fbpx

Chapter 2 – বল ও গতি Bol O Goti Physical Science Bhouto Bigyan – Class 9 WBBSE Notes

আপনি এখানে শিখবেন এই অধ্যায়ে এবং বিষয়ের ফাউন্ডেশন অংশটা, এই বিষয়টিকে সহজ-সরলভাবে পড়িয়েছেন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ভিডিও লেকচার এর মাধ্যমে এবং এই পুরো অধ্যায়কে চার ভাগে খন্ডিত করে আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে

  • প্রথম খন্ডে আপনি শিখবেন ফাউন্ডেশন অংশটা যেখানে অধ্যায়ের ব্যাপারে আপনাকে বোঝানো হয়েছে তার মানে definitions,basics  গুলো সহজভাবে.  এবং এটাকে আপনি বুঝতে পারবেন যেটা আপনাকে পরীক্ষার জন্য ক্রীপের করতে সাহায্য করবে
  • দ্বিতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন MCQ মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন যেটা সাধারণত এক Marks’er আসে পরীক্ষায়
  • তৃতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন শর্ট অ্যানসার এবং কোয়েশ্চেন, যেটা আপনার পরীক্ষার সাজেশন মধ্যে পড়ে এবং এটা 3-4 marks’er  প্রশ্ন আসে আপনার পরীক্ষা
  • চতুর্থ মডিউল আপনি শিখবেন লং আনসার এবং questions যেটা সাধারণত 5-6 marks er হয়

আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন যাতে কি আপনাকে আমরা সাহায্য করতে পারি

স্থিতি ও গতি

স্থিতি-গতি পর্যবেক্ষণ : যদি একটি বস্তুর অবস্থান সময়ের সাথে পরিবর্তিত না হয়, তবে সেই বস্তুটিকে স্থির বলে গণ্য করা হয় এবং তার  সেই অবস্থানটিকে স্থিতি বলা হয় । যেমন – গাছ-পালা, বাড়ি-ঘর, পাহাড়-পর্বত ইত্যাদি। 

সময়ের সাথে সাথে একটি বস্তুর অবস্থান পরিবর্তিত হলে, সেই বস্তুটিকে গতিশীল, এবং তার সেই অবস্থাকে গতি বলা হয় । যেমন – আকাশ জুড়ে পাখি উড়ে যাওয়া, দৌড়ানো, সমুদ্রে সাঁতার কাটা,  সবই গতিশীল বস্তুর উদাহরণ ।

একটি বস্তু স্থির কি না তা নির্ধারণ করার সময়, অন্য একটি বস্তুর সাথে তুলনা করা হয় । এই দ্বিতীয় বস্তুটির গতি স্থির বলে ধরে নেওয়া হয়, এবং এটিকে নির্দেশ বস্তু বা নির্দেশ তন্ত্র বলা হয় ।

যেমন – আপনি আপনার বাড়িতে যাওয়ার জন্য রেলওয়ে স্টেশন থেকে 1  কিলোমিটার পূর্বে হাটতে হয় । এখানে নিছক ‘দূরত্ব’ বা কেবল ‘দিক’ উল্লেখ করা যাবে না । আপনার বাড়ির অবস্থান নির্দিষ্ট  করতে, অবশ্যই স্টেশন থেকে আপনার বাড়ির ‘দূরত্ব’ এবং ‘দিক’ উভয়ই জানতে হবে ।

পৃথিবীর পৃষ্ঠের কোনো বস্তু চলমান বা স্থির কিনা তা নির্ধারণ করার জন্য সাধারণত পৃথিবীকে স্থির (নির্দেশ বস্তু) হিসাবে বিবেচনা করা হয় । 

উদাহরণস্বরূপ, যদি একটি ট্রেনের গতি 80 কিমি/ঘন্টা হয়, তাহলে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো একজন ব্যক্তির সাপেক্ষে, অথবা পৃথিবীর সাপেক্ষে ওই গতিবেগে ট্রেনটা ছুটছে । কিন্তু ট্রেনের যাত্রীরা পরস্পরের সাপেক্ষে স্থির, ভিতরের যাত্রীর সাপেক্ষে ট্রেনের আলো, পাখা স্থির। সুতরাং পর্যবেক্ষকের অবস্থানের উপর ট্রেনের বেগের মান নির্ভর করে । 

যখন কোনো বস্তুর স্থিতি বা গতি অন্য কোনো বস্তু বা বিন্দুর অবস্থানের সঙ্গে তুলনা করে বিচার করা হয়, তাকে নির্দেশতন্ত্র বলে । নির্দেশতন্ত্র এক-মাত্রিক, দ্বি-মাত্রিক, বা ত্রি-মাত্রিকও হতে পারে । 

আপাত দৃষ্টিতে যে গতিশীলতার কথা আমরা বলে থাকি তা আসলে আপেক্ষিক স্থিতিশীলতা বা আপেক্ষিক স্থিতি । সূর্যকে নির্দেশতন্ত্র ধরলে, পৃথিবী যে গতিশীল তা বোঝা যায় । আবার আমাদের ছায়াপথকে নির্দেশতন্ত্র ধরলে তার সাপেক্ষে সূর্যও গতিশীল। 

আপেক্ষিক গতি 

চলমান বা স্থির বস্তুর সাপেক্ষে অন্য আরেকটি চলমান বা স্থির বস্তুর গতিকে আপেক্ষিক গতি বলে । যেমন : 

  1. একটি চলন্ত ট্রেনের সাপেক্ষে বিপরীত দিকে চলন্ত গাছপালার গতি ।
  2. পশ্চিম থেকে পূর্বে পৃথিবীর আহ্নিক গতির জন্য, সূর্য পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে যায় । এটি পৃথিবীর সাপেক্ষে সূর্যের আপেক্ষিক গতি । যখন একটি বস্তুর সাপেক্ষে অপর বস্তুর আপেক্ষিক গতি শুন্য হয়, তখন তাকে আপেক্ষিক স্থিতি বলে ।

গতির প্রকারভেদ

অবস্থার পরিবর্তন ও অভিমুখ পরিবর্তনের উপর নির্ভর করে বস্তুর গতিকে কয়েকটা ভাগে ভাগ করা যায় –

  1. চলন গতি : যে গতির দ্বারা বস্তুর ভেতরের কণাগুলো একই গতিবেগে সমান্তরালভাবে সমান দূরত্ব অতিক্রম করে, তাকে চলন গতি বলে । চলন দুই ভাবে হতে পারে- সরলরৈখিক এবং বক্ররৈখিক
    1. সরলরৈখিক : কোনো বস্তু সরলরেখা বরাবর চললে তার সেই গতিকে সরলরৈখিক গতি বলে । যেমন – সোজা লাইন বরাবর ট্রেনের গতি, উপর থেকে অবাধে পতনশীল বস্তুর গতি, ক্যারামের স্ট্রাইকারের গতি । 
    2. বক্ররৈখিক : বস্তুর চলন মুক্ত বক্রপথে হলে তার গতিকে বক্ররৈখিক গতি বলে । যেমন- আঁকাবাঁকা পথে গাড়ির চলন ।

  2. সরলরৈখিক দোলগতি : যখন কোনো বস্তু কণা একটি নির্দিষ্ট গতিপথ ধরে একাধিকবার যাতায়াত করে, তখন সেই বস্তুর গতিকে দোলন বা সরলরৈখিক দোলনগতি বলা হয় । এটি স্পন্দন বা কম্পন নামেও পরিচিত । উদাহরণ- একটি শক্ত সাপোর্ট সহ একটি স্প্রিং এক প্রান্ত বেঁধে এবং অন্য প্রান্তে একটি ওজন ঝোলানো স্প্রিং নীচের দিকে টেনে ছেড়ে দিলে ওজনটা উপরে-নীচে ওঠা নামা করতে থাকবে । 
  3. বৃত্তীয় গতি : বৃত্তাকার পথ বরাবর বস্তুকণার গতিকে বৃত্তীয় গতি বলে । উদাহরণ- সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর প্রদক্ষিণ, নাগর-দোলার গতি ইত্যাদি । 
  4. ঘূর্ণন : যখন একটি প্রশস্ত বস্তু তার মধ্যেকার কোনো বিন্দু বা একটি অক্ষ সাপেক্ষে ঘোরে, তখন তাকে ঘূর্ণন বলা হয় । ঘূর্ণনের সময় বস্তুর প্রতিটি কণা নির্দিষ্টি সময় ধরে একই কোণে ঘোরে । যেমন – আহ্নিক গতি, ঘুরন্ত লাট্টু ইত্যাদি । 

বৃত্তীয় গতি ঘূর্নাক্ষ বস্তুর বাইরে থাকে এবং ঘূর্ণন ঘূর্নাক্ষ বস্তুর ভিতরে থাকে। 

গতি-সমীকরণ (Equations of motion)

গতি-সংক্রান্ত রাশি : সরণ 

পদার্থবিজ্ঞানে, একটি নির্দিষ্ট দিকে একটি বস্তুর অবস্থান পরিবর্তনকে ঐ বস্তুর সরণ বলা হয়। একটি সরল রেখার সাথে প্রথম এবং শেষ অবস্থানগুলিকে সংযুক্ত করার মাধ্যমে প্রাপ্ত দূরত্বটি বস্তুর সরণের পরিমাপ এবং প্রথম থেকে শেষ অবস্থানের দিকটি বস্তুর সরণের দিক নির্দেশ করে।

ব্যাখ্যা : ধরা যাক, একটি বস্তু A থেকে ABCD রেখা দ্বারা বিন্দু D-তে পৌঁছেছে । বস্তুর প্রারম্ভিক এবং চূড়ান্ত অবস্থানের মধ্যে রৈখিক দূরত্ব AD বস্তুর সরণ গণনা করতে ব্যবহৃত হয় এবং সরণ হয়েছে A থেকে D (AD) এর দিকে । বস্তুটি A থেকে D পর্যন্ত বিভিন্ন উপায়ে যেতে পারে, প্রতিটির সময়কাল ভিন্ন, কিন্তু সরণ একই হবে।
অর্থাৎ, পথের দৈর্ঘ্য ভিন্ন হলেও সরণ একই থাকে । যদি  বস্তুটি DCBA ব্যবহার করে বিন্দু D থেকে A বিন্দুতে চলে যায়, তাহলে সরণ DA (AD নয়)। রৈখিক দূরত্ব AD এবং DA এখানে সমান, কিন্তু সরণের দিক ভিন্ন। ডান-থেকে-বাম সরণ (DA) নেতিবাচক যদি বাম-থেকে-ডান সরণ (AD) ইতিবাচক হয়।

সরণের একক :
SI একক : মিটার (m), CGS একক : সেন্টিমিটার(cm) । 

সরণের মাত্রা সংকেত :  (L) এবং মাত্রা: দৈর্ঘ্যে 1 l 

সরণের মান এবং নির্দিষ্ট দিক থাকে l

সরণ এবং  অতিক্রান্ত পথের পার্থক্য : 

  1. অতিক্রান্ত পথ সোজা বা বাঁকা হতে পারে; এটি সর্বদা পজিটিভ এবং একটি স্কেলার  রাশি। তবে, এটি দুটি বস্তুর অবস্থানের মধ্যে একটি সরল রেখা বরাবর দূরত্বকে সরণ নির্দেশ করে এবং যেহেতু সরণ ভেক্টর রাশি, তাই এটি +ve, -ve বা শূন্য হতে পারে। 
  2. যদি প্রাথমিক এবং শেষ অবস্থান উভয়ই এক হয়, তাহলে বস্তুর মোট সরণ শূন্য হয়, কিন্তু অতিক্রান্ত পথের দৈর্ঘ্য শূন্য হয় না। 
  3. যদি বস্তুকণা একই দিকে সরলরেখা বরাবর যায়, তাহলে সরণ অতিক্রান্ত পথের সমান হয়; অন্যথায়, সরণ সর্বদা অতিক্রান্ত পথের চেয়ে কম হয়।

প্রশ্ন: একটি টেবিল-ঘড়ির মিনিটের কাঁটা 7 cm লম্বা। ঘড়িটা সকাল 10 টা থেকে 10.30-এ আসতে মিনিটের কাঁটার প্রান্তবিন্দুর সরণ ও অতিক্রান্ত দূরত্ব কত হবে?

Hint : 10 টা থেকে 10.30-এ আসতে কাঁটাকে অর্ধ-পরিসীমা পথ অতিক্রান্ত করতে হয়।

অর্থাৎ, অতিক্রান্ত দূরত্ব = ½ x 2πr = πr = (22/7) × 7 cm = 22 cm;  সরণ = ব্যাস = 2×7 = 14 cm.

