আপনি এখানে শিখবেন এই অধ্যায়ে এবং বিষয়ের ফাউন্ডেশন অংশটা, এই বিষয়টিকে সহজ-সরলভাবে পড়িয়েছেন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ভিডিও লেকচার এর মাধ্যমে এবং এই পুরো অধ্যায়কে চার ভাগে খন্ডিত করে আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে
- প্রথম খন্ডে আপনি শিখবেন ফাউন্ডেশন অংশটা যেখানে অধ্যায়ের ব্যাপারে আপনাকে বোঝানো হয়েছে তার মানে definitions,basics গুলো সহজভাবে. এবং এটাকে আপনি বুঝতে পারবেন যেটা আপনাকে পরীক্ষার জন্য ক্রীপের করতে সাহায্য করবে
- দ্বিতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন MCQ মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন যেটা সাধারণত এক Marks’er আসে পরীক্ষায়
- তৃতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন শর্ট অ্যানসার এবং কোয়েশ্চেন, যেটা আপনার পরীক্ষার সাজেশন মধ্যে পড়ে এবং এটা 3-4 marks’er প্রশ্ন আসে আপনার পরীক্ষা
- চতুর্থ মডিউল আপনি শিখবেন লং আনসার এবং questions যেটা সাধারণত 5-6 marks er হয়
আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন যাতে কি আপনাকে আমরা সাহায্য করতে পারি
আবহবিকার কি হয়?
যে প্রক্রিয়ার দ্বারা ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগের শিলাসমূহ আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানের (তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত, তুষারপাত ইত্যাদি) প্রভাবে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয় এবং রাসায়নিক পদ্ধতিতে বিয়োজিত হয়, সেই প্রক্রিয়াকে আবহবিকার বলে।
ক্ষয়ীভবন কি হয়?
যখন আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান (বাতাস, বৃষ্টিপাত ইত্যাদি) এবং বাহ্যিক প্রাকৃতিক শক্তির (নদী, হিমবাহ, সমুদ্রের তরঙ্গ ইত্যাদি) সম্মিলিত প্রভাবের ফলে ভূ-পৃষ্ঠের শিলাস্তর চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে মূল শিলা থেকে অপসারিত হয়, তাকে ক্ষয়ীভবন বলে।
অর্থাৎ, ক্ষয়ীভবন হল শিলার বিচূর্ণীভবন, বিয়োজন এবং অপসারণের সম্মিলিত প্রক্রিয়া। এর প্রধান চারটি মাধ্যম হল নদীস্রোত, বায়ুপ্রবাহ, হিমবাহ ও সমুদ্রতরঙ্গ।
পুঞ্জিত ক্ষয় কি হয়?
ভূবিজ্ঞানী শার্পের মতে, আবহাওয়ার কারণে সৃষ্ট আলগা ও চূর্ণ শিলারাশি মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে যখন অত্যন্ত ধীর গতিতে ভূমির ঢাল বরাবর নীচের দিকে নেমে আসে, তখন তাকে পুঞ্জিত ক্ষয় বলে। পুঞ্জিত ক্ষয়ের প্রধান মাধ্যম হলো ভূমির ঢাল এবং মাধ্যাকর্ষণ শক্তি।
নগ্নীভবন : যখন আবহবিকার, ক্ষয়ীভবন ও পুঞ্জিত ক্ষয় একত্রে কাজ করে শিলার ওপরের অংশকে অপসারিত করে মূল শিলার অভ্যন্তরভাগের উন্মোচন করে তখন তাকে নগ্নীভবন বলে।
প্রক্রিয়া অনুসারে আবহবিকারের শ্রেণিবিভাগ কি হয়?
আবহবিকারকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে : যান্ত্রিক আবহবিকার এবং রাসায়নিক আবহবিকার। এছাড়া যান্ত্রিক এবং রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় মানুষ, গাছপালা এবং প্রাণী আবহবিকার ঘটায় যা জৈব আবহবিকার নামে পরিচিত।
যান্ত্রিক আবহবিকার কি হয়?
যখন প্রভৃতি প্রাকৃতিক প্রভাবে যেমন উষ্ণতার পরিবর্তন, শিলাস্তরে চাপের তারতম্য, বৃষ্টিপাত, তুষার কার্য দ্বারা শিলাসমূহ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে মূল শিলার ওপরেই অবস্থান করে, তাকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলে।
যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রক্রিয়াসমূহ :
ভূবিজ্ঞানী রাইশের মতে, পাঁচটি প্রক্রিয়ার দ্বারা যান্ত্রিক আবহবিকার সংঘটিত হয়। সেগুলি হলো
- উষ্ণতার তারতম্য
- ওজনহীন সম্প্রসারণ
- কেলাস গঠন
- কলয়েড উৎপাটন
- জৈবিক কার্যাবলি
উষ্ণতার তারতম্যে, প্রস্তর চাঁই খণ্ডীকরণ, শল্ক মোচন, ক্ষুদ্রকণা বিশরণ প্রক্রিয়া ও তুষার ক্রিয়ার ফলে খন্ড বিশরণ প্রক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠে সর্বাধিক আবহবিকার হয়।।
প্রস্তর চাঁই খণ্ডীকরণ
ক্রান্তীয় মরু অঞ্চলে, উষ্ণতার তারতম্যে যে প্রক্রিয়ায় শিলাস্তর চাঁই বা খন্ডের আকারে ভেঙে গিয়ে মূল শিলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তাকে প্রস্তর চাঁই খণ্ডীকরণ বলে।
প্রস্তর চাঁই খন্ডীকরণের প্রক্রিয়া : মরুভূমিতে, শিলা সূর্যের প্রবল তাপে উত্তপ্ত হয় এবং প্রসারিত হয় অনুরূপভাবে রাতে তাপ বিকিরণ করে সংকুচিত হয়। তাপীয় ঢালের কারণে শিলার অভ্যন্তরীণ স্তরের তুলনায় উপরিস্তর বেশি প্রসারিত বা সংকুচিত হয়।
দিনের পর দিন এই ক্রমাগত সংকোচন এবং প্রসারণের ফলে শিলার উচ্চ এবং নীচের স্তরগুলির মধ্যে যথেষ্ট চাপের সৃষ্টি হয়। যখন এই চাপ একটি নির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করে, তখন শিলা স্তরে সমান্তরাল এবং উল্লম্ব ফাটল সৃষ্টি হয়।
শিলার উপরিস্তর ওই ফাটল বরাবর বর্গাকার বা আয়তকারে খন্ডে খন্ডে ভেঙে গিয়ে মূল শিলা থেকে পৃথক হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়াটি প্রস্তর চাঁই খণ্ডীকরণ নামে পরিচিত। পৃথিবীর বিশাল মরুভূমিতে পাললিক শিলাগঠিত অঞ্চলে এই আবহবিকার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
শল্কমোচন কি হয়?
