আপনি এখানে শিখবেন এই অধ্যায়ে এবং বিষয়ের ফাউন্ডেশন অংশটা, এই বিষয়টিকে সহজ-সরলভাবে পড়িয়েছেন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ভিডিও লেকচার এর মাধ্যমে এবং এই পুরো অধ্যায়কে চার ভাগে খন্ডিত করে আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে
- প্রথম খন্ডে আপনি শিখবেন ফাউন্ডেশন অংশটা যেখানে অধ্যায়ের ব্যাপারে আপনাকে বোঝানো হয়েছে তার মানে definitions,basics গুলো সহজভাবে. এবং এটাকে আপনি বুঝতে পারবেন যেটা আপনাকে পরীক্ষার জন্য ক্রীপের করতে সাহায্য করবে
- দ্বিতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন MCQ মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন যেটা সাধারণত এক Marks’er আসে পরীক্ষায়
- তৃতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন শর্ট অ্যানসার এবং কোয়েশ্চেন, যেটা আপনার পরীক্ষার সাজেশন মধ্যে পড়ে এবং এটা 3-4 marks’er প্রশ্ন আসে আপনার পরীক্ষা
- চতুর্থ মডিউল আপনি শিখবেন লং আনসার এবং questions যেটা সাধারণত 5-6 marks er হয়
আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন যাতে কি আপনাকে আমরা সাহায্য করতে পারি
বিষয়সংক্ষেপ
গল্পের কথক সুকুমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষকের ভয়ে ভীত হওয়ার কথা স্মরণ করেন। মাস্টারের উপস্থিতি, অঙ্কের ভয়ের থেকেও তার কাছে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতো । এই কারণে, সুকুমার গণিতের প্রতি বিশেষ অনুরাগী ছিলেন না, যদিও দক্ষ মাস্টারমশাই মনে করতেন যে গণিত না শিখলে জীবন মূল্যহীন।
পরে সুকুমার বাংলা ভাষার অধ্যাপক হন । সাহিত্যিক সাফল্যের কিছু স্তর অর্জন করার পরে সুকুমারকে একটি নামহীন সংবাদপত্র দ্বারা একটি শৈশব স্মৃতিকথা লেখার জন্য যোগাযোগ করা হয়েছিল। সুকুমার তার অঙ্কের শিক্ষক সম্পর্কে স্মৃতিকথা লেখার জন্য নগদ দশ টাকা পেয়েছিলেন। মাস্টারমশাইয়ের যে কঠিন রূপ তিনি তাঁর কৈশোরে দেখেছিলেন তাই তিনি তাঁর লেখায় ফুটিয়ে তুলেছেন। মাস্টার মশাইয়ের শিক্ষন পদ্ধতি যে ভুল সে বিষয়ে লেখেন কারণ ছাত্রদের কোনো বিষয়ে আগ্রহ দেখানোর জন্য জোর করা বা ভয় দেখানো যায় না।
বেশ কিছু দিন পরে, বাংলাদেশের দূরবর্তী অঞ্চলে একটি কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানে সুকুমারকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেখানে, একটি বক্তৃতা দেওয়ার পরে যেখানে সবাই তার প্রশংসা করছিল, তখনই তার অপ্রত্যাশিতভাবে শৈশবের অঙ্কের শিক্ষকের সাথে সাক্ষাৎ হয়। বৃদ্ধ শিক্ষক ছাত্রটিকে চিনতে পেরে, তাঁর বক্তৃতা শুনতে আসেন।
সুকুমার আশ্চর্য হয়ে যায় যখন সে জানতে পারে যে, শৈশবের স্মৃতিজড়িত সেই লেখা এখন সেই পুরানো মাস্টারের নিত্যসঙ্গী। শিক্ষা, ছাত্র এবং অঙ্ক প্রবণ মাস্টার তার সহজাত সরলতার জন্য সুকুমারের সমালোচনাকে সদয়ভাবে গ্রহণ করেছিলেন। ছাত্রকে অঙ্ক শেখাতে না পারলেও ছাত্রের গর্বের সে গর্বিত।
সুকুমারের সমালোচনা সবই ছাত্রের বিনম্র শ্রদ্ধায় শিক্ষকের পায়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি হয়েছে । অপ্রস্তুত সুকুমার বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি ছোটবেলায় শুধু মাস্টারের কঠোরতা দেখেছিলেন, ছাত্রদের প্রতি তার অফুরন্ত ভালবাসা অনুভব করেননি । সুকুমারের মনে আত্মগ্লানি জাগিয়ে তোলে মাস্টারমশাইয়ের সমালোচনা করা লেখা থেকে পাওয়া দশ টাকা ।
নামকরণের তাৎপর্য
নামকরণ সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নামকরণ থেকেই আমরা সেই সাহিত্যের বিষয়বস্তু সম্পর্কে একটা সাধারণ ধারণা নিতে পারি। নামকরণ কখনো কখনো চরিত্রকেন্দ্রিক বা বিষয়কেন্দ্রিক অথবা ব্যঞ্জনাধর্মী হয়ে থাকে। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের তাঁর ‘দাম’ ছোটগল্পটিতে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ককে এক অনন্য মাত্রায় স্থাপন করেছেন।
‘দাম’ গল্পটিতে উল্লেখিত অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন তার ছাত্রদের কাছে বিশেষ করে সুকুমারের কাছে বিভীষিকাস্বরূপ। মাস্টারের উপস্থিতি, অঙ্কের ভয়ের থেকেও তার কাছে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতো । ম্যাট্রিকুলেশনের পরেও বহুকাল মাস্টারমশাইয়ের ভয়কে এড়াতে পারেনি সুকুমার।
সুকুমার পরবর্তীকালে বাংলার অধ্যাপক এবং লেখক হিসেবে অল্পবিস্তর নাম ছড়ালে একটি পত্রিকা থেকে তাকে বাল্যস্মৃতি লেখার প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেই প্রস্তাব গ্রহণ করে সুকুমার তার ছোটবেলার অঙ্কের মাস্টারমশাইকে ঘিরে তার যে অভিজ্ঞতা তার সমালোচনা করেছেন। এই লেখাটির জন্য তিনি দশ টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন।
এর অনেক বছর পর, বাংলাদেশের দূরবর্তী অঞ্চলে একটি কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানে সুকুমারকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আর সেখানেই বক্তৃতা শেষে সুকুমারের সাথে সেই বৃদ্ধ মাস্টারমশাইয়ের সাক্ষাৎ ঘটে এবং সে জানতে পারে অনামী পত্রিকায় প্রকাশিত সেই বাল্যস্মৃতি আজ মাস্টারমশাইয়ের সর্বক্ষণের সঙ্গী। বৃদ্ধ মাস্টারমশায়ের কাছে এটাই গর্বের যে, তার ছাত্র তাকে মনে রেখেছে এবং তাই তিনি ছাত্রের সমালোচনাকেও উদারমনে গ্রহণ করতে পেরেছেন। এরপর সুকুমার উপলব্ধি করেছিলেন যে ছোটবেলায় তিনি শুধুমাত্র মাস্টারমশাইয়কে ভয়ের চোখে দেখেছেন কিন্তু তার পিছনে লুকিয়ে থাকা ভালোবাসা এবং স্নেহকে অনুভব করতে পারেননি। হয়তো মাস্টারমশাইয়ের কিছু শিখন পদ্ধতির ত্রুটি ছিল তবে ছাত্রদের অঙ্ক শেখানোর জন্য মাস্টারমশায়ের নিষ্ঠার কোন অভাব ছিল না। শিক্ষক এবং ছাত্রের এই উপলব্ধির মধ্যেই ফুটে উঠেছে তাদের মানবিক সম্পর্ক।
পৃথিবীতে এমন অনেক জিনিস আছে, যেমন স্নেহ-ভালবাসা-মমতা যা দাম দিয়ে কেনা যায় না বা টাকার অঙ্কে তাদের পরিমাপ করা যায় না। মাস্টারমশাইকে নিয়ে লেখা বাল্যস্মৃতি বিক্রি করে সুকুমার দশ টাকা দাম পেয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু তা তাকে চরম আত্মগ্লানিতে নিমজ্জিত করেছিল। মাস্টারমশাইকে উদ্দেশ্য করে লেখা সেই সমালোচনা হয়তো দাম দিয়ে বিক্রি করা যায় কিন্তু মাস্টারমশাইয়ের স্নেহ দাম দিয়ে কেনা যায় না, শুধুমাত্র সেই অমূল্য স্নেহ মাথা পেতে গ্রহণ করে নিতে হয়। ‘দাম’ ছোটগল্পটি সম্পূর্ণ আলোচনা করার পর বলা যেতে পারে যে, ব্যঞ্জনাময় ‘দাম’ নামকরণটি অত্যন্ত যথোপযুক্ত।
SOLVED QUESTIONS & ANSWERS of দাম (DAAM)
1 MARKS QUESTIONS of দাম (DAAM)
- স্কুলে কে বিভীষিকা ছিলেন?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছােটোগল্পে কথকের অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন তাঁদের কাছে বিভীষিকাস্বরূপ।
- অঙ্ক করার সময় খড়ি ভেঙে গেলে মাস্টারমশাই কী করতেন?
