস্ত পৃষ্ঠে তরল লম্বভাবে ঘাত প্রয়োগ করবে। তারা পরস্পরকে প্রশমিত করে কারণ বিপরীত পার্শ্বতলগুলোর ঘাত সমান এবং বিপরীতমুখী। অর্থাৎ, দুজোড়া পার্শ্বতলে তরল দ্বারা প্রয়োগ করা মোট ঘাত শূন্য। PQ এবং RS তলের গভীরতা সমান নয়। ফলস্বরূপ, অসমান ঘাত ক্রিয়া করবে। 

PQ পৃষ্ঠতল নিম্নমুখী ঘাত = চাপ × ক্ষেত্রফল =h1dg . A এবং 

RS পৃষ্ঠের উপর ঊর্ধ্বমুখী ঘাত = h2dg . A l

যেহেতু h2> h1, তাই বস্তুর উপর প্রযুক্ত মোট ঊর্ধ্বমুখী ঘাত (বা, প্লবতা ) 

= h2dg. A h1dg. 

A = (h2h1) dgA = Vdg = সম-আয়তনের তরলের ওজন । 

প্লবতা কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্লবক বল (buoyant force)  নামেও পরিচিত।

প্লবতার বৈশিষ্ট্য : 

  • প্লবতা ঊর্ধ্বমুখী এবং বস্তুর ওজনের বিরুদ্ধে কাজ করে; 
  • প্লবতা বস্তুর আকার/আকৃতির  উপর নির্ভরশীল নয়।
  • বস্তুর নিমজ্জিত অংশের আয়তন, প্রবাহীর ঘনত্ব এবং সেই স্থানে অভিকর্ষজ ত্বরণের উপর প্লবতা নির্ভর করে।
  • সম্পূর্ণ নিমজ্জিত বস্তুর প্লবতা বস্তুর গভীরতার উপর নির্ভরশীল নয়।
  • যখন বস্তু এবং তরল ভারহীন হয়, তখন প্লবতা হয় না। কৃত্রিম উপগ্রহে অবাধে পতনশীল অবস্থায়, এইরকম হয় ।

আর্কিমিডিসের নীতি : যখন কোনো বস্তুকে স্থির তরল বা গ্যাসীয় পদার্থে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নিমজ্জিত করা হয়, তখন তার ওজন আপাতভাবে হ্রাস পায়। এই হ্রাস, বস্তু দ্বারা খালি করা তরল বা গ্যাসীয় পদার্থের ওজনের সমান হয় ।

আর্কিমিডিসের সূত্রানুযায়ী, যে পরিমাণ জল বস্তু অপসারিত করে, নিমজ্জিত অবস্থায় বস্তু সেই পরিমাণ ওজন হারায়। 

বস্তুর ভাসন ও নিমজ্জনের শর্ত: যখন একটি বস্তু সম্পূর্ণরূপে স্থির তরলে নিমজ্জিত হয়, তখন দুটি  বল একই সাথে তার উপর কাজ করে। 

  • বস্তুর ওজন (w), যা ভারকেন্দ্রের সাপেক্ষে উল্লম্বভাবে নিচের দিকে কাজ করে। ফলস্বরূপ, বস্তুটি নীচের দিক থেকে তরলের মধ্যে যেতে চায়। 
  • তরলতা (w’) বা ঊর্ধ্বঘাত, যা বস্তু দ্বারা প্রত্যাহার করা তরলের ওজনের সমান এবং বস্তুটিকে উপরের দিকে ঠেলে দিতে চায় (উল্লম্বভাবে, মাধ্যাকর্ষণ কেন্দ্রের সাথে)।

w ও w’-এর আপেক্ষিক মানের ভিত্তিতে তিনটি অবস্থার উদ্ভব হয়-

  1. w > w’ অর্থাৎ, বস্তুর ওজন > সমআয়তন তরলের ওজন : বস্তু এক্ষেত্রে নিমজ্জিত হবে। আবার যখন বস্তুর ঘনত্ব জলের ঘনত্বের চেয়ে বেশি হয় তখন বস্তু তরলে ডুবে যায়। যেমন পাথর জলে ডুবে যায়। 
  2. w = w’ অর্থাৎ, বস্তুর ওজন = সমআয়তন তরলের ওজন : বস্তু সম্পূর্ণ নিমজ্জিত থেকে কোনো স্থানে স্থির অবস্থায় ভাসবে অর্থাৎ বস্তুর ঘনত্ব এবং তরলের ঘনত্ব সমান হলে এমনটা হয়। যেহেতু বস্তুর ওজন ও প্লবতা পরস্পরকে প্রতিষ্ঠা করে তাই বস্তুর  উপর মোট কার্যকর বল শূন্য হয়। 
  3. w < w’ অর্থাৎ, বস্তুর ওজন < সমআয়তন তরলের ওজন : এক্ষেত্রে বস্তুটি আংশিক নিমজ্জিত অবস্থায় থাকবে। বস্তুটির সম্পূর্ণ নিমজ্জিত করলে বস্তুর উপর ঊর্ধ্বমুখী বল
    w – w’ । এক্ষেত্রে ঊর্ধ্বমুখী বল অর্থাৎ প্লবতা বস্তুকে উপরে টেনে তুলবে এবং যেখানে বস্তুর ওজন ও প্লবতা সমান হবে সেখানে স্থির অবস্থায় ভাসবে।

ভাসমান বস্তুর সাম্যের শর্ত 

প্লবতা কেন্দ্র (centre of buoyancy) : যখন একটি বস্তুকে তরলে নিমজ্জিত করা হয়, তখন যে তরল অপসারিত হয়, অপসারণের আগে ভারকেন্দ্র যে বিন্দুতে ছিল, সেটি হল নিমজ্জিত বস্তুর  প্লবতা কেন্দ্র । ফলস্বরূপ, অপসারিত তরলের ভারকেন্দ্রকে প্লবতাকেন্দ্র হিসাবে উল্লেখ করা হয়। একইভাবে ওজন যেভাবে একটি বস্তুর ভারকেন্দ্র দ্বারা কাজ করে, তেমন প্লবতাও  প্লবতাকেন্দ্রের মধ্য দিয়ে বস্তুর উপর কাজ করে।

তরলে ভাসমান বস্তুর উপর প্রয়োগ করা বলগুলি হলো-

  • বস্তুর ওজন ভারকেন্দ্র দিয়ে উল্লম্বভাবে নীচের দিকে কাজ করে, 
  • প্লবতা বস্তুর উপর প্লবতাকেন্দ্রের মধ্য দিয়ে কাজ করে ।

বস্তুর ওজন, প্লবতা যদি একই সরলরেখা ধরে কাজ করে, তাহলে বস্তুটি সাম্যাবস্থায় ভাসবে। 

একটি বস্তু তার সাম্যাবস্থায় ভাসনের দুটি শর্ত পূরণ করে ।

  • ভাসনের শর্ত : বস্তুর ওজন = প্লবতা (অপসারিত তরলের ওজন)
  • সাম্যের শর্ত : বস্তুর ভারকেন্দ্র ও প্লবতাকেন্দ্র একই উল্লম্ব রেখায় থাকবে।

