আপনি এখানে শিখবেন এই অধ্যায়ে এবং বিষয়ের ফাউন্ডেশন অংশটা, এই বিষয়টিকে সহজ-সরলভাবে পড়িয়েছেন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ভিডিও লেকচার এর মাধ্যমে এবং এই পুরো অধ্যায়কে চার ভাগে খন্ডিত করে আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে
- প্রথম খন্ডে আপনি শিখবেন ফাউন্ডেশন অংশটা যেখানে অধ্যায়ের ব্যাপারে আপনাকে বোঝানো হয়েছে তার মানে definitions,basics গুলো সহজভাবে. এবং এটাকে আপনি বুঝতে পারবেন যেটা আপনাকে পরীক্ষার জন্য ক্রীপের করতে সাহায্য করবে
- দ্বিতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন MCQ মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন যেটা সাধারণত এক Marks’er আসে পরীক্ষায়
- তৃতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন শর্ট অ্যানসার এবং কোয়েশ্চেন, যেটা আপনার পরীক্ষার সাজেশন মধ্যে পড়ে এবং এটা 3-4 marks’er প্রশ্ন আসে আপনার পরীক্ষা
- চতুর্থ মডিউল আপনি শিখবেন লং আনসার এবং questions যেটা সাধারণত 5-6 marks er হয়
আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন যাতে কি আপনাকে আমরা সাহায্য করতে পারি
বিষয়সংক্ষেপ
গল্পের প্রধান চরিত্র চন্দ্রনাথ, গল্পকথক নরেশ ওরফে নরুর সহপাঠী ছিল । স্কুলেজীবন দীর্ঘ বছর আগেই শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও একদিন সার্কুলার রোডের সমাধিক্ষেত্র থেকে বেরিয়ে আসার সময় হঠাৎ চন্দ্রনাথের কথা কথকের মনে ভেসে ওঠে। ভীমকায় আকৃতি ন্যায় কালপুরুষ নক্ষত্রের মতো সে যেন জীবনের পথে হেটে চলেছে এক দৃপ্তভঙ্গিতে । ছোট গ্রামে কাটানো তাদের জীবনের অতীত অধ্যায় কথকের স্মৃতির আয়নায় প্রতিফলিত হয়। কথকের মনে, কিশোর চন্দ্রনাথের দীর্ঘাকৃতি সুস্থ-সবল দেহ এবং নির্ভীক দৃষ্টির ছবি ফুঁটে ওঠে। চন্দ্রনাথ উত্তেজিত হলে তার মধ্যকপালের শিরা ফুলে গিয়ে ত্রিশূল চিহ্নের আকৃতি ধারণ করতো। চন্দ্রনাথ কখনো সেকেন্ড হয়নি আর তার দ্বিতীয় হওয়ার ব্যাপারটিকে মেনে নিতে না পারায়, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের চিঠি দিয়ে সে স্কুলকে আঘাত দেয়। চন্দ্রনাথ ধারণা করে যে, হীরুর কাকা স্কুলের সেক্রেটারি হওয়ার কারণেই হিরু প্রথম স্থান অধিকার করেছে। তাই, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলাফল নিজের বাড়িতে বসেই তৈরি করে এবং যথাযথভাবে স্কুলের ফলাফলও প্রস্তুত করে। চন্দ্রনাথের দাদা তাকে পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের চিঠি প্রত্যাহার করতে এবং প্রধান শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চাওয়ার অনুমতি দেন। কিন্তু চন্দ্রনাথ আপত্তি করলে তাদের সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটে । কিন্তু এরপরও চন্দ্রনাথের কোনোরকম ভাবান্তর ঘটেনি বরং বিচ্ছেদ হওয়াটাকে সে মেনে নিয়েছে।
এমনকি সে অপমানিত বোধ করে হিরুর কাকার স্পেশাল প্রাইজের প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করে । স্কুলের সাথে সমস্ত সম্পর্কও সে মিটিয়ে দেয়। সে প্রধান শিক্ষকের কাছে মন্তব্য করে আসে যে, গুরুদক্ষিণার যুগ আর নেই। এরপর পরীক্ষার ফল বেরোলে, দেখা যায় চন্দ্রনাথের হিসাব মতোই সে পাঁচশো পঁচিশের কম পেয়েছে, দশটি ছেলে ফেল করেছে এবং কথক তৃতীয় বিভাগে পাস করেছে। শুধুমাত্র অপ্রত্যাশিত ভাবে চন্দ্রনাথকে পেছনে ফেলে রেখে হীরু স্কলারশিপ পায়। হীরুর বাড়িতে প্রীতিভোজ উপলক্ষ্যে তাদের আমবাগান, বাহারি লণ্ঠন ও রঙিন কাগজের মালা দিয়ে সাজানো হয়। অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তবে চন্দ্রনাথ আমন্ত্রণ পাওয়া সত্ত্বেও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি ।
চন্দ্রনাথ নিরুদ্দেশ হওয়ার আগে, হীরুকে চিঠিতে জানায় যে, স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য
উৎসব না করলেই পারতো কারণ স্কলারশিপ পাওয়া কোনো বড়ো বিষয় নয় । চিঠিটি হিরু একটি স্মারক হিসাবে নিজের কাছে রেখে দেয় । এরপর চন্দ্রনাথ নিরুদ্দেশে চলে যায়।
এখানে কথক চন্দ্রনাথকে নিয়ে কল্পনা করেন যে, সে পথ-প্রান্তরকে পেছনে রেখে লাঠির প্রান্তে পোঁটলা বেঁধে একাই জনহীন পথে এগিয়ে চলেছে। তার পাশে নক্ষত্র কালপুরুষ এবং উপরে আকাশে ছায়াপথ এগিয়ে চলেছে।
নামকরণের তাৎপর্য
গল্পের নামকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গল্পকার অত্যন্ত নিপুনতার সাথে গল্পের নামকরণ করে থাকেন। সেই নামকরণ কখনো চরিত্রকেন্দ্রিক বা ঘটনাকেন্দ্রিক বা রূপক ধর্মী হয় এবং নামকরণের মধ্যে থেকেই আমরা সেই গল্পটির মূল আভাস খুঁজে পায়। ‘চন্দ্রনাথ’ গল্পটির নামকরণ থেকেই বোঝা যায় যে, লেখক গল্পটির চরিত্রকেন্দ্রিক নামকরণ করেছেন। গল্পটিতে তিনটি সমবয়সী চরিত্রের (হীরু, চন্দ্রনাথ এবং কথক) উল্লেখ করা হয়েছে তবে গল্পটিতে চন্দ্রনাথ মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। চন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠত্বের ঔদ্ধত্য, উচ্চাকাঙ্ক্ষা গল্পের কাহিনীকে নিয়ন্ত্রন করেছে।
জীবনে প্রথমবার স্কুলের পরীক্ষার দ্বিতীয় হবার ব্যাপারটিকে সে মেনে নিতে না পেরে দ্বিতীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে স্কুলকে চিঠি দেওয়া, চিঠিটি প্রত্যাহার করার এবং ক্ষমা চাওয়ার জন্য তার দাদার আদেশ অমান্য করা এবং দাদার সাথে বিচ্ছেদ হওয়া-প্রতিটি কাহিনীর কেন্দ্রে রয়েছে । এমনকি হীরুর স্কলারশিপ পাওয়া এবং তার জন্য উৎসবের আয়োজন, এর প্রেক্ষাপটেও থেকেছে হীরুর কাছে চন্দ্রনাথের পরাজয় । আর তাই নিমন্ত্রণ পাওয়া সত্ত্বেও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি । বরং হীরুকে চিঠিতে জানায় যে, স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য
উৎসব না করলেই পারতো কারণ স্কলারশিপ পাওয়া কোনো বড়ো বিষয় নয় ।
চন্দ্রনাথ যেভাবে নিজেকে গর্ব, মর্যাদা এবং উজ্জ্বলতার সাথে গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে স্থান দিয়েছে, তার প্রেক্ষিতে গল্পের নাম “চন্দ্রনাথ” উপযুক্ত এবং সার্থক হয়েছে ।
SOLVED QUESTIONS & ANSWERS of চন্দ্রনাথ- (Chandranath)
1 MARKS QUESTIONS of চন্দ্রনাথ- (Chandranath)
- কোথা থেকে কী ভাবতে ভাবতে কথক বাড়ি ফিরেছিলেন?