গতি-সংক্রান্ত রাশি : দ্রুতি (Speed) 

একটি গতিশীল বস্তুকণা একক সময়ে যে পরিমাণ পথ অতিক্রম করে, তাকে তার দ্রুতি বলা হয়। 

অর্থাৎ –  

দ্রুতির SI-একক: ms-1  বা  m/s  

দ্রুতির CGS একক : cms-1 বা cm/s. 

দ্রুতি একটি স্কেলার রাশি। এর মান আছে, অভিমুখ নেই।

দ্রুতি সরল বা বক্রপথে হতে পারে । দ্রুতি বোঝাতে দিক-নির্দেশের প্রয়োজন হয় না।

  • সমদ্রুতি (Uniform Speed) : যখন একটি চলমান বস্তু একই সময়ের ব্যবধানে সমপরিমাণ দৈর্ঘ্য অতিক্রম করে, তখন বস্তুর দ্রুতিকে সমদ্রুতি বলা হয়। এই পরিস্থিতিতে, সময়ের ব্যবধান বেশ কম হয়, কিন্তু বস্তু কতৃক অতিক্রান্ত পথ সবসময় একই থাকতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, একটি গাড়ি 10 m/s গতিতে যাচ্ছে, যা নির্দেশ করে যে এটি প্রতি সেকেন্ডে 10 মিটার পথ  যাচ্ছে।
  • অসম-দ্রুতি (Non-uniform speed): যখন একটি চলমান বস্তু একই সময়ের ব্যবধানে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন পরিমাণ পথ অতিক্রম করে, তখন বস্তুর দ্রুতিকে অসম-দ্রুতি বলে।  উদাহরণস্বরূপ, স্টেশন ছাড়ার পরে, ট্রেনের গতি ধীরে ধীরে প্রতিটি সেকেন্ডে বাড়তে থাকে। আবার পরের স্টেশনে পৌঁছানোর আগেই তার গতি কমতে থাকে।

গড় দ্রুতির ধারণা (Idea of average Speed) : বাস, ট্রেন, মোটর গাড়ি ইত্যাদিতে ভ্রমণ করার সময়, বিভিন্ন কারণে, গাড়ি একই দ্রুতিতে (গতি) চলতে পারে না। সেই পরিস্থিতিতে, অবশ্যই গড় দ্রুতি গণনা করতে হয়।

গতি-সংক্রান্ত রাশি : বেগ (Velocity)
একটি চলমান  বস্তুর একক সময়ের সরণকে বেগ বলা হয়।

অর্থাৎ, 

বেগের SI একক :  m s-1 বা m/s

CGS একক : cm s-1 বা cm/s।

বেগ হল একটি ভেক্টর রাশি। আবার সরণ ভেক্টর রাশি এবং সময় হল স্কেলার রাশি।

∴ বেগ, সরণ, সময়-এর অনুপাত হল ভেক্টর রাশি।

  • সমবেগ (Uniform velocity) : একটি চলমান বস্তু একই সময়ে একই দিকে একই পরিমাণ সরণ হয়, তখন তার বেগকে সমবেগ বলা হয়। যখন একটি বস্তু সমবেগে চলে, তখন তার বেগের মান এবং দিক স্থির থাকে; অর্থাৎ, এটি সরলরেখায় গতিকে বোঝায়।
  • অসম বেগ (Non-uniform velocity) : সময়ের সাথে যখন একটি চলমান বস্তুর মান,বা দিক বা উভয়  পরিবর্তিত হয়, তখন বস্তুর বেগকে অসম বেগ বলা হয়।বস্তুর অসম বেগ থাকলে, গড় বেগ নির্ধারণ করতে হয়।

দ্রুতি ও বেগের পার্থক্য :

  বেগদ্রুতি   
বেগ হল একটি ভেক্টর রাশি দ্রুতি একটি স্কেলার রাশি
বেগ এবং গড়বেগের মান শুন্য হতে পারেদ্রুতি ও গড় দ্রুতির মান কখনও শুন্য হয় না
বেগের মান ও অভিমুখ আছে, তাই বেগ ধনাত্মক ও ঋণাত্মক দুই-ই হতে পারেদ্রুতির মান আছে কিন্তু অভিমুখ নেই, সেজন্য দ্রুতি সবসময় ধনাত্মক হয়
গতিশীল বস্তুর একক সময়ের সরণকে বেগ বলা হয়গতিশীল বস্তুর একক সময়ে অতিক্রান্ত পথের দৈর্ঘ্যকে  দ্রুতি বলা হয়
বস্তু যদি সমবেগ সম্পন্ন হয় তাহলে তা সমদ্রুতিসম্পন্ন হবেইবস্তু যদি সমদ্রুতিসম্পন্ন, তাহলে তা সমবেগ সম্পন্ন হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে 

দ্রুতি ও বেগের সাদৃশ্য :  

  1. দ্রুতি এবং বেগের একক একই। SI-তে একক হল m s-1, এবং CGS-তে একক হল cm s-1
  2. সরলরেখায় চলমান বস্তুর দ্রুতি ও বেগ একই হয়।
  3. দ্রুতি এবং বেগের মাত্রা-সংকেত এবং মাত্রা একই হয়। তাদের মাত্রা-সংকেত [LT-1] এবং           মাত্রা হল দৈর্ঘ্য 1, সময় -1 ।

বস্তু সমদ্রুতিসম্পন্ন হলে তা সমবেগ সম্পন্ন হবে এটি বলা যায় না কেন?

বক্ররেখায় কোনো বস্তু একই সময়ে একই দূরত্ব অতিক্রম করলে তা সমদ্রুতিসম্পন্ন হয় । এমনকি বেগের মান সমান হয়, কিন্তু নির্দিষ্ট দিকে না- চলার কারণে বস্তুটি সমবেগসম্পন্ন হয় না। উদাহরণস্বরূপ, ঘড়ির কাটা একই দ্রুতিতে চলে, কিন্তু সমবেগে চলে না।

  • যখন একটি বস্তু একই বেগে চলে, তখন এর মান এবং গতির দিক উভয়ই স্থির থাকে। কারণ বেগের মান সমান থাকায়, বস্তুটি একই সময়ে একই দূরত্ব অতিক্রম করে, অর্থাৎ, বস্তুটি সমদ্রুতিতে চলে। 
  • দ্রুতি বলতে যানবাহনের গতিকে বোঝানো হয় । কারণ গতির কোনো নির্দিষ্ট পথ নেই। ফলে পৃথিবীর বার্ষিক গতিকেও  দ্রুতি দিয়ে প্রকাশ করা দরকার । 
  • যেহেতু আলো একটি নির্দিষ্ট দিকে সরলরেখায়  চলে, তাই “বেগ” শব্দটি আলোর গতি বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।

আপেক্ষিক গতিবেগ : দুটি চলমান বস্তু বা একটি চলমান ও একটি স্থির বস্তুর মধ্যে, একটির সাপেক্ষে অপরটির গতিবেগকে আপেক্ষিক গতিবেগ বলা হয় ৷ উদাহরণস্বরূপ, 60 কিমি/ঘন্টা গতিতে চলমান ট্রেনের ভিতরে বসা যাত্রীর চোখে লাইনের পাশের পোস্টগুলির আপাত বেগ বিপরীত দিকে 60 কিমি/ঘন্টা ধরা যেতে পারে ।

যখন পৃথিবীর পৃষ্ঠ স্থির হয়, তখন পোস্টগুলির প্রকৃত বেগ হয় 0। ফলস্বরূপ, পোস্টগুলির আপাত বেগ 0-60 কিমি/ঘন্টা = -60 কিমি/ঘন্টা (-ve চিহ্নটি বিপরীত দিক নির্দেশ করে)। 

দর্শকের সাপেক্ষে বস্তুর আপেক্ষিক বেগ = বস্তুর প্রকৃত বেগ – দর্শকের প্রকৃত বেগ ।

গতি-সংক্রান্ত রাশি : ত্বরণ (Acceleration)
যখন বেগ পরিবর্তিত হয়, তখন ত্বরণ সৃষ্টি হয়। ত্বরণ হল সময়ের সাথে সাথে একটি বস্তুর বেগ যে হারে পরিবর্তিত হয়। 

 অর্থাৎ, 

ত্বরণের SI একক : m/s2 

ত্বরণের CGS একক : cm/s2 

যেহেতু ত্বরণ বেগের সাথে সম্পর্কিত, এবং বেগ একটি ভেক্টর রাশি, ত্বরণও একটি ভেক্টর রাশি।

ধনাত্মক ও ঋণাত্মক ত্বরণ : একটি বস্তুর বেগের পরিবর্তন দুই ধরনের হয়- বেগ বাড়তে পারে, আবার কমতেও পারে। সময়ের সাথে সাথে বস্তুর বেগ বৃদ্ধি পেলে ত্বরণ ধনাত্মক হয় এবং যদি সময়ের সাথে বস্তুর বেগ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পায় তবে ত্বরণ ঋণাত্মক হয । গাড়ির accelerator-এ চাপ দিলে গাড়ির বেগ বেড়ে যায়, এটি ধনাত্মক ত্বরণ হয় ।

গাড়ির ব্রেকে চাপ দিয়ে গাড়ির বেগ কমানো হলে, ত্বরণ ঋণাত্মক (negative) হয়। ঋণাত্মক ত্বরণকে মন্দন হিসাবেও উল্লেখ করা হয়। সাধারণত মন্দন বলতে সময়ের সাপেক্ষে একটি বস্তুর বেগ যে হারে কমে তা বোঝায়। অর্থাৎ, মন্দন = বেগের হ্রাস / সময় I

মন্দনকে ঋণাত্মক ত্বরণ বলা হয় কেন : যদি বস্তুর প্রাথমিক বেগ u হয় এবং t সময়ের পরে বেগ বৃদ্ধি পেয়ে v হয়, তাহলে,  

এবং যদি t-সময়ে বেগ কমে গিয়ে v হয়, তবে,    

তাই  মন্দন হল ত্বরণের বিপরীত, বা ঋণাত্মক ত্বরণ।

  1. মন্দন হল এক প্রকার ত্বরণ, একটি ভিন্ন ভৌতরাশি নয়। 
  2. ত্বরণ (বা মন্দন) হল ভেক্টর রাশি । উভয়ের একক , মাত্রা-সংকেত এবং মাত্রা  অভিন্ন হয়। কারণ ত্বরণ (বা মন্দন) = বেগ পরিবর্তন/ সময়, তাই তাদের মাত্রা-সংকেত = [LT-1] / [T] = [LT-2]। 
  3. ত্বরণ তখনই ঘটে যখন বেগের পরিবর্তন হয়, যখন একটি  বস্তু সমবেগে চলে, তখন তার ত্বরণ শূন্য হয়। 
  4. বৃত্তপথে একটি চলমান বস্তু শুধুমাত্র তার দিক পরিবর্তন করার জন্য বেগ পরিবর্তিত হয়, যার ফলে ত্বরণ (কেন্দ্রীয়) হয়।

ত্বরণের একক প্রতি সেকেন্ডে দুবার আসে :  

ত্বরণের সংজ্ঞা অনুসারে, 

[এখানে দুবার সময়ের একক আসছে। ফলস্বরূপ, ত্বরণের SI একক হল m/s2 এবং CGS একক হল cm/s2]

সমত্বরণ : একই সময়ের ব্যবধানে একটি বস্তুর বেগের পরিবর্তন সর্বদা একই থাকলে সেই ত্বরণকে সমত্বরণ বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, যখন কোনো বস্তু অভিকর্ষ দ্বারা বিনা বাধায় মাটিতে পড়ে, তখন তার গতিবেগ একটি নির্দিষ্ট হারে বৃদ্ধি পায়; তাই, সমত্বরণ তৈরি হয়। এটি অভিকর্ষজ ত্বরণের সমান হয়।

অসমত্বরণ : যদি বিভিন্ন সময়ে কণার গতিবেগের পরিবর্তন বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ভিন্ন হয়, তাহলে তাকে অসমত্বরণ  বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি পেন্ডুলাম ঘড়ির পেন্ডুলামের ত্বরণ অসম হয়। সর্বোচ্চ অবস্থানে এর বেগ শূন্য, তবে এর ত্বরণ হয় সর্বাধিক। ফলে বেগ শূন্য হলেও ত্বরণ ঘটতে পারে। 

গতিবেগ ও ত্বরণ কি বিপরীতমুখী হওয়া সম্ভব ? 

