fbpx

পরিবেশ ও তার সম্পদ Poribesh O Tar Sompod Class 9 Life Science Jibon Bigyan WBBSE Notes

আপনি এখানে শিখবেন এই অধ্যায়ে এবং বিষয়ের ফাউন্ডেশন অংশটা, এই বিষয়টিকে সহজ-সরলভাবে পড়িয়েছেন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ভিডিও লেকচার এর মাধ্যমে এবং এই পুরো অধ্যায়কে চার ভাগে খন্ডিত করে আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে

  • প্রথম খন্ডে আপনি শিখবেন ফাউন্ডেশন অংশটা যেখানে অধ্যায়ের ব্যাপারে আপনাকে বোঝানো হয়েছে তার মানে definitions,basics  গুলো সহজভাবে.  এবং এটাকে আপনি বুঝতে পারবেন যেটা আপনাকে পরীক্ষার জন্য ক্রীপের করতে সাহায্য করবে
  • দ্বিতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন MCQ মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন যেটা সাধারণত এক Marks’er আসে পরীক্ষায়
  • তৃতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন শর্ট অ্যানসার এবং কোয়েশ্চেন, যেটা আপনার পরীক্ষার সাজেশন মধ্যে পড়ে এবং এটা 3-4 marks’er  প্রশ্ন আসে আপনার পরীক্ষা
  • চতুর্থ মডিউল আপনি শিখবেন লং আনসার এবং questions যেটা সাধারণত 5-6 marks er হয়

আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন যাতে কি আপনাকে আমরা সাহায্য করতে পারি

বাস্তুবিদ্যা ও বাস্তুবিদ্যার সংগঠন

বাস্তুবিদ্যা : জীবজগৎ ও পরিবেশ একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। আমরা প্রত্যেকেই আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলার চেষ্টা করি। জীব যেমন পরিবেশের ওপর নির্ভরশীল তেমনই পরিবেশও জীবের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। জীব ও তার পরিবেশের মধ্যে সর্বক্ষণ এক অবিচ্ছিন্ন আন্তঃক্রিয়া ঘটতে থাকে। এই পারস্পরিক আন্তঃক্রিয়া বাস্তুবিদ্যা নামে পরিচিত।

অটইকোলজি : একটি নির্দিষ্ট জীবের সাথে তার পরিবেশের পারস্পরিক আন্তঃক্রিয়া সম্পর্কিত আলোচনাকে বলা হয় অটইকোলজি।

সিনইকোলজি : একটি কমিউনিটির অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন জীবের সাথে পরিবেশের পারস্পরিক আন্তঃক্রিয়া সম্পর্কিত আলোচনাকে সিনইকোলজি বলা হয়।

একক জীবস্তর  

পরিবেশে বসবাসকারী সমস্ত জীবেরই একটি নিজস্ব সত্তা থাকে এবং প্রতিটি জীব হলো বাস্তুবিদ্যার ক্ষুদ্রতম একক।  প্রত্যেকটি জীব যেমন পরিবেশের বিভিন্ন প্রভাবক দ্বারা প্রভাবিত হয়, তেমনি প্রতিটি জীব তার পরিবেশকে প্রভাবিত করে। পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান যেমন- জলবায়ু, ভৌগোলিক, মাটি প্রভৃতি জীবের অভিযোজনে সাহায্য করে। আলো, আর্দ্রতা, তাপমাত্রা, উচ্চতা, পাহাড়ের ঢাল, মাটির উপাদান, গঠন, জল প্রভৃতি প্রাকৃতিক উপাদান জীবের ওপর প্রভাব বিস্তার করে ও অভিযোজনে সহায়তা করে।

  • আলো 
  • উদ্ভিদের ওপর প্রভাব : আলোকিত অঞ্চলে যে সমস্ত উদ্ভিদ জন্মায়, বড় হয় ও বংশবৃদ্ধি করে, তাকে Sun Plant বা হেলিয়োফাইট বলে। এই ধরণের উদ্ভিদের পাতাগুলি ছোট, সবুজ ও পুরু কিউটিকল ও রোমযুক্ত হয়। এরা আকারে ছোট হয় এবং পত্ররন্ধ্রগুলি  পাতার ত্বকের ভিতরের দিকে ঢোকানো থাকে।

    কম আলো, ছায়াঘন অঞ্চলে যেসব উদ্ভিদ জন্মায়, বড় হয় ও বংশবৃদ্ধি করে, তাদের বলা হয় shade plant বা সিয়োফাইট। এরা আকারে বড় হয়, পাতা আকারে বড়, সবুজ, উজ্জ্বল ও পাতলা কিউটিকলযুক্ত হয়। এদের পত্ররন্ধ্র পাতার উভয়তলের সঙ্গে সমানভাবে অবস্থান করে।

    উদ্ভিদের ফুল ফোটার অর্থাৎ ফটোপিরিয়োডিজম-এর ক্ষেত্রে আলোর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। যেমন- দীর্ঘ- দিবা উদ্ভিদ বেশি দিবা- দৈর্ঘ্যের ফুল উৎপাদন করে এবং হ্রস্ব-দিবা উদ্ভিদ কম দিবা দৈর্ঘ্যের ফুল উৎপন্ন করে। দিবা- নিরপেক্ষ উদ্ভিদ যেকোনো দিবা দৈর্ঘ্যের ফুল উৎপন্ন করে।
    1. প্রাণীর ওপর প্রভাব : প্রাণীর ওপর আলোর প্রভাব তুলনামুলক কম হলেও কিছু প্রাণীর বৃদ্ধি ও বিকাশ নির্ভর করে আলোর ওপর। যেমন- স্যালমন মাছের লার্ভার বিকাশ ঘটার জন্য আলোর প্রয়োজন, অপরদিকে মাইটিলাসের লার্ভার বিকাশ অন্ধকারে ভালো হয়। পরিযায়ী পাখি ও প্রাণীদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গমন নির্ভর করে দিনের দৈর্ঘ্যের ওপর। কিছু প্রাণীর জনন দিনের আলোর দৈর্ঘ্যের ওপর নির্ভর করে। যেমন- হরিণ, মেষ প্রভৃতি প্রাণী কম দৈর্ঘ্যের দিনের আলোয় জননে লিপ্ত হয়।
  • আর্দ্রতা
  • উদ্ভিদের ওপর প্রভাব : যেসব অঞ্চলের বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা বেশি হয়, সেইসব অঞ্চলের গাছের পাতা সরু হয় ও পর্বমধ্যগুলি লম্বা হয়। যেমন- পার্বত্য অঞ্চলে অধিক ঠান্ডা ও আর্দ্রতায় পাইন জাতীয় গাছ জন্মায়। অন্যদিকে মরু অঞ্চলে অধিক গরম ও কম আর্দ্রতায় ক্যাকটাস জাতীয় উদ্ভিদ জন্মায়। জল সঞ্চয় করে রাখার কারণে এদের পর্বমধ্যগুলি ছোট হয়। এদের পাতাগুলি ছোট, পুরু কিউটিকলযুক্ত হয় এবং কোনো কোনো পাতা কাঁটায় পরিণত হয়।
  • প্রাণীর ওপর প্রভাব : মরু অঞ্চলে গরম ও কম আর্দ্র, শুস্ক পরিবেশে প্রাণীদের ত্বক পুরু হয় এবং স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ঘর্মগ্রন্থি কখনো বেশি থাকে আবার কখনো কম যা পরিবেশের আর্দ্রতার ওপর নির্ভর করে। এই অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্যগুলি প্রাণীর দেহে ঘামের মাধ্যমে জলের অপচয় বন্ধ করতে সাহায্য করে। স্যান্ড লিজার্ড, হর্ন টোড প্রভৃতি প্রাণীদের ত্বক কাঁটা ও আঁশযুক্ত হয় ফলে এদের শরীর থেকে কোনো বাস্পীভবন ঘটে না।
  • তাপমাত্রা
  • উদ্ভিদের ওপর প্রভাব : যেসব উদ্ভিদ বেশি তাপমাত্রায় জন্মায় এবং যাদের কম বা মধ্যম তাপমাত্রায় বসবাস করতে দেখা যায় না, তাদের বলা হয় মেগাথারমস। যেসব উদ্ভিদ খুব কম তাপমাত্রায় জন্মায় এবং যাদের উচ্চ তাপমাত্রা যুক্ত এলাকায় দেখা যায়না, তাদের বলা Hekistotherms। যেসব উদ্ভিদ মধ্য তাপমাত্রায় জন্মায় তাদের বলা হয় মেসোথারমাস। যেসব উদ্ভিদ নিম্ন তাপমাত্রায় জন্মায় তাদের বলা হয় মাইক্রোথারমাস। এই সকল উদ্ভিদের তাপমাত্রাজনিত অভিযোজন ঘটে। 

মেগাথারমাস উদ্ভিদের ক্ষেত্রে বাস্পমোচন বেশি হওয়ার কারণে উদ্ভিদ রসালো হয় ও মূলমন্ত্র দীর্ঘ ও বিস্তৃত হয়। এরা ক্রাসুলেসিয়ান আয়াসিড বিপাক বা CAM নামক পদ্ধতির সাহায্যে কার্বন ডাই অক্সাইডের আবদ্ধকরণ ঘটায়। জলাভাবের জন্য Hekistotherms উদ্ভিদের দেহ ছোট হয় ও বীজের সুপ্তাবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হয়।

  • প্রাণীর ওপর প্রভাব : মরুভূমির প্রাণীরা প্রবল গরমে মাটির নিচে ঢুকে যায় এবং গ্রীষ্ম ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে মাছ ও পাখিরা তুলনামূলক শীতল অঞ্চলে মাইগ্রেট করে। খুব বেশি উষ্ণ অঞ্চলে প্রাণীর ত্বকের নীচে মেদ কম জমা হয় এবং এদের লোম ছোট হয় এবং অতিশীতল অঞ্চলে প্রাণীর  দেহত্বকের নীচে মেদ বেশি জমা হয় এবং দেহের উষ্ণতা ধরে রাখার জন্য লোম বড় হয়। 

শীতলশোণিত প্রাণী যেমন- উভচর ও সরীসৃপ প্রবল ঠান্ডায় শীতঘুম বা হাইবারনেশনে চলে যায়। গ্লগারের নীতি অনুসারে উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুতে বসবাসকারী প্রাণীর দেহের বর্ণ গাঢ় এবং শীতল ও শুস্ক অঞ্চলে বসবাসকারী প্রাণীর দেহ বর্ণ হালকা হয়। বার্গম্যানের নীতি অনুসারে গ্রীষ্মপ্রধান জলবায়ু অনচ্চলে বসবাসকারী পাখি ও স্তন্যপায়ী প্রাণীর শরীরের আকার তুলনামূলকভাবে শীতপ্রধান অঞ্চলের প্রাণীদের থেকে ছোট হয়।

পপুলেশন স্তর 

কোন প্রজাতির সমস্ত জীবকে সমষ্টিগত ভাবে পপুলেশন বা জনসংখ্যা বলে।

পপুলেশন বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণকারী শর্ত : 

  1. জন্মহার : জীবের অপত্য সৃষ্টির হারকে জন্মহার বলে অর্থাৎ একক সময়ে জননের মাধ্যমে যে সংখ্যায় নতুন সদস্য যুক্ত হয় তাকে জন্মহার বা ন্যাটালিটি বলা হয়। 

প্রকারভেদ : জন্মহার প্রভাবিত হয় খাদ্যের প্রাচুর্য, আলো ও উষ্ণতার ওপর। কোনো বাধাপ্রদানকারী শর্ত না থাকলে একক সময়ে কোন পপুলেশনে সর্বাধিক যত সংখ্যক সদস্য যুক্ত হয়, তাকে সর্বাধিক জন্মহার বা চরম জন্মহার বলা হয়। সকল বাধাপ্রদানকারী শর্তের উপস্থিতিতে পপুলেশনে সদস্যসংখ্যা যুক্ত হয়ে যে জন্মহার দেখা যায় তাকে বাস্তব জন্মহার বা ইকোলজিক্যাল জন্মহার বলে। জন্মহারের সূত্র- জন্মহার(B)= Nn/t, যেখানে Nn হলো পপুলেশনে সংযোজিত নতুন সদস্য এবং t হলো একক সময়।

  1. মৃত্যুহার : একক সময়ে জীবের মৃত্যু হলে যতজন সদস্য পপুলেশন থেকে কমে যায় তাকে মৃত্যুহার বা মর্টালিটি বলা হয়।

প্রকারভেদ : প্রাকৃতিক নিয়ম বা বার্ধক্যজনিত কারণে জীব মারা গেলে তাকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলা হয়। এছাড়া খাদ্যাভাব, অপুষ্টি, রোগজীবাণু সংক্রমণ প্রভৃতি কারণে জীবের মৃত্যু হয় ফলে পপুলেশনে ঘাটতি হয়। যখন আদর্শ বা অনুকূল পরিবেশে একক সময়ে সর্বনিম্ন স্বাভাবিক মৃত্যু হয়, সেই মৃত্যুহার কে বলা হয় ন্যূনতম বা কার্যকর মৃত্যুহার। পরিবেশের বিভিন্ন শর্তের প্রভাবে পপুলেশনে যে মৃত্যুহার দেখা যায় তাকে ইকোলজিকাল বা বাস্তব মৃত্যুহার বলে। মৃত্যুহারের সূত্র- মৃত্যুহার (D)= Nd/t, যেখানে Nd হলো পপুলেশনে মৃত সদস্যসংখ্যা ও t হলো একক সময়।