উত্তর:) খড়ি ভেঙে গেলে বিরক্ত মাস্টারমশাই ভাঙা টুকরাে দুটো ছাত্রদের দিকে ছুড়ে দিয়ে আর-একটা খড়ি নিতেন।
- মাস্টারমশাই অঙ্ককে কেমন করে সাজিয়ে দিতেন?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছােটোগল্পে মাস্টারমশাই অঙ্ককে ছবির মতাে করে সাজিয়ে দিতেন।
- “এখনি পা ধরে স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেবাে”—কে, কাদের বলতেন?
উত্তর:) অঙ্ক না পারায় মাস্টারমশাইয়ের চড় খেয়ে চোখে জল আসা ছাত্রদের উদ্দেশ্যে গল্পকথকের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই একথা বলতেন।
- মাস্টারমশাইয়ের চড়ের জোর থেকে ছাত্ররা কী আন্দাজ করে নিয়েছিল?
উত্তর:) মাস্টারমশাইয়ের চড়ের জোর থেকে ছাত্ররা আন্দাজ করেছিল যে, তাদের পা ধরে পুকুরে ছুড়ে ফেলার শক্তি তাঁর ছিল।
- প্লেটোর দোরগােড়ায় কী লেখা ছিল বলে মাস্টারমশাই বলেছেন?
উত্তর:) প্লেটোর দোরগােড়ায় লেখা ছিল, যে ব্যক্তি অঙ্ক জানে না তাঁর বাড়িতে তার প্রবেশ নিষেধ।
- মাস্টারমশাইয়ের মতে স্বর্গের দরজাতে কী লেখা আছে?
উত্তর:) স্বর্গের দরজাতেও নাকি প্লেটোর দোরগােড়ার মতাে লেখা আছে, যে অঙ্ক জানে না তার প্রবেশ নিষেধ।
৪. যে স্বর্গে পা দিয়েই জ্যামিতির এক্সট্রা কষতে হয় তার সম্পর্কে বক্তার মত কী?
উত্তর:) যে স্বর্গে পা দিয়েই জ্যামিতির এক্সট্রা কষতে হয় তার থেকে লক্ষ যােজন দূরে থাকাই নিরাপদ।
- ম্যাট্রিকুলেশনের গণ্ডি পার হয়ে সুকুমার কীসের হাত থেকে রেহাই পেয়েছিলেন?
উত্তর:) ম্যাট্রিকুলেশনের গণ্ডি পার হয়ে সুকুমার অঙ্ক ও বিভীষিকাস্বরূপ অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের হাত থেকে রেহাই পেয়েছিলেন।
- সুকুমার কলেজে কী পড়ান?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা ‘দাম’ ছােটোগল্পে সুকুমার কলেজে বাংলা পড়ান।
- সুকুমারের কাছে ছেলেবেলার গল্প লেখার ফরমাশ কোথা থেকে এসেছিল?
উত্তর:) একটি অনামি পত্রিকার পক্ষ থেকে সুকুমারের কাছে ছেলেবেলার গল্প লেখার ফরমাশ এসেছিল।
- সাহিত্যের ইন্দ্র চন্দ্র মিত্র বরুণ কাদের বলা হয়েছে?
উত্তর:) সাহিত্যজগতের রথী-মহারথী অর্থাৎ স্বনামধন্য সাহিত্যিকদের ইন্দ্র চন্দ্র মিত্র বরুণ বলা হয়েছে।
- সুকুমার তাঁর ছেলেবেলার গল্প কাকে নিয়ে লিখেছিলেন?
উত্তর:) সুকুমার তাঁর স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইকে নিয়ে ছেলেবেলার গল্প লিখেছিলেন।
- পত্রিকা কর্তৃপক্ষ সুকুমারকে কত দক্ষিণা দিয়েছিলেন?
উত্তর:) পত্রিকা কর্তৃপক্ষ তাঁর লেখায় খুশি হয়ে সুকুমারকে দশ টাকা দক্ষিণা দিয়েছিলেন।
- সুকুমার মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে কোনটাকে নগদ লাভ বলে মনে করেছিলেন?
উত্তর:) মাস্টারমশাইকে নিয়ে বাল্যস্মৃতি লিখে পাওয়া দশ টাকাকেই সুকুমার নগদ লাভ বলে মনে করেছিলেন।
- সুকুমারের কাছে বাংলাদেশের এক প্রান্তের কলেজ থেকে কীজন্য ডাক এসেছিল?
উত্তর:) বাংলাদেশের এক প্রান্তের একটি কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানে আতিথ্যগ্রহণ ও বক্তৃতাদানের জন্য সুকুমারের কাছে ডাক এসেছিল।
- কলকাতার চড়ুই পাখি বাইরে গেলে কীসের সম্মান পায়?
উত্তর:) গল্পকথক সুকুমারের মতে, কলকাতার চড়ুই পাখিও বাইরে গেলে রাজহাঁসের সম্মান পায়।
- সুকুমার তাঁর বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথের ক-টি উদ্ধৃতি ব্যবহার করেছিলেন?
উত্তর:) সুকুমার তাঁর বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথের বারােটি উদ্ধৃতি ব্যবহার করেছিলেন।
- সুকুমার তাঁর বক্তৃতার ইংরেজি কোটেশনটি কার নামে চালিয়েছিলেন?
উত্তর:) সুকুমার তাঁর বক্তৃতার ইংরেজি কোটেশনটি আইরিশ নাট্যকার জর্জ বার্নাড শ-র নামে চালিয়েছিলেন।
- সুকুমারের বক্তৃতার বিশেষত্ব কী ছিল?
উত্তর:) ‘দাম’-এর কথক সুকুমার তাঁর তৈরি একটি বক্ততাকেই সামান্য পরিবর্তন করে রবীন্দ্রজন্মােৎসব থেকে বনমহােৎসব সর্বত্রই চালাতেন।
- সুকুমার আলাে থেকে বেরিয়ে যে মানুষটিকে দেখতে পেলেন তাঁর চেহারা কেমন?
উত্তর:) আবছা অন্ধকারে সুকুমার যাঁকে দেখেছিলেন তাঁর কুঁজো লম্বা চেহারা, মাথার সাদা চুলগুলি চিকমিক করছিল।
- “আমাকে চিনতে পারছ না সুকুমার?”–বক্তা কে?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছােটোগল্পে উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা হলেন কথক সুকুমারের ছােটোবেলার স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই।।
- “সেই ভয়টার কঙ্কাল লুকিয়ে ছিল মনের চোরাকুঠুরিতে”—কোন ভয়ের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর:) অঙ্ক না পারলেই অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের ভয়ানক চড় নেমে আসবে পিঠে—এই ছিল সুকুমারের ভয়।
- মাস্টারমশাই কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানে কেন ছুটে এসেছিলেন?
উত্তর:) প্রাক্তন ছাত্র সুকুমার কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করবেন জেনে মাস্টারমশাই ছুটে এসেছিলেন।
- মাস্টারমশাই পুরােনাে পত্রিকার লেখাটির কথা উল্লেখ করায় সুকুমারের কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল?
উত্তর:) পুরােনাে পত্রিকার লেখাটির উল্লেখে অপ্রস্তুত সুকুমারের জিভ শুকিয়ে ওঠে, আত্মগ্লানিতে মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করে।
- মাস্টারমশাইয়ের সুকুমারকে কী পাঠাতে সাহস হয়নি?
উত্তর:) সুকুমারের লেখা বাল্যস্মৃতি পড়ে আনন্দে মাস্টারমশাই সুকুমারকে চিঠি লিখলেও সেটি পাঠাতে তাঁর সাহস হয়নি৷
- আবছা আলােয় অভ্যস্ত হয়ে সুকুমার কী দেখেছিলেন?
উত্তর:) আবছা আলােয় অভ্যস্ত হলে সুকুমার ছােটোবেলার সেই রাগি অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের দু-চোখে আবেগের অশ্রুধারা দেখতে পেয়েছিলেন।
- বৃদ্ধ মাস্টারমশাইয়ের সামনে দাঁড়িয়ে সবশেষে সুকুমারের কী অনুভূতি হয়েছিল?
উত্তর:) বৃদ্ধ মাস্টারমশাইয়ের সামনে দাঁড়িয়ে সবশেষে সুকুমারের মনে হয়েছিল তিনি স্নেহ-মমতা-ক্ষমার এক মহাসমুদ্রের ধারে এসে দাঁড়িয়েছেন।
- ‘দাম’ গল্পে কোটি মণিমাণিক্য দিয়ে কার পরিমাপ হয় না?