হ্যাঁ, এটি সম্ভব যখন চলমান বস্তুর বেগ কমে যায়; উদাহরণস্বরূপ, যখন একটি বস্তুকে উলম্বভাবে উপরের দিকে নিক্ষেপ করা হয়, তখন বেগ ঊর্ধ্বমুখী হয় কিন্তু বস্তুর উপর ক্রিয়াশীল অভিকর্ষজ ত্বরণ নিচের দিকে হয়। স্টেশনে পৌঁছানোর সময় ট্রেনের গতি হয় পূর্বমুখী, কিন্তু এর ত্বরণ হয় পশ্চিমমুখী।

লেখচিত্রের ব্যবহার : 

গতি-সম্পর্কিত ধারণাগুলির জন্য লেখচিত্র বেশ কার্যকর। সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে একটি বস্তুর গতিকে দুভাবে প্রকাশ করা যায় – 

  1. অতিক্রান্ত পথের দৈর্ঘ্যের ভিত্তিতে এবং 
  2. গতিবেগের ভিত্তিতে

কারণ, এই দুটি রাশি সময়ের ওপর নির্ভর করে। একটি স্বাধীন রাশি এবং এটির উপর নির্ভরশীল যেকোন রাশিকে একটি line graph দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করা হয়। 

বেগ-সময় লেখচিত্র : এই ধরনের গ্রাফ আঁকার সময়, বস্তুর বেগ সাধারণত Y-অক্ষ বরাবর এবং সময় X-অক্ষ বরাবর প্লট করা হয়।

  1. যখন বস্তু সমবেগে চলে : এই ক্ষেত্রে বস্তুর বেগ সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয় না। অর্থাৎ কোনো ত্বরণ  হয় না I

সময় পরিমাপের শুরুতে যদি কোনো একটি বস্তুর (t = 0) গতি ছিল 40 m/s, এবং এই গতিতেই 12 সেকেন্ডে এগিয়ে গেলে সেক্ষেত্রে লেখচিত্র কেমন হবে এবং 6 s থেকে 12 s-এর মধ্যে এর সরণ কত হবে?

  • সময়-অক্ষের সমান্তরাল একটি সরলরেখা লেখচিত্রটি হবে ।
  • সরণের পরিমাপ হবে CA এবং DB, X-অক্ষের উপরে 6 s (t1) এবং 12 s (t2) দুটি বিন্দুতে লম্বভাবে আঁকা হয়েছে। CA = DB = 40 m/s (বস্তুর বেগ)। সময়ের পার্থক্য = t2– t1 = (12-6)s = 6 s 

∴  সরণ = বেগ × সময় = CA × CD = 40 m/s × 6s = 240 m = CABD একটি আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল। অর্থাৎ, সরণ = গ্রাফ এবং সময়-অক্ষ দ্বারা সীমাবদ্ধ একটি আয়তাকার অংশের ক্ষেত্রফল। 

  • যখন বস্তু সমত্বরণে চলে (Uniform acceleration) : একটি গাড়ি সোজা রাস্তা ধরে চললে সময় এবং স্পিডোমিটারের কাঁটার হিসেব,
বেগ (m/s)51015202530
বেগ (s)01020304050

উপরের তথ্য থেকে সুবিধাজনক স্কেলে বেগ-সময় লেখচিত্র আঁকতে হবে, গাড়ির ত্বরণ এবং গাড়িটি 50 সেকেন্ডে কতদূর যাবে তা নির্ধারণ করতে হবে। 

  • বেগের পরিবর্তন = (30-5)  (m/s) = 25  (m/s) 
  • সময়ের পার্থক্য = (50-0)s = 50s 

বস্তুটি সমত্বরণে এগোবে । AB একটি সরলরেখার সমত্বরণে চলমান কণার বেগের পরিবর্তন নির্দেশ করে। গ্রাফের প্রকৃতি একটি সরলরেখা, এবং Y অক্ষকে ছেদ করে।

ত্বরণ = AB রেখার slope = BDAD=বেগের পরিবর্তন সময়  

=25 ms-150s=0.5ms-2

অতিক্রান্ত দূরত্ব = বেগ-সময় লেখচিত্র এবং সময়-অক্ষের মধ্যেকার ক্ষেত্রফল- OABC ট্রাপিজিয়ামের ক্ষেত্রফল = 1/2 (OA + HF) × OH = 1/2 × (5 + 30) ms-1  × 50s = 875m

অথবা, OABC ট্রাপিজিয়ামের ক্ষেত্রফল = 𝚫AFG এর ক্ষেত্রফল + OABC আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল = 1/2 × ভূমি (AG) × উচ্চতা (GF) + (OA × OH) = (1/2 × 50s × 25ms-1) + (5ms-1 × 50s) = 625m + 250 m= 875 m

লেখচিত্রের সাহায্যে বস্তুর সরলরৈখিক গতির সমীকরণ প্রতিষ্ঠা

  1. S = v.t সম্পর্কটি প্রতিষ্ঠা : যদি কণা একই বেগে (v) চলে, তবে (v – t) line graph (AB) সময়-অক্ষের সমান্তরাল হয় ।  সরণ = বেগ × সময়; 

t  সময়ে সরণ (S) = AB রেখা এবং t-অক্ষের মধ্যবর্তী অংশের ক্ষেত্রফল = OA × OC

অর্থাৎ, সরণ (S) = v.t.

  • বেগ-সময় সম্পর্কযুক্ত সমীকরণ (v = u + at) : গ্রাফে X অক্ষ হিসাবে সময়, Y অক্ষ হিসাবে বেগ এবং OA = প্রাথমিক বেগ (u) ধরে একই ত্বরণ সহ একটি কণার v – t গ্রাফ (AB) আঁকা হয়েছে । এই গ্রাফের নতিমাত্রা কণার ত্বরণকে প্রতিনিধিত্ব করে। 

বস্তুর ত্বরণ = বেগ পরিবর্তনসময় বেগ পরিবর্তন = DBAD = (BC-DC)OC  বা, a = V-UT 

বা, at = v-u 

বা, v = u + at

এই সমীকরণটির সাহায্যে সময় জানা থাকলে সমত্বরণে চলমান কণার বেগ গণনা করা যায় ।

  • সরণ-সময় সম্পর্কযুক্ত সমীকরণ (S = ut + 1/2at2) : t সময়ে একটি বস্তু দ্বারা অতিক্রান্ত দূরত্ব (S) = (v-t) লেখচিত্র এবং সময় অক্ষের মধ্যবর্তী ক্ষেত্রফল= OABC ট্রাপিজিয়ামের ক্ষেত্রফল = OADC আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল + 𝚫ABD এর ক্ষেত্রফল = OA × OC + 1/2 AD  × DB = ut + 1/2.t (v-u) 

বা, S = ut + 1/2. t .at (কারণ v = u + at) বা, S = ut + 1/2 at2

  • বেগ-সরণ সম্পর্কযুক্ত সমীকরণ (v2 = u2 + 2aS) : ত্বরণ (a) =বেগের পরিবর্তনসময় = BCAC = BCOD ত্বরণ (a) × দূরত্ব(S) = BCOD × OABD ট্রাপিজিয়ামের ক্ষেত্রফল = BCOD X 12 

(OA + BD) × OD 

∴  2aS=BC ×  (OA + BD) = (v-u) (u + v) = v2– u2 

∴  v2 = u2  + 2aS 

  1. সমীকরণ, (S = 1/2 at2) : স্থির অবস্থা (u = 0) থেকে সমত্বরণে চলমান বস্তুর বেগ-সময় গ্রাফ হবে-মূলবিন্দুগামী একটি সরল রেখা যা সময় অক্ষের উপর ঝুঁকে থাকে। 

সরণ (S) = 𝚫OAB-এর ক্ষেত্রফল = 1/2 × OB × AB = 1/2 t.v. = 1/2 t.at (যেহেতু, v = 0 + at)  

or, S = 1/2 at2

নিউটনের প্রথম গতিসূত্র (Newton’s 1st Law of motion)

বল বস্তুর গতির পরিবর্তন করতে পারে : গ্যালিলিওর বলেন, কোনো বস্তুর গতি পরিবর্তন করার জন্য বাহ্যিক শক্তির প্রয়োজন হয়, কিন্তু বস্তুটির সম-গতি বজায় রাখতে কোন বাহ্যিক বলের প্রয়োজন হয় না।
নিউটন 1686 সালে তিনটি গতির সূত্র প্রকাশ করেন। যা অভিজ্ঞতা-লব্ধ এবং স্বীকার্য হিসাবে গ্রাহ্য। কার্যকর বল ব্যবহার করা হলে, বস্তুর ত্বরণ তার উপর ক্রিয়াশীল বলের কারণে ঘটে।

‘বল’ বস্তুর আকৃতিরও পরিবর্তন করে। দুই হাত দিয়ে দুই দিক থেকে চেপে ধরলে রাবার বলের আকৃতি বদলে যায়।

বলের মান ও অভিমুখ উভয়ই আছে অর্থাৎ, যদি এক বা একাধিক বল বস্তুর উপর কাজ করে, তাহলে তিনটি জিনিস ঘটতে পারে-

  1. বস্তুর বেগ পরিবর্তিত হতে পারে
  2. এর গতির দিক পরিবর্তন হতে পারে 
  3. এর আকৃতি পরিবর্তিত হতে পারে

প্রতিমিত বল (balanced force) ও কার্যকর বল (effective force)

ক্রিয়াকর্ম (Activity) : যদি একটি বস্তুর উপর কাজ করা একাধিক বল বস্তুর ত্বরণ তৈরি করতে না পারে, তাহলে সেই বলগুলিকে প্রতিমিত বল (balanced force) বলা হয়। কিন্তু যদি বস্তুর ত্বরণ সৃষ্টি হয় তবে সেই বলের লব্ধিকে কার্যকর বল বা অপ্রতিমিত বল বলা হয়। 

উদাহরণ- ভিড় বাসে হাত ছেড়ে দাঁড়িয়ে থাকা যায় । এই পরিস্থিতিতে, চারিদিক থেকে দেহের উপর প্রয়োগ করা বলের লব্ধি শূন্য,  অর্থাৎ বলগুলি প্রতিমিত হচ্ছে । যেহেতু কোনো অপ্রতিমিত বল প্রযুক্ত হয় না তাই পড়ে না গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা যায়।

স্কেলার এবং ভেক্টর  রাশি : মান এবং অভিমুখের ভিত্তিতে রাশিকে দুটি উপাদানে ভাগ করা হয় স্কেলার (Scalar) রাশি এবং ভেক্টর (Vector) রাশি।

স্কেলার রাশি : যে সমস্ত রাশির কোনোরকম দিক নির্দেশের প্রয়োজন হয় না, শুধুমাত্র মান দ্বারা বোঝানো যায়, সেই রাশিগুলোকে স্কেলার রাশি বলা হয়। যেমন- দৈর্ঘ্য, ভর, তাপমাত্রা, আয়তন, ঘনত্ব,  কার্য, শক্তি, ইত্যাদি ।

ভেক্টর রাশি : যে সব রাশিকে বোঝানোর জন্য মান ও দিক উভয়ের নির্দেশের প্রয়োজন হয়, তাকে ভেক্টর রাশি বলে । যেমন- সরণ, বল, ওজন, বেগ ইত্যাদি।

যদি একটি মোটরসাইকেল 6 কিমি পথ অতিক্রম করে, তবে অতিক্রান্ত দূরত্ব হবে = 5 কিমি; কিন্তু, মোটরসাইকেল যদি একটি সরলরেখা বরাবর 6 কিমি পূর্বে যায়, তাহলে বলা যায় সরণ = পূর্বে 6 কিমি। 

এখানে অতিক্রান্ত দূরত্ব হল স্কেলার রাশি, কারণ এটি শুধুমাত্র মান দ্বারা বোঝানো হয়েছে । তবে, সরণকে বোঝার জন্য, মান এবং দিক উভয়ই উল্লেখ করতে হবে; এই কারণেই সরণ একটি ভেক্টর রাশি।

ভেক্টর প্রকাশ করা হয় a , b এইভাবে। একটি ভেক্টরের পরম মান বা ‘মান’ হল একটি স্কেলার  রাশি। 

ভেক্টর রাশি হিসাবে বল : 

  • ভেক্টর রাশি হিসাবে বলের একটি মান আছে
  • ভেক্টর রাশি হিসাবে এটির একটি দিক রয়েছে 
  • ভেক্টর রাশি হিসাবে এটির প্রয়োগ-রেখা আছে। 

তৃতীয় বৈশিষ্ট্যটি ‘বল’কে অন্যান্য ভেক্টর রাশি থেকে আলাদা করে।

নির্দিষ্ট সরলরেখা বরাবর বল ক্রিয়াশীল হলে তাকে বলের প্রয়োগ-রেখা বা ক্রিয়াপথ বলে। উদাহরণ- টেবিলের উপর রাখা বই ধাক্কা দিয়ে সরাতে গেলে বইটির কেন্দ্র বরাবর সরলরেখায় বল প্রয়োগ করতে হবে। অন্যথায়, ঘূর্ণন-সমন্বিত মিশ্র গতি তৈরী হবে। অর্থাৎ, বল কেবল একটি ভেক্টর নয়, একটি নির্দিষ্ট সরলরেখা বরাবর ক্রিয়াশীল ভেক্টর।