  1. পরিযান : কোনো স্থানে কোনো কারণে নির্দিষ্ট প্রজাতির জীবের সংখ্যা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে গেলে সেই জীব দলবদ্ধভাবে নিজের বাসস্থান ছেড়ে অনুকূল বাসস্থানের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে, যা পপুলেশনের বিচলন নামে পরিচিত। যেমন- শীতকালে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে বিভিন্ন পাখি, বালিহাস, শামুকখোল প্রভৃতি দলবদ্ধ হয়ে ভারতে চলে আসে। এখানে তারা বংশ বৃদ্ধি করে এবং গরমকাল শুরু হলেই তারা বাচ্চাসমেত সাইবেরিয়ায় ফিরে যায়।
    কোন পপুলেশনের অন্তর্গত জীবেরা যখন দলবদ্ধভাবে দ্বিমুখী গমনে পুরনো বাস স্থান থেকে নতুন বাস স্থানে এবং প্রয়োজনে নতুন বাস স্থান থেকে পুরনো বাসস্থানে পুনরায় ফিরে আসে তাকে পরিযান বলা হয়।

অভিবাসন : যখন কিছু নতুন সদস্য পপুলেশনে প্রবেশ করে পপুলেশন বাড়িয়ে দেয় তাকে বলা হয় অভিবাসন।

প্রবাসন : যখন কিছু সদস্য এক পপুলেশন থেকে বেরিয়ে অন্য পপুলেশনে প্রবেশ করে পপুলেশন কমিয়ে দেয় তখন তাকে বলে প্রবাসন।

কমিউনিটি স্তর

একই পরিবেশে বসবাসকারী আন্তঃক্রিয়াশীল বিভিন্ন পপুলেশনের সমষ্টি হল কমিউনিটি বা সম্প্রদায় স্তর।

কমিউনিটির বৈশিষ্ট্য : 

  • কমিউনিটির অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে একটি বিশেষ প্রজাতির জীব বেশি আধিপত্য বিস্তার করে। 
  • কমিউনিটির অন্তর্ভুক্ত এই জীবদের দুভাগে ভাগ করা হয়- স্বভোজী ও পরভোজী। 
  • এই পপুলেশন অনুভূমিক ও উল্লম্ব স্তরবিন্যাসের মাধ্যমে দেখা হয়। 4. কমিউনিটির উৎপত্তি ও বিকাশ একটা ফাঁকা স্থান থেকে শুরু হয়।

কমিউনিটি আন্তঃক্রিয়া : কমিউনিটিতে বিভিন্ন পপুলেশনে বিভিন্ন আন্তঃক্রিয়া দেখা যায়। যেমন- প্রতিযোগিতা, শিকারজীবিতা, পরজীবিতা ও সহযোগিতা।

  • প্রতিযোগিতা : পরিবেশের বিভিন্ন সম্পদ যেমন খাদ্য, জল, আলো ও বাসস্থানের জন্য ভিন্ন প্রজাতির জীবের মধ্যে বা একই প্রজাতির দুই বা ততোধিক জীবের মধ্যে যে আন্তঃক্রিয়া দেখা যায়, তাকে বলা হয় প্রতিযোগিতা।
    • একই প্রজাতির মধ্যে প্রতিযোগিতা হলে তাকে বলা হয় অন্তঃপ্রজাতিগত প্রতিযোগিতা 
    • দুই বা ততোধিক প্রজাতির মধ্যে প্রতিযোগিতা হলে তাকে বলা হয় আন্তঃপ্রজাতিক প্রতিযোগিতা
    • উদ্ভিদের মধ্যেও প্রতিযোগিতা দেখা যায়। যেমন বড় বৃক্ষের নিচে বা তাদের জড়িয়ে অনেক ছোট চারাগাছ, লতাপাতা জন্মায় কিন্তু সঠিক পরিমান আলো, জল, বাতাস না পেয়ে অনেক চারাগাছ মারা যায় আবার কিছু সংখ্যক চারাগাছ বৃক্ষে পরিণত হয়। প্রাণীর ক্ষেত্রে Paramecium aurelia এবং P. Caudatum কে কৃত্রিম কর্ষণের দ্বারা পালন করলে আন্তঃপ্রজাতিগত প্রতিযোগিতায় P. Aurelia বেঁচে থাকে ও P. Caudatum মারা যায়।
  • শিকারজীবিতা বা Predation : দুই বা ততোধিক জীবের মধ্যে খাদ্য-খাদক সম্পর্কযুক্ত যে আন্তঃক্রিয়া দেখা যায় , তা শিকারজীবিতা বা Predation হিসেবে পরিচিত। 
    • শিকারজীবিতায় খাদক শ্রেণী তুষ্ট হপয় এবং ওপর দুর্বল শ্রেনী মারা যায়। যেমন- সিংহ বা বাঘ খাদক শ্রেণী। এরা হরিণ বা ছাগল প্রভৃতি দুর্বল জীবকে শিকার করে বেঁচে থাকে। 
    • কিছু পতঙ্গভূক উদ্ভুদ আছে যেমন কলসপত্রি, সূর্যশিশির, ড্রসেরা, পাতাঝাঁঝি প্রভৃতি পতঙ্গ বা তাদের লার্ভা শিকার করে মেরে তাদের শরীর থেকে নাইট্রোজেন শোষণ করে বেঁচে থাকে।
  • পরজীবিতা বা parasitism : দুটি ভিন্ন জীব গোষ্ঠীর মধ্যেকার আন্তঃক্রিয়াতে যে জীব আশ্রয়দাতা হিসাবে পরজীবীকে আশ্রয় কিংবা পুষ্টি রস প্রদান করে তাকে পোষক বা হোস্ট বলে। দুটি ভিন্ন জীব গোষ্ঠীর মধ্যেকার আন্তঃক্রিয়ায় যে জীব আশ্রয়দাতার থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করে বেঁচে থাকে, তাকে পরজীবী বা প্যারাসাইট বলে।
    • পরজীবী আট প্রকার- বহিঃ পরজীবী , অন্তঃপরজীবী , বাধ্যতামূলক পরজীবী, ইচ্ছাধীন পরজীবী, আনুষাঙ্গিক পরজীবী, ভ্রমণরত পরজীবী, পর্যাবৃত্ত বা বিক্ষিপ্ত পরজীবী, রোগ সৃষ্টিকারী পরজীবী। এই ধরণের আন্তঃক্রিয়ায় পরজীবী উপকৃত হয় ও পোষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেমন- মশা, উকুন আমাদের দেহের রক্ত পান করে বেঁচে থাকে পুষ্টি লাভ করে কিন্তু মানবদেহে রোগ সৃষ্টি করে।
    • যেসব পরজীবী পোষকের দেহের বাইরের তলে সংলগ্ন থাকে অথবা আলগাভাবে প্রোথিত থাকে তাদের বহিঃপরজীবী বলে। যেমন উকুন ,জোক ইত্যাদি।
    • যেসব পরজীবী পোষকের দেহের অভ্যন্তরের বসবাস করে তাদের অন্তঃপরজীবী বলে। যেমন কৃমি।
    • যেসব পরজীবী তাদের জীবনের কোন দশা অথবা সমগ্র জীবন পরজীবী রূপে পোশাকের উপর নির্ভর করে অতিবাহিত করে তাদের বাধ্যতামূলক পরজীবী বলে। যেমন প্লাজমোডিয়াম।
    • যেসব জীব পরজীবী জীবনযাত্রার উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল নয় তাদের ইচ্ছাধীন পরজীবী বলে যেমন ছারপোকা জোক ইত্যাদি।
    • যেসব জীব আকস্মিকভাবে কোন অস্বাভাবিক পোশাকের দেহে থাকে তাকে আনুষাঙ্গিক পরজীবী বলে যেমন মৃত্তিকায় বসবাসকারী কিছু নেমাটোড।
    • যেসব পরজীবী বিপাকীয় চাহিদার কারণে মাঝেমধ্যে পোশাকের সাথে সংলগ্ন হয় তাদের বিক্ষিপ্ত বা পর্যাবৃত্ত পরজীবী বলে।
  • সহযোগীতা বা co-operation : পুষ্টি আত্মরক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে দুটি ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির জীবের মধ্যে পারস্পরিক বোঝা পড়ার মাধ্যমে আন্তঃক্রিয়া দেখা যায় তাকে সহযোগিতা বা মিথোজীবিতা বলে। যেমন লাইকেন এর ক্ষেত্রে শৈবাল ও ছত্রাক পরস্পরের সাহায্যে পুষ্টি সম্পাদন করে। সহযোগিতা বিভিন্নভাবে ঘটে। 
    • কমেনসালিজম : যে ধরণের সহযোগিতায় একটি প্রজাতির জীব উপকৃত হয় কিন্তু ওপর প্রজাতির জীব ক্ষতিগ্রস্ত হয় না তাকে commensalism বলে। যেমন- অর্কিড, গজপিপুল প্রভৃতি গাছ উদ্ভিদের গায়ে জন্মালেও তার থেকে পুষ্টি নেয়না। ফেরেমোরা নামক মাছের পৃষ্ঠপাখনা চোষকে পরিণত হয় যার সাহায্যে তারা হাঙ্গরের পেটের দিকে থাকে ও হাঙ্গরের গমনের সাথে থেকে তার খাদ্যের বেঁচে যাওয়া অংশ গ্রহন করে ফেরেমোরা উপকৃত হয় কিন্তু হাঙ্গর ক্ষতিগ্রস্ত হয়না। 
  • মিউচুয়ালিজম : যে ধরনের সহযোগিতায় দুই প্রজাতির জীবই একে অপরের দ্বারা উপকৃত হয়, একজন না থাকলে ওপরের জীবনহানি ঘটার সম্ভাবনা থাকে, তাকে মিউচুয়ালিজম বলে। যেমন- লাইকেনে শৈবাল ও ছত্রাক একে অপরের সাহায্যে পুষ্টি গ্রহণ করে, রাইজোবিয়াম ব্যাকটেরিয়া শিমের মূলে অর্বুদ গঠন করে ফলে উভয়ই উপকৃত হয়। গো-বক ও গরু একে ওপরের সাহচর্যে বেঁচে থাকে।
  • প্রোটো-কোঅপারেশন : যে ধরনের সহযোগিতায় দুই প্রজাতির জীবই একে অপরের দ্বারা উপকৃত হয়, কিন্তু একজন না থাকলে ওপরের জীবনহানি ঘটার সম্ভাবনা থাকে না, তাকে প্রোটো- কোঅপারেশন বলে। যেমন- সন্যাসী কাঁকড়া ও সি- এনিমোন নামক প্রাণীর মধ্যেকার প্রোটো- কোঅপারেশন।

বাস্তুতান্ত্রিক স্তর বা বাস্তুতন্ত্র

যে নিয়মের মাধ্যমে কোনো নির্দিষ্ট পরিবেশে বসবাসকারী জীব সম্প্রদায় এবং ওই পরিবেশের অজৈব উপাদান গুলির পারস্পারিক আন্তঃক্রিয়ায় উদ্ভূত উপাদানের বিনিময় ঘটে, তাকে বাস্তুতন্ত্র বা ইকোসিস্টেম বলে। বিজ্ঞানী ওডামের মতে বাস্তুতন্ত্র হল জীবগোষ্ঠী ও জড় পরিবেশের মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্ক এবং এই সম্পর্কের মাধ্যমে একে অপরকে প্রভাবিত করার অবস্থা।  

বাস্তুতন্ত্রের গঠনগত বৈশিষ্ট্য : কিছু অজীবজ ও জীবজ শর্ত দ্বারা বাস্তুতন্ত্র গঠিত হয়। 