উত্তর : সারকুলার রোডের সমাধিক্ষের থেকে বের হয়ে চন্দ্রনাথের কথা ভাবতে ভাবতে কথক বাড়ি ফিরেছিলেন।
- কথকের জীবনে চন্দ্রনাথের স্মৃতি কীরূপ ছিল?
উত্তর : কথকের জীবনে চন্দ্রনাথ গভীর রাত্রির আকাশে বিচরণকারী কালপুরুষ নক্ষত্রের মতো ভাষর ও প্রদীপ্ত হয়ে ছিল।
- চন্দ্রনাথের সঙ্গে কালপুরুষ নক্ষত্রের কী সাদৃশ্য লেখক খুঁজে পেয়েছিলেন?
উত্তর : চন্দ্রনাথের আকৃতির সঙ্গে লেখক কালপুরুষ নক্ষত্রের খড়াধারী বিশালকায় আকৃতির সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছিলেন।
- “… বলিতে পারি না…” – কার কী বলতে না পারার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : গল্পের কথক এবং তাঁর সহপাঠী চন্দ্রনাথ, হীরু কীভাবে একই সময়ে ক্ষুদ্র এক গ্রামের মধ্যে এসে পড়েছিলেন তা কথক বলতে পারবেন না।
5 “…আমার দিকে চিন্তাকুল নেয়ে চাহিয়া বসিয়া আছে। কে কার দিকে তাকিয়ে বসে আছে?
উত্তর : গল্পকথক দেখেছিলেন যে সামনের দেয়ালে বড়ো আয়নাটির মধ্যে তাঁরই প্রতিবিম্ব তাঁর দিকে তাকিয়ে বসে আছে।
- চন্দ্রনাথের কপালে ত্রিশূল চিহ্ন কখন দেখা যায়?
উত্তর : চন্দ্রনাথ সামান্য উত্তেজিত হলেই রক্তের চাপ বেড়ে গিয়ে প্রবল হয়ে কপালের শিরা ফুলে উঠে ত্রিশূল চিহ্ন দেখা যায়।
- হেডমাস্টারমহাশয় কোথায় বসে থাকতেন?
উত্তর : স্কুলের বোর্ডিং-এর ফটকের সামনে চেয়ার-বেঞ্চের আসন পেতে হেডমাস্টারমহাশয় বসে থাকতেন।
৪. “চিন্তাকুল বিমর্ষ নেত্রে আমাকে বলিলেন….” – কী বলার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : চন্দ্রনাথ কী বলে কথক নরেশকে তা জেনে নিতে বলেছেন চিন্তান্বিত হেডমাস্টারমহাশয়।
- চন্দ্রনাথ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিল কেন?
উত্তর : চন্দ্রনাথ স্কুলের পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়ে দ্বিতীয় পুরস্কার গ্রহণ করবে না বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছিল।
- দ্বিতীয় হওয়ার জন্য চন্দ্রনাথ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিল। কেন?
উত্তর : চন্দ্রনাথ দ্বিতীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিল কারণ, এর আগে স্কুলের পরীক্ষায় সে কখনও দ্বিতীয় হয়নি।
11 চন্দ্রনাথ কোন্ ঘটনা প্রসঙ্গে ‘বিনিথ মাই ডিগ্নিটি” কথাটি বলেছে?
উত্তর : চন্দ্রনাথ স্কুলের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সেকেন্ড প্রাইজ অর্থাৎ দ্বিতীয় পুরস্কার নেওয়াকে ‘বিনিথ মাই ডিগ্নিটি’ বলেছে। .
- চন্দ্রনাথের দাদা কেমন ধরনের মানুষ ছিলেন?
উত্তর : চন্দ্রনাথের দাদা নিশানাথবাবু ছিলেন নির্বিরোধী শাস্তপ্রকৃতির মানুষ।
- চন্দ্রনাথ পরীক্ষার সময় হীরুকে কীভাবে সাহায্য করেছিল?
উত্তর : চন্দ্রনাথ পরীক্ষার সময় হীরুকে তিনটে অঙ্ক তার খাতা থেকে টুকতে দিয়ে সাহায্য করেছিল।
- চন্দ্রনাথের দাদা চন্দ্রনাথকে কী নির্দেশ দিয়েছিলেন?
উত্তর : চন্দ্রনাথের দাদা তাকে হেডমাস্টারমশাইয়ের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের চিঠি ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
- “…তোমার বউদি বলত…..” – বউদি কী বলতেন?
উত্তর : চন্দ্রনাথের বউদি তার দাদা নিশানাথবাবুকে বলতেন যে চন্দ্রনাথ অত্যন্ত স্বাধীনচেতা হয়ে উঠেছে।
- চন্দ্রনাথের দাদাকে নতশিরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কথক কী ভেবেছিলেন?
উত্তর : চন্দ্রনাথের দাদাকে নতশিরে দাঁড়াতে দেখে কথক ভেবেছিলেন যে চন্দ্রনাথের ব্যবহারে ব্যথিত ভদ্রলোক আত্মসংবরণের প্রবল চেষ্টা করছেন ।
- “বোর্ডিং-এ আসিয়া মাস্টারমহাশয়কে সংবাদটা দিতে গিয়া দেখিলাম …”— কী দেখার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : কথক বোর্ডিং-এ ফিরে এসে মাস্টারমহাশয়কে চিন্তিতভাবে তখনও ফটকের সামনে বসে থাকতে দেখেছিলেন।
- কথক মাস্টারমহাশয়কে চন্দ্রনাথের কাছে যেতে নিষেধ করেছিলেন কেন?