ঘনত্ব : একটি পদার্থের একক আয়তনের ভরকে সেই পদার্থের  ঘনত্ব বলে।

অর্থাৎ, ঘনত্ব = ভর আয়তন

ঘনত্বের মাত্রা-সংকেত : [ML-3]

ঘনত্বের CGS একক : g/cm3

ঘনত্বের SI একক : kg/m3

ঘনত্বের CGS এবং SI-এককের মধ্যে সম্পর্ক : 1 kg/m3= 1000g(100cm)3 = 11000 g/cm3

অর্থাৎ , 1 g/cm= 1000 kg/m3   

অর্থাৎ, CGS-এককে রুপার ঘনত্ব 10.5 g cm-3

SI -তে এই ঘনত্ব হবে 10.5 X 1000 kgm-3= 10500 kg m3

তরল এবং গ্যাসীয় পদার্থের ঘনত্ব kg/L  এবং g/mL-এ প্রকাশ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, 4°C তাপমাত্রায় জলের ঘনত্ব 1 kg/L বা 1 g/mL

আপেক্ষিক ঘনত্ব : 4°C-এর জলকে প্রমাণ হিসাবে ধরলে তার আপেক্ষিকে অন্য পদার্থের ঘনত্ব গণনা করা হয়। ফলস্বরূপ, নির্ণীত ঘনত্বের মানকে আপেক্ষিক ঘনত্ব (Relative density বা R.D.) বা, আপেক্ষিক গুরুত্ব (Sp.gravity) হিসাবে উল্লেখ করা হয়। 4°C উষ্ণতায় জলের ঘনত্ব 1 g/cm3  (বা 1000 kg/m3 ) । 

আপেক্ষিক ঘনত্ব (R.D) =  পদার্থের ঘনত্ব 4OC – এ জলের ঘনত্ব = 1 আয়তন পদার্থের ভর 1 আয়তন জলের ভর (4OC) = পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তনের ভর সমআয়তন জলের ভর (4OC) 

  • আপেক্ষিক ঘনত্ব প্রকাশের তৃতীয় পদ্ধতিটি সংজ্ঞা হিসাবে পরিচিত। এর থেকে  আপেক্ষিক গুরুত্বের ধারণা পাওয়া যায় । ঘনত্ব এবং আপেক্ষিক ঘনত্ব পদার্থের গুণাবলী প্রকাশ করে, কিন্তু বস্তুর করে না।
  • একটি পদার্থের আপেক্ষিক ঘনত্ব (R.D.) নির্দেশ করে যে এটি একটি অভিন্ন আয়তনের  জলের চেয়ে কোন পদার্থ কতটা ভারী। 
  • একই রকম দুটি  রাশির সংখ্যার অনুপাতের কারণে R.D-এর কোনো একক এবং মাত্রা নেই।

ঘনত্ব ও আপেক্ষিক ঘনত্বের সম্পর্ক :  

CGS  অনুযায়ী : 

পদার্থের ঘনত্ব = R.D. X 4°C-তে জলের ঘনত্ব = R.D1g/cm3=R.D.(in g/cm3)

S.I অনুযায়ী : পদার্থের ঘনত্ব = R.D. X 1000 (in kg/m3)

যেমন- সোনার ঘনত্ব : S.I-তে 19,300 kgm-3 , CGS-এ 19.3 gcm-3, R.D. = 19.3 

ঘনত্ব  ও আপেক্ষিক ঘনত্বের মধ্যে একটি জানা থাকলে তার আর একটা জানা যায়। 

ঘনত্ব এবং আপেক্ষিক ঘনত্বের পার্থক্য : পরীক্ষাগারে রক্ষিত একটি নির্দিষ্ট  আয়তনের ঘনত্ব-বোতল ব্যবহার করে তরল, জলে অদ্রবণীয় powdered form -এর পদার্থের R.D. পরিমাপ করা যায় । এই পরিস্থিতিতে, পদার্থের আয়তন পরিমাপ করার দরকার নেই ; শুধুমাত্র ওজন পরিমাপ করলেই হয়।

গাণিতিক উদাহরণ :  

60 gf ওজনের একটি  কঠিন পদার্থ জলে সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত অবস্থায় ওজন 54 gf হয়। এর আপেক্ষিক ঘনত্ব কত?

সমাধান : সম্পূর্ণ  নিমজ্জিত অবস্থায় ওজন হ্রাস (60 – 54) gf = 6 gf । অর্থাৎ, অপসারিত জলের ওজন 6 gf এবং এর ভর =6g । সুতরাং, আপেক্ষিক ঘনত্ব (R.D.) = বস্তুর ভর / একই আয়তনের জলের ভর – 60g / 6g = 10 (উত্তর)

(2) একটি আয়তক্ষেত্রাকার কাঠের ফলক যা  জলে ভাসমান সেটি 5 সেমি লম্বা, 4 সেমি চওড়া এবং 3 সেমি উঁচু। জলে ভাসমান অবস্থায় ফলকের  2.5 সেমি উচ্চতা জলের নিচে থাকে। ফলকের ভর এবং কাঠের ঘনত্ব কত?

ফলকটার আয়তন = 5 x 4 x 3 cm3= 60 cm3

জলে নিমজ্জিত অংশের আয়তন = 5 x 4 2.5 cm3= 50 cm3

∴ ভাসমান অবস্থায় অপসারিত জলের আয়তন = 50 cm3এবং অপসারিত জলের ভর = 50 cm3x 1 g/50 cm3= 50 g

অর্থাৎ, প্লবতা = 50gf. ভাসনের শর্ত : বস্তুর ওজন = প্লবতা 

∴ ফলকটার ওজন = 50gf এবং তার ভর = 50g 

∴ ঘনত্ব = ভর / আয়তন = 50g/60 cm3= 0.833 g/cm3

পৃষ্ঠটান

তরলের পৃষ্ঠটান সংক্রান্ত ঘটনার ফলে কীটপতঙ্গ জলের উপর হাঁটতে পারে, লোহার সূঁচ, ব্লেড জলে ভাসে। তরল পৃষ্ঠস্তর বা উপরিতল একটি টানটান আবরণ হিসাবে কাজ করে। এটি সংকুচিতও হয় যা  হল তার পৃষ্ঠটান এটি ঘটে অণুগুলির একে অপরের প্রতি আকর্ষণের কারণে। 

চিত্রে, তরলের ভেতরের দিকে যে একটি অণু রয়েছে তাকে ঘিরে থাকা অন্যান্য অনুগুলো সেই অণুকে  সব দিক থেকে আকর্ষিত করে । 

তাদের আকর্ষণ বলের গড় হয় শূন্য। তরলের মুক্ত তলে থাকা অণুকে বাষ্প- অবস্থার যত সংখ্যক অণু উপরের দিকে টানছে, তার চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক অণু ভিতরের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। মুক্ত তলে থাকা অণু পৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে স্থানান্তর করতে পারে না। 

ফলস্বরূপ, পৃষ্ঠের সমস্ত অণু তরলটির অভ্যন্তরের দিকে এবং পৃষ্ঠের সাথে লম্ব ভাবে একটি টান অনুভব করে। অসীম দূরত্বে পৃষ্ঠের অণু স্থানান্তর করতে চাইলে কাজ করতে হবে। অর্থাৎ পৃষ্ঠের অণুগুলির স্থিতিশক্তি আছে। পৃষ্ঠতলের স্থিতিশক্তি সর্বনিম্ন হবে যদি সেই স্তরে অণুর সংখ্যা সর্বনিম্ন  হয়। পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল ছোট হলে এটি সম্ভব ফলে তরলের মুক্ত পৃষ্ঠটি সঙ্কুচিত হয়।