  1. অজীবজ শর্তাবলি : বাস্তুতন্ত্রের যে উপাদানগুলিতে প্রাণের অস্তিত্ব নেই, সেই উপাদানগুলিকে জড় উপাদান বা অজীবজাত উপাদান বলে। এই উপাদানগুলি আবার তিন প্রকারের হয়। যথা-
    1. অজৈব উপাদান : বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান তথা ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, সালফার, অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড, অ্যামাইনো অ্যাসিড ইত্যাদি হল বাস্তুতন্ত্রের অজৈব উপাদান। এগুলি জৈব ভূ রাসায়নিক চক্রের মাধ্যমে আবর্তিত হয়ে পরিবেশের মধ্যে তার সাম্য বজায় রাখে।
    2. জৈব উপাদান : কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট ইত্যাদি হল বাস্তুতন্ত্রের জৈব উপাদান।এগুলি জীবজগতের জৈব রাসায়নিক গঠন রূপে জড় ও সজীব উপাদানের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে।
    3. ভৌত উপাদান : সূর্যালোক, বৃষ্টিপাত, উষ্ণতা, বায়ুপ্রবাহ, বায়ুর চাপ, আদ্রর্তা, মৃত্তিকা, ভূমির ঢাল, ভূমির উচ্চতা ইত্যাদি হল বাস্তুতন্ত্রের ভৌত উপাদান। এগুলি বাস্তুতন্ত্রে বিভিন্ন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার চরমাবস্থা নির্ধারণ করে।
  1. জীবজ শর্তাবলি : বাস্তুতন্ত্রের অন্তর্গত যেসব উপাদানে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, তাদের সজীব উপাদান বলে। বাস্তুতন্ত্রের এই সজীব উপাদানগুলিকে পুষ্টি স্তর অনুসারে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা- 
    1. স্বভোজী উপাদান : বাস্তুতন্ত্রের অন্তর্গত যে সকল জীব সৌরশক্তি শোষণ করে বিভিন্ন অজৈব উপাদান (কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন) সহযোগে নিজেদের দেহের জটিল খাদ্য প্রস্তুতিতে সক্ষম, তাদের উৎপাদক বা স্বভোজী বা অটোট্রফ বলে। যেমন- সবুজ  উদ্ভিদ,  শৈবাল,   সালোকসংশ্লেষকারী ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি হল বাস্তুতন্ত্রের স্বভোজী উপাদান।
  • পরভোজী উপাদান : বাস্তুতন্ত্রের অন্তর্গত যে সকল জীব নিজেদের খাদ্য নিজেরা তৈরি করতে পারে না, খাদ্যের জন্য উৎপাদকের ওপর নির্ভরশীল তাদের পরভোজী উপাদান বা খাদক বলে। দেহাকৃতি অনুযায়ী এই খাদককে দুইভাগে ভাগ করা যায়। বৃহৎ খাদক ও অনুখাদক।
  • বৃহৎ খাদক : এই প্রকার খাদককে শাকাহারি ও মাংসাশী-এই দুইভাগে ভাগ করা যায়। শাকাহারি খাদককে প্রাথমিক খাদক বলে। মাংসাশী খাদককে গৌণ খাদক ও প্রগৌণ খাদক- এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়।
  • প্রাথমিক খাদক : বাস্তুতন্ত্রে যেসকল খাদক খাদ্যের জন্য সরাসরি স্বভোজী বা সবুজ উদ্ভিদদের ওপর নির্ভরশীল, তাদের প্রাথমিক খাদক বলে। যেমন-গরু, ছাগল ভেড়া, ঘাসফড়িং ইত্যাদি।
  • গৌণ খাদক : বাস্তুতন্ত্রে যেসকল খাদক খাদ্যের জন্য প্রাথমিক খাদকদের উপর নির্ভরশীল, তাদের গৌণ খাদক বলে।যেমন- কুকুর, বিড়াল, সাপ, ব্যাংক, টিকটিকি ইত্যাদি মাংসাশী প্রাণী।
  • প্রগৌণ খাদক : বাস্তুতন্ত্রে যেসকল খাদক খাদ্যের জন্য দ্বিতীয় শ্রেণীর খাদক বা গৌণ খাদকদের উপর নির্ভরশীল, তাদের প্রগৌণ খাদক বলে। যেমন- বাঘ, সিংহ, চিল, শকুন, শেয়াল, মাছরাঙ্গা, সাপ, মানুষ ইত্যাদি।
  1. অনুখাদক : ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, একটিনোমাইসেটিস প্রভৃতি আণুবীক্ষণিক মৃতজীবী যারা মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীর প্রোটোপ্লাজমের জটিল যৌগ ভেঙে সরল উপাদানে পরিণত করে ও বিয়োজিত পদার্থের কিছু অংশ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে ও বাকিটা অজৈব বা জৈব পদার্থ হিসেবে পরিবেশে ফিরিয়ে দেয় তাদের অনুখাদক বলে। এদের দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা-বিয়োজক ও পরিবর্তক।
    1. বিয়োজক : বাস্তুতন্ত্রের অন্তর্গত যে সকল সজীব উপাদান মৃতজীবী অর্থাৎ যারা মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহ বিয়োজিত করে সরল রাসায়নিক যৌগে পরিবর্তন করে, তাদের বিয়োজক বা ডিকম্পোজার বলে। এরা মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীর প্রোটোপ্লাজমের জটিল রাসায়নিক যৌগগুলিকে ভেঙে কিছুটা নিজেরা নিজেদের পুষ্টির জন্য ব্যবহার করে এবং অবশিষ্টাংশ অজৈব লবণ হিসাবে পরিবেশে ফিরিয়ে দেয়। উদাহরণ- বিভিন্ন ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি।
    2. পরিবর্তক : যেসব অনুখাদক বিয়োজকের সাহায্যে উৎপন্ন সরল জৈব যৌগকে জটিল জৈব যৌগে বা মৌলে পরিণত করে, তাদের পরিবর্তক বলে। যেমন- বিভিন্ন নাইট্রিফাইয়িং ও ডি-নাইট্রিফাইয়িং ব্যাকটেরিয়া।

বাস্তুতন্ত্রের কার্যগত বৈশিষ্ট্য

  1. খাদ্যশৃঙ্খল : উৎপাদক থেকে ক্রমপর্যায় খাদ্য-খাদক সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন প্রাণীগোষ্ঠীর মধ্যে খাদ্য শক্তির একমুখী প্রবাহের ক্রমিক পর্যায়কে খাদ্যশৃঙ্খল বলে। যেমন- জলজ উদ্ভিদ (ফাইটোপ্লাংটন)-পতঙ্গ -মাছ- মানুষ (জলজ বাস্তুতন্ত্র) ও উদ্ভিদ – হরিন – বাঘ (অরন্যের বাস্তুতন্ত্র)।

খাদ্যশৃঙ্খলে 3-5 টি স্তর থাকে। সেগুলি হলো- উৎপাদক(ফাইটোপ্লাঙ্কটন) —- প্রাথমিক খাদক(জুপ্লাঙ্কটন) —- গৌণ খাদক(ছোট মাছ) —- প্রগৌণ খাদক (বড় মাছ) —- সর্বোচ্চ খাদক (বক)। 

খাদ্যশৃঙ্খলের বৈশিষ্ট্য : 

  • খাদ্যশৃঙ্খলের নীচের পুষ্টিস্তর থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত শক্তির প্রবাহ একমুখী।
  • খাদ্যশৃঙ্খলের সবচেয়ে নীচের স্তরে থাকে  সবুজ উদ্ভিদ। 
  • কোনো কোনো খাদ্যশৃঙ্খল সবুজ উদ্ভিদ ছাড়াই শুরু হয়। যেমন – পরজীবী ও মৃতজীবী খাদ্যশৃঙ্খল। 
  • খাদ্যশৃঙ্খলের নিম্নস্তর থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত জীবের সংখ্যা ও শক্তির পরিমান ক্রমান্বয়ে কমতে থাকে। 
  • যে বাস্তুতন্ত্রে জীববৈচিত্র্য যত বেশি সেই বাস্তুতন্ত্রে খাদ্যশৃঙ্খলের জটিলতাও তত বেশি, এক্ষেত্রে খাদ্যজাল সৃষ্টি হয়। 
  • খাদ্যশৃঙ্খলের জীববৈচিত্র্য অর্থাৎ প্রজাতির সংখ্যা কম থাকে। 
  • একটি খাদ্যশৃঙ্খলের পুষ্টিস্তরের সংখ্যা তিন থেকে পাঁচের মধ্যে থাকে।

খাদ্যশৃঙ্খলের প্রকারভেদ :  খাদ্যখাদকের প্রকৃতির ভিত্তিতে বাস্তুতন্ত্রে তিন ধরনের খাদ্যশৃঙ্খল লক্ষ্য করা যায়। যথা – 

  • শিকারী খাদ্যশৃঙ্খল : এই রূপ খাদ্যশৃঙ্খল প্রাথমিক খাদক বা শাখাহারি প্রানী থেকে শুরু হয় এবং পর্যায়ক্রমে খাদ্য খাদক সম্পর্কের ভিত্তিতে ক্ষুদ্র থেকে বৃহত্তর মাংসাশীতে স্থানান্তরিত হয়। উদাহরণ – ঘাস – ফড়িং – ব্যাঙ – সাপ – ময়ূর।
  • পরজীবী খাদ্যশৃঙ্খল : এই রূপ খাদ্যশৃঙ্খলে প্রত্যেক পুষ্টিস্তরে জীবের আকার ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হতে থাকে অর্থাৎ বৃহত্তর জীবকে আশ্র্য করে পরজীবী খাদ্য শৃঙ্খল গঠিত হয়। এক্ষেত্রে বড়ো জীবকে হোস্ট ও ক্ষুদ্রতর জীবকে পরজীবী বলে। উদাহরণ – মানুষ – কৃমি – আদ্যপ্রানী। 
  • মৃতজীবী খাদ্যশৃঙ্খল : এরূপ খাদ্যশৃঙ্খলে মৃত ও গলিত জীবদেহ থেকে ক্রমান্বয়ে জীবানুর দিকে শক্তি প্রবাহিত হয় এবং শক্তি মৃত জীবি ও বিয়োজকের দেহে আবদ্ধ থাকে। উদাহরণ – মৃত উদ্ভিদ – ছত্রাক – ব্যাকটেরিয়া।

খাদ্যশৃঙ্খলের ধরন অনুযায়ী খাদ্য শৃঙ্খলকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা – 

  • চারনভূমি বা গ্রেজিং খাদ্যশৃঙ্খল : যে খাদ্যশৃঙ্খল উৎপাদক থেকে শুরু হয় এবং প্রাথমিক খাদক রূপে তৃণভোজীরা চরে চরে খাদ্য গ্রহন করে, তাকে চারন ভূমি বা গ্রেজিং খাদ্যশৃঙ্খল বলে। উদাহরণ – ঘাস – হরিন – বাঘ ( স্থলভাগ), উদ্ভিদ – পতঙ্গ – মাছ – বক ( জলভাগ) ।
  • বিয়োজক বা ডেট্রিটাস খাদ্যশৃঙ্খল : যে খাদ্যশৃঙ্খল অনুখাদক বা বিয়োজক স্তর থেকে শুরু হয়ে বড়ো প্রানীতে শেষ হয়, তাকে বিয়োজক বা ডেট্রিটাস খাদ্যশৃঙ্খল বলে। উদাহরণ – পচাপাতা – লার্ভা – ছোট মাছ – বড়ো মাছ।
  • খাদ্যজাল :  কোনো বাস্তুতন্ত্রে বিভিন্ন প্রজাতির দ্বারা আন্তঃসম্পর্ক যুক্ত অনেক গুলি খাদ্যশৃঙ্খলকে একত্রে খাদ্যজাল বলে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কোন একটি তৃণভূমির খাদ্য শৃঙ্খলে ঘাস ঘাসফড়িং কর্তৃক, ঘাসফড়িং গিরগিটি কর্তৃক, গিরগিটি বাজপাখি কর্তৃক ভক্ষিত হয়। 

আবার অপর একটি খাদ্য শৃঙ্খলে ঘাস ঘাসফড়িং কর্তৃক, ঘাসফড়িং ব্যাঙ কর্তৃক, ব্যাঙ সাপ কর্তৃক এবং সাপ বাজপাখি কর্তৃক ভক্ষিত হয়। আবার ঘাসফড়িং এর অনুপস্থিতিতে ঘাস খরগোশ কর্তৃক এবং খরগোশ বাজপাখি কর্তৃক ভক্ষিত হয়ে তৃতীয় একটি খাদ্য শৃঙ্খল গঠন করে। 

আবার ঘাস ইঁদুর কর্তৃক, ইঁদুর সাপ কর্তৃক এবং সাপ বাজপাখি কর্তৃক ভক্ষিত হয়ে আরো একটি খাদ্যশৃঙ্খল গঠন করে। এই ভাবে দেখা যাচ্ছে তৃণভূমির বাস্তুতন্ত্রে ঘাসকে কেন্দ্র করে মোট চারটি খাদ্য শৃংখল ঘটিত হলো, যা জালের ন্যায় জটিল আকৃতি বা খাদ্যজাল গঠন করেছে।

  1. শক্তিপ্রবাহ : বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদক দ্বারা রূপান্তরিত সৌরশক্তি খাদ্যের মাধ্যমে এক দেহ থেকে অন্য দেহে স্থানান্তরকে শক্তি প্রবাহ বা এনার্জি ফ্লো বলে।

বাস্তুতন্ত্রে এই শক্তি প্রবাহ কয়েকটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়। সেগুলি হলো-