উত্তর : চন্দ্রনাথ যদি মাস্টারমশাইয়ের কথা না শোনে, তাই কথক মাস্টারমশাইকে তার কাছে যেতে নিষেধ করেছিলেন।
- “…এ ভালোই হলো ।”- কীসের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে দাদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ায় চন্দ্রনাথ সম্পত্তি ভাগ হয়ে যাওয়ার কথা বলেছে।
- “বোধ হয় সেদিন সে সময়ে ভাবিয়াছিলাম… কী ভেবেছিলেন?
উত্তর : চন্দ্রনাথ তার দাদার সঙ্গে পৃথক হওয়াকে ভালো হয়েছে বলায় কথক ভেবেছিলেন তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখবেন না।
- হীর চন্দ্রনাথের কাছে কী প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল?
উত্তর : হীরু চন্দ্রনাথের কাছে তার কাকা তথা স্কুলের সম্পাদকের চন্দ্রনাথকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল।
- “কিন্তু একটি শুধু মেলে নাই….” – কী না মেলার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : চন্দ্রনাথ হীরুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় পেছনে ফেলে এগিয়ে যাবে—চন্দ্রনাথের এই ভবিষ্যদ্বাণী না মেলার কথা বলা হয়েছে।
23.” .. বাড়ির পাশের আমবাগানটার সে শোভা আজও আমার মনে আছে !”—এই শোভা কীভাবে সৃষ্টি হয়েছিল?
উত্তর : চিনা লণ্ঠন আর রঙিন কাগজের মালার বিন্যাসে হীরুর বাড়ির পাশের আমবাগানের শোভা তৈরি হয়েছিল।
- চন্দ্রনাথ তার চিঠিতে হীরুকে কী সম্বোধন করেছিল?
উত্তর : চন্দ্রনাথ তার চিঠিতে হাঁরুকে প্রথমে ‘প্রিয়বরেষু’ লিখলেও পরে সেটি কেটে ‘প্রীতিভাজনেষু’ লিখেছিল।
- কালপুরুষ নক্ষত্র কোথায় কার সঙ্গে চলেছে?
উত্তর : গল্পকথকের কল্পনায় রাতের জনহীন পথে কিশোর চন্দ্রনাথের সঙ্গে সঙ্গে কালপুরুষ নক্ষত্র চলেছে।
multiple choice questions – 1 marks of চন্দ্রনাথ- (Chandranath)
1. চন্দ্রনাথের কথা ভাবতে ভাবতে গল্পকথক যেখান থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন-
A) চক্রতীর্থ রোড থেকে B) আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোড থেকে
C) সারকুলার রোডের সমাধিক্ষেত্র থেকে D) গোবরা কবরস্থান থেকে
উত্তর : C) সারকুলার রোডের সমাধিক্ষেত্র থেকে
2. চন্দ্রনাথের স্মৃতি লেখকের মনের মধ্যে রয়েছে
A) শুকতারার মতো B) কালপুরুষ নক্ষত্রের মতো
C) ধ্রুবতারার মতো D) কোনোটিই নয়।
উত্তর : B) কালপুরুষ নক্ষত্রের মতো
3. নরেশের জীবন ইতিহাসের পৃষ্ঠায় চন্দ্রনাথ দীপ্তিতে পরিধিতে, প্রদীপ্ত ও প্রধান হয়ে আছে—
A) কালপুরুষ নক্ষত্রের মতো B) সূর্যের মতো
C) শুকতারার মতো D) পূর্ণচন্দ্রের মতো
উত্তর : A) কালপুরুষ নক্ষত্রের মতো
4. “কালপুরুষ নক্ষত্রের সঙ্গে চন্দ্রনাথের তুলনা করিয়া আমার আনন্দ হয়।” —কালপুরুষ নক্ষত্রের সঙ্গে চন্দ্রনাথের তুলনা করে বক্তার আনন্দ হওয়ার কারণ—
A) তিনি জানেন কালপুরুষ চন্দ্রনাথের প্রিয় নক্ষ
B) কালপুরুষের খাধারী ভীমকায় আকৃতির সঙ্গে চন্দ্রনাথের সাদৃশ্য রয়েছে বলে তিনি মনে করেন
C) মাস্টারমশাই সেই তুলনাটির প্রশংসা করেছেন
D) চন্দ্রনাথ চেয়েছিল যে তার তুলনা যেন এই নক্ষত্রটির সঙ্গেই করা হয়
উত্তর : B) কালপুরুষের খাধারী ভীমকায় আকৃতির সঙ্গে চন্দ্রনাথের সাদৃশ্য রয়েছে বলে তিনি মনে করেন
5. “এমনই দৃপ্ত ভঙ্গিতে সেও আপনার জীবনের কক্ষপথে চলিয়াছে… – আপনার জীবনের কক্ষপথে চন্দ্রনাথের এমন দৃপ্ত ভঙ্গিতে চলার কারণ
A) আদর্শের সন্ধান B) সংসারে দাদার সঙ্গে পৃথক হয়ে পড়া
C) স্কুলে মাস্টারমশাইদের সঙ্গে তার বিরোধিতা D) বন্ধুদের সঙ্গে মতবিরোধ
উত্তর : A) আদর্শের সন্ধান
6. “…তবু সে চলিয়াছে।”— উদ্ধৃতাংশে যার চলার কথা বলা হয়েছে, সে হল-
A কালপুরুষ নক্ষত্ৰ B) মাস্টারমহাশয় C) নিশানাথবাবু D) চন্দ্রনাথ
উত্তর : D) চন্দ্রনাথ
7. “সঙ্গে সঙ্গে আরও একজনকে মনে পড়িতেছে…” এই ‘আরও একজন’ হল
A) চন্দ্রনাথ B) হীরু C) হীরুর কাকা D) হেডমাস্টারমশাই
উত্তর : B) হীরু
8. চন্দ্রনাথের দাদার নাম ছিল
A) নিশানাথবাবু B) নিশিনাথবাবু C) নিশীথনাথবাবু D) নিশিপদ্মবাবু।
উত্তর : A) নিশানাথবাবু
9. চন্দ্রনাথ, হীরু এবং গল্পকথক ছিলেন—
A) সহযাত্রী B) সহপাঠী C) প্রতিবেশী D) সহ-খেলোয়াড়
উত্তর : B) সহপাঠী
10. “কেমন করিয়া যে এই তিনজন একই সময়ে ক্ষুদ্র একটি গ্রামের মধ্যে আসিয়া পড়িয়াছিলাম বলিতে পারি না — এই তিনজনের মধ্যে যিনি নেই, তিনি হলেন—
A) হেডমাস্টারমশাই B) চন্দ্রনাথ C) নরেশ D) হীরু
উত্তর : A) হেডমাস্টারমশাই
11.”এও হয়তো সেই বিচিত্র সমাবেশ।”— লেখক এক্ষেত্রে যাকে “বিচিত্র সমাবেশ’ বলেছেন, তা হল
A) আগ্নেয়গিরির গর্ভে প্রলয়ংকর দাহ্য বস্তুর সমাবেশ
B) চন্দ্রনাথের মতো প্রতিবাদী চরিত্রের সমাবেশ
C) একই গ্রামে চন্দ্রনাথ, নরেশ এবং হীরুর সমাবেশ
D) মাস্টারমশাই, নিশানাথবাবু ও হীরুর কাকার সমাবেশ
উত্তর : C) একই গ্রামে চন্দ্রনাথ, নরেশ এবং হীরুর সমাবেশ