বলের সংযোজন ও সামান্তরিক সূত্র : সাধারণ গাণিতিক নিয়মে, একাধিক স্কেলার রাশি যোগ করা যেতে পারে। উদাহরণ- একটি 6 মিটার লম্বা ফিতাকে একটি 4 মিটার লম্বা ফিতার সাথে যোগ করলে, মোট দৈর্ঘ্য (6 + 4) মিটার বা 10 মিটার লম্বা ফিতা পাওয়া যায়। ভেক্টর পরিমাণ যোগ করার সময় দিকগুলির পাশাপাশি তাদের মানগুলিও বিবেচনা করতে হয়।

লব্ধি বল : যদি একাধিক বল একত্রিত করে একটি নতুন বল-ভেক্টর তৈরি করা হয় এবং সেই নতুন বল-ভেক্টরের ক্রিয়ার ফলাফল প্রদত্ত বলের সম্মিলিত ক্রিয়ার ফলের সমান হয়, তাহলে সেই নতুন ভেক্টরকে লব্ধি বল বলা হয়। লব্ধি বল net force নামেও পরিচিত। একই সময়ে একটি বস্তুর উপর একাধিক বল কাজ করতে পারে । 

উদাহরণ- একটি আলমারিকে ঠেলে সরানোর জন্য চার ব্যক্তি প্রয়োজন। অর্থাৎ, চারজনের সম্মিলিতভাবে প্রয়োগ করা বল বস্তুটিতে ত্বরণ সৃষ্টি করে। আবার, একজন শক্তিশালী মানুষ একাই এই কাজটি করে দিতে পারে। এই ধরনের উদাহরণ থেকে লব্ধি বল বা net force-এর ধারণা পাওয়া যায়।

লব্ধি বল গণনা করার পদ্ধতিটি ভেক্টর রাশির যোগ বা ভেক্টর রাশি সংযোজন হিসাবে পরিচিত। সাধারণত, লব্ধি-ভেক্টরের মান, দুটি সংশ্লিষ্ট ভেক্টরের মানের সমষ্টির সমান নয়। যেহেতু বল একটি ভেক্টর রাশি, ভেক্টর সংযোজন পদ্ধতিতে একাধিক বল থেকে লব্ধি নির্ধারণ করা যায়। 

বলের সামান্তরিক সূত্র : যদি দুটি বলকে তাদের প্রয়োগবিন্দুর স্থান থেকে আঁকা একটি সামান্তরিকের সন্নিহিত বাহু ( মানে ও দিকে) দ্বারা  সূচিত করা হয়, তবে দুটি বাহুর ছেদকারী কোণ (মানে ও দিকে) লব্ধি ভেক্টরকে প্রতিনিধিত্ব করে।

ধরা যাক, F1 এবং F2  দুটি বল-ভেক্টর যা O-বিন্দুর সাথে ক্রিয়াশীল। এগুলিকে যথাক্রমে OA এবং OB দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যেকার কোণ 𝛉।  F1 এবং F2 ভেক্টরকে যোগ করতে তাদের সমান্তরাল সূত্র ব্যবহার করতে  হবে।

OA এবং OB রেখার  সমান্তরাল CB এবং AC অঙ্কন করে OACB সামান্তরিক সম্পূর্ণ  করা হল। এই সামান্তরিকের কর্ণ হল OC । মানে (in magnitude) এবং দিকে (in direction), OC রেখা হল F1 এবং F2 ভেক্টরের লব্ধি।

উদাহরণ : একটি মোটর চালিত নৌকার মোটর ব্যর্থ হয়েছে এবং তাকে পারে টেনে নিয়ে যেতে  হবে। এই পরিস্থিতিতে যখন দুটি কাছির সঙ্গে নৌকা বেঁধে দেওয়া হয় এবং দুজন মিলে দুই পাশে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়, নৌকাতে প্রয়োগ করা বল-দুটির লব্ধির দিকে এগিয়ে যায়।

বলের বিভাজন (Resolution of forces) এবং উপাংশ (Components)

দুই বা ততোধিক ভেক্টরের যোগ সম্ভব ফলে এর থেকে লব্ধি ভেক্টর পাওয়া যায় । একইভাবে, একটি ভেক্টরকে দুই বা ততোধিক অংশে ভাগ করা যায়।

বিভাজিত অংশগুলোকে প্রদত্ত ভেক্টরের উপাংশ বলা হয় (component)। বলের বিভাজন বলতে বোঝায় বলটিকে দুটি নির্দিষ্ট উপাংশে ভাগ করা হয় যাতে এই দুটি  উপাংশ লব্ধি  প্রদত্ত বলের সমান হয়।

বলের সমকৌণিক  বিভাজন : এই পরিস্থিতিতে, বলকে দুটি উপাংশে একে অপরের সাথে লম্ব ভাবে বিভক্ত করা ^হয়। R বল-ভেক্টর চিত্রে (2.3.5) লম্ব OX এবং OY অক্ষ বরাবর দুটি উপাংশে (P এবং Q) বিভক্ত। সমকৌণিক  উপাংশ  P এবং Q এর যোগফল সরবরাহকৃত R বল-ভেক্টরের সমান ফলাফল দেয়।

প্রথম গতিসূত্র (1st law of motion)

প্রথম সূত্র: কোনো বাহ্যিক কার্যকরী বল প্রয়োগ না করলে, স্থির বস্তুটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থির থাকবে, যেখানে চলমান বস্তুটি একই গতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য চলতে থাকবে। অর্থাৎ, প্রথম গতিসূত্র থেকে আমরা বস্তুর জাড্যধর্ম এবং বলের গুণগত পরিচয় পেয়ে থাকি ।

জাড্য (Interia) :  পদার্থের জাড্য হল পদার্থের সেই মৌলিক ধর্ম যার জন্য স্থির বস্তু স্থির অবস্থা এবং গতিশীল বস্তু গতিশীল অবস্থা বজায় রাখতে চায়। ল্যাটিন শব্দ iners যার অর্থ  idle বা অলস। 

বস্তুর ভর ও জাড্য :  বস্তুর বাধা দেওয়ার সাধারণ ধর্মের কথা গ্যালিলিও প্রথম বলেন। বাইরে থেকে বল প্রয়োগ করে বস্তুর স্থিতিশীল এবং গতিশীল অবস্থাকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করলে তা বাধা দেয়। বস্তুর এই ধর্মকে তার জাড্য (বা জড়তা) বলে। 

বস্তুর ভর যত বেশি, তার প্রতিরোধ ক্ষমতা তত বেশি। এই কারণেই একটি লোহার বল সরানো একটি রাবারের বলের চেয়ে বেশি কঠিন। আবার, একই গতিতে একটি লোহার বল থামানো রাবারের বলের চেয়ে বেশি কঠিন। অর্থাৎ, লোহার বলের জাড্যের পরিমাণ তার ভরের উপর নির্ভর করে । তাই ভরকে জাড্যের পরিমাপ বলে মনে করা হয়। 

যেহেতু নিউটনের প্রথম সূত্রটি বস্তুর জাড্য নির্দেশ করে তাই এই সূত্রকে জাড্যের সূত্র বলা হয়। 

জাড্যের প্রকারভেদ : জাড্য দুই প্রকার, যথা- স্থিতিজাড্য এবং গতিজাড্য।

স্থিতিজাড্য : স্থিতিজাড্য হল একটি স্থিতিশীল বস্তুর স্থির থাকার প্রবণতা।

উদাহরণ :  

  • গাছের কান্ড বা ডাল ধরে নাড়ালে ডালপালাতে গতির সৃষ্টি হয়, কিন্তু ফলগুলি স্থিতিজাড্যর জন্য তার জায়গা ধরে রাখার চেষ্টা করে। ফলস্বরূপ, ফলগুলি অভিকর্ষের ফলে নীচে পড়ে যায়।
  • যখন স্থির থাকা গাড়িটি হঠাৎ চলতে শুরু করে, তখন ভিতরে থাকা যাত্রীরা পিছনের দিকে  হেলে পড়ে। 

স্থিতিজাড্যের পরীক্ষা : গ্লাসের উপরে একটি কার্ডবোর্ড এবং তার উপর একটি বল রেখে যখন কার্ডবোর্ডে জোরে আঘাত করা হয় তখন সেটি ছিটকে যায় এবং স্থিতিজাড্যের কারণে বলটি গ্লাসে পড়ে।

গতিজাড্য : গতিজাড্য হল বস্তুর সমবেগে চলার প্রবণতা।

উদাহরণ : 

  • বৈদ্যুতিক পাখা বন্ধ করার পরেও, পাখাটি অল্প সময়ের জন্য ঘুরতে থাকে। ফ্যানের ভেতরের অংশের ঘর্ষণ শক্তি এবং বায়ুপ্রবাহে বাধার কারণে ফ্যানটি শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। 
  • লম্বা লাফ দেওয়ার সময়, অংশগ্রহণকারী অনেক দূর থেকে দৌড়ে আসে। এটি শরীরে গতিজাড্যের সৃষ্টি করে, এবং ক্রীড়াবিদকে উচ্চতর লাফ দিতে দেয়। 
  • সাইকেলে প্যাডেলিং বন্ধ করার পরেও সাইকেলটি বেশ কিছুটা এগিয়ে যায়। 
  • দৌড়ের প্রতিযোগীরা শেষ লাইনে পৌঁছেও সাথে সাথে থামতে পারে না। একটু এগিয়ে গিয়ে সে থামতে পারে l 
  • গতিহীন রোলারের চেয়ে চলন্ত রোলারকে ঠেলে নিয়ে যাওয়া সহজ।

জাড্য থেকে বল : নিউটনের প্রথম সূত্র অনুযায়ী কোনো বল প্রয়োগ না করলে বস্তুর চলমান এবং স্থির অবস্থার পরিবর্তন করা যায় না। ভিতরে বসে গাড়ির সামনের প্রান্তে গাড়িটি ধাক্কা দিলে গাড়িটি চলে না । গাড়িটিকে বাইরে থেকে ধাক্কা দিতে হবে বা টেনে আনতে হবে। 

জড়তা, ঘর্ষণ-এর বাধা অতিক্রম করে একটি স্থির বস্তুকে স্থানান্তর করতে বা গতিশীল অবস্থা থেকে স্থির অবস্থায় আনতে, বস্তুর বেগ বাড়ানো, হ্রাস বা পরিবর্তন করতে, কার্যকর বল অবশ্যই বাইরে থেকে সরবরাহ করতে হবে, ভিতর থেকে নয়। 

কার্যকর বল বস্তুর গতি পরিবর্তন করে ত্বরণ উৎপন্ন করে। অর্থাৎ বলই পদার্থের ত্বরণের কারণ।

নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র ( Newton’s 2nd Law of motion)

নিউটনের প্রথম সূত্রের দ্বারা জানা যায় বল ত্বরণ সৃষ্টি করে। কিন্তু এটি কতটা বল বা ত্বরণ তৈরি করতে পারে, তা জানা দরকার। 

F1 এবং F2 দুটি বল একই বস্তুতে প্রয়োগ করা হয়। লক্ষ্য করা যায়, F1  বল 10 m/s2 ত্বরণে পরিণত হয় এবং F2 বলের ফলে 20 m/s2 ত্বরণ হয়। F2এর মান, F1  এর দ্বিগুণ। 

  • নির্দিষ্ট ভরের বস্তুর ক্ষেত্রে প্রযুত্ত বল উৎপন্ন ত্বরণের সমানুপাতিক।

অর্থাৎ, Fa (যখন ভর ধ্রুবক)……. (i)

বলের বিরুদ্ধে ত্বরণ plot  করলে, মূলবিন্দুগামী একটি সরলরেখা পাওয়া যায়। 0.2 কেজি এবং  0.4 কেজি দুটি  ভিন্ন ভরের বস্তুতে সমপরিমাণ ত্বরণ (2 m/s2) তৈরি করতে বল প্রয়োগ করা হলে, ভারী বস্তুর ক্ষেত্রে, দ্বিগুণ বল প্রয়োজন হবে ।

  • বিভিন্ন বস্তুতে সম-পরিমাণ ত্বরণ সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বল, বস্তুর ভরের সমানুপাতী। 

অর্থাৎ F∝ m  (যখন ত্বরণ ধ্রুবক) ….. (ii)। বল vs বস্তুর ভর plot করলে এক্ষেত্রেও মূলবিন্দুগামী সরলরেখা পাওয়া যায়। 

যদি দুটি সম্পর্ক একই সাথে প্রকাশ করা হয় , তবে-

F ∝ ma  or, F = k ma  (k = ধ্রুবক) ….. (iii)