  • সৌরশক্তির শোষণ ও রূপান্তর : শক্তির মূল উৎস হল সূর্যালোক অর্থাৎ সৌর শক্তি যার 50 মিলিয়ন ভাগের মাত্র এক ভাগ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পৌঁছায়। সবুজ উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ সময় সেই সৌরশক্তির মাত্র 1-5% (0.02%) শোষন করে রাসায়নিক শক্তিতে পরিবর্তন করে। পরে ওই রাসায়নিক শক্তি উৎপন্ন খাদ্যের মধ্যে স্থিতি শক্তিরূপে আবদ্ধ হয়। তাই এই পর্যায়েকে শক্তি অর্জন বলে।
  • উৎপাদক কর্তৃক শক্তির ব্যবহার : বাস্তুতন্ত্রের পুষ্টি স্তরে আসল শক্তি উৎপাদন করে উৎপাদক। উৎপাদক কর্তৃক গৃহীত সৌরশক্তি খাদ্য শৃঙ্খলে আবদ্ধ বিভিন্ন জীব গোষ্ঠী পর্যায়ক্রমে গ্রহণ করে শক্তির প্রবাহ অক্ষুন্ন রাখে। উদ্ভিদ শ্বসন প্রক্রিয়ায় খাদ্যের জারণের মাধ্যমে শক্তি লাভ করে।
    যে পরিমান শক্তি শ্বসনে লাগে তাকে শ্বসন শক্তি বলে। শ্বসনের পর বাকি শক্তি খাদ্যরূপে উদ্ভিদের দেহে সঞ্চিত থাকে যা প্রাথমিক উৎপাদন হিসেবে পরিচিত। আর এই জীব গোষ্ঠী যে পরিমান শক্তি গ্রহণ করে তার বেশিরভাগ দেহের তাপ উৎপাদন এবং নানা প্রকার জৈবনিক কাজে ব্যবহৃত করে যা গৌন উৎপাদন নামে পরিচিত।
  • শক্তির স্থানান্তরকরণ ও খাদক কর্তৃক শক্তির ব্যবহার : বাস্তুতন্ত্রের উৎপাদকের দেহে আবদ্ধ সৌরশক্তি পর্যায়ক্রমে প্রথম সারির, দ্বিতীয় সারির, তৃতীয় সারির এবং শেষ সর্বোচ্চ সারের খাদকের দেহে স্থানান্তরিত হয়। এই স্থানান্তরকালে প্রতি ধাপে মোট শক্তির প্রায় 90 শতাংশ অপচয় হয় এবং মাত্র 10 শতাংশ দেহ গঠনের কাজে লাগে।
  • পরিপোষক চক্র : যে চক্রাকার পথে জীবদেহ গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় মৌল যেমন- C, H, O, N, P, স, Ca ইত্যাদি পরিবেশ থেকে জীবদেহ প্রবেশ করে এবং জীবদেহ থেকে আবার পরিবেশে ফিরে যায়, তাকে পরিপোষক চক্র বা জৈব- ভূরাসায়নিক চক্র বলে। এই ম্যাক্রো এবং মাইক্রো এলিমেন্টগুলি জীবদেহ পোষক হিসেবে কাজ করে ও এই চক্রের মাধ্যমে পরিবেশে ও জীবদেহ আবর্তিত হয় বলে একে পরিপোষক চক্রও বলে। প্রকৃতিতে তিনপ্রকার জৈব- ভূরাসায়নিক চক্র আছে। যথা- জলচক্র, গ্যাসীয় চক্র ও সেডিমেন্টারি বা পাললিক চক্র।
    • জলচক্র : যে প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে জল তার বিভিন্ন অবস্থায় যেমন- বাস্পীভবন, বাস্পীমোচন, মেঘের বৃষ্টি, বৃষ্টিপাত, শিলা বৃষ্টি, তুষারপাত, শিশির প্রভৃতির মাধ্যমে শিলামণ্ডল, বারিমণ্ডল ও আৰহ মণ্ডলের মধ্যে ক্রমাগত অপ্রতিহত অবস্থায় আবর্তিত হয়ে চলেছে, জলের সেই চক্রাকার আদান-প্রদান ব্যবস্থাকে জলচক্র বা বারিচক্র বলে (Hydrological Cycle)।

বাষ্পীভবন, ঘনীভবন ও অধঃক্ষেপণের মাধ্যমে জলচক্র সম্পাদিত হয়। এই তিনটি প্রক্রিয়ার যে-কোনাে একটি প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হলে জলচক্রের ভারসাম্য নষ্ট হয়। সূর্যের কিরণে জল বাষ্পে পরিণত হয়। বায়ুমণ্ডলের ওই বাষ্প অনুকূল পরিবেশে ঘনীভূত হয়ে জলভাগ ও স্থলভাগে বৃষ্টিপাত বা তুষাররূপে পতিত হয়। 

অধঃক্ষেপণের এক অংশ মৃত্তিকা শােষণ করে ভৌমজলের ভাণ্ডার গড়ে তােলে, এক অংশ পুকুর, হ্রদ, নদীতে সঞ্চিত হয় এবং বাকি অংশ পৃষ্ঠপ্রবাহরূপে সমুদ্রে ফিরে যায়। পুনরায় ওই জল বাষ্পীভূত হয়ে বায়ুমণ্ডলে ফিরে যায়। প্রকৃতিতে জল এইভাবে আবর্তিত হয়।

  • গ্যাসীয় চক্র : বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন গ্যাস রয়েছে যেমন- অক্সিজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন প্রভৃতি। এই গ্যাসগুলি জীব তাদের পরিবেশ থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় গ্রহণ করে ও নানা কাজে ব্যবহার করে ওই গ্যাস নানা পদ্ধতিতে আবার পরিবেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। জীব ও পরিবেশের মধ্যে গ্যাসের আদানপ্রদানকে কেন্দ্র করে যে চক্র গড়ে ওঠে তা গ্যাসীয় চক্র নামে পরিচিত। যেমন- অক্সিজেন চক্র, নাইট্রোজেন চক্র, কার্বন চক্র ইত্যাদি।
  • পাললিক চক্র : যে চক্রাকার পদ্ধতিতে জীবদেহ গঠনকারী খনিজ পদার্থ পরিবেশ থেকে জীবদেহে ও জীবদেহ থেকে পরিবেশে মিশে যায় তাকে পাললিক চক্র বলে। জীবের প্রয়োজনীয় খনিজ উপদান যেমন সালফার, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম মুলত মাটি বা শিলাস্তরে থাকে। জীব জলের মাধ্যমে ওই খনিজ পদার্থ মাটি বা শিলাস্তর থেকে গ্রহণ করে এবং জীবের মৃত্যুর পর সেই পদার্থ বিয়োজিত হয়ে পরিবেশে ফিরে যায়। বিভিন্ন পাললিক চক্রগুলো হলো- সালফার চক্র, ফসফরাস চক্র, ক্যালসিয়াম চক্র।

শক্তিপ্রবাহের বৈশিষ্ট্য : বাস্তুতন্ত্রে শক্তি প্রবাহের বৈশিষ্ট্য গুলি হল নিম্নরূপ-

  1. বাস্তুতন্ত্রে শক্তি প্রবাহে সমস্ত শক্তির মূল উৎস হল সূর্য।উৎপাদক স্তরে সবুজ উদ্ভিদ সর্বপ্রথম সৌর শক্তিকে সালোকসংশ্লেষের মাধ্যমে নিজেদের দেহে সঞ্চয় করে এবং তারপর ওই সঞ্চিত শক্তি খাদ্যের মাধ্যমে অন্যান্য খাদক স্তরে ছড়িয়ে পড়ে।
  2. বাস্তুতন্ত্রে শক্তি প্রবাহ সর্বদা একমুখী। সৌর শক্তি স্থৈতিক শক্তিরূপে উৎপাদক স্তরে আবদ্ধ হওয়ার পর তা খাদ্য শৃংখলের মধ্য দিয়ে প্রাথমিক খাদক→গৌণ খাদক→ প্রগৌণ খাদক স্তরে স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু প্রগৌণ খাদক স্তর থেকে উৎপাদক স্তরে শক্তি প্রবাহের কোন সুযোগ নেই।
  3. পরিবেশে অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড প্রভৃতি মৌলের মত শক্তি কখনো চক্রাকারে আবর্তিত হয় না। এক্ষেত্রে শক্তি কেবলমাত্র এক অবস্থা থেকে আরেক অবস্থায় রূপান্তরিত হয়।
  4. বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদক স্তর থেকে অন্যান্য খাদক স্তরগুলিতে স্থানান্তরিত হওয়ার সময় শক্তির যোগান ক্রমশ কমতে থাকে।
  5. বাস্তুতন্ত্রে শক্তি প্রবাহ তাপ গতিবিদ্যার প্রথম ও দ্বিতীয় সূত্র অনুসরণ করে। তাপ গতিবিদ্যার প্রথম ও দ্বিতীয় সূত্র দুটি হল-
    1. তাপ গতিবিদ্যার প্রথম সূত্র-শক্তির সৃষ্টি বা বিনাশ নেই; শক্তি কেবল একরূপ থেকে অন্য রূপে রূপান্তরিত হয়।
    2. তাপ গতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র-এক শক্তি যখন অন্য শক্তিতে রূপান্তরিত হয় তখন রূপান্তরিত হওয়ার কারণে কিছু পরিমাণ শক্তির অপচয় ঘটে।

লিন্ডেম্যানের দশ শতাংশ সূত্র : বাস্তুতন্ত্রের প্রতিটি ট্রফির স্তর বা পুষ্টিস্তরে যে শক্তি এসে পৌঁছায় তার 10% পরবর্তী স্তরে যায়। এইভাবে আবার পরবর্তী স্তরে পূর্ববর্তী স্তরের 10% শক্তি প্রভাবিত হয়, একেই শক্তির দশ শতাংশ সূত্র বলে। বিজ্ঞানী লিন্ডেম্যান এই সূত্রের প্রবক্তা। তাই তাঁর নাম অনুসারে এই সূত্রকে লিন্ডেম্যানের দশ শতাংশ সূত্র বলে।

প্রাকৃতিক সম্পদ ও তাদের টেকসই বা স্থিতিশীল ব্যবহার

প্রাকৃতিক সম্পদ বলতে ভূমি, মাছ, বন্যপ্রাণী, বায়ু, জল, ভূগর্ভস্থ জল, পানীয় জলের সরবরাহ এবং অন্যান্য এই জাতীয় সংস্থানগুলিকে বোঝায় যেগুলি কোন রাষ্ট্র বা অন্যথায় নিয়ন্ত্রিত, দ্বারা পরিচালিত, আস্থায় রাখা স্থানীয় সরকার, কোনো বিদেশী সরকার (শুধুমাত্র OPA-এর অধীনে), কোনো দেশের উপজাতি, বা, যদি সম্পদগুলি বিচ্ছিন্নতার উপর আস্থার সীমাবদ্ধতার সাপেক্ষে, কোন দেশের উপজাতির কোনো সদস্য।

প্রাকৃতিক সম্পদের সাধারণ উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে বায়ু, সূর্যালোক, জল, মাটি, পাথর, গাছপালা, প্রাণী এবং জীবাশ্ম জ্বালানী।

  1. নবায়নযোগ্য : যে সম্পদ প্রকৃতিতে  অসীম পরিমাণে পাওয়া যায় এবং বারবার ব্যবহার করা যায় তাকে নবায়নযোগ্য সম্পদ বলে। উদাহরণ: বন, বায়ু, জল, ইত্যাদি।
  2. অ-নবায়নযোগ্য : যে সম্পদগুলি তাদের অ-নবায়নযোগ্য প্রকৃতির কারণে প্রচুর পরিমাণে সীমিত এবং ভবিষ্যতে যার প্রাপ্যতা শেষ হয়ে যেতে পারে তাকে অ-নবায়নযোগ্য সম্পদ বলে। উদাহরণের মধ্যে রয়েছে জীবাশ্ম জ্বালানি, খনিজ পদার্থ ইত্যাদি।
  3. অপরিবর্তনীয় প্রাকৃতিক সম্পদ : যেসব প্রাকৃতিক সম্পদ মানুষ ব্যবহার করে না, তাদের অপরিবর্তনীয় প্রাকৃতিক সম্পদ বলে। যথা- নৈসর্গিক দৃশ্য, সমুদ্র, মহাসমুদ্র ইত্যাদি।

প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার

বনের ব্যবহার 

  1. জলসংরক্ষন : বৃক্ষ প্রচুর জল ধরে রাখতে পারে, ফলে প্রকৃতিকে ক্ষরার হাত থেকে রক্ষা করে। উদ্ভিদ বাস্পমোচন করে বৃষ্টিপাত ঘটায় ফলে মাটিতে জলের ভান্ডার গড়ে ওঠে। পাহাড়ি অঞ্চলে বনাঞ্চল সৃষ্টি করে জল সংরক্ষণ করা হয়। বৃক্ষের মূল মাটিকে শক্ত করে আঁকড়ে থাকে যা ভুমিক্ষয় ররোধ করে। ধস নামতে বাধা দেয়। নদীর তীরে ঝাউ জাতীয় বন লাগলে নদীর পাড়ের ভাঙ্গন আটকানো যায়। সমুদ্রের উপকূলবর্তী অঞ্চলে লবনাম্বু উদ্ভিদের শ্বাসমূল ভুমিক্ষয় রোধ করে।
  2. বায়ুমণ্ডলের কাজ নিয়ন্ত্রণ : উদ্ভিদ কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে ও অক্সিজেন ত্যাগ করে পরিবেশে বিশুদ্ধ অক্সিজেনের যোগান দেয় যা থেকে উৎপন্ন ওজোন গ্যাস পৃথিবীকে সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করে। উদ্ভিদের বাস্পমোচন বায়ুকে শীতল করে। অরণ্য বায়ুর গতিবেগ রোধ করে ভুমিক্ষয় নিয়ন্ত্রণ করে। 
  3. স্থানীয় ব্যবহার : স্থানীয় বাসিন্দা গাছের পাতা, শুকনো ডাল, কাঠ ইত্যাদি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে।
  4. উৎপাদনমূলক ব্যবহার : বন থেকে পাওয়া কাঠ দিয়ে বিভিন্ন আসবাবপত্র তৈরি হয়। বিভিন্ন বনজ সম্পদ যেমন- মধু, মোম বিক্রি করে অনেক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করেন, কেন্দুয়া পাতা থেকে বিড়ি তৈরি করে,  শাল পাতা দিয়ে থালা, বাটি তৈরি করে স্থানীয় মানুষের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা আসে। বিভিন্ন বনের নৈসর্গিক সৌন্দর্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে যা দেশের অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করে।