12. “…. কিন্তু বিস্ময় প্রকাশ করিব না।” – বক্তা যে বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করবেন না, সেটি হল—
A) চন্দ্রনাথের হঠাৎ বাড়ি থেকে বেরিয়ে চলে যাওয়া
B) পরীক্ষায় চন্দ্রনাথের প্রথম না হতে পারা
C) তাঁর, হীনুর ও চন্দ্রনাথের একই সময়ে ছোটো একটি গ্রামে বসবাস করা
(D) কীভাবে আগ্নেয়গিরিগর্ভের মধ্যে অজস্র প্রলয়ংকর দাহা বস্তুর সমাবেশ ঘটে
উত্তর : C) তাঁর, হীনুর ও চন্দ্রনাথের একই সময়ে ছোটো একটি গ্রামে বসবাস করা
13. আলোকিত কক্ষে বসে কথক যাদের কথা ভাবছিলেন
A) হীব্র ও নিশানাথ B) চন্দ্রনাথ ও নিশানাথ
C) চন্দ্রনাথ, হীরু ও লেখক D) চন্দ্রনাথ, হীরু ও নিশানাথ
উত্তর : D) চন্দ্রনাথ, হীরু ও নিশানাথ
14 “আলোটা নিভাইয়া দিলাম । ” -বক্তার আলো নিভিয়ে দেওয়ার কারণ—
A) উজ্জ্বল আলোয় তাঁর চোখে যন্ত্রণা হচ্ছিল
B) স্তিমিত আলোয় তাঁর অসুবিধা হচ্ছিল
C) দেয়ালে টাঙানো আয়নায় নিজের প্রতিকৃতি দেখে তাঁর চিন্তায় বাধা সৃষ্টি হচ্ছিল
D) তাঁকে আলোটা নিভিয়ে দিতে বলা হয়েছিল
উত্তর : C) দেয়ালে টাঙানো আয়নায় নিজের প্রতিকৃতি দেখে তাঁর চিন্তায় বাধা সৃষ্টি হচ্ছিল
15. “….অন্ধকারের মধ্যে তাহাকে খুঁজিতেছি।”— বক্তা অন্ধকারের মধ্যে খুঁজেছেন—
A) অতীতের দিনগুলিকে B) চন্দ্রনাথকে C)হেডমাস্টারমশাইকে D) হীরুকে
উত্তর : A) অতীতের দিনগুলিকে
16. চন্দ্রনাথের দীর্ঘ চেহারায় কথকের অসাধারণ লেগেছিল—
A) তার বলিষ্ঠতা B) তার সাহস C) তার মুখাকৃতি D) তার গাত্রবর্ণ
উত্তর : C) তার মুখাকৃতি
17. চন্দ্রনাথের কপালের মধ্যস্থলে ছিল—
A) চন্দনের টিপ B) শিরায় রচিত ত্রিশূল-চিহ্ন
C) কাটা দাগ D) কোনোটিই নয়
উত্তর : B) শিরায় রচিত ত্রিশূল-চিহ্ন
18. হেডমাস্টারমহাশয় ছিলেন—
A) শীর্ণ দীর্ঘকায় শান্তপ্রকৃতির B) দীর্ঘকায় শীর্ণ শান্তপ্রকৃতির
C) ‘শান্ত দীর্ঘকায় শীর্ণপ্রকৃতির D) শীর্ণ দীর্ঘকায় কড়াপ্রকৃতির’
উত্তর : A) শীর্ণ দীর্ঘকায় শান্তপ্রকৃতির
19. হেডমাস্টার মহাশয়ের হাতে থাকত—
A) ডাস্টার B) হুঁকা C) বই D) ছড়ি
উত্তর : B) হুঁকা
20. গল্পকথকের ডাক নাম ছিল
A) হীরু B) চন্দু C) নরু D) নিশু
উত্তর : C) নরু
21. প্রাইজ ডিস্ট্রিবিউশনের সময় চন্দ্রনাথ—
A) পরীক্ষার অনিয়মের কথা সকলকে জানিয়ে দিয়েছে
B) প্রাইজ প্রত্যাখ্যান করে পত্র দিয়েছে
C) বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে
D)দ্বিতীয় পুরস্কারকেই হাসিমুখে গ্রহণ করেছে
উত্তর : B) প্রাইজ প্রত্যাখ্যান করে পত্র দিয়েছে
22. “তাহার কথা অবহেলা করিতে পারিলাম না।”—এখানে তাহার বলতে বোঝানো হয়েছে—
A) চন্দ্রনাথের কথা B) হেডমাস্টারমহাশয়ের কথা
C) নিশানাথবাবুর কথা D) হীরুর কাকার কথা
উত্তর : B) হেডমাস্টারমহাশয়ের কথা
23. চন্দ্রনাথের স্বপ্নালোকিত ঘরটি ছিল—
A) দারিদ্র্যজীর্ণ B) সাজানো-গোছানো C) বিশালকায় D) ভগ্নপ্রায়
উত্তর : A) দারিদ্র্যজীর্ণ
24. চন্দ্রনাথ ঘরে বসে যা লিখছিল—
A) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার সম্ভাব্য ফলাফল B) বিদ্যালয় পত্রিকার জন্য কবিতা
C) দাদা নিশানাথকে চিঠি D) ডায়ারিতে নিজের জীবনের কথা
উত্তর : A) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার সম্ভাব্য ফলাফল
25. “সে লিখিতেই থাকিল… ” উক্ত ব্যক্তি লিখছিল—
A) চিঠি B) প্রশ্নের উত্তর
C) গল্প D) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার সম্ভাব্য ফলাফল
উত্তর : D) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার সম্ভাব্য ফলাফল
26. “…তা ছাড়া সব পাশ হবে।”— চন্দ্রনাথের মতে, যারা পাস হবে না, তারা হল
A) অমিয় আর হীরু B) হীর আর শ্যামা
C) নরেশ আর অমিয় D) অমিয় আর শ্যামা
উত্তর : D) অমিয় আর শ্যামা
27. চন্দ্রনাথের হিসাবমতো, কথক থার্ড ডিভিশনে পাস করবেন, যদি চন্দ্রনাথের নম্বর হয়
A) পাঁচশো পঞ্চাশের বেশি B) পাঁচশো পঞ্চাশের কম
C) পাঁচশো পঁচিশের বেশি D) পাঁচশো পঁচিশের কম
উত্তর : D) পাঁচশো পঁচিশের কম
28. “… তাহার কথা শুনিয়া রাগ হইয়াছিল ।” — যে কথা শুনে কথকের রাগ হয়েছিল, তা হল-
A) চন্দ্রনাথ যদি পাঁচশো পঁচিশের নীচে পায়, তবে দশজন ফেল করবে
B) চন্দ্রনাথ যদি পাঁচশো পঁচিশের নীচে পায়, তবে দশজন ফেল করবে এবং কথক থার্ড ডিভিশন পাবেন
C) চন্দ্রনাথ যদি সাড়ে পাঁচশো বা তার বেশি পায়, তবে স্কুলের অমিয় আর শ্যামা ছাড়া সকলেই পাস করবে
D) চন্দ্রনাথ যদি ফেল করে বিদ্যালয়ের কেউই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবে না
উত্তর : B) চন্দ্রনাথ যদি পাঁচশো পঁচিশের নীচে পায়, তবে দশজন ফেল করবে এবং কথক থার্ড ডিভিশন পাবেন
29. ” কামনাও বোধ হয় করিয়াছিলাম । ” বা যে কামনা করেছিলেন, তা হল
A) সে যেন পরীক্ষায় সসম্মানে পাস করে যায় হয়।
B) চন্দ্রনাথ যেন পরীক্ষায় প্রথম
C) চন্দ্রনাথ যেন পরীক্ষায় ফেল করে
D) চন্দ্রনাথ যেন পরীক্ষায় কোনোমতেই প্রথম না হতে পারে