এটা পৃষ্ঠটানের কারণ এবং তরলের এই ধর্মকেই বলে পৃষ্ঠটান।

উদাহরণ : জলে ব্লেড ভাসানো 

  • এক গ্লাস জলে, একটি দাড়ি-কাটার ব্লেডকে জলে উল্লম্বভাবে ছেড়ে দিলে সেটি ডুবে যাবে।  
  • পরে অনুভূমিকভাবে একটি শুকনো ব্লেডকে আলতো করে জলের উপর ছেড়ে দিলে সেটি ভাসবে (যদি এটি ভেসে না যায় তবে ব্লেডটিকে একটু গরম করতে হবে বা মোম দিয়ে ঘোষে নিতে হবে।) যখন ব্লেডটি অনুভূমিকভাবে ছাড়া হয়, তখন পুরো পৃষ্ঠটি জলের সংস্পর্শে আসে। একক ক্ষেত্রফলে থাকা ক্রিয়াশীল ব্লেডের ওজনের থেকে জলের পৃষ্ঠটান বেশি হওয়ার জন্য ব্লেডের ভেসে থাকা সম্ভব হয় । এখানে প্লবতার কোনো ভূমিকা থাকে না ।

কিন্তু জলে সামান্য সাবান জল যোগ করলে জলের পৃষ্ঠটান কমে যাবে এবং ব্লেড তখন  সহজেই জলে ডুবে যাবে। 

পৃষ্ঠটান : একটি তরলের মুক্ত পৃষ্ঠে একটি রেখা কল্পনা করলে ওই রেখার সাথে লম্বভাবে, তরল পৃষ্ঠের স্পর্শক বরাবর একক দৈর্ঘ্যে যে বল প্রয়োগ করা হয়, তাকে ওই তরলের পৃষ্ঠটান বলে।

পৃষ্ঠটানের একক = (বল / দৈর্ঘ্য )-এর একক CGS-এ dyne.cm-1,এবং  SI-তে Nm-1

পৃষ্ঠটান কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে :  

  1. পৃষ্ঠটান উষ্ণতার উপর নির্ভর করে কারণ তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে পৃষ্ঠটান হ্রাস পায়।
  2. একটি তরলের পৃষ্ঠের টান বৃদ্ধি পায় যখন একটি অজৈব উপাদান এতে দ্রবীভূত হয়। তবে, যদি জৈব পদার্থ দ্রবীভূত হয়, তবে পৃষ্ঠটান  কমে । সাবান-জলের পৃষ্ঠটান কম বলেই পোশাক পরিষ্কার হয়। 
  3. অপদ্রব্য দ্বারা দূষণ তরলের পৃষ্ঠটান কমে যায় । উদাহরণস্বরূপ, জলে তৈলাক্ত পদার্থ মেশানো হলে, জলের পৃষ্ঠটান কমে ।

একটি গোলকের পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল যেকোন জ্যামিতিক আকারের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। পারদ, তরলের ফোঁটা এবং সাবানের বুদবুদ সব বৃত্তাকার হয়।

জলে তেল যোগ করলে  জলের ওই অংশের পৃষ্ঠটান কমে যায়। ফলস্বরূপ, উচ্চতর পৃষ্ঠটান সহ চারপাশের জল দ্বারা বর্হিমুখী টানে তেল জলের ওপর ছড়িয়ে পড়ে।

ভেজা তুলির আঁশগুলো একসাথে থাকে। কারণ আঁশগুলোর ওপর লেগে থাকা জলের পৃষ্ঠটান তাদের একসাথে ধরে রাখে।

সান্দ্রতা (Viscosity)

তরলের  দৃঢ়তা ধর্ম নেই, কিন্তু কঠিনের আছে । যখন তরল একটি পৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন তার গতি দুই রকম হয়-

  • ধারারেখ বা শান্ত প্রবাহ 
  • অশান্ত প্রবাহ 

ধারারেখ প্রবাহ : প্রবাহের এই ধর্মে, তরঙ্গের প্রতিটি কণা তার ঠিক পূর্বগামী কণার মতো একই গতিতে এবং অভিমুখে চলে।

ধারারেখ কী এবং বৈশিষ্ট্য : ধারারেখ প্রবাহে, প্রবাহীর কোনো একটা কণা যে পথ ধরে চলে তাকে ধারারেখ হিসাবে উল্লেখ করা হয়।

  • যদি ধারারেখার একটি বিন্দুতে স্পর্শক টানা হয়, তাহলে স্পর্শকটি সেই বিন্দুতে প্রবাহিত-কণার গতির দিক নির্দেশ করে।
  • দুটি শান্ত প্রবাহ রেখা একে অপরকে ছেদ করতে পারে না। কারণ একই বিন্দুতে দুটি তরল-কণার ভিন্নমুখী বেগ থাকতে পারে না।
  • প্রবাহ-নলের আকৃতির উপর কণার গতিপথ নির্ভর করে।
  • ধারারেখা ঘন হলে প্রবাহের বেগ বাড়ে এবং পাতলা হলে বেগ কমে যায়।

সন্ধিবেগ : প্রবাহের বেগ সাধারণত স্থির থাকে (বা শান্ত) যতক্ষণ না এটি একটি নির্দিষ্ট গতিতে পৌঁছায়। এই নির্দিষ্ট সীমাটিকে সন্ধিবেগ বা সংকট বেগ (critical velocity) বলা হয়। অস্থির প্রবাহ ঘটে যখন প্রবাহের বেগ সন্ধিবেগ ছাড়িয়ে যায়। I প্রবাহের কিছু কিছু অংশে আবর্তের বা ঘূর্ণির সৃষ্টি হয় এবং সেভাবেই স্রোত এগিয়ে যায় । যখন জল দ্রুত উপর থেকে নীচে নেমে আসে তখন এটি ঘটে। 

সান্দ্রতা (Viscosity) : একটি স্থির কঠিন সমতলের উপর দিয়ে প্রবাহিত তরলের রেখা প্রবাহ বিবেচনা করলে এবং একটি তরলকে অসংখ্য সমান্তরাল স্তরের সমষ্টি হিসাবে কল্পনা করলে, এটা স্পষ্ট হয় যে কঠিন-স্তর সংলগ্ন তরল-স্তরটি আসঞ্জনের জন্য স্থির। ঠিক উপরের স্তরটির বেগ একটু বেশি হয়। এর উপরের স্তরের বেগ আরো কিছুটা বেশি হয়।

কঠিন অনুভূমিক সমতল থেকে স্তরগুলির মধ্যে দূরত্ব বাড়ার সাথে সাথে বেগ বৃদ্ধি পায়। নলের অক্ষ বরাবর তরল স্তরের বেগ সর্বাধিক। দুটি স্তরের বেগ বিবেচনা করলে দেখা যায় যে, নীচের স্তরটি অক্ষের দিকে থাকা উপরের স্তরের বেগ কমাতে চায়।
আবার উপরের স্তরটি নীচের স্তরের বেগ বাড়াতে চায়। অর্থাৎ, একটি বল উপরের স্তরের স্পর্শক বরাবর পিছনের দিকে কাজ করে। উপরের স্তরের আপেক্ষিক বেগ বজায় রাখার জন্য বাহ্যিক বল প্রয়োজনীয়। নইলে প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে ।