উত্তর:) ‘দাম’ ছােটোগল্পে সুকুমারের মনে হয়েছে যে কোটি মণিমাণিক্য দিয়েও মাস্টারমশাইয়ের স্নেহের পরিমাপ হয় না।
- সুকুমারের মতে সংসারের সব ঐশ্বর্যের চেয়ে দামি কী?
উত্তর:) সুকুমারের মতে সংসারের সব ঐশ্বর্যের চেয়ে দামি আপাতরাগি মাস্টারমশাইয়ের অসীম মমতা।
- ‘দাম’ গল্পে কুবেরের ভাণ্ডারকে ধরে দিয়েও কী লাভ করা যায় না?
উত্তর:) সুকুমারের মতে, কুবেরের ভাণ্ডারের বিনিময়েও মাস্টারমশাইয়ের উদারমনের অনায়াস ক্ষমা লাভ করা যায় না, তা অমূল্য।
- সুকুমার দশ টাকায় কী বিক্রি করেছিলেন?
উত্তর:) মাস্টারমশাই-বিষয়ক বাল্যস্মৃতি লিখে সুকুমার দশ টাকা পেয়েছিলেন। পরে তাঁর মনে হয়েছিল ওই টাকায় তিনি যেন মাস্টারমশাইকেই বিক্রি করেছেন ।
multiple choice questions – 1 marks of দাম (DAAM)
1. স্কুলে যে ভদ্রলােক বিভীষিকা ছিলেন তিনি কোন্ বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন?
A. ভূগােল B. অঙ্ক C. ইংরেজি D. বাংলা
উত্তর:) অঙ্ক
2. “একবার মাত্র তাকিয়ে দেখতেন তার দিকে”–এখানে ‘তার’ বলতে বােঝানাে হয়েছে—
A. কোনাে বিশেষ ছাত্রকে B. কোনাে জটিল অঙ্ককে C. ক্লাসের ব্ল্যাকবাের্ডকে D. খড়িকে
উত্তর:) কোনাে জটিল অঙ্ককে
3. ঝড়ের গতিতে কী এগিয়ে চলত?
A. ঘড়ি B. ছড়ি C. খড়ি D. দড়ি
উত্তর:) খড়ি
4. “…বিরক্ত হয়ে টুকরাে দুটো আমাদের দিকে ছুঁড়ে..”— তাঁর এই বিরক্তির কারণ—
A. অঙ্কটা মিলছে না কিছুতেই
B. ছেলেদের অঙ্কে ভুল হচ্ছে বারবার
C. হাতের খড়ি দু-টুকরাে হয়ে গেছে
D. ক্লাসের ছেলেরা নিজেদের মধ্যে অত্যন্ত কথা বলছে
উত্তর:) হাতের খড়ি দু-টুকরাে হয়ে গেছে
5. “…আমরা রােমাঞ্চিত হয়ে দেখতুম…”— ছাত্ররা রােমাঞ্চিত হয়ে দেখত—
A. মাস্টারমশাই ঘণ্টা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্লাস থেকে বেরিয়ে যেতেন
B. মাস্টারমশাই ব্ল্যাকবাের্ডে ছবির মতাে সাজিয়ে দিয়েছেন অঙ্কটাকে
C. ক্লাসের কোনাে গােলমালের দিকেই মাস্টারমশাইয়ের নজর নেই
D. মাস্টারমশাই একমনে সকলের খাতায় কষা অঙ্কগুলাে দেখছেন
উত্তর:) মাস্টারমশাই ব্ল্যাকবাের্ডে ছবির মতাে সাজিয়ে দিয়েছেন অঙ্কটাকে
6. “পৃথিবীতে যত অঙ্ক ছিল, সব যেন ওঁর____।”
A. কণ্ঠস্থ B. ঠোঁটস্থ C. তটস্থ D. মুখস্থ
উত্তর:) মুখস্থ
7. “আমাদের মতাে যেসব অঙ্ক-বিশারদের টেনেটুনে–ও উঠতে চাইত না।”
A. কুড়ি B. দশ C. ত্রিশ D. পঁচিশ
উত্তর:) কুড়ি
8. “কাঁদবার জো ছিল না।”—এই কাঁদবার উপায় না থাকার কারণ–
A. ক্লাসের অন্য ছেলেদের সামনে কাঁদতে লজ্জা করত
B. চোখের জল মাস্টারমশাই সহ্য করতে পারতেন না
C. কাঁদলে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতেন মাস্টারমশাই
D. যেভাবেই হােক অঙ্কটা নির্ভুলভাবে কষে দিয়ে তবে মুক্তি পাওয়া যেত
উত্তর:) কাঁদলে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতেন মাস্টারমশাই
9. “যে অঙ্ক জানে না—এখানে তার প্রবেশ নিষেধ”– কার দোরগােড়ায় লেখা ছিল?
A. অ্যারিস্টটল B. প্লেটো C. রুশাে D. সক্রেটিস
উত্তর:) প্লেটো
10. “সে স্বর্গের চাইতে – যােজন দূরে থাকাই আমরা নিরাপদ বােধ করতুম।”
A. শত B. সহস্র C. লক্ষ D. কোটি
উত্তর:) লক্ষ
11. ম্যাট্রিকুলেশনের গণ্ডি পার হয়ে লেখক তাঁর মাস্টারমশাইয়ের হাত থেকে রেহাই পেয়েছিলেন, কারণ—
A. মাস্টারমশাই অবসর নিলেন
B. ততদিনে তিনি অঙ্কটা ভালােই রপ্ত করে নিয়েছেন
C. তাঁকে আর অঙ্ক করতে হয়নি
D. মাস্টারমশাই ছাত্রদের শাসন-পীড়ন বন্ধ করে দিলেন
উত্তর:) তাঁকে আর অঙ্ক করতে হয়নি
12. “______পাশ করবার পরেও স্বপ্ন দেখেছি।”
A. বি-এ B. সি-এ C. এম-বি-এ D. এম-এ
উত্তর:) এম-এ
13. “মাথার উপর ঘুরন্ত পাখা সত্ত্বেও ঘামে নেয়ে আমি জেগে উঠেছি।”—লেখকের এমন অবস্থা হওয়ার কারণ—
A. সে বছর বীভৎস গরম পড়েছিল
B. তিনি তাঁর গণিতভীতির কারণে ভয়াবহ এক স্বপ্ন দেখেছেন
C. মাস্টারমশাই তাঁকে স্বপ্নে দেখা দিয়েছেন
D. পরীক্ষার দুশ্চিন্তায় তাঁর ঘুম হল না
উত্তর:) তিনি তাঁর গণিতভীতির কারণে ভয়াবহ এক স্বপ্ন দেখেছেন
14. “একদিন একটি পত্রিকার পক্ষ থেকে ফরমাশ এল…”—‘ফরমাশ’টি হল—
A. লেখককে তাঁর মাস্টারমশাইকে নিয়ে কিছু লিখতে হবে
B. কীভাবে অঙ্কের ভয় দূর করা যায় সে নিয়ে তাঁকে বক্তব্য রাখতে হবে
C. ছেলেবেলার গল্প শােনাতে হবে
D. গ্রামের একটি কলেজের বার্ষিক উৎসবে যােগ দিতে হবে
উত্তর:) ছেলেবেলার গল্প শােনাতে হবে
15. “আমি জানালুম…”—বক্তা এক্ষেত্রে পত্রিকা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন যে—
A. উচ্চশিক্ষায় তিনি গণিতচর্চা করেননি
B. গণিতচর্চা করার ফলে সাহিত্যচর্চার অবকাশ তিনি পাননি
C. লেখক হিসেবে তিনি অত্যন্ত সামান্য ব্যক্তি, তাঁর ছেলেবেলার গল্পে কারাে কোনাে কৌতুহল নেই
D. সম্প্রতি তিনি অন্য একটি পত্রিকায় একই বিষয়ে লিখেছেন
উত্তর:) লেখক হিসেবে তিনি অত্যন্ত সামান্য ব্যক্তি, তাঁর ছেলেবেলার গল্পে কারাে কোনাে কৌতুহল নেই
16. “কর্তৃপক্ষ ছাড়লেন না…”—তাঁদের বক্তব্য ছিল এই যে—
A. লেখাটির জন্য উপযুক্ত সম্মান দক্ষিণা দিতে তাঁরা রাজি
B. সাহিত্যের প্রতিভাশালী ব্যক্তিরা কেউ তাঁদের বিশেষ পাত্তা দেননি
C. ছেলেবেলার কথা নিয়েই তাঁদের এবারের সংখ্যা তাঁরা সাজাবেন
D. তাঁদের পত্রিকায় লিখলে লেখক প্রচুর পাঠক পাবেন
উত্তর:) সাহিত্যের প্রতিভাশালী ব্যক্তিরা কেউ তাঁদের বিশেষ পাত্তা দেননি
17. “সাহিত্যের ইন্দ্র চন্দ্র মিত্র____কেউ তাঁদের বিশেষ পাত্তা দেননি।”
A. বরুণেরা B. অরুণেরা C. তরুণেরা D. কিরণেরা
উত্তর:) বরুণেরা
18. “ওটা প্রীতির ব্যাপার, পদমর্যাদার নয়।”—প্রীতিকর ব্যাপারটি হল—
A. সমমনস্ক কিছু মানুষের উদ্যোগে প্রকাশিত পত্রিকায় লিখতে পারা
B. লেখার বিনিময়ে কোনােরকম অর্থ না নেওয়া
C. কয়েকজন ঘরােয়া মানুষের কাছে ঘরােয়া গল্প বলা
D. নিজের মাস্টারমশাইকে নিয়ে লিখতে বসা
উত্তর:) কয়েকজন ঘরােয়া মানুষের কাছে ঘরােয়া গল্প বলা
19. বাল্যস্মৃতির কথা লিখতে গিয়ে সুকুমারের কার কথা মনে হয়েছিল?