উত্তর : C) চন্দ্রনাথ যেন পরীক্ষায় ফেল করে
30. “দিস ইজ ম্যা্যাটিক্স।”- বক্তা ম্যাম্যাটিক্স’ বলেছে—
A) অনুপাতের গাণিতিক নিয়মকে B) হীরুর কাকার কৌশলকে
C) পরীক্ষার কঠিন পত্রকে D) শিক্ষকদের নীতিহীনতাকে
উত্তর : A) অনুপাতের গাণিতিক নিয়মকে
short questions – 2-3 marks of চন্দ্রনাথ- (Chandranath)
- “এও হয়তো সেই বিচিত্র সমাবেশ।”— মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : উদ্ধৃতাংশটি তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চন্দ্রনাথ’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
চন্দ্রনাথ, হীরু এবং গল্পকথক ছিলেন একই গ্রামের বাসিন্দা এবং স্কুলের সহপাঠী। তবে স্কুলজীবনে তাদের সম্পর্ক ছিল বেশ জটিল। মেধাবী চন্দ্রনাথ দরিদ্র ঘরের সন্তান, তার সঙ্গে ধনীর ঘরের সন্তান হীরুর সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে কথক স্মৃতিচারণা করেছেন। এই প্রসঙ্গে কথক মনে করেছেন একই গ্রামে তাদের তিনজনের অস্তিত্ব একটি আগ্নেয়গিরির গর্ভের অভ্যন্তরে দাহ্য বস্তুর বিচিত্র সমাবেশের মতোই।
- “দুর্দান্ত চন্দ্রনাথের আঘাতে সমস্ত স্কুলটা চঞ্চল, বিক্ষুব্ধ হইয়া উঠিয়াছে।”— মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
উত্তর : উদ্ধৃতাংশটি তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চন্দ্রনাথ’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। চন্দ্রনাথের পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন ছিল যে, তার জীবনে প্রথমবার সে স্কুল পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েছে কারণ সে, হীরুর প্রথম স্থানাধিকার পাওয়ার পিছনে একটি ঘৃণ্য পরিকল্পনার অনুভব করেছিল । সে এই প্রশ্নও তোলে যে, অঙ্ক পরীক্ষায় তার সাহায্য নেওয়া হীরু কিভাবে প্রথম হল। এই কারণে দ্বিতীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে স্কুলে চিঠি দেওয়ায় স্কুলে শোরগোল পরে যায় ।
- “এই দাম্ভিকটা যেন ফেল হয়— এ কামনাও বোধ হয় করিয়াছিলাম।”— বক্তার এই মন্তব্যের কারণ গল্প অবলম্বনে আলোচনা করো।
উত্তর : তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চন্দ্রনাথ’ গল্পে উদ্ধৃত মন্তব্যটি করা হয়েছে।
চন্দ্রনাথ বাড়িতে বসেই নিজের সম্ভাব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার ফলাফল প্রস্তুত করে। চন্দ্রনাথ ব্যাখ্যা করেছিল যে, সে যদি পাঁচশো পঁচিশ বা তার বেশি নম্বর পায় তবে দুইজন পরীক্ষায় ফেল করবে এবং সে যদি পাঁচশো পঁচিশের কম পায় তবে দশজন ফেল করবে এবং কথক নরেশ থার্ড ডিভিশনে উত্তীর্ণ হবে। কথক এই কথা শুনে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং কামনা করেন যে অহংকারী চন্দ্রনাথ যেন ফেল করে ।
- “দিস ইজ ম্যাথম্যাটিকস।”—গল্পাংশটি অবলম্বনে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
উত্তর : তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের “চন্দ্রনাথ” ছোটগল্পে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় চন্দ্রনাথ তার নিজের সম্ভাব্য নম্বরের অনুপাতে অন্যান্যদের নম্বর হিসেবে করেছিল । চন্দ্রনাথ যে ফলাফল তৈরি করেছিল, তাতে নরেশের থার্ড ডিভিশনে পাস করার ভবিষৎবাণী করেছিল, আর তাই নরেশ সেই ফলাফল পছন্দ করেনি ।
এতে কথক রেগে গেলে চন্দ্রনাথ মন্তব্য করে যে, অনুপাতের আঙ্কিক নিয়মে যতবারই মূল্য কষা হবে ততবারই তা একই থাকবে কারণ এটা ম্যাথম্যাটিকস বা অঙ্ক ।
- “এমন বুকে দাগ কাটা দৃষ্টি আমার জীবনে আমি খুব কমই দেখিয়াছি।” -কী দেখে বক্তা এই মন্তব্য করেছেন আলোচনা করো।
উত্তর : স্কুলের পরীক্ষায় সর্বদা প্রথম হওয়া চন্দ্রনাথ কখনো সেকেন্ড হয়নি আর তার দ্বিতীয় হওয়ার ব্যাপারটিকে মেনে নিতে না পারায়, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের চিঠি দেয়। চন্দ্রনাথের দাদা তাকে পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের চিঠি প্রত্যাহার করতে এবং প্রধান শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চাওয়ার অনুমতি দেন। কিন্তু চন্দ্রনাথ আপত্তি করলে তাদের সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটে । শান্তপ্রকৃতির মানুষ নিশানাথবাবু, যিনি এই ব্যবহারে আপত্তি করেছিলেন, মাথা নিচু করে স্থির হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। কথক তার এই কষ্ট ও ক্রোধ মেশানো দৃষ্টির কথা বলেছেন।
- “আমারই অন্যায় হলো।”—বক্তা যে পরিস্থিতিতে এই মন্তব্য করেছেন তা আলোচনা করো।
উত্তর : প্রধান শিক্ষক নরুকে চন্দ্রনাথের বাড়িতে পাঠান যেহেতু সে স্কুল পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে এবং দ্বিতীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে। চন্দ্রনাথ ক্ষমা চেয়ে চিঠি প্রত্যাহারের জন্য নিশানাথের অনুরোধ লঙ্ঘন করেছিল ফলত দুই ভাইয়ের সম্পর্কের টানাপোড়েন ঘটে । দাদা নিশানাথ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে । এর ফলে প্রধান শিক্ষক কথকের কথা শুনে মন্তব্য করেন যে, চন্দ্রনাথের দাদাকে এই বিষয়টি জানানো ভুল হয়েছে ।