একটি তরলের সান্দ্রতা হল সেই ধর্ম, যার জন্য তরল তার বিভিন্ন স্তরের আপেক্ষিক গতিতে বাধার সৃষ্টি করে। প্রবাহীর সাধারণ প্রকৃতি হল সান্দ্রতা, এবং বিভিন্ন তরলের সান্দ্রতা বিভিন্ন হয়। 

সান্দ্র বল হলো, প্রবাহীর অভ্যন্তরীণ বল যা একটি সান্দ্রতাজনিত বাঁধার সৃষ্টি করে। প্রবাহীর দুই স্তরের মধ্যে (স্থির অবস্থায়) কোনো আপেক্ষিক বেগ না থাকলে সান্দ্র বল কার্যকর হয় না।

উদাহরণস্বরূপ, যখন দুটি কঠিন পৃষ্ঠতল স্থির অবস্থায় একে অপরের সংস্পর্শে থাকে, তখন কোনো  ঘর্ষণ শক্তি বিদ্যমান থাকে না। এই কারণেই সান্দ্রতা তরলের অভ্যন্তরীণ ঘর্ষণ হিসাবেও পরিচিত। অভ্যন্তরীণ ঘর্ষণ বল হল সান্দ্রবল। 

ঘর্ষণ বল এবং সান্দ্র বলের পার্থক্য 

ঘর্ষণ – বল সান্দ্র – বল 
তরলের ক্ষেত্রফলের উপর ঘর্ষণ – বল নির্ভর করে না ।সান্দ্র-বল স্পর্শ তলের ক্ষেত্রফলের সমানুপাতিক ।
একটা কঠিন বস্তু যখন আর একটা তলের উপর দিয়ে চলে, বা চলার চেষ্টা করে , তখন তাদের স্পর্শ তলে যে বিশুদ্ধ বল ক্রিয়া করে তাকে ঘর্ষণ-বল বলা হয়। প্রবাহীর দুটো তলের মধ্যে আপেক্ষিক বেগ থাকলে সান্দ্রবল প্রবাহীর সান্দ্রতাজনিত বাধা এবং কার্যকর হয় ।

সান্দ্রতা : জল < মধু < আলকাতরা। এই পরিস্থিতিতে, আলকাতরার গড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা  সর্বনিম্ন। ঝোলাগুড় এবং গ্লিসারিন দুটোই  জলের চেয়ে বেশি সান্দ্র। তরলের সান্দ্রতা গ্যাসের চেয়ে বেশি হয়ে।

প্রবাহ শান্ত (ধারারেখ) হবে, না অশান্ত হবে তা ধারণা করা যায় রেনল্ডস সংখ্যার (Re) মান থেকে।

Re= dvDη, যেখানে d= প্রবাহীর ঘনত্ব, v= গড় গতিবেগ, D = পাইপের ব্যাস, η = সান্দ্রতাঙ্ক 

সাধারণভাবে, যদি Re < 2300, প্রবাহ শান্ত হয়; অন্যথায়, Re > 2300 হলে, প্রবাহটি অশান্ত হয়।

যদি অন্যান্য রাশিগুলি স্থির থাকে তাহলে প্রবাহীর ঘনত্ব যেমন বাড়তে থাকে, তেমনি সান্দ্রতাঙ্ক তথা সান্দ্রতাও বৃদ্ধি পায়। সান্দ্রতা যত বেশি হবে সান্দ্রতাঙ্কও তত বেশি হবে, যা নির্দেশ করে যে সান্দ্রতা এবং ঘনত্ব দুটি স্বতন্ত্র রাশি।
সান্দ্র তরলে বস্তুর প্রান্তীয় বেগ (Terminal velocity) : যখন একটি বস্তু সান্দ্র মাধ্যমের মধ্য দিয়ে নীচে পড়ে, তখন তিনটি  বল বস্তুর উপর ক্রিয়া করে –

  1. বস্তুর ওজন (W), যার জন্য বস্তুটি নিচে নামতে চায়। 
  2. মাধ্যমের প্লবতা (Fb), এবং 
  3. মাধ্যমের সান্দ্রতাজনিত বাধা বা সান্দ্র-বল (Fv) ।

Fb এবংFv উপরের দিকে কাজ করে। Fb এর একটি নির্দিষ্ট মান থাকে। মাধ্যমের সান্দ্রতা বস্তু এবং মাধ্যমের স্তরগুলির মধ্যে গঠিত আপেক্ষিক গতিতে বাধা হিসাবে কাজ করে। স্টোকসের সূত্র অনুসারে বস্তুর বেগ বৃদ্ধির সাথে সাথে সান্দ্রতাজনিত বাধা (Fv) বৃদ্ধি পায় । 

এই কারণে, বস্তুর উপর দুটি ঊর্ধ্বমুখী বলের লব্ধি Fb + Fv বৃদ্ধি পায় এবং শীঘ্রই তা নিম্নমুখী mg-এর সমান হয়। এই অবস্থায় বস্তুর বেগ আর বৃদ্ধি পায় না । বস্তুর কার্যকরী বল শূন্য হওয়ায় গতি বাড়ার সাথে সাথে এটি নীচে নামতে শুরু করে। এই স্থির বেগকে বলা হয় প্রান্তীয় বেগ (বা, সীমান্ত বেগ) ।

অর্থাৎ, একটি পতনশীল বস্তুর বেগ সান্দ্র মাধ্যমে প্রথমে বৃদ্ধি পায়, তারপর এটি দ্রুত একটি নির্দিষ্ট বেগ অর্জন করে। এই স্থির বেগকেই ওই মাধ্যমের প্রান্তিক বেগ বলা হয়। 

এক্ষেত্রে শর্ত হল :  প্লবতা + সান্দ্র-বল = বস্তুর ওজন । 

প্রবাহীর সান্দ্রতা বেশি হলে, পতনশীল বস্তুটি দ্রুত প্রান্তিক বেগ অর্জন করে। গ্যাসের সান্দ্রতা যথেষ্ট কম হয়, তাই ক্ষুদ্র বস্তুগুলি গ্যাসের মাধ্যমে অনেকটা নেমে এসে তবে প্রান্তীয় বেগ অর্জন করে। বৃষ্টির ফোঁটা প্রান্তীয় বেগে নীচে পড়ে।

বারনৌলির নীতি (Bernoulli’s theorem)

এটি একটি জলগতিবিদ্যার (hydrodynamics) প্রয়োজনীয় উপপাদ্য। যে সকল স্বীকার্যের উপর ভিত্তি করে উপপাদ্যগুলি রয়েছে তা হলো: 

  • তরল :  অসংনম্য, অসান্দ্র (আদর্শ চরিত্রের) 
  • প্রবাহ :  শান্ত (ধারারেখ)। অর্থাৎ প্রবাহীর গতিবেগ < সন্ধিবেগ 
  • ঘর্ষণ, বা অন্য কোনো কারণের জন্য শক্তির অপচয় হয় না। শক্তির সংরক্ষণ নীতি বজায় থাকে।