মরু অঞ্চলে উষ্ণতার তারতম্যে যে প্রক্রিয়ায় সমপ্রকৃতির শিলার স্তরগুলি পিঁয়াজের খোসার মতো খুলে ভেঙে পড়ে যায়, তাকে শল্কমোচন বলে।
শল্কমোচনের প্রক্রিয়া : যেহেতু শিলা তাপের কুপরিবাহী তাই মরু অঞ্চলে দিন ও রাত্রির উষ্ণতার তারতম্যে শিলার উপরিস্তর থেকে ভিতরের স্তরের দিকে তাপীয় ঢালের সৃষ্টি হয়। ফলস্বরূপ, প্রায় অভিন্ন খনিজ পদার্থ দ্বারা গঠিত শিলাকেন্দ্রিক স্তরগুলি ক্রমাগত অসমভাবে প্রসারিত এবং সংকুচিত হতে থাকে।
দীর্ঘদিন এই অসম সংকোচন ও প্রসারণের ফলে একসময় শিলার ওপরের স্তরগুলি পিঁয়াজের খোসার মতো মূল শিলা থেকে খুলে যায়, এই প্রক্রিয়াকেই শল্কমোচন বলে।
এই প্রক্রিয়ায় প্রায় গোলাকার শিলাস্তূপের সৃষ্টি হয় বলে এই আবহবিকার উপগোলাকার আবহবিকার নামেও পরিচিত। আফ্রিকার সাহারা মরুভূমিতে গ্রানাইট শিলাগঠিত অঞ্চলে এরূপ আবহবিকার দেখা যায়।
ক্ষুদ্রকণা বিশরণ
উষ্ণতার তারতম্যের কারণে মরু অঞ্চলে যে প্রক্রিয়ার দ্বারা বিষম প্রকৃতির শিলা প্রচন্ড শব্দ করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খন্ডে চূর্ণবিচূর্ণ হয়, তাকে ক্ষুদ্রকণা বিশরণ বলে।
ক্ষুদ্রকণা বিশরণের প্রক্রিয়া : মরু অঞ্চলে, বিভিন্ন খনিজ পদার্থের সংমিশ্রণে গঠিত শিলাগুলি উষ্ণতার তারতম্যে প্রসারিত এবং সঙ্কুচিত হয়। দিন ও রাতের উষ্ণতার পার্থক্যে শিলায় খনিজ পদার্থের সংকোচন এবং প্রসারণের ফলে শিলায় অসম চাপ তৈরি হলে প্রচন্ড টানের সৃষ্টি হয়। এই টানের ফলে একসময় শিলাটি প্রচন্ড শব্দে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খন্ডে চূর্ণবিচূর্ণ হয়, একেই ক্ষুদ্রকণা বিশরণ বলে। গ্রানাইট শিলা গঠিত অঞ্চলে এই আবহবিকার দেখা যায়।
তুষারের কার্যে খণ্ড বিশরণ কি হয়?
উচ্চ পার্বত্য প্রদেশের ঠাণ্ডা জলবায়ু অঞ্চলে যখন তুষার বা বরফ জলের কেলাস তৈরির মাধ্যমে শিলা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খন্ডে পরিণত করে তখন তাকে খন্ড বিশরণ বলে।
খন্ড বিশরণের প্রক্রিয়া : উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে দিনের বেলায় তুষার বা বরফগলা জল শিলার ফাটলে প্রবেশ করে। রাতে যখনউষ্ণতা হিমাঙ্কের নীচে নেমে যায়, তখন জল বরফে পরিণত হয়, আয়তনে 9 শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
এর ফলে শিলা ফাটলের উভয় পাশের দেওয়ালে যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করে। একসময়, ফাটল বড় হয়ে প্রাচীরের উভয় পাশের দেওয়ালের শিলাস্তর ভেঙে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রস্তর খন্ডে পরিণত হয়।
রাসায়নিক আবহবিকার কি হয়?
শিলাসমূহ যখন জল, জলে দ্রবীভূত অ্যাসিড, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং অক্সিজেন গ্যাস প্রভৃতির প্রভাবে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় বিয়োজিত হয়, তাকে রাসায়নিক আবহবিকার বলে।
রাসায়নিক আবহবিকার কীভাবে ঘটে?