7) “এই প্রস্তাবই আমার পক্ষে অপমানজনক।”—মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : জীবনে প্রথমবারের মতো চন্দ্রনাথ স্কুল পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। ফলস্বরূপ, প্রথম স্থানাধিকারী হীরুর কাকা ওরফে স্কুল সেক্রেটারি চন্দ্রনাথকে একটি বিশেষ পুরস্কার প্রদানের কথা বলে পাঠালে চন্দ্রনাথ তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলে যে, তার পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করা সম্ভব নয় । বাস্তবে, চন্দ্রনাথ মনে করে যে, হীরু প্রথম হওয়ার যোগ্য নয় আর তার কাকা তাকে “সান্ত্বনা পুরস্কার” দিচ্ছেন। তাই চন্দ্রনাথের পক্ষে এই পুরস্কার গ্রহণ করা অপমানের।
- “একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া মাস্টারমহাশয় নীরবেই চলিয়া গেলেন…” – মাস্টারমহাশয়ের এই দীর্ঘনিশ্বাসের কারণ আলোচনা করো ।
উত্তর : ‘চন্দ্রনাথ’ গল্পানুযায়ী হীরু স্কলারশিপ পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তার বাড়িতে যে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল, তাতে চন্দ্রনাথ আমন্ত্রিত থাকা সত্বেও সেখানে না গিয়ে সেদিন দুপুরেই সে গ্রাম ছেড়ে নিরুদ্দেশে যায়। এই কথা হেডমাস্টারমশাই জানতে পেরে নীরব হয়ে যান ও চিন্তিত হয়ে পড়েন। তারপর তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে সেখান থেকে চলে যান।
এই দীর্ঘনিশ্বাসের কারণ হলো একজন মেধাবী ছাত্রের এইভাবে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া। এখানে যথার্থ যথার্থ প্রতিভার পরাজয় দীর্ঘনিঃশ্বাসকে নিশ্চিত করেছে।
- “… পার্শ্বে কালপুরুষ নক্ষত্র সঙ্গে সঙ্গে চলিয়াছে।” – মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো ।
উত্তর : তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের “চন্দ্রনাথ” গল্পে এরূপ মন্তব্য করা হয়েছে। স্কুলের পরীক্ষায় হিরুর তুলনায় কম নম্বর পাওয়ায় চন্দ্রনাথ কাউকে না জানিয়েই গ্রাম ছেড়ে নিরুদ্দেশে যায় । কিন্তু স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে কথক কল্পনা করেছেন জড়, কিশোর চন্দ্রনাথ সেই রাতে যশ, আত্মপ্রতিষ্ঠা এবং আত্মসম্মানের পথে একাকী, লাঠির প্রান্তে পোঁটলা বেঁধে জনহীন পথে এগিয়ে চলেছে । দুই পাশের মাঠ, ঘাট, প্রান্তর পিছনে সে ক্রমশ সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে এবং তার এই চলার পথে সঙ্গী হয়েছে আকাশের কালপুরুষ।
long questions – 5 marks of চন্দ্রনাথ- (Chandranath)
- “অন্ধকারের মধ্যে সুস্পষ্ট রূপ পরিগ্রহ করিয়া সম্মুখে দাঁড়াইল কিশোর চন্দ্রনাথ।”— চন্দ্রনাথের যে রূপের বর্ণনা কথক দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখো। চন্দ্রনাথের স্বভাবের সঙ্গে এর কী সম্পর্ক ?
উত্তর : তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের “চন্দ্রনাথ” ছোটগল্পে, স্কুলেজীবন দীর্ঘ বছর আগেই শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও একদিন স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে হঠাৎ সহপাঠী চন্দ্রনাথের কথা কথকের মনে ভেসে ওঠে। কথকের মনে, কিশোর চন্দ্রনাথের দীর্ঘাকৃতি সুস্থ-সবল দেহ এবং নির্ভীক দৃষ্টির ছবি ফুঁটে ওঠে। তার নাক অদ্ভুতরকম মোটা, এবং সামান্য চঞ্চল হলেই নাকের সামনের দিকটা ফুলে উঠতো। তার চোখ ছিল বড়ো বড়ো এবং কপাল ছিল চওড়া। চন্দ্রনাথ উত্তেজিত হলে তার মধ্যকপালের শিরা ফুলে গিয়ে ত্রিশূল চিহ্নের আকৃতি ধারণ করতো।
→ আচরণের দিক থেকেও চন্দ্রনাথ বিশিষ্ট ছিল। প্রতিভা যেমন তার মধ্যে আত্মবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছিলো ঠিক তেমনই অহংকারের প্রকাশও ঘটিয়েছিল। স্কুল সেক্রেটারির অনন্য পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করা, প্রধান শিক্ষকমহাশয়কে ‘গুরুদক্ষিণার যুগ নেই আর’ বলার মধ্য দিয়ে তার ঔদ্ধত্যের প্রকাশ ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় হীরুর প্রথম স্থান পাওয়া চন্দ্রনাথ মেনে নিতে পারেনি । হিরুর বাড়িতে আয়োজিত প্রীতিভোজে যোগ দেওয়ার পরিবর্তে, সে একটি চিঠির মাধ্যমে জানায় যে, হীরু এমন উৎসব না করলেই পারতো কারণ স্কলারশিপ পাওয়া কোনো বড়ো ব্যাপার নয় । আসলে তারপক্ষে সম্ভব ছিল না, মনের মধ্যে লালিত শ্রেষ্ঠত্বের অহংকার থেকে বেরিয়ে আসা ।
- “দুর্দান্ত চন্দ্রনাথের আঘাতে সমস্ত স্কুলটা চঞ্চল, বিক্ষুব্ধ হইয়া উঠিয়াছে।”—চন্দ্রনাথ যে ‘আঘাত’ করেছিল তার কারণ কী ছিল ? এ জন্য তাকে কী ফলভোগ করতে হয়েছিল ?