উপপাদ্যটি হল : আদর্শ তরলের ধারারেখ প্রবাহের ক্ষেত্রে প্রবাহ-নলের যে কোনো ছেদে থাকে একটি একক আয়তনের তরলের মোট গতিশক্তি, স্থিতিশক্তি এবং চাপশক্তির ধ্রুবক 

অর্থাৎ, একক  আয়তনের গতিশক্তি + স্থিতিশক্তি + চাপ

অর্থাৎ, 12.mV.u2+mV.gh+P=ধ্রুবক or, 12.d.u2+dgh+P=ধ্রুবক  

12.u2+gh+Pd=ধ্রুবক or,u22g+h+Pdg=ধ্রুবক 

P = তরলের চাপ, u = গতিবেগ, V =  আয়তন,  m = ভর, h = উচ্চতা, g = অভিকর্ষজ ত্বরণ, d = ঘনত্ব 

ব্যবহারিক প্রয়োগ :

  • জল, সুগন্ধি, কীটনাশক এবং অন্যান্য তরল স্প্রে করার জন্য যে স্প্রেয়ার ব্যবহৃত হয়, সেটি বারনৌলি নীতির উপর ভিত্তি করে তৈরি। বেলুনে চাপ দেওয়া হলে বাতাস দ্রুত অনুভূমিক নলের মাধ্যমে বেরিয়ে যায় এবং চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। ফলস্বরূপ, তরল পাত্রের উপরে উঠে যায় এবং বাতাসের সাথে বেরিয়ে যায়।
  • বিমানের ডানাগুলি অনন্য ভাবে গঠিত হয়। উপরের পৃষ্ঠতল বেশি বাঁকা এবং  সামনের দিক বেশি মোটা হয়। ফলস্বরূপ, এর ডানার উপরের দিকের বায়ুর বেগ তার ডানার নীচের দিকের বাতাসের বেগের চেয়ে অনেক বেশি এবং চাপ হ্রাস পায়। ডানার নীচে বায়ুর প্রচন্ড ঊর্ধ্বমুখী চাপের কারণে বিমানগুলি বাতাসে উঠতে পারে এবং ভাসতে পারে।
  • ঝড় বা ঘূর্ণিঝড়ের সময় মাটির ঘরের চাল উড়ে যায় । কারণ বায়ুর গতি চালের উপরে যথেষ্ট বেশি হওয়ায়, চাপ খুবই কম হয়। কারণ বাড়ির ভিতরে বা চালের নিচে বায়ু স্থির থাকে তাই চাপ বেশি থাকে। চাপের পার্থক্য ঝড়ের গতির অনুপাতে বৃদ্ধি পায়। অবশেষে, বাঁধন ছিঁড়ে চাল উড়ে যেতে পারে।

স্থিতিস্থাপকতা 

স্থিতিস্থাপকতা : বাহ্যিক বল ব্যবহার করে বস্তুর আকৃতি পরিবর্তন করার চেষ্টা করলে বস্তু বাধা দেয়। বস্তুর প্রতিরোধ করার এই ধর্মকে উপাদানের স্থিতিস্থাপকতা বলা হয়। 

বাহ্যিক বল অপসারণ হয়ে গেলে, স্থিতিস্থাপকতার কারণে বস্তুটি তার আসল আকারে ফিরে আসে। স্থিতিস্থাপকতা পদার্থের সাধারণ ধর্ম, বস্তুর নয়।

বাহ্যিক শক্তি অপসারিত হয়ে যদি বিকৃত বস্তুটি সম্পূর্ণরূপে তার আসল আকার এবং আয়তনে ফিরে আসে, তাহলে সেটি পূর্ণ স্থিতিস্থাপক হয়। এবং যদি এটি না হয়, তাহলে তাকে পূর্ণ-নমনীয় বলা হয়। 

বাহ্যিক বল প্রয়োগের পরও যদি কোনো বস্তুর আকৃতির পরিবর্তন না হয়, তাহলে বস্তুটিকে পূর্ণ-দৃঢ় বস্তু বলা হয়। বাস্তবে সম্পূর্ণ স্থিতিস্থাপক, সম্পূর্ণ নমনীয় বা সম্পূর্ণ কঠিন বস্তু বলে কিছু নেই। কিন্তু কাচকে প্রায় পূর্ণ-দৃঢ় হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।

রবার, না ইস্পাত বেশি স্থিতিস্থাপক ? 

বল প্রয়োগ করে রাবারের বলের আকৃতি সহজেই পরিবর্তন করা যায় কিন্তু ইস্পাতের ক্ষেত্রে তা হয় না। তাই ইস্পাত বেশি স্থিতিস্থাপক।
স্থিতিস্থাপকতা  নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের উপর :  

  1. তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে স্থিতিস্থাপকতাও হ্রাস পায়। এই পরিস্থিতিতে, ইনভার 

(সংকর ধাতু) আলাদা কারণ তাপমাত্রার পরিবর্তনের জন্য স্থিতিস্থাপকতার পরিবর্তন হয় না ।

  1. বারবার গরম করা, ঠান্ডা করা বা বিকৃত করার ফলে স্থিতিস্থাপকতা কমিয়ে যায় ।
  2. অপদ্রব্য পদার্থের সাথে মিলিত হলেও স্থিতিস্থাপকতা পরিবর্তিত হয়।

পীড়ন (stress) : যখন একটি বাহ্যিক বল বস্তুর আকৃতি পরিবর্তন করার চেষ্টা করে, তখন বস্তুর মধ্যে অভ্যন্তরীণ প্রতিক্রিয়া বল তৈরি হয়। এই প্রতিক্রিয়া বল প্রযুক্ত বলকে বাধা দেয় এবং যখন প্রযুক্ত বল অপসারণ করা হয়, তখন বস্তুটি তার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুসারে, ভারসাম্যের প্রতিক্রিয়া বল প্রযুক্ত বলের সমান এবং বিপরীত। ফলস্বরূপ, পীড়ন পরিমাপ করা হয় – সাম্যাবস্থায় বস্তুর একক ক্ষেত্রফলের উপর প্রযুক্ত বল দ্বারা। 

অর্থাৎ ,

পীড়ন (S) = প্রযুক্ত বল (F)ক্ষেত্রফল (A)

পীড়নের CGS একক : ডাইন / সেমি (dyne/cm2)

পীড়নের SI একক : নিউটন / মিটার (N/m2)

পীড়নের মাত্রা = [বল]/[ক্ষেত্রফল] = [ MLT-2] / [ML-2T-2]

স্থিতিস্থাপক সীমা: একটি নির্দিষ্ট  বাহ্যিক বলের নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত, প্রতিটি বস্তু একটি পূর্ণ-স্থিতিস্থাপক বস্তুর মতো আচরণ করে। যখন বাহ্যিক বল সেই সীমা অতিক্রম করে, তখন বল সরিয়ে নেওয়ার পরেও বস্তুটি তার আসল আকারে ফিরে আসে না। তার স্থায়ী বিকৃতি প্রকাশ পায়। প্রযুক্ত বলের এই উচ্চসীমাকে স্থিতিস্থাপক সীমা বলা হয় । 