বন ধ্বংসের কারণ ও ফলাফল

প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক কারণে প্রচুর পরিমান বনভূমি প্রতিবছর বিলুপ্ত হচ্ছে।

  1. দাবানল : প্রাকৃতিক কারনেই হোক বা মানুষ অবিবেচনার ফলেই হোক, বনভূমিতে আগুন লাগলে বনভূমি ধ্বংস হয়। সাধারণত বজ্রপাত এবং গাছে গাছে ঘর্ষনের ফলে দাবানলের সৃষ্টি হয়। ফলে বিস্তৃর্ন অঞ্চলের বনভূমি ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। যেমন – অস্ত্রেলিয়ায় দাবানলে প্রচুর বনভূমি প্রতি বছর দাবানলের কারণে নষ্ট হয়। 
  2. বনভূমি কৃষিভূমিতে রূপান্তর : ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য ও বাসস্থানের চাহিদা মেটাতে বনভূমি দ্রুত পরিষ্কার করে চাষের জমিতে পরিনত করা হচ্ছে। এর ফলে বনভূমি ধ্বংস পাপ্ত হচ্ছে। এই কারণ গুলির জন্য উন্নয়নশীল দেশ গুলিতে খুব দ্রুত অরন্যের বিনাশ ঘটছে।
  3. শিল্পস্থাপন : উন্নত দেশগুলিতে শিল্প ব্যবস্থা দ্রুত সম্প্রসারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন শিল্পকেন্দ্র স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা, যার ফলে বৃক্ষচ্ছেদন করার প্রবনতা দেখা যায়। এছাড়া জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় নগরনির্মান ও নতুন রাস্তা তৈরীর জন্যেও বন কাটা হচ্ছে।
  4. খনি উত্তোলন ক্ষেত্রে : বনভূমি অঞ্চলে কোন নতুন খনি আবিষ্কার হলে, সেখানে খনি উত্তোলন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য নির্বিচারে প্রচুর পরিমানে বৃক্ষ কেটে ফেলা দেওয়া হয়, যার ফলে প্রচুর বনভূমি হ্রাস হয়। কলকারখানার বর্জ পদার্থ অরণ্যে নিক্ষেপ করা হলে  মাটি দূষিত হয়ে পড়ে ফলে অনেক গাছ মোড়ে যায় ও জমি অনুর্বর হয়ে পড়ে।
  5. বেআইনি ভাবে বৃক্ষচ্ছেদন : বিশ্বের অনেক দেশে কাঠের চোরাচালানের ব্যবসা আছে। এই ব্যবসার সাথে জড়িত ব্যক্তিরা সরকারী বিধিনিষেদ না মেনে বেআইনি ভাবে গাছ কেটে চলেছে। এছাড়া কাগজ, দেশলাই কাঠি, আসবাবপত্র প্রভৃতি উৎপাদনের জন্য যথেচ্চভাবে গাছ কাটা হচ্ছে।
  6. স্থানান্তর কৃষি বা ঝুম চাষ : দক্ষিন ও দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ায় পার্বত্য অঞ্চলে ভ্রাম্যমান উপজাতিদের জঙ্গল পুড়িয়ে আদিম প্রথায় চাষ আবাদ করার ফলে বনভূমির দ্রুত বিলাপ ঘটছে। এদিক থেকে  ওড়িশা অগ্রনি ভূমিকা গ্রহন করে।

অরণ্য বিনাশের প্রভাবসমূহ

  1. ভূমিক্ষয় বৃদ্ধি : গাছের শিকড় মাটিকে ধরে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে রাখে। তাই গাছপালা ধ্বংস হলে ধৌতক্ষয় ও নালিক্ষয়ের মাধ্যমে ভূমিক্ষয়ের হার বেড়ে যায়।
  2. মাটির উর্বরতা হ্রাস : উদ্ভিদ ধ্বংসের ফলে মাটিতে জৈব অবশেষ সঞ্চিত হয় না। ফলে হিউমাস তৈরি না হওয়ায় মাটি অনুর্বর ও উৎপাদন ক্ষমতাহীন হয়ে পড়ে।
  3. নদীর গভীরতা হ্রাস : ভূমিক্ষয়ের ফলে পলি সঞ্চিত হয়ে নদীগর্ভ ভরাট হয়ে আসে। ফলে একটানা প্রচুর বৃষ্টিপাত হলে বন্যা দেখা যায়।
  4. অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের ভারসাম্য হ্রাস ও উষ্ণতা বৃদ্ধি : বৃক্ষচ্ছেদনের ফলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান বেড়ে যায় ও অক্সিজেনের পরিমান কমে যায় ও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়, এবং উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়। একই সঙ্গে বৃষ্টিপাতের পরিমান হ্রাস পায়। এছাড়া জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে। 
  5. প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরিমান বৃদ্ধি : বনভূমি বৃক্ষহীন হয়ে পড়লে খরা, বন্যা, ভূমিধ্বস, ঝড়ঝঞ্ঝা, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরিমান বেড়ে যায়।
  6. বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য নষ্ট : বন বিনাশের ফলে বহু বন্য প্রানী তাদের বাসস্থান হারিয়ে ফেলে, ফলে একসময় তারা পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়। ফলে বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জীব বৈচিত্র্য হ্রাস পায় ও পরিবেশের অবক্ষয় ঘটে।

অরণ্যবিনাশ সমস্যার সমাধান

  1. আইন প্রণয়ন : গাছ কাটলে কঠিন সাজা হবে এমন আইন বলবৎ করা দরকার। ভারতে এমন কিছু আইন আছে। সেগুলো হলো- Wildlife Protection Act (1973), Environment Protection Act (1986) ইত্যাদি। 
  2. সতর্ক প্রহরী : অরণ্যে যাতে চোরা কারবার না ঘটে বা কোনো অঘটন না ঘটে তার জন্য সদা জাগ্রত বনকর্মী নিয়োগ করতে হবে। 
  3. বৃক্ষরোপণ : কোনো জরুরি অবস্থাকালীন সময়ে গাছ কাটা হলে সেই সংখ্যক চারাগাছ রোপন করতে হবে। অরণ্য বাঁচানোর জন্য বৃক্ষ রোপন একমাত্র পথ। বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে পরিচলন ব্যবস্থার মাধ্যমে বন সংরক্ষণ করাকে বলা হয় সিলভিকালচার ও কৃত্রিমভাবে গাছ লাগিয়ে বন তৈরি করাকে বলা হয় এফোরেস্টেশন।
  4. জনসচেতনতা : জনগণের মধ্যে বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এরজন্য সরকারি, বেসরকারি, গণমাধ্যমকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। 

জলের ব্যবহার

প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হলো জল। জল আমরা নানা কাজে ব্যবহার করে থাকি। 

  1. পানীয় জল হিসেবে : পৃথিবীতে সঞ্চিত জলের মধ্যে মাত্র 3% পানীয় যোগ্য যা ভূপৃষ্ঠে, হিমবাহে, বরফের আস্তরণে এবং মাটির ভৌমজল হিসেবে সঞ্চিত থাকে। জল আমাদের শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। 
  2. কৃষিকাজ : ভালো ফসলের জন্য জলের প্রয়োজন। কৃষিকাজে জলসেচের জন্য প্রচুর জল প্রয়োজন। 
  3. শিল্প : বিভিন্ন শিল্প যেমন-তুলা, পাট, চর্ম, রং প্রভৃতির জন্য কলকারখানায় প্রচুর জল প্রয়োজন। 
  4. গৃহস্থালির কাজে : দৈনন্দিন জীবনে রান্না, ঘর মোছা, জামাকাপড় কাচা, বাসন মাজা, স্নান করে প্রভৃতি কাজে জলের প্রয়োজন হয়।

জলের অতিব্যবহার ও সংকট  

পানীয় জলে বেড়ে চলা দূষণের মাত্রার মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ হলো আর্সেনিক দূষণ। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় আটটি জেলা যেমন- উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, নদীয়া, হুগলি, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ ও মালদহের মানুষ আর্সেনিক দূষণের কবলে পড়েছে। ভূপৃষ্ঠে আর্সেনিক থাকে বিভিন্ন ধাতব পদার্থের মধ্যে। বেশ কিছু কারণে সেই ধাতব পদার্থ ভূ-অভ্যন্তরের জলের সাথে মিশে বিশেষভাবে দূষণ ঘটায়। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মাত্রা অনুযায়ী পানীয় জলে সর্বাধিক ১০ পিপিবি ০.১ মাইক্রো গ্রাম প্রতি লিটার আর্সেনিক থাকতে পারে। এর অধিক মাত্রায় আর্সেনিক পানীয় জলে থাকলে তাকেই আর্সেনিক প্রাদুর্ভাব বলে ধরে নিতে হবে। সেইখানে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের জলে আর্সেনিকের যে সর্বোচ্চ মাত্রা পাওয়া গিয়েছে তা হল ৩৮,০০০ মাইক্রোগ্রাম/লিটার।

আর্সেনিক দূষণের ফলে মানুষের হাত-পায়ের তলায় পচন ও ক্ষত সৃষ্টি হয়। একে “ব্ল্যাক ফুট ডিজিজ” বলে। পশ্চিমবঙ্গ বাদে ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে, এছাড়া চিলি, তাইওয়ানে প্রচুর মানুষ আর্সেনিক দূষণের কারণে মারা গেছেন।

পানীয় জলে আর্সেনিক দূষণ বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তবে বিশ্বব্যাপী উন্নয়নশীল দেশগুলিতে আর্সেনিক দূষণের প্রধান কারণ হিসেবে উঠে আসে অগভীর নলকূপ এবং ভূগর্ভস্থ জলের অনিয়ন্ত্রিত শোষণের কথা। এই সমস্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অগভীর নলকূপ এবং পাম্পের মাধ্যমে কৃষিকাজে জলের ব্যবহার হওয়ায় নলকূপ ও পাম্পের টানে আর্সেনিকের বিষ মেশে ভূগর্ভস্থ জলে। 

তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে বন্যায় প্লাবিত নানা অঞ্চলে আর্সেনাইট যৌগ গুলির আধিক্য দেখা দিলে সেখানেও জলে আর্সেনিক দূষণ ব্যাপক সম্ভাবনা থেকে যায়। এছাড়া খরার সময় অতিরিক্ত তাপে বাষ্পীভবনের ফলে অক্সিজেনের পরিমাণ কমলে আর্সেনাইট যৌগ গুলির আধিক্য দেখা দেয় এবং তা জলে মেশে।

যথেচ্ছভাবে জল ব্যবহার : শহরের অসচেতন মানুষ জলের কল খুলে রাখে এবং সেখানে থেকে ঘন্টার পর ঘন্টা জল পড়ে নষ্ট হয়। তাছাড়া অবিবেচক মানুষ দৈনন্দিন জীবনে লাগাম ছাড়া জলের ব্যবহার করে যার ফলে পৃথিবীতে জলের ভান্ডার কমে আসছে।

জলের সংকট : আর্সেনিক ছাড়াও বিভিন্ন কারণে জল দূষণ ঘটে। যেমন- কলকারখানার ভারী ধাতু যেমন- সীসা, দস্তা, ক্যাডমিয়াম, পারদ মিশ্রিত বিষাক্ত জল এবং কৃষিক্ষেত্রের বিয়োজন প্রতিরোধী কীটনাশক যেমন DDT, BHC মিশ্রিত জল পুকুর, নদী, জলাশয়ে মিশে জল দূষণ ঘটায়। 

এছাড়া সবুজ বন-জঙ্গল কাটা, জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে নগরায়ন, বায়ুদূষণ ও জলবায়ুর পরিবর্তন প্রভৃতিও জল সংকটের অন্যতম কারণ। এরফলে প্রাকৃতিক বিশুদ্ধ মিষ্টি ভৌম জলের অভাবে যে ভৌত জলসংকোট দেখা যায় ও অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু মানুষের পানীয় জল কেনার অক্ষমতাকে বলা হয় অর্থনৈতিক জল সংকট। পানীয় জল সংকটের কারণে সুদানে 12.3 মিলিয়ন, ভেনেজুয়েলার 5 মিলিয়ন, ইথিওপিয়ার 2.7 মিলিয়ন, তিউনিসিয়ার 2.1 মিলিয়ন এবং কিউবার 1.3 মিলিয়ন মানুষ দূষিত জল পান করে।