A. হেডমাস্টারমশাইয়ের B. মাস্টারমশাইয়ের
C. স্টেশনমাস্টারমশাইয়ের D. পােস্ট মাস্টারমশাইয়ের
উত্তর:) মাস্টারমশাইয়ের
20. “ছবিটা যা ফুটল, তা খুব উজ্জ্বল নয়।”—অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের ছবি গল্পে উজ্জ্বল না হয়ে ওঠার কারণ—
A. লেখক কোনােদিনই অঙ্ককে ভালােবাসতে পারেননি
B. অঙ্কের মাস্টারমশাই যে খুব শাসন-পীড়ন করতেন, তা তিনি পরিণত বয়সেও ভুলতে পারেননি
C. তাঁর কাছে সেরকমভাবে লেখারই নির্দেশ ছিল
D. বহুদিন আগের ঘটনা লিখতে গিয়ে সব কথা লেখক স্পষ্ট মনে করতে পারেননি
উত্তর:) অঙ্কের মাস্টারমশাই যে খুব শাসন-পীড়ন করতেন, তা তিনি পরিণত বয়সেও ভুলতে পারেননি
21. “মূল কথাটা এই ছিল…”—পত্রিকায় পাঠানাে লেখাটিতে মূল কথাটি ছিল—
A. ঘােড়া পিটিয়ে গাধা করতে গেলে গাধাটি পঞ্চত্ব পায়
B. অহেতুক তাড়না করে কাউকে শিক্ষা দেওয়া যায় না
C. মাস্টারমশাই ছাত্রদের কল্যাণের জন্যই শাসন করে থাকেন
D. অঙ্ক কষতে ভয় পাওয়ার কোনাে কারণ নেই
উত্তর:) অহেতুক তাড়না করে কাউকে শিক্ষা দেওয়া যায় না
22. পত্রিকার কর্তৃপক্ষ খুশি হয়ে বক্তাকে কত টাকা দক্ষিণা দিয়েছিলেন?
A. দশ B. বিশ C. ত্রিশ D. চল্লিশ
উত্তর:) দশ
23. “মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে এইটুকুই আমার নগদ লাভ।”—এখানে যে লাভের কথা বলা হয়েছে, তা হল—
A. লেখক গণিতে ব্যাপক ব্যুৎপত্তি অর্জন করেছেন
B. ভালাে ফল করায় মাস্টারমশাই তাঁকে পারিতােষিক দিয়েছেন
C. মাস্টারমশাইকে নিয়ে গল্প লিখে লেখক দশ টাকা উপার্জন করেছেন
D. মাস্টারমশাইয়ের সান্নিধ্যে লেখকের গণিতভীতি দূর হয়েছে
উত্তর:) মাস্টারমশাইকে নিয়ে গল্প লিখে লেখক দশ টাকা উপার্জন করেছেন
24. বর্তমানের দাবিটা এত বেশি জোরালাে যে___দিকে তাকাবার অবসর পর্যন্ত মেলে না।”
A. নীতির B. স্মৃতির C. রীতির D. মতির
উত্তর:) স্মৃতির
25. বক্তৃতা দেওয়ার জন্য সুকুমারের কাছে বাংলাদেশের এক প্রান্তের কোথা থেকে ডাক এসেছিল?
A. স্কুল B. কলেজ C. ইউনিভার্সিটি D. অফিস
উত্তর:) কলেজ
26. “আমি সুযােগটা ছাড়তে পারলুম না।”—লেখকের ‘সুযােগ’ হাতছাড়া না করার কারণ—
A. তিনি মূলত বিনা পয়সায় বেড়াতে যেতে চেয়েছিলেন
B. তাঁর পদোন্নতিতে বিষয়টা সাহায্য করত
C. কলকাতা থেকে দূরে যাওয়াটা সবসময়ই তাঁর পছন্দের
D. সেখানকার সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে তিনি বিশেষভাবে আগ্রহী হয়ে পড়লেন
উত্তর:) তিনি মূলত বিনা পয়সায় বেড়াতে যেতে চেয়েছিলেন
27. কলকাতা থেকে কেউ বাইরে গেলে কেমন সংবর্ধনা মেলে?
A. বীরােচিত B. যথােচিত C. রাজোচিত D. ভদ্রোচিত
উত্তর:) রাজোচিত
28. “ব্যক্তি হিসেবে আমি যে এত___এর আগে কে ভেবেছিল সে-কথা।”
A. দায়িত্ববান B. গুণবান C. মূল্যবান D. কর্তব্যজ্ঞানসম্পন্ন
উত্তর:) মূল্যবান
29. “গিয়ে পৌঁছুতে চা-খাবার-আতিথেয়তার উচ্ছাস।”— লেখককে ঘিরে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কলেজটিতে এই উচ্ছ্বাসের কারণ—
A. তিনি সাহিত্যক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছেন
B. বিশেষত তিনি কলকাতা থেকে সেখানে গেছেন
C. তাঁর বাগ্মিতা সম্পর্কে সেখানকার সকলেই ওয়াকিবহাল
D. এই প্রথম তাঁদের ওখানে বড়াে উৎসবের আয়ােজন করা হয়েছে, লেখক যার বিশেষ অতিথি
উত্তর:) বিশেষত তিনি কলকাতা থেকে সেখানে গেছেন
30. “কার একটা ইংরেজি কোটেশন চালিয়ে দিলুম___নামে।”
A. টেনিসন-এর B. বায়রন-এর C. শেকসপিয়র-এর D. বার্নার্ড শ’র
উত্তর:) বার্নার্ড শ’র
short questions – 2-3 marks of দাম (DAAM)
1.“স্কুলে কী বিভীষিকাই যে ছিলেন ভদ্রলােক”—এখানে যাঁর কথা বলা হয়েছে, তিনি কেন বিভীষিকা ছিলেন?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্পের কথক সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা কথক এখানে বর্ণনা করেছেন।
গণিত বিদ্যায় পটু মাস্টারমশাইয়ের কাছে একটি গাণিতিক সমস্যার সমাধান করা খুব কঠিন কিছু ছিল না। তিনি মনে করতেন যে অঙ্ক না বুঝলে জীবনে নিজ অস্তিত্বের কোনো মূল্য নেই। তাই মাস্টারমশাই ছাত্রদের তার সততা ও দায়িত্বের সাথে অঙ্ক শেখানোর প্রচুর প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। তার এইরূপ ভয়ানক শাসন ছিল যে, ছাত্ররা অঙ্ক না পারলে তিনি রাগে তাদের পিঠে জোরে চড় মারতেন, কিন্তু তা সত্ত্বেও ছাত্ররা কেউ কখনো কাঁদতে পারতো না। সেই জন্যে এখানে মাস্টারমশাইকে বিভীষিকার সাথে তুলনা করা হয়েছে।
- “সব যেন ওঁর মুখস্থ”—যাঁর কথা বলা হয়েছে তাঁর সব মুখস্থ ছিল বলে ছাত্রদের কেন মনে হত ?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটোগল্পে কথক সুকুমারের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের বর্ণনা দিয়েছেন। ছাত্রদের ধারণা ছিল যে, মাস্টারমশাইয়ের কাছে বিশ্বের সমস্ত অঙ্কের সমাধান রয়েছে। সবথেকে জটিল অঙ্কগুলিও যা কেউ পারতো না, মাস্টারমশাই তার দক্ষতার সাথে বোর্ডের দিকে তাকিয়েই নিমিষে তার সমাধান করে দিতে পারতেন। শুধু তাই নয়, তিনি যখন অঙ্কগুলি করতেন, দেখে মনে হতো যেন অঙ্কগুলি ইতিমধ্যেই অদৃশ্য অক্ষরে বোর্ডে করা আছে আর মাস্টারমশাই তার উপর হাত বোলাচ্ছেন।