বিকৃতি : বাহ্যিক বলের প্রভাবের কারণে একটি স্থিতিস্থাপক বস্তুর দৈর্ঘ্য, আয়তন বা আকারের পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তনকে বিকৃতি বলে । প্রাথমিক মানের তুলনায় বস্তুর দৈর্ঘ্য, আয়তন এবং আকৃতির আনুপাতিক পরিবর্তন, বিকৃতি দ্বারা গণনা করা হয়। 

একই ধরনের দুটি  রাশির অনুপাত  হওয়ার কারণে বিকৃতির কোনো একক নেই। যেমন-

  1. অনুদৈর্ঘ্য বিকৃতি = দৈর্ঘ্যের পরিবর্তন (I) প্রাথমিক দৈর্ঘ্য (L)
  2. আয়তন বিকৃতি = আয়তনের পরিবর্তন (v) প্রাথমিক আয়তন (V)
  3. কৃন্তন  বিকৃতি : বাহ্যিক বলের ক্রিয়াকলাপের ফলে যদি কোনো স্থিতিস্থাপক বস্তুর আয়তন পরিবর্তন না করে তার আকার পরিবর্তন করা হয় তবে সেই বিকৃতিকে কৃন্তন বিকৃতি বলে। উদাহরণস্বরূপ, যখন একটি মোটা বইয়ের উপরের পৃষ্ঠে স্পর্শক বরাবর একটি বল প্রয়োগ করা হয়, তখন বইটি কাত হয়ে যায়। প্রযুক্ত বলের সাথে যুক্ত কোনো লম্ব রেখা যদি θ-রেডিয়ান কোণে ঘোরে, তাহলে এই  θ-কে কৃন্তন  কোণ বলা হয়। tanθ হল কৃন্তন বিকৃতি।

হুকের সূত্র (Hooke’s law) : হুকের সূত্রানুযায়ী, পীড়ন স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে তার বিকৃতির সমানুপাতিক। অর্থাৎ, স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে, পীড়ন বিকৃতি, অর্থাৎ, (পীড়ন / বিকৃতি) = ধ্রুবক। এই ধ্রুবকের নাম স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক । এর মান পদার্থের প্রকৃতি দ্বারা নির্ধারিত হয়। তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্কের মান সাধারণত হ্রাস পায়।

  • বিকৃতি বা মাত্রার কোনো একক না থাকায়, স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক এবং পীড়নের মাত্রা ও একক একই হয়৷ 
  • বস্তুর স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক স্থিতিস্থাপকতার পরিমাণ নির্দেশ করে । 
  • যে বস্তুর স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্কের মান যত বেশি হবে, তত বেশি স্থিতিস্থাপক হবে।
  • উদাহরণস্বরূপ,  ইস্পাতের স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক রাবারের চেয়ে 200 গুণ বেশি। আবার, ইস্পাতের চেয়ে হীরে বেশি স্থিতিস্থাপক । 

স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক তিন প্রকার : ইয়ং গুণাঙ্ক, আয়তন-বিকৃতি গুণাঙ্ক এবং দৃঢ়তা গুণাঙ্ক। 

ইয়ং গুণাঙ্ক : কোনো তার বা দন্ডের স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে অনুদৈর্ঘ্য পীড়ন ও অনুদৈর্ঘ্য বিকৃতির অনুপাতকে ইয়ং গুণাঙ্ক (Y) বলা হয়।

ইয়ং গুণাঙ্ক হল একটি স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক, এর মাত্রা এবং একক, স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক, তথা পীড়নের মাত্রা ও একক একই রকম। 

SI একক : N/m2 

CGS একক : dyne/cm2
তরল ও গ্যাসের দৈর্ঘ্য না থাকায় এদের ইয়ং গুণাঙ্কের ধারণা প্রয়োগ করা যায় না। 

সাধারণত, স্প্রিংস ইস্পাত দিয়ে নির্মিত হয়; তামা দিয়ে হয় না কেন?

স্থিতিস্থাপকতার ক্ষেত্রে ইস্পাত > তামা অর্থাৎ, একই  মাপের একটি ইস্পাতের স্প্রিং এবং একটি তামার স্প্রিং-এর দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা ইস্পাতের বেশি ।

স্প্রিং – এর বল – ধ্রুবক : কোনো স্প্রিং-এর একক দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় বলকে স্প্রিং-এর বল-ধ্রুবক (k) বলে। 

বস্তুর বিকৃতি ∝ প্রযুক্ত বল। যদি একটি স্প্রিং-এর ওপর F বল প্রয়োগ করা হয় এবং যদি তার x পরিমাণ প্রসারণ ঘটে তবে, F ∝ x or, F = k. x [k = সমানুপাত ধ্রুবক] 

স্প্রিং টা সমান ও বিপরীত বল প্রয়োগ করবে। 

বল-ধ্রুবকের CGS একক : dyne/cm

বল-ধ্রুবকের SI একক : N/ m

একটি স্প্রিং-এর বল ধ্রুবক আসলে তার দৃঢ়তার একটি পরিমাপ। বল ধ্রুবকের মান যত বেশি হবে, স্প্রিং তত শক্ত হবে।

স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে চাপ বৃদ্ধির ফলে বস্তুটি বিকৃত হয় (হুকের সূত্র)। 

ভঙ্গুরতা : যদি বস্তুটি দ্রুত ভেঙ্গে পড়ে এবং চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়, বস্তু/পদার্থটি ভঙ্গুর হয়; এবং এই বৈশিষ্ট্যটিকে ভঙ্গুরতা বলে । উদাহরণ: কাচ, চীনামাটির বাসন ইত্যাদি। 

প্রসার্জতা : যদি বিকৃতি, পীড়ন বৃদ্ধির চেয়ে বেশি হয়, তাহলে বস্তু প্রসার্জ হয় এবং এই বৈশিষ্ট্যটিকে প্রসার্যতা বলা হয়। ফলে সেই পদার্থটি টানলে, একটি পাতলা তার তৈরি হতে পারে। যেমন – তামা, সোনা, রূপা, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি ।

নমনীয়তা : পীড়ন শূন্য হলেও, বস্তুর আচরণ যদি নমনীয় হয়, তাহলে সেই গুণটিকে নমনীয়তা বলা হয়। এই পরিস্থিতিতে, উপাদানটি একটি সুনির্দিষ্ট আকারে,  ছাঁচে তৈরি করা যেতে পারে (ভাস্কর্য শিল্পে plastic art)।

দৈনন্দিন জীবনে স্থিতিস্থাপকতা :  

  1. ধাতুর স্প্রিং স্থিতিস্থাপকতা ধর্মকে স্প্রিং-তুলা এবং অন্যান্য ওজনের যন্ত্রগুলিতে ব্যবহার করা হয়। একটি বড় স্টিলের স্প্রিং মালগাড়ির/রেল বগির নিচে অবস্থিত।
  2. ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বিভিন্ন বিভাগে রেলপথ, সেতু এবং অন্যান্য কাঠামো নির্মাণে লোহা এবং ইস্পাতের মতো উচ্চ স্থিতিস্থাপক পদার্থ ব্যবহার করা হয়।
  3. ক্রেনে ব্যবহৃত ইস্পাতের দড়ির ব্যাস ইস্পাতের স্থিতিস্থাপক সীমা ব্যবহার করে তৈরী করা হয়।
  4. সোনার উচ্চ মাত্রার ঘাতসহতা এবং নমনীয়তা রয়েছে। তাই  অলঙ্কার তৈরি করা সহজ, তবে প্রয়োজন অনুযায়ী  অন্য ধাতু  মিশিয়ে সংকর ধাতু তৈরি করা যায়।

SOLVED QUESTIONS & ANSWERS of পদার্থ : গঠন ও ধর্ম PODARTHO: GOTHON O DHORMO

1 MARKS QUESTIONS of পদার্থ : গঠন ও ধর্ম PODARTHO: GOTHON O DHORMO

  1. সিসার সরু তার তৈরি সম্ভব নয়। কারণ সিসার ______ খুবই কম। 

উত্তর : প্রসার্যতা

  1. ব্যারোমিটারকে চাঁদে নিয়ে গেলে তার পাঠ কত হবে? 