এক বা একাধিক খনিজের সমন্বয়ে শিলা তৈরি হয় এবং খনিজগুলি একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সংযোগসাধক বস্তুর দ্বারা যুক্ত থাকে।
জল, অ্যাসিড এবং বায়ু গ্যাসের প্রতিক্রিয়ার ফলে, সংযোগকারী মাধ্যমটি নষ্ট হলে শিলা রাসায়নিকভাবে বিয়োজিত হয়। এই জাতীয় আবহবিকারে শিলার ভৌত এবং রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যগুলি পরিবর্তিত হয় এবং শিলায় খনিজ পদার্থের ঘনত্ব কমে যায় এবং মৌল খনিজে পরিণত হয়।
রাসায়নিক আবহবিকারের প্রক্রিয়াসমূহ :
রাসায়নিক আবহবিকার পাঁচটি প্রক্রিয়ার দ্বারা ঘটে, কিন্তু ভূপৃষ্ঠে চারটি প্রধান প্রক্রিয়ায় রাসায়নিক আবহবিকার সংঘটিত হয়, যথা –
- অক্সিডেশন বা জারণ
- কার্বনেশন বা অঙ্গারযোজন
- হাইড্রোশেন বা জলযোজন
- হাইড্রোলিসিস বা আর্দ্রবিশ্লেষণ
এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে, দ্রবণ বা সলুউশন প্রক্রিয়াতেও রাসায়নিক আবহবিকার ঘটে।
জারণ বা অক্সিডেশন : রাসায়নিক বিক্রিয়ায় শিলা খনিজের সঙ্গে অক্সিজেন যুক্ত হয়ে যে আবহবিকার ঘটে তাকে জারণ বা অক্সিডেশন বলে। জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন শিলামধ্যস্থ সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম এবং অন্যান্য খনিজের সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে শিলার আবহবিকার ঘটায়।
জারণ প্রক্রিয়া :
শিলামধ্যস্থ লৌহ খনিজ যদি ফেরাস অক্সাইড রূপে থাকে তবে তা খুব কঠিন হয়। জারণ প্রক্রিয়ায় দ্রবীভূত অক্সিজেন যুক্ত হয়ে তা যখন ফেরিক অক্সাইডে পরিণত হয় তখন এটি সহজেই ভেঙে যায়। ঠিক একইভাবে ম্যাগনেটাইট লৌহ খনিজের সাথে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন যুক্ত হয়ে জারণ প্রক্রিয়ায় লিমোনাইট তৈরি তৈরী করে। ফলস্বরূপ, শিলায় উপর মরিচা পড়ে এবং তা ভঙ্গুর করে তোলে।
আবার, ফেরাস সালফাইড অক্সিডেশন প্রক্রিয়ায় ফেরাস সালফেট-এ পরিণত হয় ।
অঙ্গারযোজন বা কার্বনেশন : যে আবহবিকার শিলামধ্যস্থ খনিজের সঙ্গে বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইডের রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ঘটে, তাকে অঙ্গারযোজন বা কার্বোনেশন বলে ।
অঙ্গারযোজন প্রক্রিয়া কীভাবে ঘটে?
বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই অক্সাইড বৃষ্টির জলের সাথে বিক্রিয়া করলে মৃদু কার্বনিক অ্যাসিড তৈরি হয় । এই মৃদু কার্বনিক অ্যাসিড ধারণকারী জল ক্যালশিয়াম কার্বোনেট সমৃদ্ধ চুনাপাথর বা পাথরের সাথে ক্যালসিয়াম বাইকার্বোনেট তৈরি করতে রাসায়নিকভাবে একত্রিত হয়, যা জলে সহজেই দ্রবীভূত হয় ।
আর্দ্র নাতিশীতোষ্ণ চুনাপাথর গঠিত কার্স্ট অঞ্চলে অঙ্গারযোজন সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ।
জলযোজন বা হাইড্রোশেন : যে আবহবিকার শিলামধ্যস্থ খনিজের সঙ্গে জলের রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ঘটে, তাকে জলযোজন বা হাইড্রোশেন ।
জলযোজন প্রক্রিয়া কীভাবে ঘটে? এই প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন দ্রবীভূত পদার্থ শিলামধ্যস্থ খনিজের বন্ধনগুলিকে আলগা করে গৌণ খনিজগুলিকে নমনীয় করে তোলে ।
জলযোজন প্রক্রিয়ায় ক্যালসিয়াম সালফেটের সঙ্গে জল যুক্ত হয়ে জিপসাম উৎপন্ন করে ।
আর্দ্রবিশ্লেষণ বা হাইড্রোলিসিস : যে আবহবিকার শিলামধ্যস্থ খনিজ ও জলের অণুর রাসায়নিক বিক্রিয়ায় শিলার বিয়োজন ঘটে নতুন যৌগ গঠনের মাধ্যমে সংঘটিত হয়, তাকে আর্দ্রবিশ্লেষণ বা হাইড্রোলিসিস বলে ।
আর্দ্রবিশ্লেষণ প্রক্রিয়া কীভাবে ঘটে?