দেশের জল সংকট মেটানোর উদ্দেশ্যে Blue Peace France Work নামে এক সংস্থা বিভিন্ন দেশের সরকারি স্তরে আলোচনার ভিত্তিতে দেশগুলির জল ব্যবহারে অংশীদারিত্ব করে, যা শান্তিস্থাপনে সাহায্য করে। যেমন-সুইটজারল্যান্ড ও সুইডেন এবং নীল উপত্যকা ও মধ্যপূর্ব দেশগুলিতে দেখা যায়।

বিজ্ঞানের যে শাখায় পানীয় জলের প্রাকৃতিক ও জৈবিক পরিশে নিয়ে আলোচনা করা হয়, তাকে লিমনোলজি বলে।

পানীয় জলের সংরক্ষণ : জলের ভান্ডার সুরক্ষিত রাখতে United Nations Committee on Economic Social and Cultural Rights প্রতিটি মানুষকে সচেতন হয়ে 5 টি বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। পর্যাপ্ত, নিরাপদ, গ্রহণযোগ্য, ব্যয়সাধ্য নয় এবং সহজে গ্রহণ করা যায় এমন কিছু উপায়ে জল সংরক্ষণ করতে হবে। সেজন্য বৃষ্টির জল সংরক্ষনের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

বৃষ্টির জল সংরক্ষণ পদ্ধতি

  1. বৃষ্টির জল সংগ্রহ : পরিষ্কার, ঢালাই করা ছাদ, বা পুকুর, হ্রদে বৃষ্টির জল ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
  2. পরিবহন : ছাদ বা যেখানে জল ধরা হয় সেখান থেকে মজুত করার জায়গায় জল নিয়ে যাওয়ার জন্য চ্যানেল বা পাইপ লাগাতে হবে। 
  3. পরিশোধন : যে নলের মধ্যে দিয়ে মধ্যে দিয়ে জল আসবে তার মুখে ছাঁকনি ব্যবহার করতে হবে ,এর ফলে জলকে ধুলো, বালি বা অন্যান্য ময়লার হাত থেকে মুক্ত করা যায়। সংগৃহীত জলকে কয়েকদিন সঞ্চয় করে রাখলে ধুলো বালি থিতিয়ে যায় এবং বিশুদ্ধ জল পাওয়া যায়।
  4. সঞ্চয় : কীটমুক্ত ট্য‌াঙ্ক বা সিস্টার্ন বানাতে হবে যেখানে জল সংরক্ষণ করে রাখা যাবে। যে জায়গায় জল ধরা হবে তা চিনামাটির বা পাথরের টালি দিয়ে বাঁধিয়ে দিতে হবে কারন এরা ক্ষয়রোধক এবং সহজে পরিস্কার করা যায়।
  5. ভূগর্ভে প্রেরণ : সঞ্চিত জলকে যতটা সম্ভব জীবাণু মুক্ত করে বিভিন্ন উপায়ে ভূগর্ভে পাঠাতে হবে। রাসায়নিক,পারমানবিক বা জৈব কারখানার আশেপাশে বৃষ্টির জল সংগ্রহের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যাতে এই সব কারখানার বর্জ্য পদার্থ বা বিষাক্ত রাসায়নিক কোনভাবে সঞ্চিত জলকে দূষিত করতে না পারে। এভাবে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করে তাকে দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করা যেতে পারে। 

খাদ্য

খাদ্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রাকৃতিক উপাদান। উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় নিজের খাদ্য নিজেই তৈরি করে কিন্তু প্রাণীজগতকে খাদ্যের জন্য পরিবেশ ও প্রকৃতির ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভর করতে হয়। 

মানুষের খাদ্যের উৎস : 

  1. উদ্যানবিজ্ঞান : কৃষিবিজ্ঞানের যে শাখায় শাকসবজি ও ফল যেমন – বাঁধাকপি, উচ্ছে, গাজর, আলু, শিম, শাকপাতা, টমেটো, আম, কলা, লিচু পেয়ারা প্রভৃতি চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয় তাকে উদ্যানবিজ্ঞান বলে। 
  2. মৎস্যচাষ : জীববিজ্ঞানের যে শাখায় আমরা মাছ, চিংড়ি, ঝিনুক, শামুক প্রভৃতি জলজ প্রাণী চাষ সম্পর্কে আলোচনা করে থাকি তাকে মৎস্যচাষ বলা হয়। মাছ সম্পর্কিত তথ্য পাই পিসিকালচার থেকে এবং চিংড়ি সম্পর্কিত তথ্য পাই প্রনকালচার থেকে যা প্রোটিন জাতীয় খাদ্যের উৎস।
  3. পশুপালন : যে-পদ্ধতিতে প্রাণীজাত খাবার নিয়মিত আর যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়ার জন্য বিশেষ কতগুলি অর্থকরী গুরুত্বসম্পন্ন প্রাণী (ছাগল, গোরু, হাঁস, মুরগি প্রভৃতি) যত্নের সঙ্গে প্রতিপালন আর তাদের প্রজননের সুব্যবস্থা করা হয়, তাকে পশুপালন বলে। হাঁস, মুরগি ও অন্যান্য পোলট্রি পাখি প্রতিপালন করে ডিম ও মাংস পাওয়া যায়। ডেয়ারি থেকে দুধ ও মাংস, পিগারি থেকে শুকরের মাংস, গোটারি থেকে মাংস ও এপিকালচার বা মৌমাছি প্রতিপালন থেকে মধু ও মোম পাওয়া যায়।
  4. খাদ্যের বিকল্প উৎস : খাদ্যের কিছু বিকল্প উৎস আছে যা থেকে প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন ইত্যাদি পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় মাশরুম, সিঙ্গেল সেল প্রোটিন যেমন- স্পিরুলিনা, ক্লোরেল্লা, ঈস্ট, গঁদ ইত্যাদি।
  5. কৃষিবিজ্ঞান : খাদ্য উৎপাদন পদ্ধতি নিয়ে বিজ্ঞানের যে শাখায় আলোচনা করা হয়, তাকে কৃষিবিজ্ঞান বলে। কৃষিকাজের মাধ্যমে ধান, গম, যব, ভুট্টা, চলা, মটর, ডাল, আলু, পিয়াজ, জিরে, গোলমরিচ, এলাচ প্রভৃতি মশলা উৎপাদন করা হয়।

বিশ্বের খাদ্যসংকট এবং এর ফলাফল 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর উন্নত দেশগুলোতে কৃষিবিপ্লব ও 1960 এ ভারতে বিজ্ঞানী স্বামীনাথনের হাত ধরে সবুজ বিপ্লব ঘটে, ফলে উন্নত মানের বীজ, রাসায়নিক সার, কীটনাশক দ্বারা খাদ্যশস্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। কিন্তু কিছু কারণে খাদ্যসংকট প্রবল হয়ে পড়ে। তার কারণগুলো হলো-

  1. জনসংখ্যা বৃদ্ধি : দেশে খাদ্য সংকটের প্রধান সমস্যা হলো জনসংখ্যা বৃদ্ধি। জনসংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশে খাদ্য চাহিদাও বাড়ছে। কিন্তু কৃষিজমির পরিমাণ বাড়ছে না। বিপুল সংখ্যক মানুষের খাদ্যের যোগান দিতে পারছে না কৃষিজমিগুলো।
  2. কৃষকের অশিক্ষা : এদেশের কৃষকেরা অশিক্ষিত হওয়ায় তারা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির চাষাবাদের ব্যাপারেও অজ্ঞ। কীটনাশক, সার, বীজ প্রভৃতি জমিতে প্রয়োগের সঠিক মাত্রা ও সময় তারা নির্ধারণ করতে ব্যর্থ। ফলে প্রতিবছর খাদ্য ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে।
  3. প্রাকৃতিক দুর্যোগ : প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ আমাদের দেশে বন্যা, খরা, অনাবৃষ্টি, ভূমিক্ষয়, জলবায়ুর পরিবর্তন প্রভৃতি নানা কারণে উৎপাদিত প্রচুর ফসল নষ্ট হয়ে যায়। ফলে দেশে দারুণভাবে খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি হয়।
  4. জলের অভাবে কৃষিজমি অনুর্বর হয়ে পড়া, অনুন্নত সংরক্ষণ ও পরিবহন ব্যবস্থা, বিষাক্ত পেস্টের আবির্ভাব ও বিভিন্ন পেস্ট বিরোধী কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে কৃষিজমি ও অনেক ফসল নষ্ট হয়। আমাদের দেশে প্রতিবছর কীটপতঙ্গের প্রাদুর্ভাবে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া উপযুক্ত সংরক্ষণের অভাবে প্রতি বছর প্রায় ৭% শস্য নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিবছর চিনে 5-23% ও ভিয়েতনামে 10-25% ধান নষ্ট হয়।  এছাড়াও অসাধু ব্যবসায়ীরা বেআইনি ভাবে খাদ্য সঞ্চয় করে কৃত্রিম খাদ্য সংকট তৈরি করলে সাধারণমানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

খাদ্য সংকটের প্রভাব : এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় দরিদ্র শ্রেণী। অনেকে অনাহারে মারা যান এবং শিশুরা অপুষ্টিজনিত রোগে ভোগে ও মারা যায়। পৃথিবীর 842 মিলিয়ন মানুষ পর্যাপ্ত খাদ্য থেকে বঞ্চিত। অপুষ্টির কারণে গোটা পৃথিবীর প্রায় 3.1 মিলিয়ন শিশু প্রতি বছর মারা যায়। উন্নয়নশীল দেশগুলির প্রায় 14.3% মানুষ অপুষ্টিতে ভোগে, প্রায় 100 মিলিয়ন শিশুর ওজন কম থাকে যাদের মধ্যে 45% শিশু পাঁচ বছরের নিচে মারা যায়।

শক্তি

শক্তি হুল আরেক গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ। দৈনন্দিন জীবনে শক্তির ব্যবহারগুলি হলো- 

  1. খাবার রান্না করতে, কাপড় শুকাতে, নিজেদের গরম রাখতে, কাপড় ইস্ত্রি করতে, বিদ্যুৎ তৈরিতে, অপরেশনের যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত করতে তাপশক্তি ব্যবহৃত হয়। 
  2. বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালাতে,ফ্যান চালাতে, টিভি চালাতে, কম্পিউটার চালাতে, মোবাইল চার্জ দিতে X-ray করতে প্রভৃতি কাজে বৈদ্যুতিক শক্তি ব্যবহার করা হত।
  3. জ্বালানি গ্যাস যেমন- পেট্রোল, ডিজেল, কেরোসিন প্রভৃতি গাড়ি, বাইক, জেনারেটর, লঞ্চ, ট্রাক্টর, এরোপ্লেন প্রভৃতি চালাতে কাজে লাগে। 
  4. রান্না করতে, অটো জাতীয় ছোট গাড়ি চালাতে LPG গ্যাস একপ্রকার জীবাশ্ম জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

ক্রমবর্ধমান শক্তির চাহিদা

ক্রমাগত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত জনসংখ্যা ও মানুষের যন্ত্র-নির্ভরতা বৃদ্ধির জন্যও শক্তির চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই চাহিদা পূরণেপ্রাকৃতিক জীবাশ্ম জ্বালানির চাহিদা বাড়ছে ফলে তা ফুরিয়ে আসছে। তাই পুনর্নবিকরণ শক্তি যেমন সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জৈব জ্বালানির ব্যবহার বেশি করে শুরু করা হচ্ছে। 

শক্তির অপচয় 

কোনো দরকার ছাড়া শক্তির অযথা ব্যবহারকে বলা হয় শক্তির অপচয়।

  1. তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় যে শক্তি উৎপন্ন হয় তার 40% বিদ্যুৎ উৎপাদনে লাগে বাকি 60% নষ্ট হয়।
  2. যানবাহনে ডিজেল পুড়িয়ে যে শক্ত উৎপন্ন হয় তার মাত্র 20% যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়, বাকি 80% নষ্ট হয়।
  3. সামাজিক অনুষ্ঠানে অপ্রয়োজনীয় মাইক, আলোকসজ্জার ব্যবহারে প্রচুর বিদ্যুৎ অপচয় হয়।
  4. দিনের বেলায় অপ্রয়োজনে বাতি জ্বালিয়ে রাখলে বিদ্যুৎশক্তির অপচয় ঘটে।
  5. রান্নার শেষে অযথা চুলা জ্বালিয়ে রাখলে প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে প্রাপ্ত শক্তির অপচয় ঘটে।
  6. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে জ্বালানি শক্তির অপচয় ঘটে।
  7. রাস্তাঘাটে দীর্ঘ যানজটের কারণে বিনা প্রয়োজনে ইঞ্জিন চালু রাখলেও জ্বালানি শক্তির অপচয় ঘটে।
  8. আমরা যে তেল, গ্যাস, কয়লা ব্যবহার করছি তা ক্রমাগত ফুরিয়ে যাচ্ছে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া শক্তি খরচ করলে শক্তির অপচয় ঘটে। এ জন্য শক্তির অপচয় বন্ধ করা জরুরি।

প্রাত্যহিক জীবনে শক্তি সংরক্ষণ

এর জন্য যে যে প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার সেগুলি হলো- 