উত্তর : চাঁদে বায়ুমণ্ডল নেই তাই চাঁদে বায়ুর চাপ শূন্য। সুতরাং, চাঁদে ব্যারোমিটারকে নিয়ে গেলে তার পাঠ শূন্য হবে।

  1. যে যন্ত্রের সাহায্যে বায়ুমণ্ডলের চাপ মাপা হয় তাকে ______ বলে

উত্তর : ব্যারোমিটার

  1. তরলের ঘনত্ব ও সান্দ্রতা বৃদ্ধি পেলে প্রান্তীয় বেগের মান কীরূপ পরিবর্তিত হয়? 

উত্তর : তরলের ঘনত্ব ও সান্দ্রতা বৃদ্ধি পেলে বস্তুর প্রান্তীয় বেগ উভয় ক্ষেত্রেই হ্রাস পায়।

  1. তরলের চাপের সঙ্গে ওর চাপশক্তির সম্পর্ক কীরূপ?

উত্তর : একক আয়তনে তরলের চাপশক্তি = তরলের চাপ।

  1. পদার্থের কোন্ ধর্মের পার্থক্যের জন্য লোহার সরু তার বানানো সম্ভব হলেও সিসার সরু তার বানানো সম্ভব নয়? 

উত্তর : পদার্থের প্রসার্যতা ধর্মের পার্থক্যের জন্য লোহার সরু তার বানানো সম্ভব হলেও সিসার সরু তার বানানো সম্ভব নয়।

  1. প্লবতার মাত্রীয় সংকেত কী ? 

Ans . প্লবতার মাত্রীয় সংকেত হল MLT – 2 | 

  1. স্বয়ংক্রিয় ফ্ল্যাশ ব্যবহার করা হয় সাইফনের নীতি অনুযায়ী । ( সত্য / মিথ্যা নির্বাচন করাে ) 

Ans . সত্য 

  1. সাবান জলের পৃষ্ঠটান কম হওয়ায় এর মুক্তপৃষ্ঠ সংকোচনের প্রবণতাও কম । ( সত্য / মিথ্যা নির্বাচন করাে ) 

Ans . সত্য 

  1. প্রবাহীর কোন্ ধরনের প্রবাহে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয় ?

Ans . প্রবাহীর অশান্ত প্রবাহে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয় । 

  1. B তরলে A কঠিনটি নিমজ্জিত হয়ে যাওয়ার অর্থ B- এর ঘনত্ব A- এর ঘনত্বের তুলনায় ______

Ans . কম

  1. ধারারেখাগুলি একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করার পর পরস্পরকে ছেদ করে। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)

উত্তর : মিথ্যা

  1. পদার্থের কোন্ ধর্মের পার্থক্যের জন্য লোহার সরু তার বানানো সম্ভব হলেও সিসার সরু তার বানানো সম্ভব নয়?

উত্তর : পদার্থের প্রসার্যতা ধর্মের পার্থক্যের জন্য লোহার সরু তার বানানো সম্ভব হলেও সিসার সরু তার বানানো সম্ভব নয়।

  1. ব্যারোমিটারকে চাঁদে নিয়ে গেলে তার পাঠ কত হবে? 

উত্তর : চাঁদে বায়ুমণ্ডল নেই তাই চাঁদে বায়ুর চাপ শূন্য। সুতরাং, চাঁদে ব্যারোমিটারকে নিয়ে গেলে তার পাঠ শূন্য হবে।

  1. বিকৃতির একক কী? 

উত্তর : বিকৃতির কোনো একক নেই।

multiple choice questions – 1 marks of পদার্থ : গঠন ও ধর্ম PODARTHO: GOTHON O DHORMO

  1. বার্নৌলির উপপাদ্য যে নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত তা হল – 
  2. শক্তির সংরক্ষণ 
  3. ভরের সংরক্ষণ 
  4. ভরবেগ সংরক্ষণ 
  5. কোনোটিই নয়

উত্তর : A

  1. একটি স্প্রিং তুলা থেকে একটি ব্লককে বায়ুতে ঝুলিয়ে দেওয়া হলে সেটি 60N পাঠ দেয় ব্লকটি জলে নিমজ্জিত অবস্থায় থাকলে স্প্রিং তুলার পাঠ হয় 40N। ব্লকটির আপেক্ষিক গুরত্ব – 
  2. 3

উত্তর : D

  1. নীচের কোনটি চাপের একক নয়? 
  2. N⋅m−2  
  3. বার 
  4. টর 
  5. নিউটন

উত্তর : D

  1. একই উপাদানে নির্মিত দুটি তার A ও B । A–এর দৈর্ঘ্য B অপেক্ষা বেশি। A ও B-এর ইয়ং গুণাঙ্ক যথাক্রমে  – 
  2. YA=YB 
  3. YA>YB 
  4. YB>YA 
  5. YA=YB=0

উত্তর : A

  1. একটি ব্লেড জলের ওপর ভাসছে মূলত যার জন্য এই ঘটনা ঘটে তা হল – 
  2. সান্দ্রতা 
  3. অভিকর্ষ 
  4. প্লবতা 
  5. পৃষ্ঠটান

উত্তর : D

  1. একটি তরলে দুটি স্তরের মধ্যে ক্রিয়াশীল সান্দ্র বল স্তর দুটির আপেক্ষিক বেগ – 
  2. বৃদ্ধি করে 
  3. হ্রাস করে 
  4. অপরিবর্তিত রাখে 
  5. হ্রাসবৃদ্ধি করে

উত্তর : C

  1. দ্রুতগামী ট্রেনের কাছে দাঁড়ানো ব্যক্তির ট্রেনের দিকে চলে যাওয়াকে যার সাহায্যে ব্যাখ্যা করা যায়, তা হল – 
  2. স্টোকস-এর সূত্র 
  3. বার্নৌলির উপপাদ্য 
  4. নিউটনের সূত্র 
  5. কোনোটিই নয়

উত্তর : B

  1. একটি ধাতুখণ্ডের বায়তে ওজন 200 g-wt ও জলে পূর্ণ নিমজ্জিত অবস্থায় ওজন 150 g-wt ধাতুর আপেক্ষিক গুরুত্ব হল – 
  2. 4