জল আর্দ্রবিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় হাইড্রোজেন ও হাইড্রক্সিল আয়নে ভেঙে গিয়ে শিলামধ্যস্থ অর্থক্লেজ ফ্লেডসপার খনিজের সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অ্যালুমিনোসিলিসিক অ্যাসিড এবং পটাশিয়াম হাইড্রক্সাইড-এ পরিণত হয় ।
জৈব আবহবিকার
জৈব আবহবিকার : যান্ত্রিক এবং রাসায়নিক পদ্ধতিতে গাছপালা, প্রাণী এবং মানুষের দ্বারা শিলা চূর্ণবিচূর্ণ ও বিয়োজিত হলে তা জৈব আবহবিকার হয় ।
জৈব-যান্ত্রিক ও জৈব-রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় এই সকল জৈবিক উপাদান শিলার আবহবিকার ঘটিয়ে থাকে ।
জৈব আবহবিকারের প্রকারভেদ : জৈব আবহবিকার সাধারণত তিনটি পদ্ধতিতে হয়ে থাকে, যথা-
(1) উদ্ভিদ দ্বারা (2) প্রাণী দ্বারা এবং (3) মানুষের দ্বারা
- উদ্ভিদ দ্বারা জৈব আবহবিকার : যান্ত্রিকভাবে এবং রাসায়নিকভাবে উদ্ভিদ শিলার আবহবিকার ঘটায় । যেমন-
- উদ্ভিদের শিকড় শিলার ফাটলে প্রবেশ করে এবং পরে যখন উদ্ভিদের বৃদ্ধি হয় তখন এর শিকড়েরও বৃদ্ধি ঘটে ফলে তা ফাটলের মধ্যে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে শিলাস্তরকে ফাটিয়ে চূর্ণবিচূর্ণ করে ।
- উদ্ভিদের ডালপালা, পাতা, শিকড় এবং অন্যান্য উদ্ভিদের অংশ পচে বিভিন্ন ধরনের হিউমিক অ্যাসিড বা জৈব অ্যাসিড তৈরি করে । রাসায়নিক প্রক্রিয়ায়, এই সমস্ত জৈব অম্ল শিলার বিয়োজন ঘটায় ।
- প্রাণীর দ্বারা জৈব আবহবিকার : যান্ত্রিকভাবে এবং রাসায়নিকভাবে উদ্ভিদের মতো প্রাণীও শিলার আবহবিকার ঘটায় ।
- মৃৎভেদী প্রাণী, যেমন ইঁদুর, কেঁচো, খরগোশ, প্রেইরি কুকুর প্রভৃতি প্রাণীরা শিলার মধ্যে গর্ত খুঁড়ে শিলাকে আলগা করে, যান্ত্রিক আবহাওয়ার সৃষ্টি করে ।
- মৃত প্রাণীর পচা গলা দেহ থেকে নির্গত অ্যাসিড এবং মৃত কীটাণু ও ব্যাকটেরিয়ার দেহনিঃসৃত রস রাসায়নিকভাবে শিলাকে বিয়োজিত করে আবহবিকার ঘটায় ।
- মানুষের দ্বারা জৈব আবহবিকার : রাস্তা, বাঁধ এবং জলাধার নির্মাণের সময় মানুষ বিস্ফোরণ ঘটিয়ে শিলা চূর্ণবিচূর্ণ করে । আবার অনেক সময়, মানুষের মলমূত্র ও মৃত মানুষের দেহ দ্বারা নিঃসৃত অ্যাসিড রাসায়নিকভাবে শিলাকে বিয়োজিত করে ।
আবহবিকার ফলাফল :
- শিলা চূর্ণ ও বিয়োজিত হয়ে ভূত্বকের উপর শিথিল ও অবিশ্লিষ্ট উপাদানের একটি স্তর তৈরি হয় । এটি রেগোলিথ নামে পরিচিত । এই রেগোলিথ থেকেই মাটির সৃষ্টি হয় ।
- রাসায়নিক আবহবিকারের ফলে চুনাপাথরযুক্ত অঞ্চলে ভূত্বকের ওপরে লাল কাদার মতো একটি আস্তরণের সৃষ্টি হয়, একে টেরা রোসা বলে । আবার চুনাপাথরযুক্ত কার্স্ট অঞ্চলে রাসায়নিক আবহবিকারের ফলে ভূপৃষ্ঠে গর্তের সৃষ্টি হয় ।
- যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে শিলাস্তর চূর্ণবিচূর্ণ হয়, যা ভূমিরূপের পরিবর্তনে অবদান রাখে । ফলস্বরূপ, গ্রানাইট শিলাগঠিত অঞ্চলের ভূমিরূপ গোলাকার ও ব্যাসল্ট শিলাগঠিত অঞ্চলের ভূমিরূপ চ্যাপ্টা প্রকৃতির হয় ।
- শিলামধ্যস্থ খনিজদ্রব্য রাসায়নিক আবহবিকারের ফলে দ্রবীভূত হয়ে মাটির সঙ্গে মিশে মৃত্তিকার উর্বর শক্তির বৃদ্ধি ঘটায় ।
- যান্ত্রিক আবহবিকারের দ্বারা শিলাস্তর চূর্ণবিচূর্ণ হয় ফলত ভূপৃষ্ঠে চাপ হ্রাসের জন্য ভূমিকম্প সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকতে পারে ।
- রাসায়নিক আবহবিকারের ফলে বক্সাইট, জিপসাম, লিমোনাইট এবং অন্যান্য খনিজ বিয়োজিত হয় যা থেকে খনিজ আহরণ করা সম্ভব হয় ।
মৃত্তিকার সৃষ্টি : মৃত্তিকা বিজ্ঞানী ভি.ভি. ডকুচায়েভ-এর মতে, বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিবর্তনের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠে মাটির উৎপত্তি হয়েছে ।
