সতীদাহ প্রথা বিরোধী আন্দোলনের ইতিহাস
উনবিংশ শতকের শুরুতে সতীদাহ প্রথা নামে একটি মধ্যযুগীয় নিষ্ঠুর বর্বরতা প্রচলিত ছিল, যা সমাজের শৃঙ্খলা ও মানবাধিকারকে খর্ব করেছিল। এই প্রথায়, স্বামী মারা গেলে তার স্ত্রীকে জীবন্তভাবে স্বামীর দেহের সাথে আগুনে পুড়িয়ে মারা হত। এটি ছিল এক ধরনের নারীর প্রতি নির্মম অত্যাচার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন।
এই বর্বর প্রথার বিরুদ্ধে সামাজিক সংস্কারক রাজা রামমোহন রায় আন্দোলন শুরু করেন। ১৮১৮ সালে তিনি একটি বাংলা পত্রিকা প্রকাশ করেন, যার মাধ্যমে শিক্ষার দ্বারা মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করেন। রামমোহন রায় সংবাদ কৌমুদী পত্রিকায় নিয়মিত প্রবন্ধ প্রকাশ করতেন, যাতে সতীদাহ প্রথার বিরোধিতা এবং নারীর অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল।
রামমোহন রায় হিন্দু শাস্ত্র এবং ধর্মগ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে, সতীদাহ প্রথা হিন্দুধর্ম ও শাস্ত্রবিরোধী। তিনি পুরাণ এবং ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে দেখান যে, শাস্ত্রে সতীদাহ প্রথার কোন ভিত্তি নেই এবং এটি ধর্মের প্রতি অবমাননা।
শেষ পর্যন্ত, উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক এর ১৮২৯ সালের ১৭ নম্বর ‘রেগুলেশন আইন’ দ্বারা সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ হয়। এটি ছিল ভারতের ইতিহাসে প্রথম আইন যা নারী মুক্তি এবং মানবাধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সতীদাহ প্রথা বিরোধী আন্দোলনের প্রভাব:
- রাজা রামমোহন রায় এর নেতৃত্বে সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে জোরালো আন্দোলন শুরু হয়।
- হিন্দু শাস্ত্র থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমাণ করা হয় যে, সতীদাহ প্রথা হিন্দুধর্মের বিরোধী।
- ১৮২৯ সালে ‘রেগুলেশন আইন’ এর মাধ্যমে সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ হয়।
- নারী অধিকারের দিকে এক পদক্ষেপ এগিয়ে যাওয়া এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন।
- এই আন্দোলন ভারতের সমাজ সংস্কার আন্দোলনের এক মাইলফলক হয়ে ওঠে, যা পরবর্তী সামাজিক আন্দোলনগুলোকে প্রভাবিত করে।
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল, যার মাধ্যমে ভারতের নারীরা আরো স্বাধীনতা এবং সম্মান লাভ করতে শুরু করেন।
Join our membership at https://skillyogi.org/student-registration-cbse to access all study materials and resources. Also, buy your WBBSE Class 10 Itihas History Study Notes at https://skillyogi.org/wbbse-class-10-itihas-history-study-notes to prepare effectively for your exams!