এই সম্পর্কটি নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র দ্বারা প্রকাশ হয়েছে : কোনো বস্তুতে প্রয়োগ করা কার্যকর বলের পরিমাণ বস্তুর ভর এবং উৎপাদিত ত্বরণের গুণফলের সমানুপাতিক এবং ত্বরণের দিক ও বলের দিক একই হয় ।

F এর একক নির্ধারণ করতে, k = 1 ধরা যেতে পারে, এই ক্ষেত্রে সমীকরণ (ii) থেকে  পাওয়া যায় – যখন m = 1 এবং a = 1, তখন F = 1;

অর্থাৎ, একক বল হল এমন একটি বল যা একটি একক ভরের উপর কাজ করে একক ত্বরণ উৎপন্ন করতে পারে। অর্থাৎ, F = ma, যার মানে প্রযুক্ত কার্যকর বল = বস্তুর ভর × ত্বরণ ।

এখানে F = ma সম্পর্কে কিছু তথ্য : 

  • a = F/m অর্থাৎ, F পরিমাণ বল যদি m ভরের বস্তুর উপর প্রয়োগ করা হয় তবে প্রতি সেকেন্ডে বস্তুর বেগ (F/m) বাড়ে এবং বস্তুটি বলের দিকে যেতে শুরু করে।
  • যখন প্রযুক্ত বলের দিক এবং বস্তুর গতির দিক একই হয়, তখন বস্তুর বেগ বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ ত্বরণ ঘটে এবং যখন প্রয়োগ করা বল এবং বস্তুর গতি বিপরীতমুখী হয় তখন মন্দন ঘটে ।
  • যতক্ষণ বল প্রয়োগ করা হয় ততক্ষণ সময়ের জন্য বস্তুর বেগ পরিবর্তিত হয়।
  • বল প্রয়োগ বন্ধ করলে  F = 0 হয় এবং a = 0 হয় (যেহেতু বস্তুর ভর m = 0 হতে পারে না)। 

এর ফলে দুটি জিনিস  ঘটতে পারে-

  1. বস্তু একই গতিতে চলে। কারণ a = (F/m) = 0, (v-u) / t = 0, বা v = u
  2. বস্তু গতিহীন থাকে । কারণ v = 0 হলে u = 0।

অর্থাৎ, কোন বল প্রয়োগ না করলে, স্থির বস্তুটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থির থাকবে, যেখানে চলমান বস্তুটি একই ভাবে চলতে থাকবে। এটাই প্রথম সূত্র। তাই নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র থেকে প্রথম সূত্রে যাওয়া যায় ।

বস্তুর ভর হল তার জাড্যের পরিমাপ বা সহজাত ধর্ম
যদি দুটি বস্তুর মধ্যে একটি বস্তুর ভর m1 , এবং অন্যটির ভর m2 হয় তখন তাদের উপর একই পরিমাণ বল (F) প্রয়োগ করা হয়, তখন তারা যথাক্রমে a1 এবং a2 ত্বরণ  তৈরী করে। 

F = ma ব্যবহার করে পাওয়া যায়- 

  • F = m1a
  • F = m2 a2  ,  

m1a1  = m2 a2  বা, a1 / a2 = (m2 / m1 )  অর্থাৎ a ∝ 1/m 

অর্থাৎ, ভর ও ত্বরণ ব্যস্ত-সম্পর্কযুক্তl ত্বরণ যত কম হবে, ভর তত বেশি এবং সেই পরিস্থিতিতে, বেগ পরিবর্তন করা কঠিন হবে ।

সেজন্য বলা হয়- 

  1. ভর হল একটি বস্তুর জাড্যের পরিমাপ। 
  2. যেহেতু জাড্য বস্তুর সহজাত প্রকৃতি এবং ভর বস্তুর জড়তা জনিত বাধার সূচক, তাই ‘ভর’-কে বস্তুর সহজাত প্রকৃতি এবং জড়ত্বীয় ভর হিসাবে উল্লেখ করা যেতে পারে।

বলের মাত্রা-সংকেত : [ভর] × [ত্বরণ] = [M] × [LT-2

বলের মাত্রা : ভরে 1, দৈর্ঘ্যে 1 এবং সময়ে -2 ।

বলের পরম একক :  নিউটন (SI এককে) , ডাইন (CGS এককে)

বলের অভিকর্ষীয় একক : কিলোগ্রাম-ভার হল বলের অভিকর্ষীয় একক (SI ইউনিট) এবং গ্রাম-ভার (CGS ইউনিট)।

একক বল : একটি একক ভরের বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করে যে একক পরিমাণ ত্বরণ ঘটানো হয়, সেই  বলকে একক বল হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। SI একক বল : 1 নিউটন এবং CGS একক বল : 1 ডাইন।

SI অনুযায়ী বলের পরম একক (নিউটন)-এর সংজ্ঞা : 1 কিলোগ্রাম ভরের একটি বস্তুতে 1 m/s2 ত্বরণ সৃষ্টি করতে যে বল প্রয়োজন তা হল 1 নিউটন।

অর্থাৎ, 1 নিউটন = 1 kg × 1 m/s2 = 1 kg m/s2

CGS-পদ্ধতিতে বলের পরম একক (ডাইন)-এর সংজ্ঞা :  যে বল 1g ভরের উপর ক্রিয়া করে 1 cm/s2  ত্বরণ তৈরি করতে পারে তাকে 1 ডাইন বলে।

অর্থাৎ, 1 ডাইন = 1g × 1 cm / s2 = 1 g cm / s2 

ডাইন ও নিউটনের সম্পর্ক :  1 N = 1 kg × 1 m/s2 = 103  g ×  102 cm / s2 = 105 dyne

1 গ্রাম ভার (1 g-wt বা 1 gf) : এক গ্রাম ভরের ওজন, অর্থাৎ এক গ্রাম ভরের কোনো বস্তুকে পৃথিবী তার কেন্দ্রের দিকে টেনে আনতে যে বল প্রয়োগ করে = 1 g × অভিকর্ষজ ত্বরণ (g) = 1 g × g cm s-2 = g ডাইন।

1 কিলোগ্রাম ভার (1 kg-wt বা 1 kgf) : একটি 1 কেজি বস্তুর ওজন। অর্থাৎ, পৃথিবী তার কেন্দ্রের দিকে 1 কেজি ভরের বস্তুকে টেনে আনতে যে বল প্রয়োগ করে, 

সেই বল = 1 kg × অভিকর্ষজ  ত্বরণ(g) = 1 kg × g ms-2= g নিউটন।

বলের পরম এককের সাথে মহাকর্ষীয় এককের  সম্পর্ক : অভিকর্ষীয় একক = g × পরম একক, কোনো স্থানের g = 9.8 m/s2, 1 kg-ভার = 1 kg × 9.8 m/s2 = 9.8 নিউটন। 

1 g-ভার = 1 g × 980 cm/s2 = 980 dyne

তৃতীয় গতিসূত্র (Third Law of motion )

প্রথম এবং দ্বিতীয় সূত্র উভয়ই বলের  প্রতি পক্ষপাতিত্ব করে । প্রথম সূত্র অনুযায়ী, যখন একটি বস্তু অন্যটির উপর বল প্রয়োগ করে, তখন বস্তুটি সেই বল প্রয়োগে বাধা দেয়। তবে, তৃতীয় সূত্র অনুযায়ী দ্বিতীয় বস্তুটি প্রথম বস্তুর উপর শুধু বাধা দেয় না, সমান এবং বিপরীতমুখী বল প্রয়োগও করে। দুটি বস্তুর সংস্পর্শে সৃষ্ট যে দুটি বল তৈরী হয় তাদের ক্রিয়া বল এবং প্রতিক্রিয়া বল বলে।

তৃতীয় গতিসূত্র : প্রতিটি ক্রিয়ার একটি সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

সূত্র অনুযায়ী জানতে পারি, 

  • ক্রিয়া এবং প্রতিক্রিয়া কী এবং তাদের কী বৈশিষ্ট্য রয়েছে                                        
  • ভরবেগের সংরক্ষণের সূত্র 

তৃতীয় গতিসূত্রের মূল বক্তব্য হল : তৃতীয় গতিসূত্রের প্রাথমিক ধারণা হল যে প্রতিটি বলের একটি সমান এবং বিপরীত বল রয়েছে, যথা ক্রিয়া এবং এর প্রতিক্রিয়া। যদি একটি বস্তু A অন্য বস্তু B-এর উপর বল প্রয়োগ করে (ধরা যাক বলের মান FAB), তবে দ্বিতীয় বস্তুটি B এবং A উভয়ের ওপর একই পরিমাণ বিপরীত বল (FBA) প্রয়োগ করবে। অন্য কথায়, FAB = -FBA` (ঋনাত্বক চিহ্ন বিপরীত বল বোঝায়)। অর্থাৎ, দুটি বস্তুর মধ্যে পারস্পরিক বল প্রয়োগের ক্ষেত্রে, তাদের একটি যদি ক্রিয়া হয়, অন্যটি হবে প্রতিক্রিয়া।

ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য :

  • ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া হল দুটি সমমাত্রার পরস্পর বিপরীতমুখী বল এবং একই রেখা বরাবর কাজ করে।
  • কোনো ক্রিয়া না থাকলে কোনো প্রতিক্রিয়াও থাকে না। এই কারণেই এটা বিশ্বাস করা হয় যে, প্রকৃতিতে, একক একাকী বল থাকতে পারে না।
  • প্রতিক্রিয়া ততক্ষণ স্থায়ী হয় যতক্ষণ ক্রিয়া স্থায়ী থাকে । 
  • ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া বল সবসময় দুটি ভিন্ন বস্তুর উপর কাজ করে বলে, ক্রিয়া এবং প্রতিক্রিয়া বল প্রশমিত করে একে অপরকে ভারসাম্য রাখতে পারে না। যখন জাড্য, ঘর্ষণ এবং মাধ্যাকর্ষণ এই বাধাগুলি অতিক্রম করে, তখন ক্রিয়া-বলের প্রভাবে বস্তুটি সচল হয়। 
  • ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বল দুটি একই বস্তু-সংস্থার অন্তর্গত হলে, সাম্য তৈরি হয় এবং বস্তুটি তখন স্থির থাকে।
  • দুটি বস্তুর সংস্পর্শ  ছাড়াও ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে।

উদাহরণ : 

  1. চুম্বকের চারপাশে একটি বল ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে চুম্বক তার আকর্ষণ/বিকর্ষণ ক্রিয়া প্রদর্শন করতে পারে। যদি তাদের সেই ক্ষেত্রে সমমেরুতে আনা হয়, এবং যদি তাদের গতি সীমাবদ্ধ থাকে তবে তারা একে অপরকে সমান এবং একই রেখা বরাবর বিপরীতমুখী বল হিসাবে বিকর্ষণ করবে। এদের একটি  ক্রিয়া হিসাবে পরিচিত, এবং অন্যটি প্রতিক্রিয়া হিসাবে।
  2. পৃথিবী সূর্যের চারদিকে উপবৃত্তাকার পথে ঘোরে। মহাকর্ষ বল হল পৃথিবীর উপর সূর্যের দ্বারা প্রয়োগ করা আকর্ষণ বল। একই রেখা বরাবর, পৃথিবী মহাকর্ষীয় বলের মাধ্যমে সূর্যকে বিপরীত দিকে আকর্ষণ করে। মহাকর্ষ বলের টানে তারা একে অপরকে ধরে রাখে।
  3. যখন একটি বল একটি প্রাচীরের বিরুদ্ধে নিক্ষেপ করা হয়, তখন সেটি ফিরে আসে। এই পরিস্থিতিতে, বলটি যখন প্রাচীরকে আঘাত করে, তখন সেই বলটি হল ক্রিয়া। তৃতীয় সূত্র অনুসারে, প্রাচীরটি বলটিকে একই পরিমাণ বিপরীত বল প্রদান করে বলটিকে ফেরত পাঠায়। এটি হল প্রতিক্রিয়া ।
  4.  টেবিলে রাখা বইয়ের ওজন টেবিলের উপর নিম্নমুখী বল প্রয়োগ করে। এটি  হল ক্রিয়া। তৃতীয় সূত্র অনুসারে, টেবিল ও বইয়ের উপর সমান ঊর্ধ্বমুখী বল প্রয়োগ করে। এটি হল প্রতিক্রিয়া ।
  5. অনুভূমিক সমতলে হাঁটার সময় মাটিতে তির্যকভাবে বল প্রয়োগ করা হয়। এটি একটি  ক্রিয়া। অনুভূমিক সমতলও পায়ের ওপর সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া বল প্রয়োগ করে। দুটি  উপাংশের মধ্যে প্রতিক্রিয়া বলের অনুভূমিক উপাংশের জন্য সম্মুখ গতি তৈরি হয়। OH = অনুভূমিক উপাংশ, যখন ON = উল্লম্ব উপাংশ বোঝায়, যা ওজনের বিপরীতে কাজ করে।
  1. ফুটবলে লাথি মারার সময় ফুটবলও একই পরিমাণে পায়ের উপর আঘাত করে তাই ফুটবল ছিটকে যায়।