তিনটি মূল প্রক্রিয়ার দ্বারা মাটির সৃষ্টি হয়েছে , যথা –
(ক) প্রাথমিক প্রক্রিয়া :
- এই প্রক্রিয়ায় সৌরশক্তি, অক্সিজেন, জল, জৈব পদার্থ এবং খনিজ পদার্থের সংমিশ্রণ ঘটে রেগোলিথের উপরে ।
- এরপর রেগোলিথ থেকে জল বাষ্পীভূত হয় এবং জৈব পদার্থের জারণ ঘটে ।
- শিলার খনিজ কণা এবং জৈব পদার্থগুলির ভৌত এবং রাসায়নিক রূপান্তর ঘটে ।
- খনিজ কণা এবং জৈব পদার্থগুলি জলের মাধ্যমে গভীরতর বিভাগে স্থানান্তরিত হয় ।
(খ) মৌলিক প্রক্রিয়া :
- এই প্রক্রিয়া সূক্ষ্ম জীবাণু উদ্ভিদ এবং প্রাণীর মৃতদেহ, পতিত পাতা এবং অন্যান্য জৈব বর্জ্যকে হিউমিফিকেশন প্রক্রিয়ায় পচিয়ে হিউমাস তৈরি করে ।
- খনিজকরণ প্রক্রিয়ায় হিউমাস-গঠনকারী খনিজগুলি (লোহা, ফসফরাস ইত্যাদি) মাটিতে পুনরায় মিশে যায় ।
- উপরের মাটির খনিজগুলি এলুভিয়েশন প্রক্রিয়ার দ্বারা জলে দ্রবীভূত হয় বা ভাসমান অবস্থায় নীচের দিকে অপসারিত হয় । পৃথিবীর উপরের A স্তরটি এলুভিয়াল স্তর হিসাবে পরিচিত।
- ইলুভিয়েশন প্রক্রিয়ায় মাটির A স্তরের পদার্থসমূহ B স্তরে সঞ্চিত হয়, তাই মাটির B স্তরটি ইলুভিয়াল স্তর হিসাবে পরিচিত ।
(গ) নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া : যদিও প্রাথমিক এবং মৌলিক প্রক্রিয়াগুলি সমস্ত পৃষ্ঠের প্রসঙ্গে সক্রিয়, তবে পরিবেশের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরণের মাটি বিভিন্ন উপায়ে তৈরি হয় । যেমন –
- উষ্ণ-আর্দ্র পরিবেশে ল্যাটারাইজেশন প্রক্রিয়ায় ল্যাটেরাইট মাটি তৈরি হয় ।
- পডজোলাইজেশন প্রক্রিয়ার ফলে শীতল-আর্দ্র উপক্রান্তীয় অঞ্চলে পডজল মৃত্তিকা তৈরি হয় ।
- জলাভূমি অঞ্চলে গ্লেইজেশন প্রক্রিয়ার সময় জলমগ্ন বগ মাটি তৈরি হয় ।
- মরু বা মরুপ্রায় অঞ্চলে লবণাক্ত মাটি (সোলোনচাক) সৃষ্টি হয় স্যালিনাইজেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ।
- মরুভূমিতে, অ্যালকালাইজেশন প্রক্রিয়ার ফলে সোলোনেজ মৃত্তিকা দেখা যায় ।
মৃত্তিকা ক্ষয় : মৃত্তিকা ক্ষয় সাধারণত বায়ুপ্রবাহ, জল প্রবাহ, মানুষের অনিয়ন্ত্রিত কার্যকলাপ ইত্যাদির ফলে উপরের স্তরের মাটি প্রাকৃতিকভাবে অপসারিত হয়, তাকে মৃত্তিকা ক্ষয় বলে । মৃত্তিকা ক্ষয় মূলত বায়ুপ্রবাহ ও জলস্রোতের কারণে হয় । মৃত্তিকা ক্ষয় শুধুমাত্র মাটির উর্বর শক্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না, এটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বিপর্যয় যেমন নদীতীর ক্ষয় এবং পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিধসের সৃষ্টি করে ।
মৃত্তিকা ক্ষয়ের কারণ :
- প্রবল বায়ুপ্রবাহ মাটির আলগা কণাকে উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে মৃত্তিকা ক্ষয় করে । শুষ্ক মরুভূমি এবং মরুপ্রায় অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহের দ্বারা মৃত্তিকা ক্ষয় হয় ।
- জলের দ্রুত প্রবাহ উপরের মাটিকে আলগা এবং অপসারণ করে
- নদীর বন্যা এবং পাহাড়ের ঢালে আকস্মিক বন্যার ফলেও মৃত্তিকার দ্রুত অপসারণ হয় ।
- ভূমির খাড়া ঢাল দ্বারা মৃত্তিকা ক্ষয়কে প্রভাবিত করে ।
- মাটির ক্ষয়, উদাহরণস্বরূপ, মাটির বিকাশকে ত্বরান্বিত করে।
- অব্যবস্থাপিত চারণভূমির ফলে উপরের স্তরের মাটি আলগা হয়ে যায় এবং জলস্রোত ও বায়ুপ্রবাহের দ্বারা অপসারিত হয় ।
- অত্যধিক এবং অনিয়ন্ত্রিত বৃক্ষছেদনের কারণে মৃত্তিকা স্তরকে আলগা করে দেয় এবং ক্রমবর্ধমান পুঞ্জিত ক্ষয় এবং ভূমিধসের মাধ্যমে অপসারণ অপসারণ হয় ।
মৃত্তিকা ক্ষয়ের ফলাফল :