উত্তর : D

  1. তেলের কোন ধর্মের জন্য ল্যাম্পের পলতের মধ্য দিয়ে তেল উঠে জ্বলতে থাকে? 
  2. ঘনত্ব 
  3. সান্দ্রতা 
  4. পৃষ্ঠটান 
  5. অভিকর্ষ

উত্তর : C

  1. বার্নৌলির উপপাদ্য যে নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত তা হল – 
  2. শক্তির সংরক্ষণ 
  3. ভরের সংরক্ষণ 
  4. ভরবেগ সংরক্ষণ 
  5. কোনোটিই নয়

উত্তর : A

  1. প্লবতা নির্ভর করে – 
  2. শুধুমাত্র বস্তুর নিমজ্জিত অংশের আয়তনের ওপর 
  3. শুধুমাত্র তরলের ঘনত্বের ওপর 
  4. শুধুমাত্র অভিকর্ষজ ত্বরণের ওপর 
  5. ওপরের তিনটির ওপরই নির্ভরশীল

উত্তর : D

  1. সংকট উষ্ণতায় তরলের পৃষ্ঠটান – 
  2. শূন্য হয় 
  3. সর্বোচ্চ হয় 
  4. 100 dyn/cm 
  5. 200 dyn/cm

উত্তর : A

  1. জলে তেল ফেললে পৃষ্ঠটান – 
  2. একই থাকে 
  3. কমে 
  4. বাড়ে 
  5. কমে বা বাড়ে

উত্তর : B

  1. কোনো বস্তুর ওপর ক্রিয়াশীল প্লবতা যে বিষয়টির ওপর নির্ভরশীল নয়তা হল – 
  2. তরলের অভ্যন্তরে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত বস্তুর গভীরতা 
  3. বস্তুর নিমজ্জিত অংশের আয়তন 
  4. অভিকর্ষজ ত্বরণের মান 
  5. অপসারিত তরলের ঘনত্ব

উত্তর : A

  1. প্রবাহী হল – 
  2. কঠিন, তরল ও গ্যাস 
  3. কঠিন ও তরল 
  4. তরল ও গ্যাস 
  5. কঠিন ও গ্যাস

উত্তর : C

  1. কোনো তরলকে নাড়ালে এটি শেষপর্যন্ত এসে স্থির হয়ে যায়, কারণ – 
  2. জাড্য 
  3. পৃষ্ঠটান 
  4. সান্দ্রতা 
  5. ঘর্ষণ

উত্তর : C

  1. ঘাতের SI একক হল – 
  2. নিউটন মিটার 
  3. নিউটন 
  4. নিউটন/মিটার 
  5. N⋅m−2

উত্তর : B

  1. একটি বদ্ধপাত্রে একটি কাঠের টুকরো জলে ভাসছে যদি পাত্র থেকে কিছুটা বাতাস বের করে নেওয়া হয়, তাহলে –
  2. কাঠের টুকরোটি আরও একটু ডুবে যাবে 
  3. কাঠের টুকরোটি আরও একটু ভেসে উঠবে 
  4. কাঠের টুকরোর নিমজ্জিত অংশের আয়তন অপরিবর্তিত থাকবে 
  5. প্রথমে আরও একটু ভেসে উঠলেও পরে পুরো নিমজ্জিত হবে

উত্তর : A

  1. বস্তুর স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে কোনটি ধ্রুবক? 
  2. পীড়ন × বিকৃতি 
  3. বিকৃতি/পীড়ন 
  4. পীড়ন 
  5. বিকৃতি

উত্তর : B

  1. প্রমাণ চাপের সংজ্ঞায় যে অক্ষাংশের উল্লেখ থাকে – 
  2. 30∘ 
  3. 45∘ 
  4. 60∘ 
  5. 90∘

উত্তর : B

short questions – 2-3 marks of পদার্থ : গঠন ও ধর্ম PODARTHO: GOTHON O DHORMO

1. ব্যারোমিটারে পারদের ব্যবহার এর দুটি প্রধান সুবিধা লেখ। 

উত্তর :  

  • পারদ এর ঘনত্ব বেশি হওয়ায় ব্যারোমিটার এর উচ্চতা ব্যবহারিক সীমার মধ্যে রাখা সম্ভব হয়।
  • পারদ উজ্জ্বল ও চকচকে বলে নলের বাইরে থেকে এর অবস্থান পরিষ্কার বোঝা যায়।

2. ব্যারোমিটার এর সাহায্যে আবহাওয়ার পূর্বাভাস কিভাবে পাওয়া সম্ভব? 

উত্তর :  ব্যারোমিটার এর সাহায্যে কোন স্থানের আবহাওয়ার মোটামুটি পূর্বাভাস দেওয়া যায়। বায়ুমন্ডলে সর্বদাই কিছু জলীয়বাষ্প থাকে। এই জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে বায়ুর ঘনত্ব কমে যায় ফলে বায়ুর চাপ হ্রাস পায়। সুতরাং, কোন স্থানে ব্যারোমিটারের পারদ স্তম্ভের উচ্চতা ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকলে ধরে নেওয়া যায় যে, বায়ুতে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক্ষেত্রে মনে করা যেতে পারে যে শিগগিরই বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। আর যদি ব্যারোমিটারের পাট ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় তাহলে বৃষ্টিহীন পরিষ্কার আবহাওয়া ধরা যেতে পারে। কোন স্থানে ব্যারোমিটারের পারদ স্তম্ভের উচ্চতা যদি হঠাৎ দ্রুত হ্রাস পেতে থাকে তাহলে ওই স্থানে বায়ুর চাপ দ্রুত কমে যাচ্ছে এবং ওই স্থানে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এই সময় পার্শ্ববর্তী উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে বায়ু দ্রুত বেগে ওই নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসে এবং যার ফলে ঝড়ের আশঙ্কা করা যায়।

3. ঘনত্ব এবং আপেক্ষিক গুরুত্বের মধ্যে প্রধান দুটি পার্থক্য লেখ।

উত্তর : 

  • পদার্থের একক আয়তনের ভরকে ঘনত্ব বলে, আর পদার্থটি চার ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতায় আয়তন জল অপেক্ষা যত গুণ ভারী তা হলো আপেক্ষিক গুরুত্ব।
  • ঘনত্বের একটি নির্দিষ্ট একক আছে, কিন্তু আপেক্ষিক গুরুত্বের নির্দিষ্ট কোন একক থাকে না।

4. স্থিতিস্থাপকতা বলতে কী বোঝো? 

উত্তর : বাইরে থেকে প্রতিমিত বল বা দ্বন্ধ প্রয়োগ করে কোন বস্তুকে বিকৃত করার চেষ্টা করলে বস্তুর মধ্যে একটি প্রতিক্রিয়া বলের সৃষ্টি হয় যা বস্তুতে বিকৃতি সৃষ্টির প্রচেষ্টাকে বাধা দেয় এবং প্রযুক্ত বল অপসারণ করলে বস্তুটিকে আবার তার পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনে। পদার্থের এই ধর্মকে স্থিতিস্থাপকতা বলা হয়।

error: Content is protected !!
Scroll to Top

আজকেই কেনো পরীক্ষার শর্ট নোটস

এখন সহজে পরীক্ষার প্রস্তুতি নাও – আজকেই ডাউনলোড করো পিডিএফ বা বই অর্ডার করো আমাজন বা ফ্লিপকার্ট থেকে