বিভিন্ন ধরনের বল 

সাধারণত দুটি শ্রেণীতে বলকে ভাগ করা যায়-

  • স্পর্শজনিত বল, যেমন- ঘাত, টান, ধাক্কা, ঘর্ষণ ইত্যাদি। 
  • ক্ষেত্রজনিত বল, যেমন- মহাকর্ষ, বৈদ্যুতিক এবং চৌম্বকীয় আকর্ষণ/বিকর্ষণ ইত্যাদি।

ঘাত (Thrust) : যখন দুটি বস্তু তাদের স্পর্শতলের মাধ্যমে একে অপরের উপর বল প্রয়োগ করে তখন তাদের ঘাত বলা হয়। হাতে একটি কাঠের ব্লক ধরলে, ব্লকের ওজন বাহুতে লম্বভাবে একটি নিম্নমুখী বল প্রয়োগ করে। একই সময়ে, হাতটি ব্লকের উপর সমান ঊর্ধ্বমুখী বল প্রয়োগ করে। 

এই ধরনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ঘাত নামে পরিচিত। যেহেতু এটি দুটি বস্তুর সংঘর্ষের ফলে সৃষ্ট হয়, তাই সাধারণত একে contact force বলা হয় । যখন কোনো জিনিসকে ধাক্কা বা টান দেওয়া হয়, যখন কিছু বহন করা হয়, যখন বাতাস প্রবাহিত হয়, এমনকি যখন আমরা শুয়ে থাকি, বসে থাকি বা দাঁড়িয়ে থাকি, তখন contact force ব্যবহার করা হয় ।

টান : যখন একটি দড়িতে একটি ভার বেঁধে ঝোলানো হয়, তখন ভারের  টানে দড়িটি উল্লম্বভাবে থাকে। এই অবস্থায়, বস্তুটি তার নিজের ওজনের জন্য দড়িতে একটি নিম্নগামী টান প্রয়োগ করে। দড়ি একই সময়ে বস্তুর উপর সমান এবং ঊর্ধ্বমুখী বল প্রয়োগ করে। 

দড়ির টান বলতে বস্তুর উপর দড়ি দ্বারা প্রযুক্ত বল বোঝায়। এখানে বস্তুর ওজনকে একটি ক্রিয়া হিসাবে উল্লেখ করা হলে, দড়ির টানকে প্রতিক্রিয়া হিসাবে উল্লেখ করা হয়।

দড়িতে একটি দ্বিমুখী প্রতিক্রিয়া বল তৈরি হবে যদি দুজন ব্যক্তি দড়ির দুই প্রান্ত টেনে ধরে রাখে। যখন দড়ির সমস্ত বিন্দু সাম্যাবস্থায় থাকে, তখন সমান এবং বিরোধী শক্তি উভয় দিক থেকে তাদের উপর কাজ করে। এই বলকে বলা হয় দড়ির টান। দড়িতে 20 kgf টান কাজ করবে যদি দুজন ব্যক্তি 20 kgf টান দেয়।

ঘর্ষণ (Friction) : ধরা যাক, একটি বই একটি টেবিলের উপর রাখা হয়েছে এবং টেবিলের তল বরাবর সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বা সরানো হচ্ছে । উভয় ক্ষেত্রেই, টেবিলটি বইয়ের নড়াচড়ার প্রচেষ্টার প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করে বা তার গতির বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ করে। এটি ঘর্ষণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়।

ক্রিয়া হল, স্পর্শতলের উপর একটি বস্তু দ্বারা প্রয়োগ করা বল। স্পর্শতল বস্তুর ওপর যে বল প্রয়োগ করে, তা হল প্রতিক্রিয়া । ঘর্ষণ বল হল বস্তু এবং পৃষ্ঠের মধ্যে ক্রিয়াশীল পারস্পরিক বল। ঘর্ষণ শক্তি দুটি বস্তুর আপেক্ষিক বেগের  বিরুদ্ধে কাজ করে। তবে, এটি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সীমার অধীনে কাজ করে। যদি ধাক্কা বা টানতে ব্যবহৃত বল পৃষ্ঠের ঘর্ষণ বলের চেয়ে বেশি হয় তবে বস্তুটি সরবে।

আকর্ষণ ও বিকর্ষণ : আকর্ষণ তখন ঘটে যখন দুটি বিপরীত চার্জযুক্ত কণা বা চুম্বকের দুটি বিপরীত মেরু একে অপরকে আকর্ষণ করে। এই আকর্ষণ সমান এবং  বিপরীতমুখী উভয়ই। একইভাবে, একটি চুম্বকের দুটি সমমেরু বা সমধর্মী চার্জযুক্ত কণা পরস্পরকে সমান এবং বিপরীতমুখী বলে বিকর্ষণ করে। দুটি বস্তুর পারস্পরিক সংস্পর্শ ছাড়া, আকর্ষণ এবং বিকর্ষণ বল ক্রিয়াশীল হয় ।

রৈখিক ভরবেগ (Linear momentum)

একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি চলমান বস্তুর ভর এবং বেগের গুণফল হল সেই সময়ের বস্তুর ভরবেগ। অর্থাৎ, ভরবেগ (p)= বস্তুর ভর (m) × বেগ (V)

ভরবেগ একটি চলমান বস্তুর গতির পরিমাণ নির্দেশ করে। ভরবেগের এই পরিচয় দ্বারা রৈখিক ভরবেগ প্রকাশ পায়।

ভরবেগের মান ও অভিমুখ দুই-ই থাকায় এটি একটি ভেক্টর রাশি। 

ভর : স্কেলার রাশি  বেগ :  ভেক্টর রাশি। ভর ও বেগের গুণফল হল ভেক্টর রাশি। যে কোন সময়ে একটি বস্তুর বেগের অভিমুখ হল তার ভরবেগের দিক।

ভরবেগের  মাত্রা-সংকেত : ভরের মাত্রা × বেগের মাত্রা = [M] [LT-1] = [MLT-1]

ভরবেগের একক :
ভরবেগের SI একক : kgms-1 (কিলোগ্রাম-মিটার/সেকেন্ড); 

CGS একক : g cms-1 (গ্রাম-সেমি/সেকেন্ড)।

ভরবেগের পরিবর্তনের হার 

যদি একটি বস্তুর প্রাথমিক ভরবেগ = mu এবং 𝚫t সেকেন্ডের পর তার ভরবেগ mv হয়, তবে  

ভরবেগের পরিবর্তনের হার,  pt= mvt,

ভর স্থির থাকলে, m(vt ) = ma = F

ভরবেগের ভিত্তিতে দ্বিতীয় গতিসূত্রের বিবৃতি : একটি বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার তার উপর প্রয়োগ করা বলের সমানুপাতিক এবং ভরবেগের পরিবর্তনটি বলের দিকে ঘটে।

সূত্রানুসারে, F p2-p1t2-t2  বা F = kp2-p1t2-t1  (k = ধ্রুবক) = mv2-v1t2-t1

অর্থাৎ, যখন m ধ্রুবক, F = k.m. v2-v1t2-t1  বা F = kma, এবং যেহেতু k = 1 একক বলের জন্য, 

∴ F = ma

  1. F = m (𝚫v/𝚫t) = ma এটি ব্যবহার করা যায় যখন
  • বস্তুর ভর স্থির থাকে।
  • বস্তুর গতিবেগ<< আলোর গতিবেগ(c) বজায় থাকে ।
  1. কিন্তু পরিবর্তনশীল ভরের পরিস্থিতির ক্ষেত্রে, যেখানে চলমান বস্তুর ভর স্থির থাকে না, সেখানেও  চলমান বস্তুর বেগও পরিবর্তিত হয় অর্থাৎ ত্বরণ হয়। তখন দ্বিতীয় গতি সূত্র, F = ma, প্রয়োগ করা যাবে না। সেজন্য প্রয়োজন ‘ভরবেগ’। আর এর ভিত্তিতেই দ্বিতীয় গতিসূত্রের বক্তব্য দেওয়া হয়।

পরিবর্তনশীল ভরসংস্থা সম্পর্কিত উদাহরণ : 

  1. দহনের জন্য জ্বালানী পোড়ানো হলে, রকেটের ভর কমে যায় এবং উচ্চ গতিতে গ্যাস বেরিয়ে যায়। গতি সংরক্ষণ করার জন্য, রকেটের গতি বৃদ্ধি পায়। 
  2. ছিদ্রযুক্ত জলপূর্ণ বোতল থেকে জল বেরিয়ে যায় যখন এটি একটি ঢালু জায়গা থেকে পড়ে, ফলে এর ভর হ্রাস পায়। বোতলের ওজন, সেইসাথে  উপাংশের ওজন হ্রাস হয়। ফলস্বরূপ, বোতলের  বেগ এবং ভরবেগ দুটোই কমে যায়। 
  3. কয়লা যখন একটি চলমান ওয়াগনে ভর্তি করা হয়, তখন এর ভর বৃদ্ধি পায়। ফলস্বরূপ, পূর্বের গতি ধরে রাখার জন্য ইঞ্জিনটিকে দ্রুত চালাতে হয়। যদি ওয়াগনের পূর্বের বেগ (p) = mv হয়, তাহলে v হল বেগ বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় বল, F = 𝚫p/𝚫t = (𝚫m/𝚫t) . v । এখানে ভর  পরিবর্তনের হার হল 𝚫m/𝚫t ।

একটি চলমান অনুভূমিক conveyor belt- এর সিস্টেম 100 গ্রাম/সেকেন্ড হারে বালি ভর্তি করে। বেল্টের গতিবেগ 5 সেমি/সেকেন্ড। এই উদাহরণে, ভরবেগের পরিবর্তনের হারের পাশাপাশি বেল্টের উপর  ক্রিয়াশীল বল কত হবে ?

বালির অনুভূমিক গতিবেগ শূন্যের সমান, অর্থাৎ, অনুভূমিক ভরবেগ শূন্যের সমান। প্রতি সেকেন্ডে ভরবেগের পরিবর্তন = mv – 0 , বেল্টে পড়ার পর, ভরবেগের পরিবর্তনের হার = ভরের পরিবর্তনের হার × বেগ = 100g/s × 5cm/s = 500 dyne, অর্থাৎ, বেল্টের উপর ক্রিয়াশীল বল 500 dyne

রৈখিক ভরবেগের সংরক্ষণ

এক-মাত্রিক সংঘর্ষের সময় যদি কোনও বাহ্যিক বল দুটি বস্তুর উপর ক্রিয়া না করে, তবে ভরবেগের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় লক্ষ্য করা যায় ।

যদি, m1 ভরের একটি বস্তু একই সরলরেখা বরাবর u1 বেগে , এবং ভর m2 ভরের আরেকটি বস্তু একই সরলরেখা বরাবর uবেগে চলার সময় তাদের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে, তবে সংঘর্ষের  আগে তাদের মোট ভরবেগ = m1 u1 + m2u2 এবং সংঘর্ষের পর যদি তারা তাদের v1 এবং v2 বেগ বজায় রাখে, তাহলে সংঘর্ষের পর তাদের মোট ভরবেগ = m1v1 + m2v2 হবে। 

যদি দুটি বস্তুর উপর কোনো বাহ্যিক বল ক্রিয়া না করে শুধুমাত্র যদি পারস্পরিক ক্রিয়া ঘটে, তাহলে 

m1 u1+ m2 u2 = m1v1 + m2v2 ………………… (i)

অর্থাৎ, সংঘর্ষের আগে দুটি বস্তুর মোট ভরবেগ = সংঘর্ষের পর দুটি বস্তুর মোট ভরবেগ ।

অর্থাৎ, মোট রৈখিক ভরবেগ স্থির থাকে। 

রৈখিক ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র : বস্তু সমষ্টির ওপর বাহ্যিক বল প্রয়োগ করা না হলে, তার মোট রৈখিক ভরবেগ মানে ও দিকে স্থির থাকে।

m1 u1+ m2 u2 = m1v1 + m2v2 -এই সমীকরণটি এই সূত্রের গাণিতিক রূপ। বাহ্যিক বল ব্যতীত, তাদের পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বলের ফলে বস্তুর মোট রৈখিক ভরবেগের কোন পরিবর্তন হয় না; এইভাবে, সূত্রটি ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয় । নিউটনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সূত্র থেকে এই সূত্রটি পাওয়া যায়।

রৈখিক ভরবেগের সংরক্ষণের উদাহরণ : 