- “ওঁর ভয়ে তারাই তটস্থ হয়ে থাকত”—যাঁর কথা বলা হয়েছে, তাঁর ভয়ে কারা কেন তটস্থ হয়ে থাকত?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্পে যে সমস্ত ছাত্ররা পরীক্ষায় ভালো ফল করত তারাও মাস্টারমশাইয়ের ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকতো। লেখকের স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের অসম্ভব দক্ষতা ছিল। গণিতের সমস্ত সমস্যা, যতই কঠিন হোক না কেন, সমাধান করা তার কাছে খুবই সহজ ছিল। মাস্টারমশাইয়ের মতে, অর্থপূর্ণ জীবন যাপনের জন্য অঙ্ক জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফলস্বরূপ, তিনি সম্পূর্ণরূপে তার গণিত শিক্ষকতার কর্মজীবনে নিজেকে নিবেদিত করেছিলেন। কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ফেল করলে সে ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের চড় মেরে শাস্তি দিত। এমনকি সেরা ছাত্ররাও এই কারণে তাকে ভয় পেত।
4, “কিন্তু কাঁদবার জো ছিল না”—যাদের কথা বলা হয়েছে, তাদের কাঁদবার জো ছিল না কেন?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছোটগল্প ‘দাম’-এর নায়ক সুকুমার ও তাঁর সহপাঠীদের কাঁদবার জো ছিল না।
সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের শিক্ষকের দৃঢ় প্রত্যয় ছিল যে সমস্ত ছাত্রদের অঙ্কের প্রতি ভালোবাসা এবং এবিষয়ে গভীর উপলব্ধি অর্জন করা উচিত। তিনি ছাত্রদের অঙ্ক শেখানোর জন্য সততা ও দায়িত্বের সাথে কঠোর পরিশ্রমও করতেন এবং প্রয়োজনে তাদের কঠোরতর শাস্তি দিতেও পিছুপা হতেন না। মাস্টারমশাই তার ছাত্রদের শেখান যে তাদের অঙ্ক বোঝার বা করার ক্ষমতা না থাকলে আবেগ দেখানো কোনো পুরুষোচিত কাজ নয়। এমনকি তিনি ছাত্রদের মারধরের পর তাদের কান্নাকাটি করতে দেখলে, খুবই রেগে যেতেন।
- “পুরুষ মানুষ হয়ে অঙ্ক পারিস নে”—উক্তিটির আলােকে বক্তার মনােভাব ব্যাখ্যা করাে।
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্পের নায়ক সুকুমারের উচ্চ বিদ্যালয়ের অঙ্কের মাস্টারমশাই এই উক্তিটি করেছেন ।
অঙ্ক মাস্টারমশাইয়ের প্রাণাধিক প্রিয় বিষয় ছিল। তিনি মনে করতেন যে অঙ্ক জানা এবং তা করতে পারা সকল ছাত্রের দায়িত্ব নাহলে তাদের জীবন বৃথা। যেহেতু মাস্টারমশাই ছাত্রদের স্কুলে অঙ্ক শেখানোর দায়িত্বে ছিলেন, তাই তিনি পুরুষত্ব এবং ছাত্রদের অঙ্কের প্রতি দক্ষতাকে সমানভাবে নজর করেছিলেন। অঙ্ক করতে না পারার জন্য ছাত্রদের মারধর করার পর যখনই কান্নাকাটি করতো তখনই তিনি এইভাবে তাদের খুবই বকাঝকা করতেন।
- “ওঁর চড়ের জোর থেকেই আমরা তা আন্দাজ করে নিয়েছিলুম”—যাঁর কথা বলা হয়েছে, তার সম্পর্কে কী আন্দাজ করে নেওয়া হয়েছিল?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্পে স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা বলা হয়েছে।
মাস্টারমশাই নিজে ছিলেন অঙ্কে পারদর্শী এবং জ্ঞানী একজন ব্যক্তি। কোনো ছাত্র অঙ্ক না পারলে তিনি তার পিঠে চড় মারতেন। তিনি ছাত্রদের চড় মারতেন এবং তারপর এতটাই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতেন যে তাদের পা চেপে ধরে স্কুলের পুকুরে ফেলে দেওয়ার হুমকিও দিতেন । তার থাপ্পড়ের জোর থেকে ছাত্ররা অনুমান করেছিল যে তাদের ছুঁড়ে ফেলার শারীরিক ক্ষমতাও মাস্টারমশাইয়ের ছিল।
- “প্লেটোর দোরগােড়ায় কী লেখা ছিল, জানিস?”—বক্তা প্লেটোর দোরগােড়ায় কোন লেখার কথা বলেছেন?
উত্তর:) উদ্ধৃতিটি নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্প থেকে নেওয়া হয়েছে, গল্পে উল্লেখিত চরিত্র সুকুমারের উচ্চ বিদ্যালয়ের অঙ্কের মাস্টারমশাই এই কথাটি বলেছেন।
প্লেটো ছিলেন একজন সুপরিচিত প্রাচীন গ্রীক দার্শনিক এবং গণিতবিদ। তিনি সক্রেটিসের একজন শিষ্য ছিলেন। তাঁর লেখা, “দ্য রিপাবলিক” সর্বকালের সেরা বইগুলির মধ্যে সেরার সেরা হিসাবে পরিচিত। গণিতপ্রিয় মাস্টারমশাই বলেছিলেন যে, প্লেটোর দরজায় এমন কোনো মানুষের প্রবেশ নিষেধ ছিল যারা অঙ্ক করতে অক্ষম। তিনি এও দাবি করেন যে, এই লেখাটি নাকি স্বর্গীয় দরজার উপরেও লেখা আছে।
- “সে স্বর্গের চাইতে লক্ষ যােজন দূরে থাকাই আমরা নিরাপদ বােধ করতুম”—এরকম মনে করার কারণ কী?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্প অনুসারে, অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের মতে অঙ্কে অক্ষমতা খুবই অন্যায় ও লজ্জাজনক। তিনি বলতেন যে গ্রীক গণিতবিদ প্লেটোর দরজায় লেখা ছিল, যারা অঙ্ক জানে না তাদের প্রবেশ তার বাড়িতে নিষিদ্ধ। স্বর্গের দরজায়ও নাকি এই একই বার্তা লেখা আছে । সুকুমার ও তার সহপাঠীরা, মনে করতো যে, যেখানে তাদের জ্যামিতির অতিরিক্ত বা বর্গক্ষেত্রের পরিমাপ গণনা করতে হয় সেখান থেকে দূরে থাকায় নিরাপদের ।
- “সেই বিভীষিকা মন থেকে গেল না”—বক্তা এখানে কোন্ বিভীষিকার কথা বলেছেন?
উত্তর:) উদ্ধৃতিটি নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্প থেকে নেওয়া হয়েছে এবং এই উক্তিটি গল্পের কথক সুকুমার করেছেন।
“দাম” গল্পে উল্লেখিত অঙ্কে দক্ষ মাস্টারমশাই বিশ্বাস করতেন যে তার মতো তার প্রতিটি ছাত্রের অঙ্কের প্রতি অনুরাগী এবং পারদর্শী হওয়া তাদের দায়িত্ব, তার মতে অঙ্ক না শিখলে জীবন মূল্যহীন। অঙ্কের সমস্যার সমাধান করতে না পারলে মাস্টারমশাই ছাত্রদের মারধর করতেন। সুকুমার এবং তার সহপাঠীদের চোখে, মাস্টারমশাইয়ের শাস্তিগুলি অঙ্কের চেয়েও অনেক বেশি ভয়ানক ছিল। এখানে এই দুই বিভীষিকা অর্থাৎ “অঙ্ক ” এবং “অঙ্কের মাস্টারমশাই “-এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
- “লিখলুম তাঁকে নিয়েই”—বক্তা উল্লিখিত ব্যক্তিকে নিয়ে কী লিখেছিলেন ?