- মৃত্তিকা ক্ষয়ের ফলে খনিজ এবং জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ উপরের স্তরের মৃত্তিকার অপসারণ হয় যার ফলে মাটির উর্বরতা নষ্ট হয় এবং উদ্ভিদের খাদ্য সংগ্রহ করতে সমস্যা হয় ।
- ক্ষয়প্রাপ্ত মৃত্তিকা জলাধার ভরাট করার কারণে বন্যার সৃষ্টি হয় ।
- ক্ষয়প্রাপ্ত মৃত্তিকা নদীর তলদেশে জমা হয়ে নাব্যতা হ্রাস করে বন্যার সৃষ্টি করে এবং জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় ।
- মৃত্তিকা ক্ষয়ের কারণে মাটির ওপরের আলগা স্তর অপসারিত হয়ে নীচের কঠিন স্তর উন্মুক্ত করে যার ফলে বৃষ্টির জল নীচের স্তরে প্রবেশ করতে পারেনা র সেই কারণেই ভৌমজল সংগ্রহে বাঁধা সৃষ্টি হয় ।
- মৃত্তিকা ক্ষয় মাটির গুণাগুণ হ্রাস করে এবং মাটিকে দূষিত করে ।
মৃত্তিকা সংরক্ষণ : যে সকল পদ্ধতির দ্বারা মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ করে মৃত্তিকার উর্বরা শক্তির পুনরুদ্ধার, জমির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি এবং মৃত্তিকা ব্যবহারের জন্য অনুসরণ করা হয়, তাকে মৃত্তিকা সংরক্ষণ বলে ।
মৃত্তিকা সংরক্ষণের উপায় :
মাটির ক্ষয় রোধ করে মাটি সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।
- বনসৃজন : গাছের শিকড় নিরাপদে মাটির কণাকে আটকে রাখে। যেই জন্য কৌশলগতভাবে বৃক্ষ এবং অন্যান্য গাছপালা রোপণ করে বনসৃজনের মাধ্যমে মাটি সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
- বিজ্ঞানসম্মত কৃষিকাজ : বৈজ্ঞানিক চাষের মাধ্যমে মাটির ক্ষয় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যেমন- শস্যাবর্তন (মাটি উর্বর রাখার জন্য সারা বছর ধরে বিভিন্ন ফসলচাষ), ধাপ চাষ (পাহাড়ের ধাপ কেটে চাষ), সমোন্নতি রেখা বরাবর চাষ (পাহাড়ের ঢালে সমো
- ন্নতিরেখা বরাবর বাঁধ দিয়ে চাষ), ফালি চাষ (পাহাড়ে অনুভূমিক বাঁধ দিয়ে) প্রভৃতি আধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগ করে মাটি সংরক্ষণ করা সম্ভব।
- পশুচারণ নিয়ন্ত্রণ : নিয়ন্ত্রিত চারণভূমির মাধ্যমে তৃণভূমি রক্ষা করে মাটির ক্ষয় কমাতে হবে।
- পাড় সংরক্ষণ : নদী ও সমুদ্র উপকূল অত্যন্ত ক্ষয়প্রবণ তাই মাটি সংরক্ষণের জন্য নদী ও সমুদ্রতীরের চারপাশে কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণ করতে হবে এবং সারিবদ্ধভাবে গাছ লাগাতে হবে।
- বন্যা নিয়ন্ত্রণ : বন্যা পরিবেশের বিপর্যয় ঘটায়, যার ফলে মাটির ব্যাপক ক্ষয় হয়। ফলস্বরূপ, মাটির ক্ষয় রোধে বন্যা ব্যবস্থাপনার জন্য বিশাল জলাধার এবং বহুমুখী নদী পরিকল্পনা গড়ে তুলতে হবে।
- বায়ুপ্রবাহের গতিপথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি : প্রবল বায়ুপ্রবাহের গতিপথে সমান্তরালে গাছ লাগানোর মাধ্যমে বায়ুর গতি কমিয়ে মাটির ক্ষয় কমানো সম্ভব। সর্বোপরি, মৃত্তিকা ক্ষয়ে সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মৃত্তিকা সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
Solved Questions & Answers of অববাহিকার Abohobikar
1 Marks Questions of অববাহিকার Abohobikar
1. জারণ প্রক্রিয়ায় কোন গ্যাসীয় উপাদান প্রয়োজন হয়?
Ans. অক্সিজেন।
2. থর মরুভূমিকে আবহবিকারের কোন প্রক্রিয়া অধিক কার্যকরী?
Ans. ক্ষুদ্রকণা বিশরণ।
3. জল, তুষার কেলাসে পরিণত হলে আয়তনে ______ যায়। (শূন্যস্থান পূরন করো)
Ans. বেড়ে
4. শস্যের শিকড় দ্বারা জমি আচ্ছাদন করে মৃত্তিকা সংরক্ষণ করার পদ্ধতিকে কী বলে?
Ans. মালচিং (mulching)।
5. কোন্ ধরনের আবহবিকারের ফলে মরুভূমিতে বিকেলের দিকে গুলি ছোড়ার মত শব্দ শুনতে পাওয়া যায়?
Ans. ক্ষুদ্রকণা বিশরণ।
6. কোন্ আবহবিকারের ফলে শিলায় মরচে পড়ে?