  1. যখন একটি বন্দুক থেকে গুলি চালানো হয়, তখন গুলিটি গতির সাথে এগিয়ে যায় এবং বন্দুকটি ধরে থাকা ব্যক্তিটি পিছনে ধাক্কা অনুভব করে। এটি গুলি চালানোর আগে এবং পরে  ভরবেগের সংরক্ষণ হওয়ার কারণে ঘটে।

যদি, একটি বন্দুকের ভর M এবং বুলেটের ভর হল m হয় এবং গুলি চালানোর আগে উভয়ই স্থির থাকে তবে তাদের মোট প্রাথমিক ভরবেগ হবে 0 

যদি গুলির প্রস্থান বেগ v হয় এবং বন্দুকটি V বেগে গতিশীল হয়, তাহলে গুলি চালানোর পর মোট ভরবেগ হবে mv + MV 

ভরবেগ সংরক্ষণের ধারণা অনুসারে গুলি চালানোর আগে এবং পরে মোট ভরবেগ সমান। ফলস্বরূপ, -0 = mv + MV, বা V = -(m/M) ×  V

এই পরিস্থিতিতে, বন্দুকের বেগের -ve মান বুলেটের বিপরীত দিকে বন্দুকের সরে যাওয়া নির্দেশ করে। 

  • চলমান রকেটের প্রকোষ্ঠ গুলি কেরোসিন, পেট্রল, তরল হাইড্রোজেন ইত্যাদি দিয়ে ভরা থাকে । দ্বিতীয় প্রকোষ্ঠে অক্সিজেন, ওজোন এবং হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের মতো  কিছু জারক পদার্থ তরল বা কঠিন অবস্থায় থাকে ।

অনুঘটকের উপস্থিতিতে, জ্বালানী এবং জারক পদার্থগুলিকে অন্য প্রকোষ্ঠে পাম্প করে দহন করা হয়। দহনের ফলে সৃষ্ট গ্যাসীয় পদার্থ রকেটের নীচের দিকে একটি ক্ষুদ্র নলের মাধ্যমে দ্রুত নিঃসৃত হয়। ভরবেগ সংরক্ষণ সূত্র অনুযায়ী, রকেটে বহিষ্কৃত গ্যাসের ভরবেগের সমান একটি বিপরীতমুখী ভরবেগ সঞ্চারিত হয় এবং রকেটটি এগিয়ে যায়। রকেটের ভিতরে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা অবস্থিত থাকায় রকেটের পক্ষে বায়ুশূন্য স্থানে চলাচল করা সম্ভব হয় ।

  1. দমকল কর্মীদের হোস পাইপের মাধ্যমে খুব জোরে জল ছুঁড়তে হয়। পাইপ থেকে দ্রুত  জল বের হতে শুরু করলে হোস-পাইপ পেছনের দিকে ধাক্কা দিতে থাকে। জল পাইপ থেকে বেরিয়ে আসার সাথে সাথে বিপরীত দিকে প্রতিক্রিয়া জানায়। ফলস্বরূপ, জল স্প্রে করার সময়, হোস পাইপ শক্তভাবে ধরে রাখতে হবে।

গাণিতিক উদাহরণ

  1. একটি 500-গ্রাম বস্তুর উপর 2 নিউটন বল প্রয়োগ করা হলে তার ত্বরণ কত?

সমাধান: ভর (m) = 500 g = 0.5 kg, প্রয়োগ বল (F) = 2 নিউটন, এবং ত্বরণ (a) =?

F = ma হল সূত্র।

∴ a = Fm = 2 নিউটন0.5 kg = 2 kg m/s20.5kg = 4 m/s2 (উত্তর)

  1. একটি স্থির বস্তুর ভর কত হবে যখন 100 নিউটন বল 10 সেকেন্ডের জন্য প্রয়োগ করা হয় এবং এর বেগ 40 m/s হয়?

সমাধান: প্রাথমিক বেগ (u) = 0, চূড়ান্ত বেগ (v) = 40 m/s, সময় t = 10 s, বল (F) = 100 নিউটন, ভর (m) =? v = u + at সমীকরণ অনুযায়ী,

ত্বরণ (a) =  v – u t (40 – 0)m/s 10s = 4m/s2    ,  

F = ma সমীকরণ অনুসারে,

ভর (m) = Fa = 100 নিউটন4m/s2 = 25 kg (উত্তর)

  1. সমত্বরণে চলমান বস্তুর প্রারম্ভিক বেগ 45km/h এবং ত্বরণ 20 cm/s2 হলে, 25 s পর বস্তুটির বেগ কত?

সমাধান : প্রারম্ভিক বেগ (u) = 45 X 1000m60X60s = 12.5 ms-1

সময় (t) = 25 s, এবং ত্বরণ (a) = 20 cms-2 = 0.2 ms-2

সূত্র : v = u + at,  চূড়ান্ত বেগ, v = 12.5ms-1 +  0.2 ms-2  X 25 s =17.5 ms-1(Ans)

  1. স্থির অবস্থা থেকে 5 m/s2 এ  সমত্বরণে চলার 8 সেকেন্ড পর একটি চলমান কণার বেগ কত?

সমাধান: প্রারম্ভিক বেগ (u) = 0, চূড়ান্ত বেগ (v) =?, ত্বরণ (a) = 5 ms-2 সময় (t) = 8s ।

সূত্র: v = u + at, চূড়ান্ত বেগ, v = 0 + 5ms-2 ×8s = 40 ms-1 (উত্তর)

  1. সমত্বরণে চলমান একটি  বস্তুর শুরুর বেগ এবং 15 মিনিটের পরে বেগ যথাক্রমে 10 m/s এবং 40 m/s; বস্তুর ত্বরণ কত?

সূত্র: v = u + at ,

ত্বরণ (a) = v-ut  =  (40-10)m/s15X60s = 0.033 ms-2 [Ans.]

  1. একটি ট্রেন কলকাতা থেকে মধুপুর পর্যন্ত গড়ে 45 কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা গতিতে  চলে। তারপর এটি 36 কিমি/ঘন্টা  দ্রুতিতে ফিরে আসে। ট্রেনের গড়দ্রুতি কত ছিল?

সমাধান: ট্রেনটিকে অবশ্যই কলকাতা → মধুপুর → কলকাতার মধ্যে এই দূরত্বটি ভ্রমণ করতে হয়। অর্থাৎ, কলকাতা এবং মধুপুরের মধ্যে দূরত্ব  x  km হলে, ট্রেনটিকে মোট 2x km যেতে হবে।

কলকাতা → মধুপুর যেতে x/45 ঘন্টা এবং ফিরে যেতে x/36 ঘন্টা লাগে।

যাতায়াতের মোট সময়কাল x45 + x36 ঘন্টা = 9x180 ঘন্টা =  x2 ঘন্টা

গড়  দ্রুতি =  অতিক্রান্ত পথমোট সময়  = 2x km(x/20)h = 2x X 20x kmh-1 = 40 kmh-1 [উত্তর]

  1. একটি 30 কিমি/ঘন্টা ট্রেনের ব্রেক  কষার ফলে 0.5 m/s2 মন্দন সৃষ্টি করেছে। ট্রেন থামতে কতক্ষণ লাগবে?

সমাধান: u = 30 km/h = 30 X 518 m/s = 8.33 m/s; চূড়ান্ত বেগ (v) = 0, ত্বরণ (a) = – মন্দন = – 0.5 m/s2

সূত্র: v = u + at 

এখানে, 0 = 8.33 ms-1 + (- 0.5 ms-2) t ,

t = (8.33  ms-1) / (0.5  ms-2) = 16.66 s [Ans.]

  1. স্থিরাবস্থা থেকে সমত্বরনে চলার 5 মিনিট পরে একটি ট্রেনের বেগ হল 90 km/h . ট্রেনের ত্বরণ ও অতিক্রান্ত দূরত্ব নির্ণয়  কর।

সমাধান : u = 0, v = 90  × (5/18) ms-1 = 25 ms-1 , t = 300 s; v = u + at অনুসারে a = v/t = (1/12) ms-2  

সূত্র: S = ut + (1/2) at2 ,অনুযায়ী,

 S = 1/2  × (1/12) ms-2  × 300 × 300 s2 = 3750 m = 3.75 কিমি [Ans.]

SOLVED QUESTIONS & ANSWERS of বল ও গতি BOL O GOTI

1 MARKS QUESTIONS of বল ও গতি BOL O GOTI

  1. m ও 4m ভরের দুটি বস্তুর ভরবেগ সমান হলে তাদের বেগের অনুপাত ______ । 

উত্তর : 4:1

  1. কোন্ বলের জন্য কোনো বস্তুকে ভূমির ওপর দিয়ে ঠেলে সরাতে অসুবিধা হয়?

উত্তর : ভূমি ও বস্তুর মধ্যে ঘর্ষণের জন্য কোনো বস্তুকে ভূমির ওপর দিয়ে ঠেলে সরাতে অসুবিধা হয়।

  1. সমত্বরণে গতিশীল কণার প্রাথমিক বেগ শূন্য হলে কণাটির বেগ-সময় লেখটির প্রকৃতি কীরূপ হবে? 

উত্তর : সমত্বরণে গতিশীল কণার বেগ-সময় লেখটি সময় অক্ষের সঙ্গে আনত মূলবিন্দুগামী সরলরেখা হবে।

  1. ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া কখনোই একই বস্তুর ওপর প্রযুক্ত হতে পারে না। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)

উত্তর : সত্য

  1. একটি কণা r ব্যাসার্ধের বৃত্ত বরাবর এক পাক ঘুরে আবার প্রথম বিন্দুতে ফিরে এল। কণার সরণ ও অতিক্রান্ত দূরত্ব কত?

উত্তর : কপার সরণ হল শূন্য এবং অতিক্রান্ত দূরত্ব = 2πr।

  1. গতিশীল কণার সরণ কখন শূন্য হয়? 

উত্তর : কোনো গতিশীল কণা যে বিন্দু থেকে যাত্রা শুরু করেছে, যদি সেই বিন্দুতে ফিরে আসে তাহলে কণার সরণ শূন্য হয়।

  1. সুইচ অফ করে দিলেও ______-এর কারণে বৈদ্যুতিক পাখা কিছুক্ষণ ঘুরতে থাকে। 

উত্তর : গতিজাড্য

  1. কোনো বস্তুর ভরবেগের CGS একক g⋅cm/s । (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)

উত্তর : সত্য

  1. নিউটনের ______গতিসূত্র থেকে বলের পরিমাণ জানা যায়। 

উত্তর : দ্বিতীয়

  1. ঋণাত্মক ত্বরণকে কী বলা হয়?

উত্তর : ঋণাত্মক ত্বরণকে মন্দন বলা হয়।

  1. বলের মাত্রীয় সংকেত লেখো। 

উত্তর : বলের মাত্রীয় সংকেত হল MLT−2

  1. একটি বস্তুর বেগ সময় লেখটি সময় অক্ষ বরাবর নির্দেশিত হলে, বস্তুটির গতি সম্পর্কে মন্তব্য করো। 

উত্তর : এক্ষেত্রে বস্তুটি স্থির।

  1. ______ রাশির সংযোজনের ক্ষেত্রে সামান্তরিক সূত্রটি প্রয়োগ করা হয়। 

উত্তর : ভেক্টর

  1. একটি স্পর্শবিহীন বলের উদাহরণ দাও।

উত্তর : দুটি চুম্বকের সমমেরুর মধ্যে বিকর্ষণ হল একটি স্পর্শবিহীন বল।

  1. এমন একটি উদাহরণ দাও যেখানে কোনো বস্তুর বেগ ও ত্বরণ পরস্পর বিপরীত অভিমুখী। 

উত্তর : ঊর্ধ্বমুখে নিক্ষিপ্ত একটি পাথরের বেগ ওপরের দিকে হলেও অভিকর্ষজ ত্বরণের অভিমুখ নীচের দিকে।

  1. কেনো বস্তুর ভরবেগ = ______ × ______ 

উত্তর : ভর, বেগ

  1. CGS পদ্ধতি ও SI-তে দ্রুতির একক কী? 

উত্তর : CGS পদ্ধতি ও SI-তে দ্রুতির একক যথাক্রমে cm/s ও m/s

  1. কোনো গতিশীল কণার অতিক্রান্ত দুরত্ব ও সরণের মানের অনুপাত 1-এর চেয়ে কম হতে পারে কি? 

উত্তর : না, কোনো গতিশীল কণার অতিক্রান্ত দূরত্ব ও সরণের মানের অনুপাত 1 বা 1-এর চেয়ে বেশি হয়।

  1. একটি বস্তুর বেগ-সময় লেখ ঋণাত্মক নতিবিশিষ্ট সরলরেখা হলে, বস্তুটির গতির প্রকৃতি কীরূপ? 