অথবা, বক্তা কাকে নিয়ে কী লিখেছিলেন?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্পের নায়ক সুকুমার লেখার জন্য যখন খ্যাতি অর্জন করছে, তখন একটি নামহীন সংবাদপত্র দ্বারা তাঁর বাল্যকাল সম্পর্কিত একটি স্মৃতিকথা লেখার জন্য তাঁর কাছে যোগাযোগ করা হয়। সুকুমার তাঁর সেই আত্মজীবনীতে তাঁর বিদ্যালয়ের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কঠোর রূপ যা তিনি তাঁর কৈশোরে দেখেছিলেন, সে বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন।
পাঠ্যাংশে তিনি মাস্টারমশাইয়ের শিক্ষন পদ্ধতি সম্পর্কে সমালোচনা করেছেন। তাঁর দৃষ্টিতে, ছাত্রদের কোনো বিষয়ে আগ্রহ দেখানোর জন্য জোর করা বা ভয় দেখানো উচিত নয়। একজন শিক্ষার্থীর এইরূপ আচরণে ভয় ছাত্রদের থেকে সেই বিষয়টিকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
- “এইটুকুই আমার নগদ লাভ”—বক্তার এই উক্তিতে ‘নগদ লাভ’ কথাটির তাৎপর্য কী?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্পে কথক সুকুমার তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অঙ্কের শিক্ষক সম্পর্কিত স্মৃতিকথা লিখে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের কাছ থেকে নগদ দশ টাকা পেয়েছিলেন। বাল্যকালে অঙ্ক এবং সেই ভয়ঙ্কর মাস্টারমশাই খুবই ভয়ানক ছিলেন তার কাছে। সুকুমার মনে করতেন যে, মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে শুধুমাত্র প্রহারই তাঁর একমাত্র প্রাপ্য ছিল। সেই মাস্টারমশাইকে নিয়ে সুকুমারের লেখায় এক আর্থিক লাভ হয়েছিল। তার শৈশবের সেই গুরু সম্পর্কে লেখার জন্য পাওয়া দশ টাকা তার কাছে “নগদ লাভ “ হয়েছিল।
- “এখানকার চড়ুই পাখিও সেখানে রাজহংসের সম্মান পায়”—উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করাে।
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্পের কথক সুকুমার ছিলেন একজন মাঝারি মাপের লেখক। বাংলাদেশের দূরবর্তী অঞ্চলে একটি কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানে সুকুমারকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আর সেখানেই বক্তৃতা শেষে তিনি এই মন্তব্য করেছিলেন । মফসসলের নাগরিকরা কলকাতাবাসী সম্পর্কে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে উচ্চ মতামত পোষণ করেন। কলকাতার একজন সাধারণ লেখক সেখানে গিয়ে একজন সুপরিচিত লেখকের সম্মান পান। সুকুমারের দাবি, কলকাতার চড়ুই পাখিও সেখানে গিয়ে রাজহাঁসের সম্মান পায়।
- “আমাদের মতাে নগণ্যের পক্ষে ততই সুখাবহ”—‘আমাদের’ বলতে যাদের কথা বলা হয়েছে, তাদের কাছে কোন বিষয় সুখাবহ?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা “দাম” ছোটগল্পে কথক সুকুমার নিজেকে এবং আরো অন্যান্য মাঝারি মাপের লেখকদের এখানে ‘’আমাদের” বলে উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশের একটি ছোট কলেজের বার্ষিক সমাবেশে যোগদানের আমন্ত্রণ পেয়ে সুকুমার এই মন্তব্য করেছেন। কলকাতায় একজন লেখকের প্রকৃত অবস্থান সম্পর্কে গ্রামবাসীদের স্পষ্ট ধারণা নেই এবং এই কারণে, কলকাতার একজন সাধারণ লেখক একজন বিশিষ্ট লেখকের খ্যাতি এবং সম্মান দুই অর্জন করতে পারেন। এই ব্যাপারটাকেই সুখবহ বলেছেন ।
- “আর হল-ফাটানাে হাততালিতে কান বন্ধ হওয়ার জো”—এই হল ফাটানাে হাততালির কারণ কী?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্পের নায়ক সুকুমার, বাংলাদেশের একটি কলেজের বার্ষিক উৎসবে বক্তৃতা দিতে কলকাতা থেকে যাত্রা করেছিলেন। তিনি একটি দীর্ঘ বক্তৃতা দেন যাতে ভুল করে অন্য কোন লেখকের উদ্ধৃতি বার্নার্ড শ’র নামে কয়েকটি ইংরেজি কোটেশন বলেন এবং রবীন্দ্রনাথের বারোটি উদ্ধৃতি সম্পর্কিত বক্তৃতা দেন। অবশেষে দেশের যুবকদের জেগে ওঠার জন্য আন্তরিকভাবে বার্তা দেওয়ার সময় তিনি টেবিলে এত জোরে আঘাত করলেন যে ফুলদানিটি পড়ে যায় । উচ্ছ্বসিত শ্রোতারা সুকুমারের এইরূপ বক্তৃতা শুনে হল-ফাটানো হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানায় ।
- “ছেলেরা বিস্ময়ে চোখ কপালে তুলল”—ছেলেরা বিস্ময়ে চোখ কপালে তুলল কেন?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্পে একটি দূরবর্তী বাংলাদেশী গ্রামের একটি কলেজে সুকুমারের প্রশংসনীয় বক্তৃতার পরে বৃদ্ধ প্রিন্সিপাল তাঁর অনেক প্রশংসা করেছেন৷ সুকুমার তখন মন্তব্য করেছিলেন যে তাঁর শারীরিক অবস্থা সেরকম ভালো না হওয়ায় তা আরো ভালো বক্তৃতা দিতে পারেননি । ছেলেরা এই কথা শুনে অনুমান করে বুঝতে পারল, তিনি সুস্থ থাকলে আরো কতটা ভালো বক্তৃতা দিতেন ।
- “একটা ভয়ের মৃদু শিহরণ আমার বুকের ভিতর দিয়ে বয়ে গেল”—বক্তার ভয়ের শিহরণ হওয়ার প্রকৃত কারণটি কী ছিল ?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম”ছোটগল্পের কথক সুকুমার আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, যখন বাংলাদেশী গ্রামের কলেজের অনুষ্ঠানে উপস্থিত একজন ব্যক্তি তাকে সেই আবছা আলোতে কলেজ মাঠে তার নাম ধরে সম্বোধন করেন।
এরাম অপরিচিত জায়গায় একজন অপরিচিত ব্যক্তির কাছে তার নাম উচ্চস্বরে উচ্চারণ করতে শুনে তিনি হতবাক হয়ে যায়। পরমুহূর্তে সুকুমার তাৎক্ষণিকভাবে সেই কণ্ঠস্বর চিনতে পারে। স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের ভয়ঙ্কর সেই কণ্ঠে অঙ্ক করতে না পারার জন্য শৈশবের সেই কঠোর শাস্তি পাওয়ার কথা তার মনে পরে যায়। তাঁর শিহরিত হওয়ার এটাই ছিল প্রকৃত কারণ ।
- “আমার গায়ের রক্ত হিম হয়ে এসেছে”—বক্তার গায়ের রক্ত কেন হিম হয়ে যেত?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছোটগল্পে কথক সুকুমার উদ্ধৃতিটি করেছেন।
স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই সুকুমারের নাম ডাকার সাথে সাথেই সুকুমারের রক্ত হিম হয়ে যেত । সুকুমার কখনোই অঙ্কে ভালো ছিলেন না। অন্যদিকে, মাস্টারমশাই বিশ্বাস করতেন যে অঙ্ক করতে না পারাটা অত্যন্ত লজ্জাজনক ব্যাপার। অতএব, যদি কোনো ছাত্র অঙ্কে পারদর্শী না হয়, তবে তিনি তাদের পিঠে শক্ত চড় মারতেন। এই মারধরের ভয়ে শৈশবকালে বেশ অনেকদিন ধরে সুকুমারের রক্ত হিম থাকত।
- “সেই ভয়টার কঙ্কাল লুকিয়ে ছিল মনের চোরাকুঠুরিতে”—উক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করাে।
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘‘দাম’’ ছোটগল্পের কথক সুকুমার এই উদ্ধৃতিটি করেছিলেন।
সুকুমার কখনোই অঙ্কে ভালো ছিলেন না। স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন অত্যন্ত অঙ্কপ্রিয় একজন মানুষ। কোনো ছাত্র অঙ্ক করতে না পারলে মাস্টারমশাই তাদের প্রচণ্ড মারধর করতেন। সুকুমারও নিয়মিত সেই মার থেকে কখনো পার পেত না। তাই, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও, অঙ্ক এবং মাস্টারমশাইয়ের মারধরের ভয় তাঁর মনের গভীরেভাবে কোথাও এখনো যেন লুকিয়ে আছে। অনেকদিন পর হঠাৎ সেই ভয়কে আবার জাগিয়ে দিল মাস্টারমশাইয়ের সেই কন্ঠস্বর।
long questions – 5 marks of দাম (DAAM)
- ‘দাম’ ছোটোগল্পটি অবলম্বনে মাস্টারমশাইয়ের চরিত্র আলােচনা করাে।
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্পটিতে মাস্টারমশাই চরিত্রটি অসাধারণ চরিত্র।
গল্পের কথক সুকুমারের স্কুলমাস্টার গণিতে অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন। যে কোন কঠিন গণিত তার পক্ষে সমাধান করা অত্যন্ত সহজ ছিল ।
অঙ্ককে ভালবাসা এবং অঙ্ক করতে পারা প্রতিটি ছাত্রের দায়িত্ব, তাই তিনি ছাত্রদের মধ্যে অঙ্কের প্রতি ভালবাসা জাগ্রত করাকে তাঁর লক্ষ্য হিসাবে বেছেনিয়েছিলেন। এই আবেগের কারণে, যে ছাত্ররা অঙ্ক করতে অপারক তাদের পিঠে মারতেন। এই কারণে মাস্টারমশাই শিক্ষার্থীদের কাছে বিভীষিকা হয়ে উঠেছিলেন ।
