রাশিয়ার আক্রমণ
নেপোলিয়নীয় যুদ্ধে রাশিয়ার প্রভাব অপরিসীম ছিল। ফরাসি সামরিক বাহিনী রাশিয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছিল। ১৮০৭ সালে রুশ-ফরাসি মৈত্রীর টিলজিটের সন্ধি স্বাক্ষরিত হলেও, জার আলেকজান্ডার এই চুক্তি ভেঙে ইংল্যান্ডের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপন করেন, যা নেপোলিয়নকে ক্ষুব্ধ করে তোলে।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে, নেপোলিয়ন ১৮১২ সালে সুইজারল্যান্ড, পোল্যান্ড, হল্যান্ড, প্রাশিয়া সহ কুড়িটি দেশের সেনা নিয়ে গঠিত বিশাল ‘গ্র্যান্ড আর্মি’ নিয়ে মস্কো অভিযানে যাত্রা করেন। তার উদ্দেশ্য ছিল রাশিয়াকে দখল করা এবং ইউরোপের অন্য দেশগুলোর উপর ফরাসি প্রভাব আরও শক্তিশালী করা। তবে, রুশ সেনাপতি কুতুজেভের ‘পোড়ামাটি নীতি’ এবং রুশ গেরিলা বাহিনীর প্রতিরোধ কৌশল নেপোলিয়নের বাহিনীর জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনে।
কুতুজেভের ‘পোড়ামাটি নীতি’ ছিল এমন একটি কৌশল, যার মাধ্যমে রুশ বাহিনী যুদ্ধের পথে থাকা ফরাসি বাহিনীর জন্য জীবনযাপন কঠিন করে তোলে। তারা রাস্তায় খাবার, আশ্রয়, এবং সরবরাহের স্তম্ভ ধ্বংস করে দেয়, যা ফরাসি বাহিনীকে প্রতিরোধের মুখে ফেলে। রুশ গেরিলা বাহিনী ফরাসি বাহিনীর সরবরাহ লাইনগুলোকে অকার্যকর করে তোলে, ফলে তাদের পক্ষে ফরাসি সেনাদের অগ্রসর হওয়া দুরূহ হয়ে পড়ে।
নেপোলিয়নের বাহিনী এই কৌশলের বিরুদ্ধে কিছু করতে সক্ষম হয়নি এবং চরম বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়। মস্কোতে পৌঁছানোর পর, ফরাসিরা শহরটি খালি ও ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় পান। তাদের পরিবহন সরঞ্জাম, পোশাক, এবং অস্ত্রের অভাবে, ফরাসি বাহিনী রাশিয়া থেকে পালাতে বাধ্য হয়, এবং পরাজয় তাদের জন্য অনিবার্য হয়ে ওঠে।
এটি ছিল নেপোলিয়নের জীবনের সবচেয়ে বড় সামরিক পরাজয় এবং তার সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য একটি বড় সামরিক ও রাজনৈতিক ধাক্কা ছিল। এই আক্রমণের পর, ফরাসি সাম্রাজ্য ভেঙে পড়া শুরু হয় এবং নেপোলিয়নের সাম্রাজ্যবাদের পতন অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে।
To access all content on this topic and other educational materials, become a member at:
https://skillyogi.org/student-registration-cbse
To buy our book “WBBSE Class 10 Itihas History Study Notes”, visit:
https://skillyogi.org/wbbse-class-10-itihas-history-study-notes