Ans. জারণ।
7. আবহবিকারের গুরুত্বপূর্ণ ফল হল ______ সৃষ্টি। (শূন্যস্থান পূরন করো)
Ans. মৃত্তিকা
8. নিরক্ষীয় অঞ্চলে ______ আবহবিকার বেশি দেখা যায়। (শূন্যস্থান পূরন করো)
Ans. রাসায়নিক
9. যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হিউমাস তৈরি হয় তাকে কী বলে?
Ans. হিউমিফিকেশন।
10. পর্বতের ঢালে আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট শঙ্কু আকৃতির শিলাচূর্ণকে কী বলে?
Ans. ট্যালাস।
Multiple Choice Questions – 1 Marks of অববাহিকার Abohobikar
1. কাস্ট ভূমিরূপ যে আবহবিকারের ফলে ঘটে—
A. জারণ B. অঙ্গারযোজন C. আর্দ্র-বিশ্লেষণ D. জৈবিক আবহবিকার
Ans. B
2. চুনাপাথরযুক্ত অঞ্চলে বেশি দেখা যায়—
A. কার্বোনেশন B. হাইড্রেশন C. হাইড্রোলিসিস D. অক্সিডেশন
Ans. A
3. মরুভূমি অঞ্চলে মৃত্তিকা ক্ষয় হয়—
A. নদীর দ্বারা B. হিমবাহের দ্বারা C. বায়ুপ্রবাহের দ্বারা D. মানুষের দ্বারা
Ans. C
4. যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে শিলায় ঘটে—
A. ভৌত পরিবর্তন B. রাসায়নিক পরিবর্তন C. উভয় প্রকার পরিবর্তন D. কোনো পরিবর্তন হয় না
Ans. A
5. শিলার শুধুমাত্র আকৃতিগত পরিবর্তন যে আবহবিকারের ফলে ঘটে, সেটি হল—
A. জৈবিক আবহবিকার B. যান্ত্রিক আবহবিকার C. জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার D. রাসায়নিক আবহবিকার
Ans. B
6. বৃষ্টিবহুল ক্রান্তীয় অঞ্চলে দেখা যায়—
A. যান্ত্রিক আবহবিকার B. রাসায়নিক আবহবিকার C. জৈবিক আবহবিকার D. কোনোটিই নয়
Ans. B
7. বিষমসত্ত্ব শিলায় যে ধরনের আবহবিকার ঘটে তা হল—
A. বিচূর্ণন B. বোল্ডার ভাঙন C. শল্কমোচন D. ক্ষুদ্রকণা বিশরণ
Ans. D
8. মৃত্তিকাক্ষয়ের একটি মনুষ্যসৃষ্ট কারণ হল—
A. জলপ্রবাহ B. কৃষিকার্য C. শিকড় বৃদ্ধি D. মাটিতে গর্ত সৃষ্টি
Ans. B
9. উষ্ণ মরুভূমিতে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রধান প্রক্রিয়াটি হল –
A. লবণ কেলাস গঠন B. তুষার খণ্ডীকরণ C. ক্ষুদ্রকণা বিশরণ D. প্রস্তরচাঁই বিচ্ছিন্নকরণ
Ans. C
10. পাহাড়ি অঞ্চলে শিলাচূর্ণের চলনকে বলে—
A. যান্ত্রিক আবহবিকার B. রাসায়নিক আবহবিকার C. পুঞ্জিত ক্ষয় D. নগ্নীভবন
Ans. C
Short Questions – 2-3 Marks of অববাহিকার Abohobikar
- আবহবিকার (Weathering)
সংজ্ঞা : আবহাওয়ার অন্তর্গত বিভিন্ন উপাদান, যেমন – উষ্ণতা, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ, তুষারপাত প্রভৃতির দ্বারা যান্ত্রিকভাবে শিলা বিচুর্ণীকৃত হলে কিংবা অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড, জল প্রভৃতির দ্বারা রাসায়নিকভাবে শিলা বিয়ােজিত হলে, তাকে আবহবিকার বা বিচূর্ণীভবন বলে।
বৈশিষ্ট্য : আবহবিকারে ভূপৃষ্ঠস্থ শিলা বিচুর্ণীকৃত বা বিয়ােজিত হয়। বিচুর্ণীকৃত বা বিয়ােজিত পদার্থগুলি মুল শিলার কাছাকাছি পড়ে থাকে।
উদাহরণ : ক্ষুদ্রকণা বিসরণ, প্রস্তরর্চাই খণ্ডীকরণ, শঙ্কমােচন (যান্ত্রিকভাবে সৃষ্ট), অঙ্গারযােজন, জারণ, আবিশ্লেষণ(রাসায়নিকভাবে সৃষ্ট) প্রভৃতি প্রক্রিয়ায় আবহবিকার সংঘটিত হয়।
- যান্ত্রিক আবহবিকার (Mechanical Weathering)
সংজ্ঞা : উষ্ণতার তারতম্য, উষ্ণতা ও শুষ্কতার পার্থক্য, শিলাস্তরে চাপের প্রভেদ, তুষার ও লবণের কেলাস গঠন, জৈবিক কার্যকলাপ ইত্যাদির প্রভাবে শিলাসমুহ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে সেই স্থানে অবস্থান করলে, তাকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলে। যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে শিলার ভৌত পরিবর্তন হয় কিন্তু কোনো রাসায়নিক পরিবর্তন হয় না অর্থাৎ শিলা উপাদানের নিজস্ব ধর্ম অক্ষুন্ন থাকে।
প্রক্রিসমূহ : যান্ত্রিক আবহবিকার প্রধানত পাঁচটি পদ্ধতিতে ঘটে থাকে, যথা-
- তাপের প্রভাবে শিলার সংকোচন ও প্রসারণ,
- কোসন প্রক্রিয়া,
- চাপমোচনের ফলে প্রসারণ,
- কলয়েভীর উৎপাটন এবং
- বৃষ্টিপাত ও আর্দ্রতার প্রভাবে যান্ত্রিক আবহবিকার।
প্রভাবিত অঞ্চল : উষ্ণ মরু ও শীতল জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রভাব সর্বাধিক।
- হিউমাস (Hunus) কী ?