উত্তর : উদ্ধৃতাংশটি তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘চন্দ্রনাথ’ ছোটগল্পের অংশ। সর্বদা প্রথম স্থানাধিকারী চন্দ্রনাথ দ্বিতীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে স্কুলকে চিঠি দেয়, এই প্রত্যাখ্যানকেই এখানে ‘আঘাত’ বলা হয়েছে।
→ স্কুলের প্রত্যেক পরীক্ষায় প্রথম স্থানাধিকারী চন্দ্রনাথের পক্ষে দ্বিতীয় পুরস্কার গ্রহণ করা অসম্ভব, সে তার চিঠিতে এরূপ মন্তব্য করেছিল । চন্দ্রনাথের মনে হয়েছিল, হীরুর কাকা স্কুলের সম্পাদক এবং স্কুলের জনৈক সহ-শিক্ষক তার গৃহশিক্ষক হওয়ায়, সে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। তার মতে তিনি হীরুকে প্রশ্নপত্র দেখিয়েছেন এবং উত্তরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। এমনকি অঙ্ক পরীক্ষায় হীরু তিনটে অঙ্ক চন্দ্রনাথের দেখে টুকেছিলো। ফলত, হীরুর প্রথম হওয়া চন্দ্রনাথ মেনে নিতে পারেনি আর তাই সে পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছে।
চন্দ্রনাথের নির্বিরোধী দাদা তাকে চিঠিটি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিলে চন্দ্রনাথ তাতে আপত্তি জানায় । চন্দ্রনাথ হেডমাস্টার মহাশয়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে চিঠি লেখার পরামর্শটি স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছিল। অবশেষে, তিনি চন্দ্রনাথের সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার পরামর্শ দেন। তাতেও চন্দ্রনাথের কোনোরকম মত পরিবর্তন হয় না । উপরন্তু তিনি বলেন যে, সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সে স্বাবলম্বী হতে পারবে ।
- “চন্দ্রনাথের সহিত সংস্রব রাখিব না। মনে মনে সংকল্পটা দৃঢ় করিতেছিলাম।”— কোন ঘটনার জন্য কথক এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন? শেষপর্যন্ত চন্দ্রনাথ সম্পর্কে তাঁর মনোভাব কী হয়েছিল ?
উত্তর : তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের “চন্দ্রনাথ” ছোটগল্পে কেন্দ্রীয় চরিত্র চন্দ্রনাথ প্রথমবারের মতো স্কুলের পরীক্ষায় দ্বিতীয় হওয়াটাকে মেনে নিতে না পেরে সে যেসমস্ত আচরণ করেছিল তা কথক মেনে নিতে পারেননি ।
চিঠির মাধ্যমে দ্বিতীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করা, গল্পের কথককে তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হবার ভবিষ্যৎবাণী কথকের পছন্দ হয়নি। পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের চিঠি ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য এবং প্রধান শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য দাদার আদেশ সে ঔদ্ধত্যের কারণে তাচ্ছিল্য করে, যার দ্বারা কথক বিস্মিত হন। চন্দ্রনাথ অন্যের আবেগ-অনুভূতিকে মর্যাদা না দিয়ে নিজের অহংবোধকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে আর তাই চন্দ্রনাথের সাথে কথক সম্পর্ক রাখতে চাননি।
→ চন্দ্রনাথের প্রতি কথকের মনোভাব ছিল ক্ষণস্থায়ী। আসলে কথক চন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধার করতেন । কারণ কথক নরেশ তার শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত ছিলেন। কথক হীরুর স্কলারশিপ পাওয়ার ব্যাপারটা গ্রহণ করতে পারেনি । তিনি বিশ্বাস করেন যে চন্দ্রনাথ এবং হীরু একে অপরের থেকে অনেক আলাদা। স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে কথক চন্দ্রনাথের দৃপ্ত ভঙ্গির চলনকে কালপুরুষের নক্ষত্রের সাথে তুলনার মধ্যে দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করেছে।
- “চিঠিখানা হীরুকে ফিরাইয়া দিলাম।”—কোন্ চিঠির কথা বলা হয়েছে? চিঠিতে কী লেখা ছিল? এই চিঠির বিষয়ে হীরু কী বলেছিল ?
উত্তর : তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘চন্দ্রনাথ’ গল্পাংশে, হীরুর বাড়ির অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকতে পাড়ার কারণ হিসেবে হিরুকে যে চিঠি লিখেছিলেন, এখানে সেই চিঠির কথাই বলা হয়েছে।
→ চিঠির শুরুতে হিরুকে প্রথমে “প্রিয়বরেষু” বলে সম্বোধন করেছিল, কিন্তু চন্দ্রনাথ পরে তা বাদ দিয়ে লিখেছিলেন “প্রীতিভাজনেষু”। চিঠিতে হিরুর সাফল্যে তিনি তার আনন্দের প্রকাশ করলেও, আন্তরিকতার কোনো ছোঁয়া ছিল না। পরিবর্তে, জানিয়েছিল স্কলারশিপের জন্য প্রতিভোজের আয়োজন না করলেই পারতো কারণ স্কলারশিপ পাওয়াটা এমন কোনো বড়ো ব্যাপার নয়। চন্দ্রনাথ হীরুর বাড়িতে অনুপস্থিতির কারণে মার্জনা চেয়ে নেয় ।
→ যদিও হিরু এবং চন্দ্রনাথের মধ্যে পরীক্ষায় প্রথম স্থানের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল এবং চন্দ্রনাথ কোনোদিনই হীরুকে তার সাফল্যের জন্য স্বীকৃতি দেয়নি কিন্তু তা সত্ত্বেও চন্দ্রনাথের প্রতি হীরুর শ্রদ্ধা ছিল। আর সেই জন্যই হীরু তার বাড়িতে অনুষ্ঠানে চন্দ্রনাথের উপস্থিতি কামনা করেছিল। কিন্তু না আসায় হীরু চন্দ্রনাথের চিঠিকে তার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে মনে করে। নিজের কাছে চিঠিটি রেখে দিয়ে বলেছে,”এইটেই আমার কাছে তার স্মৃতিচিহ্ন’।
- ‘চন্দ্রনাথ’ গল্পে চন্দ্রনাথ চরিত্রের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।
উত্তর : তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের “চন্দ্রনাথ” ছোটগল্পে কেন্দ্রীয় চরিত্র হলো চন্দ্রনাথ, যে যে তার শ্রেষ্ঠত্বের জন্য অত্যন্ত গর্বিত। স্কুলের পরীক্ষায় হীরুর প্রথম স্থান দখল এবং নিজের দ্বিতীয় স্থান পাওয়া সে মেনে নিতে পারেনি । সে মনে করে হীরু অসাধু উপায়ে প্রথম স্থান দখল করেছে। আর সেই জন্যই সে বাড়িতে বসে কাল্পনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলাফল তৈরি করে এবং সেখানে তার নিজের নম্বরের অনুপাতে অন্যদের ফলাফল ঠিক করে ।