উত্তর : বস্তুটি সমমন্দনে গতিশীল।

  1. অমসৃণ অনুভূমিক পথে সমবেগে গতিশীল একটি গাড়ির ইঞ্জিন দ্বারা প্রযুক্ত বল রাস্তা ও চাকার ঘর্ষণ বল অপেক্ষা বেশি। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)

উত্তর : মিথ্যা

multiple choice questions – 1 marks of বল ও গতি BOL O GOTI

  1. একটি লোহার বল গড়িয়ে গিয়ে অপর একটি বলকে ধাক্কা মারল। এটি যে বলের উদাহরণ তা হল – 
  2. ঘর্ষণ বল 
  3. সংঘর্ষজনিত বল 
  4. লম্ব বল 
  5. টান বল

উত্তর : B

  1. কোনো বস্তুর v-t লেখার নতি নির্দেশ করে বস্তুটির – 
  2. গতি 
  3. ত্বরণ 
  4. দূরত্ব 
  5. সরণ

উত্তর : B

  1. 5 kg ভরবিশিষ্ট একটি বন্দুক থেকে 200 m/s বেগে 25 g ভরের বুলেট ছোড়া হলে বন্দুকের প্রতিক্ষেপ বেগ হল – 
  2. 0.8 m/s 
  3. 1 m/s 
  4. 1.2 m/s 
  5. 2 m/s

উত্তর : B

  1. একটি বোট নদীতে প্রথমে পূর্বদিকে 12m এবং তারপর উলটোদিকে 5m গেল বোটটির সরণ কত? 
  2. 13 m 
  3. 17m 
  4. 7m
  5. 8 m

উত্তর : C

  1. CGSপদ্ধতিতে ত্বরণের একক হল – 
  2. m⋅s−1 
  3. cm⋅s−2 
  4. m⋅s−2 
  5. cm⋅s−1

উত্তর : B

  1. 200 g ভরের কোনো বস্তুর ওপর কত বল প্রযুক্ত হলে 1.5m/s2 ত্বরণ উৎপন্ন হবে? 
  2. 300 N 
  3. 0.5 N 
  4. 0.4 N 
  5. 0.3 N

উত্তর : D

  1. একটি বস্তুকণা বৃত্তাকার পথে পরিভ্রমণ করছে পথের ব্যাসার্ধ R হলে, একবার আবর্তনে কণার সরণ হবে – 
  2. πR 
  3. 2πR 
  4. 2R

উত্তর : C

  1. একজন বালক 20 m উচ্চতাবিশিষ্ট একটি মিনারের চূড়া থেকে একটি পাথরকে নীচের দিকে ফেলল যে বেগে পাথরটি ভূমিতে আঘাত করবে তা হল – 
  2. 10m⋅s−1 
  3. 20m⋅s−1 
  4. 40m⋅s−1 
  5. 5m⋅s−1

উত্তর : B

  1. তৃতীয় গতিসূত্রানুসারে ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যবর্তী কোণের মাপ – 
  2. 0∘ 
  3. 90∘ 
  4. 180∘ 
  5. 360∘

উত্তর : C

  1. একটি গাড়ি যাত্রাপথের অর্ধেক দূরত্ব 40 km/h দ্রুতিতে ও বাকিঅর্ধেক দূরত্ব 60 km/h দ্রুতিতে গেল গাড়ির গড় দ্রুতি হল – 
  2. 50 km/h 
  3. 46 km/h 
  4. 48 km/h 
  5. 52 km/h

উত্তর : C

  1. একটি বস্তু ওপর থেকে নীচে পড়ছে। এক্ষেত্রে স্থির রাশি হল – 
  2. সরণ 
  3. বেগ 
  4. ত্বরণ 
  5. ভরবেগ

উত্তর : C

  1. মিশ্র গতির উদাহরণ হল – 
  2. ভূমির ওপর দিয়ে বলের গড়িয়ে যাওয়া 
  3. এক স্থানে বলের ঘূর্ণন 
  4. বলের পিছল গতি 
  5. ওপর থেকে খাড়াভাবে বলের নীচে পড়া

উত্তর : A

  1. নিউটনের প্রথম গতিসূত্রকে অন্যভাবে কোটি বলা যায়? 
  2. গতিবেগের সূত্র 
  3. জাড্যের সূত্র 
  4. ভরের সূত্র 
  5. স্বরণের সূত্র

উত্তর : B

  1. ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া – 
  2. সমান 
  3. বিপরীতমুখী 
  4. A ও B উভয়ই 
  5. কোনোটিই নয়

উত্তর : C

  1. ভুল উত্তরটি নির্বাচন করো – 
  2. কোনো বস্তুর বেগ আছে ত্বরণ নেই 
  3. কোনো বস্তুর বেগ শূন্য, ত্বরণ আছে 
  4. ঘূর্ণন গতিতে ঘূর্ণন অক্ষ অপরিবর্তিত থাকে 
  5. কোনো বস্তুর গড় বেগ শূন্য হলে তার গড় দ্রুতি শূন্য হবেই

উত্তর : D

  1. কোন বস্তুর জাড্য সবচেয়ে কম? 
  2. টেবিল 
  3. স্কুলব্যাগ 
  4. বই 
  5. পেনসিল

উত্তর : D

  1. বলের অধীনে গতিশীল একটি বস্তুর ওপর থেকে কোনো মুহূর্তে বল সরিয়ে নিলে বস্তুটি – 
  2. ত্বরণসহ চলতে থাকবে 
  3. সমবেগে চলতে থাকবে 
  4. থেমে যাবে 
  5. কোনোটিই নয়

উত্তর : B

  1. রকেটের গতি যে সংরক্ষণ নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত তা হল – 
  2. ভর 
  3. গতিশক্তি 
  4. রৈখিক ভরবেগ 
  5. কৌণিক ভরবেগ

উত্তর : C

  1. কোনো বস্তুর সরলরৈখিক চলন গতির ক্ষেত্রে তার মধ্যখ কণাগুলির গতির অভিমুখ – 
  2. সর্বদাই অপরিবর্তিত থাকে 
  3. সর্বদাই পরিবর্তিত হয় 
  4. অপরিবর্তিত থাকতে পারে আবার নাও পারে 
  5. প্রথমে পরিবর্তিত হয়, তারপর অপরিবর্তিত থাকে

উত্তর : A

  1. একটি গাড়ি সমবেগে চলছে তাতে ক্রিয়াশীল লব্ধি বল (F)-এর মান হবে – 
  2. F>0 
  3. F⩾0 

C.F⩽0 

D.F=0

উত্তর : D

  1. একটি বল খাড়া ওপরে ছুড়ে দেওয়া হল বলটি কী ধরনের গতি নিয়ে চলবে? 
  2. মিশ্র গতি 
  3. বৃত্তীয় 
  4. সরলরৈখিক 
  5. সরলরৈখিক দোলগতি

উত্তর : C

  1. ঘূর্ণন গতিতে অপরিবর্তিত থাকে – 
  2. বেগ 
  3. ঘূর্ণাক্ষ থেকে বস্তুর বিভিন্ন কণার দূরত্ব 
  4. রৈখিক ভরবেগ 
  5. কোনোটিই নয়

উত্তর : B

  1. স্থিতিজাড্যের একটি উদাহরণ হল – 
  2. কম্বলে লাঠি দিয়ে আঘাত করে ধুলো ঝাড়া 
  3. হাতুড়ি দিয়ে পেরেক ঠোকা 
  4. বন্দুক থেকে গুলি ছুড়লে বন্দুকের পিছু হটা 
  5. সুইচ বন্ধের পরেও কিছুক্ষণ পাখা ঘোরা

উত্তর : A

short questions – 2-3 marks of বল ও গতি BOL O GOTI

  1. চলন ও ঘূর্ণন গতির মধ্যে প্রধান দুটি পার্থক্য লেখ।

উত্তর :

  • চলন গতির ক্ষেত্রে বস্তুর মধ্যে অবস্থিত যে কোন দুটি বিন্দুর সংযোজক সরলরেখা সর্বদা পূর্বের যেকোন অবস্থানে ওই দুটি বিন্দুর সংযোজক সরলরেখার সঙ্গে সমান্তরাল থাকে, আর ঘূর্ণন গতির ক্ষেত্রে বস্তুর মধ্যে অবস্থিত যে কোন দুটি বিন্দুর সংযোজক সরলরেখা পূর্বের যে কোন অবস্থানে ওই দুটি বিন্দুর সংযোজক সরল রেখার সঙ্গে সমান্তরাল থাকে না। 
  • চলন গতিতে বস্তুর প্রতিটি কণার বেগ এর মান নির্দিষ্ট, কিন্তু ঘূর্ণন গতিতে বস্তুর গঠনগত কণাগুলি ঘূর্নাক্ষ থেকে বিভিন্ন দূরত্বে থাকে। ফলে কণাগুলি প্রতিটির বেগের মান নির্দিষ্ট হয় না।

2. সমদ্রুতিসম্পন্ন কোন বস্তু সমবেগসম্পন্ন নাও হতে পারে। – ব্যাখ্যা কর?

উত্তর : কোন বস্তু বক্রপথে চললেও যদি বস্তুটি সবসময় সমান সময়ের ব্যবধানে সমান দূরত্ব অতিক্রম করে তাহলে বস্তুটির দ্রুতিকে সমদ্রুতি বলা হয়। কিন্তু বক্রপথে চলার জন্য সব সময় বস্তুটির দিকের পরিবর্তন হয়। তাই বস্তুটিকে সমবেগ সম্পন্ন বলা যায় না। কারণ বেগের একটি নির্দিষ্ট দিক থাকে। কোন মটরগাড়ি যদি আঁকাবাঁকা পথেও প্রতি ঘন্টায় 60 কিমি বেগে পথ চলে তাহলে গাড়িটির গতি সমদ্রুতিসম্পন্ন হলেও গাড়িটি সমবেগসম্পন্ন নয়। তাই সমদ্রুতিসম্পন্ন কোন বস্তু সমবেগসম্পন্ন নাও হতে পারে।

3. দ্রুতি ও বেগের মধ্যে প্রধান দুটি পার্থক্য লেখ।

উত্তর :

  • সচল বস্তু একক সময়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে ঐ বস্তুর দ্রুতি বলে, আর সচল বস্তুর একক সময়ের সরণকে বস্তুটির বেগ বলে।
  • সচল বস্তুর গড় দ্রুতি শূন্য হতে পারে না, কিন্তু সচল বস্তুর গড় বেগ শূন্য হতে পারে।

4. ত্বরণ ও মন্দন এর প্রধান দুটি পার্থক্য লেখ।

উত্তর :  

  • সময়ের সাপেক্ষে বস্তুর বেগ বৃদ্ধির হারকে ত্বরণ বলে, আর সময়ের সাথে বস্তুর বেগ হ্রাসের হারকে মন্দন বলে।
  • ত্বরণ থাকলে বস্তুর বেগ বাড়ে, কিন্তু মন্দন থাকলে বস্তুর বেগ কমে।

5. নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র থেকে প্রথম গতি সূত্রটি ব্যাখ্যা কর।

উত্তর :  m ভোরের কোন বস্তুর ওপর F বল প্রয়োগ করলে যদি a ত্বরণ সৃষ্টি হয় তবে নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র অনুসারে, F = ma। এখন কোন বস্তুর ওপর বাইরে থেকে কোন বল প্রয়োগ করা না হলে অর্থাৎ F = 0 হলে a = 0 হবে ফলে বস্তুটি ত্বরণহীন হবে। 

বস্তুটি ত্বরণহীন হতে পারে যদি স্থির থাকে বা সমবেগে চলতে থাকে।

সুতরাং কোন বস্তুর ওপর বাইরে থেকে বল প্রয়োগ না হলে স্থির বস্তু স্থিরই থাকে বা গতিশীল বস্তু সমবেগে চলতে থাকে । এটি নিউটনের প্রথম গতিসূত্র।

6. বন্দুক থেকে গুলি ছোড়ার সময় বন্দুকের পিছনে হঠার কারণ কি? 

উত্তর :  বন্দুক থেকে গুলি ছোড়ার সময় বন্দুক বা কামানের পিছু হঠা হলো রৈখিক ভরবেগ সংরক্ষণ সূত্রের প্রয়োগ এর অতিপরিচিত উদাহরণ। বন্দুক থেকে গুলি ছোড়ার সময় বিস্ফোরণ সৃষ্টি হয় যা একটি ঘাত বলের সৃষ্টি করে এই ঘাত বলের প্রভাবে বন্দুক পিছনের দিকে হাটে।

error: Content is protected !!
Scroll to Top

আজকেই কেনো পরীক্ষার শর্ট নোটস

এখন সহজে পরীক্ষার প্রস্তুতি নাও – আজকেই ডাউনলোড করো পিডিএফ বা বই অর্ডার করো আমাজন বা ফ্লিপকার্ট থেকে