সাঁওতাল বিদ্রোহের ফলাফল ও আলোচনা – তৃতীয় অধ্যায় : প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ : বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ – Class 10 Itihas WBBSE Madhyamik

সাঁওতাল বিদ্রোহের ফলাফল ও আলোচনা

সাঁওতাল বিদ্রোহের পরিণতিতে, ব্রিটিশরা সাঁওতালদের একটি পৃথক উপজাতি হিসেবে ঘোষণা করে এবং তাদের অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে আলাদা সাঁওতাল পরগনা গঠন করে। এই অঞ্চলে ব্রিটিশ আইনের পরিবর্তে সাঁওতালদের নিজস্ব প্রথাগত বিধি প্রচলন করা হয়, যা সাঁওতালদের সমাজে এক নতুন আইনগত কাঠামো তৈরি করে। এটি সাঁওতালদের নিজেদের শাসন ও সংস্কৃতিকে পুনঃস্থাপন করার প্রচেষ্টা ছিল।

এছাড়া, এই বিদ্রোহ শুধুমাত্র সাঁওতালদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং দরিদ্র নিম্নবর্ণের হিন্দুদের মধ্যেও এটি ছড়িয়ে পড়েছিল। ফলে সাঁওতাল অঞ্চলে বাইরের মহাজনদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয় এবং সেখানে সুদের হার নির্ধারণ করা হয়, যা আর্থিক শোষণের বিরুদ্ধে এক বড় পদক্ষেপ ছিল। তবে, খ্রিস্টান মিশনারিদের ধর্মপ্রচার করার অনুমতি দেওয়া হয়, যা ধর্মীয় প্রসারের জন্য ব্রিটিশদের একটি কৌশল ছিল।

প্রাথমিকভাবে কৃষক বিক্ষোভ হিসেবে শুরু হলেও, এই বিদ্রোহ পরবর্তীকালে ব্রিটিশ বিরোধী এবং অর্থনৈতিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে মুক্তি সংগ্রামের রূপ নেয়। এটি ছিল এক গণ-আন্দোলন, যেখানে সাঁওতালরা তাদের অধিকারের জন্য ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে লড়াই করে।

নরহরি কবিরাজ একে নির্ভীক গণসংগ্রামের উজ্জ্বল নজির হিসেবে অভিহিত করেছেন। সুপ্রকাশ রায় এর মতে, এই বিদ্রোহ ছিল ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের প্রাক্‌ঘটনাড. রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেছেন, যদি ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহকে স্বাধীনতা সংগ্রাম আখ্যা দেওয়া হয়, তবে সাঁওতাল বিদ্রোহকেও সেই মর্যাদা দেওয়া উচিত। এটি ছিল ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম প্রথম ধারাবাহিক প্রতিরোধ আন্দোলন যা সারা দেশে জাতীয় মুক্তির আন্দোলন গড়ে তোলার এক গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল।

For more detailed study and exclusive access to content, join our membership at:

https://skillyogi.org/student-registration-cbse

To purchase the study book for Class 10 History (WBBSE), click here:

https://skillyogi.org/wbbse-class-10-itihas-history-study-notes

error: Content is protected !!
Scroll to Top
×