সুকুমারের স্মৃতিতে লেখা নিজের সমালোচনাকে সন্তানের অধিকার হিসেবে তিনি সদয়ভাবে গ্রহণ করেছিলেন। বৃদ্ধ মাস্টারের সবচেয়ে বড় পাওনা হল ছাত্র তাকে মনে রেখেছে।
সকল ছাত্রের কাছে যে, সব বিষয় প্রিয় হতে পারেনা এবং কোনোরকম ভীতি যে সেই বিষয়ের প্রতি ভালোবাসা আনতে পারে না, তা মাস্টারমশাই উপলব্ধি করতে পারেননি। বরং সেই ভীতি তা থেকে আরো দূরে সরিয়ে দেয় । এরূপ শিক্ষাপদ্ধতির ত্রুটির কারণে ছাত্ররা মাস্টারমশাইয়কে ভুল ভুল বুঝত । প্রকৃতপক্ষে, তিনি ছিলেন একজন আদর্শবাদী, কর্তব্যপরায়ণ এবং উপযোগী প্রশিক্ষক। মাস্টারমশাইয়ের ক্ষমাশীল দৃষ্টিতে, ছাত্রের দেওয়া সকল আঘাতই ছাত্রের শ্রদ্ধার ফুল হয়ে তাঁর পায়ে পড়েছে।
- অথবা, ‘আমি তাঁকে দশ টাকায় বিক্রি করেছিলুম’—এই উক্তিটির আলােকে সুকুমার চরিত্রটি আলােচনা করাে।
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্পে সুকুমার কখনোই অঙ্কে শক্তিশালী ছিলেন না। আর সেজন্যই সুকুমারের কাছে অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন মূর্তিমান বিভীষিকা । সুকুমার ম্যাট্রিকুলেশনের পর অঙ্ক ও মাস্টারমশাই দুইয়ের কাছ থেকেই রেহাই পেয়েছিলেন কিন্তু সেই সেই ভয় তাকে দুঃস্বপ্নে দীর্ঘকাল ধরে অনুসরণ করেছিল।
পরে, বাংলার অধ্যাপক ও লেখক সুকুমার, বিভীষিকামূর্ত মাস্টারমশাইয়ের বিবরণ দিয়ে একটি নামহীন সংবাদপত্রে স্মৃতিকথা প্রকাশ করেন।
আত্মবিশ্লেষণ হলো সুকুমার চরিত্রের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য । তিনি স্বীকার করেছেন যে, তিনি একজন মাঝারি মাপের লেখক, তার বক্তৃতা আবেগপ্রবণ, অন্তঃসারশূন্য এবং তিনি তার প্রাপ্যের চেয়ে অনেক বেশি প্রশংসা পেয়েছেন এ বিষয়ে একটুও কুন্ঠিত বোধ করেননি।
বহু বছর পরে সুকুমারের সাথে তার প্রাক্তন বিভীষিকা অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের দেখা হলে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে তিনি ভোলেননি। সুকুমার সম্মানের সাথে অঙ্কের মাস্টারের দক্ষতার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি মাস্টারকে ভয় পেলেও তাকে অসম্মান করতেন না।
সুকুমারের পরিণত মন বুঝতে পারে যে এই মুহূর্ত পর্যন্ত, তিনি যা দেখেছেন তা হল মাস্টারমশাইয়ের শাসনের ভয়াবহতা, কিন্তু তার স্নেহ উপলব্ধি করতে পারেনি। সেই মানুষটির অমূল্য ভালবাসা, যার ভালবাসা-মমতা-ক্ষমা তিনি দশ টাকায় বিক্রি করেছিলেন, তাঁর অমূল্য স্নেহ যে তার মাথায় পড়েছিল, তাতে সুকুমার প্রচণ্ড আত্মঘৃণা অনুভব করেছিলেন।
- নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ গল্পটি ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক আলােচনা করাে।।
উত্তর:) লেখক নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ‘দাম’ ছোটগল্পে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ককে ভালোবাসা, মমতা ও শ্রদ্ধার মিশেলকে বিশেষ উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন। সুকুমার এবং তার অঙ্কের মাস্টারমশাই শিক্ষক ও ছাত্রসমাজের প্রতিনিধিত্ব করেছে ।
ছোটবেলায় সুকুমারের অঙ্কের মাস্টারমশায়ের পাণ্ডিত্য ছিল অপরিসীম কিন্তু সুকুমার ও তার সহপাঠীদের কাছে মাস্টারমশাই ছিলেন বিভীষিকা স্বরূপ। কারণ অঙ্ক না পারলে তিনি ছাত্রদের উপর রেগে যেতেন এবং তাদের পিঠে চড় দিতেন।
সুকুমারের সমালোচনামূলক বাল্যস্মৃতি পড়ে মাস্টারমশাই উপলব্ধি করেছিলেন যে, ভীতির কারণে ব্যক্তির সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টিও ধীরে ধীরে মন থেকে দূরে সরে যায়। এমতাবস্থায় আত্মমমতা তাঁর আধ্যাত্মিক জাগরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
অন্যদিকে, সুকুমারও বুঝতে পেরেছিলেন যে মাস্টারমশাইয়ের আপাত শাসন সত্ত্বেও, তিনি কিশোর বয়সে তার প্রতি ভালোবাসার ফল্গুধারা উপলব্ধি করতে পারেননি। মাস্টারমশাই-এর শিক্ষন পদ্ধতিতে কিছু ভুল ছিল কিন্তু ছাত্রদের অঙ্ক শেখানোর জন্য তাঁর নিষ্ঠা ছিল অপরিসীম। এইভাবে, গল্পটি ছাত্র এবং শিক্ষকদের মধ্যে একটি শ্রদ্ধাপূর্ণ এবং স্নেহময় সম্পর্কের অধ্যবসায়ের বিষয়বস্তুকে গ্রহণ করেছে।
- ‘দাম’ গল্পটি ছােটোগল্প হিসেবে কতটা সার্থক আলােচনা করাে।
উত্তর:) “দাম” ছোটোগল্পটি আয়তনের সংক্ষিপ্ততা ছাড়াও ছোটগল্পের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য বহন করে।
চরিত্রের স্বল্পতা: নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ গল্পের চরিত্রগুলো বিরল। প্রধান চরিত্র হলো সুকুমার এবং তার স্কুলের অঙ্কের । এ ছাড়া কলেজের অধ্যক্ষ ও কয়েকজন নগণ্য শিক্ষার্থীর নাম রয়েছে ।
ঘটনার স্বল্পতা: ‘দাম’ গল্পের ঘটনা অসংখ্য নয়। স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের সাথে সুকুমার এবং তার সহপাঠীদের সম্পর্ক দিয়ে ‘দাম’ গল্পটি শুরু হয়েছে । এর বাইরে আর কোনো ঘটনার উল্লেখ নেই। সেই সম্পর্কের একমুখীনতা নিয়েই গল্পটি শেষ হয় ।
গল্পের উপসংহারে বিস্ময়: গল্পের শেষে শিক্ষক এবং ছাত্রের সাক্ষাৎ ঘটায় সুকুমার জানতে পারে যে, স্বয়ং মাস্টারমশাই তাঁর বাল্যস্মৃতি পড়েছেন এবং এর ফলে যেভাবে ছাত্র এবং শিক্ষকের মধ্যে সম্পর্ক নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা নিঃসন্দেহে পাঠকের কাছে বিস্ময়কর ব্যাপার।
মাস্টারমশাই তাঁর ছাত্রের সমালোচনা উদার মনে গ্রহণ করেছেন এবং তা সুকুমারের স্বগতোক্তির মধ্য দিয়ে গল্পটি শেষ হয়ে যাওয়ায় পাঠকের মনে কোথাও একটা অতৃপ্তি থেকেই যায়, এর পর কি হয়েছে এই ভেবেই ।
‘দাম’ গল্পটিতে ছোটগল্পের সমস্ত বৈশিষ্ট্য বর্তমান থাকায়, বলা যেতে পারে যে ছোটোগল্প হিসেবে ‘দাম’ গল্পটি স্বার্থ হয়েছে।
- “মনে এল মাস্টারমশাইয়ের কথা। লিখলুম তাঁকে নিয়েই”— কার, কেন মাস্টারমশাইয়ের কথা মনে এল ? তাঁকে নিয়ে বক্তা কী লিখলেন?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্পে কথক সুকুমারকে একটি নামহীন পত্রিকা তার শৈশবের স্মৃতিকথা লিখতে বললে, তিনি লেখার বিষয়বস্তু হিসেবে তার স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা ভেবেছিলেন ।
সুকুমার স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইকে স্মরণ করেছিলেন, যিনি ছাত্রদের কাছে একজন বিভীষিকাস্বরূপ এবং তাদের কাছে ভয়ের উৎস ছিলেন। মাস্টারমশাইয়ের অসাধারণ পান্ডিত্যের কারণে তিনি যে কোন জটিল অঙ্ক নিমেষের মধ্যে সমাধান করে ফেলতেন । তিনি মনে করেন যে, অঙ্ক শেখা এবং অঙ্ককে ভালবাসা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর দায়িত্ব। তাই যারা অঙ্ক পারতো না তাদের পিঠে নেমে আসত তাঁর হাতের প্রচন্ড চড় । সেই চড়ের পর ছেলেরা কিছুতেই কাঁদতে পারতো না তাতে তিনি আরও বেশি ক্ষিপ্ত হতেন কারণ তিনি মনে করতেন পুরুষমানুষ মানেই অঙ্ক পারতে হবে, আর যদি না পারে তবে সে কাঁদতেও পারবে না। এমনকি তিনি ছাত্রদের ভয় দেখিয়ে চিৎকার করে বলতেন যে, ওদের স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন।
ছাত্ররা মাস্টারমশাইয়ের চড়ের জোরে বিশ্বাস করেছিল যে, তিনি চাইলে সত্যিই তাদের ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারেন। ছাত্ররা স্বাভাবিকভাবেই তাকে যমের মতো ভয় করত এবং সময় গুনছিল কবে তারা অঙ্ক থেকে এবং মাস্টারমশাইয়ের থেকে মুক্তি পাবে ।
বাল্যস্মৃতিতে, সুকুমার এই বিষয়ে আলোচনা করেছেন এবং মাস্টারমশাইয়ের সমালোচনাও করেছেন। এখানে লেখার মধ্যে একটি বাস্তববাদী এবং কল্পনাপ্রসূত মিশ্রণ ছিল।
- “ছবিটা যা ফুটল, তা খুব উজ্জ্বল নয়”—এখানে কোন ছবির কথা বলা হয়েছে? ছবিটা উজ্জ্বল নয় কেন?