  1. ব্যবহারের পর বৈদ্যুতিক বাতি, পাখা, এসি, কম্পিউটার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতিসমূহ বন্ধ রাখা।
  2. দিনের বেলা বাতি না জ্বালিয়ে পর্দা সরিয়ে দিনের আলো ব্যবহার করা। রাস্তার আলোগুলিও দিনের বেলায় বন্ধ রাখতে হবে।
  3. প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় ধরে রেফ্রিজারেটরের দরজা খোলা না রাখা।
  4. বাড়ি নির্মাণের সময় তার জানলা, দেওয়াল, মেঝে এমন ভাবে নির্মাণ করতে হবে যাতে শীতের সময় সৌরশক্তির সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং পরিচালন এবং গ্রীষ্মে সৌর উত্তাপ নিবারণ সম্ভব। যথাযথ সৌর নির্মাণ নকশার মাধ্য‌মেই এটা সম্ভব। এতে শক্তির খরচ কম হবে।
  5. পেট্রোলিয়াম চালিত গাড়ির ব্য‌বহার কমিয়ে তেল সাশ্রয় সম্ভব। এর জন্য‌ এক দিকে যেমন জ্বালানিহীন যানের ব্য‌বহারে উৎসাহ জোগানো দরকার, অপর দিকে ব্য‌ক্তিগত গাড়ি ব্য‌বহারে নিয়ন্ত্রণ এনে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্য‌বহারে উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন। সরকারি কর্তাব্য‌ক্তি এবং সমাজের গণ্য‌মান্য‌রা এ ব্য‌াপারে রোল মডেল হয়ে উঠতে পারেন।
  6. ওয়াশিং মেশিনে ৩০-৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় কাপড় কেচে রোদে শুকোতে হবে।
  7. বাড়িতে প্রচলিত বালবের পরিবর্তে কমপ্য‌াক্ট ফ্লুরোসেন্ট লাইট ল্য‌াম্প ব্য‌বহার। ঘরের দেওয়াল এমন ভাবে রঙ করতে হবে, যাতে প্রাকৃতিক আলোতেই কাজ চলে যায়।
  8. রান্নার সময় প্রেশার কুকার ব্য‌বহার এবং দানাজাতীয় শস্য‌ আগে থেকে ভিজিয়ে রাখলে জ্বালানি খরচ বাঁচে। সমস্ত রান্নাবান্নাই ঢেকে করাটা স্বাস্থ্য‌সম্মত ও জ্বালানি সাশ্রয়কারী। রান্নার পর গ্যাস বন্ধ করতে ভুলে গেলে চলবে না।
  9. বাইকের পরিবর্তে হেঁটে অথবা বাইসাইকেল ব্য‌বহার করে শক্তি বাঁচানো যায়।
  10. জলের অপচয় বন্ধ করতে হবে। ভূগর্ভস্থ জলের ব্যবহার কমিয়ে বৃষ্টির জল সংরক্ষণে মনোযোগ দিতে হবে। বাড়িতে যথাসম্ভব গাছপালা লাগালে দূষণরোধ এবং রোদের তাপ রোধ করা সম্ভব। অপ্রচলিত শক্তি যেমন সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি ও জৈবশক্তির প্রচলন বাড়াতে হবে।

SOLVED QUESTIONS & ANSWERS of পরিবেশ ও তার সম্পদ PORIBESH O TAR SOMPOD

1 MARKS QUESTIONS of পরিবেশ ও তার সম্পদ PORIBESH O TAR SOMPOD

  1. বাস্তুতন্ত্রে সবুজ উদ্ভিদ ______এর ভূমিকা পালন করে।

উত্তর : উৎপাদক

  1. যে সকল উদ্ভিদ অতিনিম্ন তাপমাত্রাযুক্ত স্থানে জন্মায়, তাদের ______ বলে। 

উত্তর : হেকিস্টোথারমস্

  1. Environment Protection Act চালু হয় ______ সালে।

উত্তর : 1986

  1. ক্রাসুলেসিয়ান অ্যাসিড বিপাকে দেখা যায় এমন উদ্ভিদ কারা?

উত্তর : মেগাথারমস্।

  1. পেট্রোলিয়াম একটি ______ প্রাকৃতিক সম্পদ।

উত্তর : নবীকরণ অযোগ্য

  1. একই পরিবেশে বসবাসকারী আন্তঃক্রিয়াশীল বিভিন্ন পপুলেশনের সমষ্টিকে এককথায় কী বলা হয়?

উত্তর : সম্প্রদায় (Community)।

  1. দুটি অপরিবর্তনীয় প্রাকৃতিক সম্পদের নাম লেখো। 

উত্তর : সমুদ্র, নৈসর্গিক দৃশ্য।

  1. ______ হল একটি ফ্যাকাটেটিভ পরজীবী। 

উত্তর : জোঁক

  1. পেট্রোলিয়াম একটি ______ প্রাকৃতিক সম্পদ। 

উত্তর : নবীকরণ অযোগ্য

  1. ভারতে মোট শক্তি উৎপাদনের ______শতাংশ খনিজ তেল থেকে আসে।

উত্তর : 30

  1. কোনো একটি অঞলে বসবাসকারী সমস্ত জীব প্রজাতি এবং তাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সঙ্গে আন্তঃসম্পর্ক অধ্যয়ন করাকে ______ বলে। 

উত্তর : সিইকোলজি (Synecology)

  1. উজ্জ্বল আলোকিত অলে জন্মায় এমন উদ্ভিদগোষ্ঠী কোনটি?

উত্তর : হেলিওফাইট।

  1. শীতল শোণিত প্রাণীদের শীতঘুম দেখা যায়। 

উত্তর : সত্য

  1. যেসব উদ্ভিদে সংকটকালীন দিবা-দৈর্ঘ্যের তুলনায় বেশি দিবা-দৈর্ঘ্যে ফুল উৎপন্ন হয়, তাদের ______ উদ্ভিদ বলে।

উত্তর : দীর্ঘ – দিবা

  1. পাথরের ফাটলের খাঁজে উৎপন্ন উদ্ভিদের ______ বলে। 

উত্তর : চ্যাসমোফাইট

  1. ______ হল একটি নবীকরণযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ।

উত্তর : বন

  1. অপরিবর্তনীয় প্রাকৃতিক সম্পদের উদাহরণ দাও। 

উত্তর : নৈসর্গিক দৃশ্য, সমুদ্র, মহাসমুদ্র ইত্যাদি।

  1. পপুলেশনের বিচলনের কারণ কোনগুলি? 

উত্তর : খাদ্যাভাব, আত্মরক্ষা, অনুকূল বাসস্থান খোঁজ।

  1. কয়লা একটি ______ প্রাকৃতিক সম্পদ। 

উত্তর : নবীকরণ অযোগ্য

  1. কোনো পপুলেশনে একটি নির্দিষ্ট সময়ে যে সংখ্যক জীবের মৃত্যু হয়, তাকে ______ বলে। 

উত্তর : মর্টালিটি বা মৃত্যুহার

  1. একটি বাধ্যতামূলক পরজীবী হল ______

উত্তর : প্লাজমোডিয়াম

  1. শীতল রক্তযুক্ত প্রাণীদের এককথায় কী বলে? 

উত্তর : পয়কিলোথারমস্।

  1. SCP-এর উদাহরণ দাও। 

উত্তর : স্পাইরুলিনা, ক্লোরেল্লা।

  1. বর্তমানে পৃথিবীর ______ কোটি মানুষ অনাহারে দিন কাটান।

উত্তর : 100

multiple choice questions – 1 marks of পরিবেশ ও তার সম্পদ PORIBESH O TAR SOMPOD

  1. কোনটি নবীকরণযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদের উদাহরণ? 
  2. কয়লা 
  3. পেট্রোলিয়াম 
  4. বন 
  5. খনিজ পদার্থ

উত্তর : C

  1. যেসব পরজীবীরা সম্পূর্ণরূপে পোষকের উপর নির্ভরশীল, তাদের বলা হয়— 
  2. বহিঃপরজীবী 
  3. অন্তঃপরজীবী 
  4. বাধ্যতামূলক পরজীবী 
  5. ফ্যাকালটেটিভ পরজীবী

উত্তর : C

  1. জীবের অপত্য সৃষ্টির হারকে এককথায় বলা হয়— 
  2. জন্মহার
  3. মৃত্যুহার 
  4. পরিযান 
  5. ফেকানডিটি

উত্তর : A

  1. কোনটি জল সংরক্ষণের উদাহরণ? 
  2. রেন ওয়াটার হার্ভেস্টিং 
  3. ডিপ টিউবওয়েল ও শ্যালো পাম্পের ব্যবহার 
  4. কুয়ো খনন 
  5. A ও C উভয়ই

উত্তর : D

  1. কোনো পপুলেশনে জীবের সংখ্যা মৃত্যুর কারণে হ্রাস পাবার হারকে বলা হয়— 
  2. ফেকানডিটি 
  3. মৃত্যুহার 
  4. জন্মহার 
  5. পরিযান

উত্তর : B

  1. যে জীব পোষক থেকে পুষ্টিরস শোষণ করে, তাদের বলা হয় – 
  2. মৃতজীবী 
  3. মিথোজীবী 
  4. পরজীবী 
  5. পতঙ্গভুক

উত্তর : C

  1. যেসব উদ্ভিদ বালিমাটিতে জন্মায়, তাদের এককথায় বলা হয়— 
  2. স্যামোফাইট 
  3. লিথোফাইট 
  4. সিওফাইট 
  5. হেলিওফাইট

উত্তর : A

  1. কোনটি বনের উৎপাদনমূলক ব্যবহার নয়? 
  2. অ্যাকুয়াকালচার 
  3. এপিকালচার 
  4. ভেষজ চাষ 
  5. লাক্ষা চাষ

উত্তর : A

  1. দুটি ভিন্ন জীবগোষ্ঠীর মধ্যেকার আন্তঃক্রিয়ায় যে জীবটি আশ্রয়দাতার থেকে পুষ্টিরস সংগ্রহ করে, তাকে বলে— 
  2. শিকারি (Predator) 
  3. শিকার (Prey) 
  4. পরজীবী 
  5. মিথোজীবী

উত্তর : C

  1. কোনটি জৈব-ভূ-রাসায়নিক চক্রের অন্তর্গত নয়? – 
  2. জলচক্র 
  3. জীবনচক্র 
  4. গ্যাসীয় চক্র 
  5. পাললিক চক্র

উত্তর : B

  1. যেসব উদ্ভিদ বালিমাটিতে জন্মায়, তাদের এককথায় বলা হয়— 
  2. স্যামোফাইট 
  3. লিথোফাইট 
  4. সিওফাইট 
  5. হেলিওফাইট

উত্তর : A

  1. আন্তঃসম্পর্কযুক্ত অনেকগুলি খাদ্যশৃঙ্খলকে একত্রে বলা হয়— 
  2. খাদ্যজাল 
  3. গ্রেজিং খাদ্যশৃঙ্খল 
  4. ডেট্রিটাস খাদ্যশৃঙ্খল 
  5. খাদ্য পিরামিড

উত্তর : A

  1. পানীয় জল সংকটের কারণ কোনটি বলে তুমি মনে করো?
  2. কৃষিক্ষেত্রে শ্যালো পাম্প-এর অত্যধিক ব্যবহার 
  3. কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত কীটনাশকের কিছু অংশের জলে মিশে যাওয়া। 
  4. শহরের বর্জ্য পদার্থ জলাশয়ে মেশা । 
  5. সবগুলি

উত্তর : D

  1. কমিউনিটির অন্তর্গত বিভিন্ন পপুলেশনের মধ্যে কোন্ আন্তঃক্রিয়াটিকে ‘+, +’ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়, যেখানে উভয় প্রজাতিরই লাভ হয়? 
  2. সহযোগিতা 
  3. পরজীবিতা
  4. খাদ্য-খাদক সম্পর্ক 
  5. প্রতিযোগিতা

উত্তর : A

  1. প্রোটো কো-অপারেশনের একটি উদাহরণ হল – 
  2. সন্ন্যাসী কাঁকড়া ও সি অ্যানিমোন 
  3. ফিতাকৃমি ও মানুষ 
  4. কলসপত্রী ও পতঙ্গ 
  5. সবগুলি

উত্তর : A

  1. আর্সেনিকের প্রভাবে মানবদেহে যে রোগ হয়, তার নাম হল – 
  2. ফুওরোসিস 
  3. ব্ল্যাকফুট ডিজিজ 
  4. মিনামাতা রোগ 
  5. ডিসলেক্সিয়া

উত্তর : B

  1. কোনটি বনের উৎপাদনমূলক ব্যবহার নয়?
  2. অ্যাকুয়াকালচার 
  3. এপিকালচার 
  4. ভেষজ চাষ 
  5. লাক্ষা চাষ

উত্তর : A

  1. পরজীবিতার ক্ষেত্রে আশ্রয়দাতাকে বলে— 
  2. পোষক 
  3. পরজীবী 
  4. শিকারি 
  5. শিকার

উত্তর : A

  1. বিষাক্ত জল ও শস্যক্ষেত্রের বিয়োজন-প্রতিরোধী কীটনাশক নীচের কোনটি? – 
  2. BHC 
  3. CFC 
  4. A ও B উভয়ই
  5. কোনোটিই নয়