দ্বিতীয় স্থানের পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করার জন্য চন্দ্রনাথ যখন স্কুলে চিঠি লিখলেন, তখন তার ঔদ্ধত্যের প্রকাশ ঘটে। প্রধান শিক্ষককে “গুরুদক্ষিণা যুগ আর নেই” বলার মধ্য দিয়ে তার দাম্ভিকতা ফুটে ওঠে । এই দৃষ্টান্তে, তিনি কেবল তার দাদার আদেশকে উপেক্ষা করেননি বরং তাদের সম্পর্কও ছিন্ন করেছিল। ফলস্বরূপ, হিরুর কাকার কাছ থেকে বিশেষ পুরস্কারের প্রস্তাবকেও সে “অপমানজনক” বলে মনে করেছে । অহংবোধের কারণেই সে হীরুর বাড়িতে নিমন্ত্রণ পাওয়া সত্ত্বেও সেখানে যায় না। পরিবর্তে সে একটি চিঠি দিয়ে লেখে যে, স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য অনুষ্ঠান করার প্রয়োজন ছিল না। সামগ্রিকভাবে, চন্দ্রনাথ চরিত্রটি অহংকার, অহংবোধ এবং আত্মকেন্দ্রিকতার প্রতিনিধিত্ব করেছে ।
- ‘চন্দ্রনাথ’ গল্পে হীরুর চরিত্রটি যেভাবে পাওয়া যায় লেখো। [ন্যাশনাল হাই স্কুল]
উত্তর : তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়ের “চন্দ্রনাথ” গল্পাংশে, হিরু একটি বিশেষ চিরিত্রের ভূমিকা পালন করেছেন।
মেধা: সর্বদা স্কুলের পরীক্ষায় প্রথম হওয়া চন্দ্রনাথকে পেছনে ফেলে সে স্কুলের পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে আর এটা যে কোনোরকম আকস্মিক ঘটনা নয় তার প্রমাণিত হয় যখন সে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাতেও স্কলারশিপ পায় ।
সৌজন্যবোধ: চন্দ্রনাথ স্কুল পরীক্ষায় হিরুর প্রথম হওয়াটা মেনে নিতে না পেরে তাকে অপমান করে, দাবি করে যে তার সাথে অন্যায় করা হয়েছে। কিন্তু হীরু চন্দ্রনাথকে তার সাফল্যের জন্য কোনোরকম অপমান করেনি বরং হীরু তার কাকার দ্বারা অনন্য পুরস্কার দিয়ে চন্দ্রনাথকে সান্ত্বনা দিতে চেয়েছে ।
বন্ধুপ্রীতি: হীরু আন্তরিকভাবেই চেয়েছিলো যে, স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য তার বাড়িতে আয়োজিত হওয়া অনুষ্ঠানে চন্দ্রনাথ আসুক । কিন্তু চন্দ্রনাথের চলে যাওয়ায় তিনি ব্যথিত হয়েছিল । চন্দ্রনাথের চিঠিটি স্মৃতি হিসেবে রেখে দেওয়ার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট যে তার প্রতি হীরুর বন্ধুত্ব ছিল অকৃত্রিম। একজন ধনী ব্যক্তির ছেলে হয়েও এবং আইসিএস হওয়ার উচ্চাশা থাকা সত্ত্বেও হীরুর চরিত্রে ভদ্রতা এবং বন্ধুত্বের মিশ্রণ দেখা যায় ।
- “একে তুমি ডিগনিটি বল? তোমার অক্ষমতার অপরাধ!” – কোন প্রসঙ্গে বক্তা এ কথা বলেছেন? বক্তা এখানে কী বোঝাতে চেয়েছে?
উত্তর : তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চন্দ্রনাথ’ গল্পাংশে উদ্ধৃতাংশটি চন্দ্রনাথের দাদা নিশানাথ করেছেন। স্কুলের পরীক্ষার দ্বিতীয় হওয়ায় চন্দ্রনাথ দ্বিতীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে। চন্দ্রনাথের দাদা বিষয়টি জানতে পেরে, চন্দ্রনাথের কাছে এই আচরণের কারণ জানতে চাইলে সে বলে ‘সেকেন্ড প্রাইস নেওয়া আমি বিনিথ মাই ডিগনিটি বলে মনে করি’। ভাইয়ের এরূপ আচরণ মানতে না পেরে নিশানাথ এরূপ মন্তব্যটি করেন।
→নিশানাথের নিজস্ব জীবন নীতি ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, চন্দ্রনাথের পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করাতে প্রধান শিক্ষক, শিক্ষকসমাজ এবং বিদ্যালয়ের পরিচালন ব্যবস্থাকে অপমান করা হয়েছে।
নিশানাথের মন্তব্য অনুযায়ী, চন্দ্রনাথ যদি দ্বিতীয় পুরস্কার গ্রহণ না করে তবে চন্দ্রনাথের মর্যাদা রক্ষা করা সম্ভব হবে না ঠিকই, তেমনি যে প্রথম হয়েছে তার সাফল্যকেও অস্বীকার করা হবে। পরীক্ষায় দ্বিতীয় হওয়াটা আসলে চন্দ্রনাথের ব্যর্থতা। আর এই সত্যটাকে চন্দ্রনাথ স্বীকার না করায় নিশানাথ তার উপর ক্রুদ্ধ হন এবং বলেন এটা তার অক্ষমতার অপরাধ ।
- ‘চন্দ্রনাথ’ পাঠ্য অবলম্বনে চন্দ্রনাথের দৈহিক বিবরণ দাও। তাকে কালপুরুষ নক্ষত্রের সঙ্গে তুলনা করার কারণ নির্ণয় করো।
উত্তর : ‘চন্দ্রনাথ’ পাঠ্য অনুযায়ী, কিশোর চন্দ্রনাথের দীর্ঘাকৃতি সুস্থ-সবল দেহ এবং নির্ভীক দৃষ্টির ছবি ফুঁটে ওঠে। তার নাক অদ্ভুতরকম মোটা, এবং সামান্য চঞ্চল হলেই নাকের সামনের দিকটা ফুলে উঠতো। তার চোখ ছিল বড়ো বড়ো এবং কপাল ছিল চওড়া। চন্দ্রনাথ উত্তেজিত হলে তার মধ্যকপালের শিরা ফুলে গিয়ে ত্রিশূল চিহ্নের আকৃতি ধারণ করতো।
→ চন্দ্রনাথ তার চলার পথে একাকী ছিল। সর্বদা প্রথম হওয়া চন্দ্রনাথ, দ্বিতীয় হওয়াটা মেনে নিতে না পেরে সে স্কুলের পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে চিঠি দেয়।
সে বলে, “সেকেন্ড প্রাইজ নেওয়া আমি বিনিথ মাই ডিগনিটি বলে মনে করি।”
সে তার দাদার আদেশ অমান্য করার বা এমনকি তার নিজের মর্যাদা বজায় রাখার জন্য তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়ে দুবার ভাবে না। সে ঔদ্ধত্যের সাথে হেডমাস্টারমশাইয়ের ডাক ফিরিয়ে দিয়ে বলে ‘গুরুদক্ষিণার যুগ আর নেই’
এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় হিরুর প্রথম হওয়ার জন্য যে অনুষ্ঠান হয় তাতে নিমন্ত্রণ পাওয়া সত্ত্বেও চন্দ্রনাথ যায়নি। তার মনে হয়েছে স্কলারশিপ পাওয়া এমন কোনো বড়ো জিনিস নয়।
কালপুরুষ নক্ষত্র যেমন অনায়াসে নিঃস্বার্থভাবে রাতের আকাশে শিকারীর মতো জ্বলে, সর্বদা অন্যদের থেকে দূরে দাঁড়ায়, তেমনি চন্দ্রনাথ, যে লাঠির শেষ প্রান্তে পোঁটলা বেঁধে নির্জন প্রান্তরে হারিয়ে গেছে।