উত্তর:) উদ্ধৃত অংশটি নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ ছোটগল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে ছবি বলতে গল্পের কথক সুকুমার স্কুলের মাস্টারমশাইকে নিয়ে যে বাল্যস্মৃতি লিখেছিলেন তাতে মাস্টারমশাইয়ের ছবিটির কথা বলা হয়েছে।
সুকুমার ও তার সহপাঠীদের কাছে স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই হলেন একজন মূর্তিমান বিভীষিকা। মাস্টারমশাইয়ের অসাধারণ পান্ডিত্যের কারণে তিনি যে কোন জটিল অঙ্ক নিমেষের মধ্যে সমাধান করে ফেলতেন । কিন্তু ছাত্রদের বিপদের কারণ হলো মাস্টারমশাই-এর অঙ্কের পান্ডিত্য। তিনি মনে করেন যে, অঙ্ক শেখা এবং অঙ্ককে ভালবাসা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর দায়িত্ব। তিনি মনে করেন যে, অঙ্ক শেখা এবং অঙ্ককে ভালবাসা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর দায়িত্ব। তাই যারা অঙ্ক পারতো না তাদের পিঠে নেমে আসত তাঁর হাতের প্রচন্ড চড় । সেই চড়ের পর ছেলেরা কিছুতেই কাঁদতে পারতো না তাতে তিনি আরও বেশি ক্ষিপ্ত হতেন। তিনি মনে করতেন পুরুষমানুষ মানেই অঙ্ক পারতে হবে, আর যদি না পারে তবে সে কাঁদতেও পারবে না। এমনকি তিনি ছাত্রদের ভয় দেখিয়ে চিৎকার করে বলতেন যে, ওদের স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন। ছাত্ররা মাস্টারমশাইয়ের চড়ের জোরে বিশ্বাস করেছিল তিনি চাইলে সত্যিই তাদেরপুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারেন।
মাস্টারমশাইয়ের চিত্রায়ন যা সুকুমার শৈশবে এঁকেছিলেন তা পরে তাঁর স্মৃতিকথায় প্রতিফলিত হয়েছে। উপরন্তু, লেখায় লেখকের কল্পনার উপাদান অন্তর্ভুক্ত ছিল। ফলে ছোটবেলা থেকেই মাস্টারমশাইয়ের স্মৃতিশক্তি মোটেও ঊজ্জ্বল ছিল না।
- “আমার ছাত্র আমাকে অমর করে দিয়েছে”—বক্তা কে? উক্তিটির আলােকে বক্তার মানসিকতা আলােচনা করাে।
উত্তর:) উদ্ধৃতাংশটি নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। উদ্ধৃতির বক্তা হলেন, কথক সুকুমার যে স্কুলে পড়তেন সেই স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই ।
যখন তিনি একজন শিক্ষক ছিলেন, তখন মাস্টারমশাই তাঁর ছাত্রদের কাছে একটি মূর্তিমান বিভীষিকা ছিলেন; তারা অঙ্ক না পারলে, তাদের তিনি মারতেন। তাই ছাত্ররা তাঁকে যমের মতো ভয় পেত।
অঙ্কে দুর্বল সুকুমার পরবর্তীকালে লেখক হিসেবে, এক অনামী পত্রিকায় বাল্যস্মৃতিতে শিক্ষকের সমালোচনা করার পাশাপাশি, এও বলেছেন যে কাউকে জোরপূর্বক ভয় দেখিয়ে কোনো বিষয়ের প্রতি ভালোবাসা আনা যায় না।
পরে জানা যায় মাস্টারমশাই সুকুমারের এই লেখা পড়ার পরে একটুও বিচলিত না হয়ে ছাত্রের সমস্ত সমালোচনা গ্রহণ করেছিলেন, তাদের সাথে সন্তানের মতো আচরণ করেছিলেন। তাঁর কাছে এটাই গর্বের যে, এত বছর পরও একজন ছাত্র তাকে স্মরণ করে সংবাদপত্রে তার সম্পর্কে একটি গল্প প্রকাশ করেছেন। নিজের নাম ছাপানো দেখে তাঁর মনে হয়েছিল ছাত্রটি তাকে অমর করে দিয়েছে । তার কোন ধারণা ছিল না যে ছাত্রটি তাকে আঘাত করতে পারে। এটি তাঁর ছাত্রদের প্রতি উদারতা এবং ভালবাসা প্রকাশ করে।
- “স্বর্গের দরজাতেও ঠিক ওই কথাই লেখা রয়েছে”— স্বর্গের দরজাতে কী লেখা রয়েছে? বক্তা এমন কথা বলেছেন কেন?
উত্তর:) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “দাম” ছোটগল্পে কথক মাস্টারমশায়ের যে উক্তিটি উদ্ধৃত করার চেষ্টা করেছেন তা হলো যে, স্বর্গে প্রবেশ করতে হলে অবশ্যই অঙ্ক জানতে হবে।
ছাত্রদের কাছে অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন মূর্তমান বিভীষিকা। ছাত্ররা ঘণ্টার পর ঘণ্টা যেসব জটিল অঙ্ক অনুশীলন করতেন, তা তিনি দ্রুত বোর্ডে করে ফেলতেন। যেন বিশ্বের সবরকম অঙ্কেই তিনি পারদর্শী। মনে হয় যেন অঙ্কগুলো বোর্ডে অদৃশ্য অক্ষরে লেখা রয়েছে এবং তিনি কেবল তার উপর খড়ি বোলাচ্ছেন। তিনি তার ছাত্রদের কাছ থেকেও একই দক্ষতা আশা করেছিলেন।
এমনকি যারা একশোর মধ্যে একশো পেতো, তারাও তাঁকে ভয় করতো। মাস্টারমশাই দুর্বলদের চড় মারলেও তাদের কান্নার উপায় ছিল না। তিনি চিৎকার করে বলতেন পুরুষ মানুষের অঙ্ক না জানা লজ্জার। তাদের চোখে সামান্য জল থাকলেও তিনি ভয় দেখাতেন স্কুলের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলার ।
তিনি এই প্রসঙ্গে প্লেটোর দরজায় লেখা কথাটি বলেছিলেন, “যে অঙ্ক জানে না – এখানে তার প্রবেশ নিষেধ” । তিন বলেছিলেন যে, স্বর্গের প্রবেশদ্বারেও এভাবেই লেখা রয়েছে । আসলে অঙ্কপ্রিয় মাস্টারমশাইয়ের কাছে অঙ্ক জানাটা ছিল একমাত্র পার্থিব ও অ-জাগতিক একমাত্র কাজ।