উত্তর : A

  1. লাইকেনে শৈবাল ও ছত্রাকের আন্তঃক্রিয়াকে বলা হয়— 
  2. সহযোগিতা 
  3. কমেনসালিজম 
  4. মিউচুয়ালিজম 
  5. প্রতিযোগিতা

উত্তর : C

  1. বনের উপযোগিতা হল – 
  2. জলসম্পদ সংরক্ষণ 
  3. ভূমিক্ষয় নিয়ন্ত্রণ 
  4. অর্থকরী উৎপাদনমূলক ব্যবহার 
  5. সবগুলি

উত্তর : D

  1. বাস্তুতন্ত্রে শক্তিপ্রবাহের প্রকৃতি হল— 
  2. একমুখী 
  3. উভমুখী 
  4. দ্বিমুখী 
  5. অভিমুখী

উত্তর : A

  1. বাইরে থেকে কোনো নতুন সদস্য পপুলেশনে প্রবেশ করলে, তাকে বলা হয়— 
  2. বাস্তুত্যাগ 
  3. পরিযান 
  4. অভিবাসন 
  5. কোনোটিই নয়

উত্তর : C

  1. অরণ্য বিনাশ সমস্যার সমাধান করতে কোনটির প্রয়োজন বলে তুমি মনে করো? – 
  2. আইন প্রণয়ন 
  3. বৃক্ষরোপণ 
  4. জনসচেতনতা 
  5. সবগুলি

উত্তর : D

  1. মরুভূমিতে বসবাসকারী ইঁদুর জলের চাহিদা কীসের সাহায্যে মেটায়? – 
  2. খাদ্য 
  3. গর্তের আদ্রর্তা 
  4. জলীয় বাষ্প 
  5. চর্বির জারণ

উত্তর : D

  1. পরজীবিতার ক্ষেত্রে আশ্রয়দাতাকে বলে— 
  2. পোষক 
  3. পরজীবী 
  4. শিকারি 
  5. শিকার

উত্তর : A

  1. যে খাদ্যশৃঙ্খল উৎপাদক তথা সবুজ উদ্ভিদ থেকে শুর করে শাকাশী ও মাংসাশী প্রাণীতে বিস্তৃত হয়, তাকে বলে— 
  2. গ্রেজিং খাদ্যশৃঙ্খল 
  3. পরজীবীর খাদ্যশৃঙ্খল 
  4. ডেট্রিটাস খাদ্যশৃঙ্খল 
  5. কোনোটিই নয়

উত্তর : A

  1. যেসব উদ্ভিদ উচ্চ তাপমাত্রাযুক্ত স্থানে জন্মায়, তাদের এককথায় বলা হয়— 
  2. মেগাথারমস্ 
  3. মাইক্রোথারমস্ 
  4. পয়কিলোথারমস্ 
  5. হেকিস্টোথারমস্

উত্তর : A

  1. ডিসলেক্সিয়া রোগের জন্য কোন্ ধাতু দায়ী? – 
  2. আর্সেনিক (As) 
  3. সিসা (Pb) 
  4. পারদ (Hg) 
  5. লোহা (Fe)

উত্তর : B

  1. নীচের কোনটি ফ্যাকালটেটিভ বা ইচ্ছাধীন পরজীবীর উদাহরণ? –
  2. গোলকৃমি 
  3. ফিতাকৃমি 
  4. জোঁক 
  5. কোনোটিই নয়

উত্তর : C

  1. কোনো পপুলেশনে জীবের সংখ্যা মৃত্যুর কারণে হ্রাস পাবার হারকে বলা হয়— 
  2. ফেকানডিটি 
  3. মৃত্যুহার 
  4. জন্মহার 
  5. পরিযান

উত্তর : B

  1. যেসব পরজীবীরা সম্পূর্ণরূপে পোষকের উপর নির্ভরশীল, তাদের বলা হয়— 
  2. বহিঃপরজীবী 
  3. অন্তঃপরজীবী 
  4. বাধ্যতামূলক পরজীবী 
  5. ফ্যাকালটেটিভ পরজীবী

উত্তর : C

  1. একই প্রজাতির জীবগোষ্ঠীর মধ্যে প্রতিযোগিতা হলে, তাকে বলা হয়— 
  2. আন্তঃপ্রজাতি প্রতিযোগিতা 
  3. অন্তঃপ্রজাতি প্রতিযোগিতা 
  4. A ও B উভয়ই 
  5. A ও B কোনোটিই নয়

উত্তর : B

  1. যে জীব পোষক থেকে পুষ্টিরস শোষণ করে, তাদের বলা হয় – 
  2. মৃতজীবী 
  3. মিথোজীবী 
  4. পরজীবী 
  5. পতঙ্গভুক

উত্তর : C

  1. যেসব প্রাণীর দেহতলের উষ্ণতা পরিবেশের উষ্ণতার পরিবর্তনের সঙ্গে পরিবর্তিত না হয়ে অপরিবর্তিত থাকে, তাদের এককথায় বলা হয়— 
  2. পলকিলোথারমস্ 
  3. মেগাথারমস্ 
  4. হোমিওথারমস্ 
  5. মাইক্রোথারমস্

উত্তর : C

short questions – 2-3 marks of পরিবেশ ও তার সম্পদ PORIBESH O TAR SOMPOD

1. বাস্তুতন্ত্র বলতে কী বোঝো?

উত্তর : কোন একটি নির্দিষ্ট বসতি অঞ্চলে পরিবেশের জড় উপাদানের সঙ্গে সজীব উপাদানের এবং সজীব উপাদান গুলির পারস্পরিক অন্তঃক্রিয়ায় যে বসতি গড়ে ওঠে, তাকে ইকোসিস্টেম বা বাস্তুতন্ত্র বলে।

2. উৎপাদক কাকে বলে?

উত্তর : যেসব জীব নিজের খাদ্য নিজে প্রস্তুত করতে সক্ষম তাদের উৎপাদক বলা হয়। যেমন – গাছ।

3. খাদক কাকে বলে?

উত্তর : বাস্তুতন্ত্রের উপর নির্ভর করে যে সমস্ত জীব জীবন ধারণ করে তাদের খাদক বলা হয়। যেমন – মানুষ।

4. খাদ্যশৃংখল বলতে কী বোঝো?

উত্তর : উৎপাদক থেকে ক্রমপর্যায় খাদ্য-খাদক সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন প্রাণীগোষ্ঠীর মধ্যে খাদ্য শক্তির একমুখী প্রবাহের ক্রমিক পর্যায়কে খাদ্য শৃংখল বলে।

5. খাদ্যজালক কাকে বলে?

উত্তর : বাস্তুতন্ত্রে একাধিক খাদ্যশৃংখলের সাংগঠনিক একক গুলি বিভিন্নভাবে একে অপরের উপর নির্ভরশীল হয়ে জটিল জালকাকার সম্পর্ক সৃষ্টি করে তাকে খাদ্য জালক বলে।

6. শক্তিপ্রবাহ বা এনার্জি ফ্লো বলতে কি বোঝো।

উত্তর : বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদক দ্বারা রূপান্তরিত সৌরশক্তি খাদ্যের মাধ্যমে এক দেহ থেকে অন্য দেহে স্থানান্তরকে শক্তিপ্রবাহ বা এনার্জি ফ্লো বলে।

7. লিন্ডেম্যানের দশ শতাংশ সূত্র বলতে কি বোঝো?

উত্তর : বাস্তুতন্ত্রের প্রতিটি ট্রফির স্তর বা পুষ্টিস্তরে যে শক্তি এসে পৌঁছায় তার 10% পরবর্তী স্তরে যায়। এইভাবে আবার পরবর্তী স্তরে পূর্ববর্তী স্তরের 10% শক্তি প্রভাবিত হয়, একেই শক্তির দশ শতাংশ সূত্র বলে। বিজ্ঞানী লিন্ডেম্যান এই সূত্রের প্রবক্তা। তাই তাঁর নাম অনুসারে এই সূত্রকে লিন্ডেম্যানের দশ শতাংশ সূত্র বলে।

8. পশুপালন কাকে বলে?

উত্তর : জীবন বিজ্ঞানের যে শাখায় গৃহপালিত পশুদের খাদ্য, আশ্রয়, জনন, পরিচর্যা বিষয়ে আলোচনা করা হয়, তাকে পশুপালন বলে।

9. ন্যাটালিটি ও মর্টালিটির মধ্যে দুটি প্রধান পার্থক্য লেখো।

উত্তর : 

  • প্রতি একক সময়ে পপুলেশনে যে সংখ্যায় সদস্য যোগ হয় তাকে ন্যাটালিটি বলে, আর প্রতি একক সময়ে যে সংখ্যায় পপুলেশন থেকে সদস্য সংখ্যা কমে তাকে মর্টালিটি বলে।
  • ন্যাটালিটিতে পপুলেশনের আকার ও আয়তন বৃদ্ধি পায়, আর মর্টালিটিতে পপুলেশনের ঘনত্ব কমায়।

10. বিয়োজক কাকে বলে?

উত্তর : যেসব আণুবীক্ষণিক জীব মৃত জীবদেহ অথবা জৈব রেচন বা বর্জ্য বস্তুর পচন এবং বিয়োজন ঘটিয়ে বিভিন্ন জটিল জৈব যৌগকে সরল জৈব যৌগে বিশ্লিষ্ট করে এবং তা থেকে পুষ্টি লাভ করে, তাদের বিয়োজক বলে।

long questions – 5 marks of পরিবেশ ও তার সম্পদ PORIBESH O TAR SOMPOD

1. বাস্তুতন্ত্রে শক্তি প্রবাহ বলতে কি বোঝায় তা আলোচনা করো।

উত্তর :  বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদক দ্বারা রূপান্তরিত সৌরশক্তি খাদ্যের মাধ্যমে এক দেহ থেকে অন্য দেহে স্থানান্তরকে শক্তি প্রবাহ বা এনার্জি ফ্লো বলে।

বাস্তুতন্ত্রে এই শক্তি প্রবাহ তিনটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়-

  1. শক্তি অর্জন : শক্তির মূল উৎস হল সূর্যালোক অর্থাৎ সৌর শক্তি। সবুজ উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ সময় সৌরশক্তি শোষন করে রাসায়নিক শক্তিতে পরিবর্তন করে। পরে ওই রাসায়নিক শক্তি উৎপন্ন খাদ্যের মধ্যে স্থিতিশক্তিরূপে আবদ্ধ হয়। তাই এই পর্যায়েকে শক্তি অর্জন বলে।
  2. শক্তির ব্যবহার : বাস্তুতন্ত্রের পুষ্টি স্তরে আসল শক্তি উৎপাদন করে উৎপাদক। উৎপাদক কর্তৃক গৃহীত সৌরশক্তি খাদ্য শৃঙ্খলে আবদ্ধ বিভিন্ন জীব গোষ্ঠী পর্যায়ক্রমে গ্রহণ করে শক্তির প্রবাহ অক্ষুন্ন রাখে। আর এই জীব গোষ্ঠী যে পরিমাণ শক্তি গ্রহণ করে তার বেশিরভাগ দেহের তাপ উৎপাদন এবং নানা প্রকার জৈবনিক কাজে ব্যবহৃত করে।
  3. শক্তির স্থানান্তর : বাস্তুতন্ত্রের উৎপাদকের দেহে আবদ্ধ সৌরশক্তি পর্যায়ক্রমে প্রথম সারির, দ্বিতীয় সারির, তৃতীয় সারির এবং শেষ সর্বোচ্চ সারির খাদকের দেহে স্থানান্তরিত হয়। এই স্থানান্তরকালে  প্রতি ধাপে মোট শক্তির প্রায় 90 শতাংশ অপচয় হয় এবং মাত্র 10 শতাংশ দেহ গঠনের কাজে লাগে।

2. শক্তি সংরক্ষণের উপায় গুলি আলোচনা করো।

উত্তর :

  • শক্তি সংরক্ষণের জন্য সমাজের প্রতিটি মানুষকে সচেতন হতে হবে যাতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত শক্তি সম্পদ অর্থাৎ কয়লা খনিজ তেল বিদ্যুৎ ব্যবহৃত না হয়।
  • প্রবাহমান শক্তি সম্পদের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে এবং অপুনর্ভব শক্তি সম্পদের ব্যবহার কমাতে হবে।
  • গ্রামীণ বাড়িতে গোবর গ্যাস প্লান্ট বসিয়ে বায়োগ্যাস তৈরির মাধ্যমে যেমনি রান্নার জ্বালানি প্রয়োজন মেটানো যায় তেমনি অবশিষ্টাংশের জমিতে জৈবসার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
  • গৃহস্থলীর কাজে অকারণে পাকা, বাল্ভ, হিটার প্রভৃতি ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে।
  • বাড়িতে বিদ্যুৎ চালিত পুরনো যন্ত্রপাতি যাতে বিদ্যুৎ বেশি খরচ হয় সেটি পাল্টে দিতে হবে।
error: Content is protected !!
Scroll to Top

আজকেই কেনো পরীক্ষার শর্ট নোটস

এখন সহজে পরীক্ষার প্রস্তুতি নাও – আজকেই ডাউনলোড করো পিডিএফ বা বই অর্ডার করো আমাজন বা ফ্লিপকার্ট থেকে