উত্তর- উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহাবশেষ মৃত্তিকার উপরিস্তরে জৈব পদার্থরূপে সঞ্চিত হয়। ওই সব পদার্থ মৃত্তিকাহিত আণুবীক্ষণিক জীব দ্বারা বিয়ােজিত হয় এবং তা ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়ে এক জটিল কালাে বর্ণের পদার্থ সৃষ্টি করে, একে হিউমাস বলে। হিউমাসসমৃদ্ধ মাটি খুব উর্বর ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন হয়। এই ধরনের মাটির জলধারণ ক্ষমতাও খুব বেশি। কিন্তু, হিউমাস মাটিতে দীর্ঘদিন থাকতে পারে না। এটি ধীরে ধীরে খনিজ পদার্থে রূপান্তরিত হয়ে মাটিতে মিশে যায়। হিউমাস সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে হিউমিফিকেশন ব্ৰলে।
- রেগােলিথ কী ?
উত্তর- মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রথম পর্যায়ে আদি শিলা যান্ত্রিক ও রাসায়নিক আবহবিকারের ফলে চূর্ণবিচূর্ণ হয়। এই শিলাচূর্ণ ভূত্বকের উপর শিথিল ও কোমল একটি আবরণ সৃষ্টি করে। একে রেগােলিথ বলে। রেগােলিথই মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রাথমিক পর্যায় ও প্রধান শর্ত। কালক্রমে বিভিন্ন জৈবিক, রাসায়নিক ও জৈব-রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্লেগােলিথের সূক্ষ্ম শিলাচূর্ণগুলি বিশ্লিষ্ট ও স্তরীভূত হয়ে মৃত্তিকা সৃষ্টি করে। প্রকৃতপক্ষে, ব্রেগােলিথ হল আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট যাবতীয় বস্তুভারের অসমৃদ্ধ স্তর। এই বস্তুটি শিলাচূর্ণ ও মৃত্তিকার মাঝামাঝি অবস্থা। উদাহরণ : পর্বতের পাদদেশীয় ঢালে সঞ্জিত ট্যালাস, স্ক্রি ইত্যাদি হল রেগােলিথ জাতীয় পদার্থ।
- নগ্নীভবন কাকে বলে ?
উত্তর : আবহবিকার, ক্ষয়ীভবন এবং পুঞ্জিতক্ষয়ের সম্মিলিত প্রভাবে শিলাস্তরের উপরিভাগ বিচ্ছিন্ন হয়ে অপসারিত হলে অভ্যন্তরভাগ উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। এভাবে শিলাস্তরের ভিতরের অংশ ভূপৃষ্ঠে উন্মুক্ত হলে, তাকে বলা হয় নগ্নীভবন। সুতরাং, নগ্নীভবন হল আবহবিকার, ক্ষয়ীভবন ও পুঞ্ছিতক্ষয়ের সম্মিলিত ফল।
- টেরারােসা কী ?
উত্তর : ‘টেরা’ (Terra) শব্দের অর্থ মৃত্তিকা এবং ‘রােসা’ (Rossa) শব্দের অর্থ ‘লাল ক্রান্তীয় অঞ্চলে ল্যাটেরাইটের মতাে একপ্রকার লাল রঙের মৃত্তিকাকে টেরারােসা বলে। আবহবিকারের ফলে (প্রধানত কার্বনেশন প্রক্রিয়ায়) চুনাপাথরযুক্ত বা কাস্ট অঞ্চলে লৌহকণাযুক্ত যে ভূ-আস্তরণের সৃষ্টি
হয়, তাকে ‘টেরারােসা’ বা লাল মাটি বলে।
- কাস্ট ভূমিরূপ কাকে বলে?
উত্তর : চুনাপাথরযুক্ত অঞলে ভৌমজলের কার্যের ফলে যে বিশেষ ধরনের তুমিনুপের সৃষ্টি হয়, তাকে কার্ট ভূমিরূপ বলে। সাধারণত কার্বনেশন প্রক্রিয়া জল, বাতাসের কার্বন ডাইন্যাইড চুনাপাথরের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ক্যালশিয়াম বাইকার্বোনেট উৎপন্ন করে এই প্রকার ভুমিরুপ গঠন করে।
- ধাপ চাব বা Step Cropping কী ?
উত্তর : পাহাড়ি অঞলে ঢাল কয়েকটি ভাগে কেটে ধাপের (step)সৃষ্টি করে প্রবহমান জলের গতি প্রশমিত করা হয় এবং কৃষিকাজে ব্যবহার করা হয়। এই কৃষিকাজকে ধাপ চাষ বা Step Cropping বলে। এর ফলে পাহাড়ের ঢালে মৃত্তিকা ক্ষয় কম হয়।
- সমােন্নতি শস্যায়ন (Contour farming) কাকে বলে?
উত্তর : শস্য চাষের জন্য মালভূমি বা পার্বত্য অঞ্চলের ঢালু জমিতে সমােন্নতি রেখা বরাবর আল ও নালা (Ridge) তৈরি করা হয়। এর ফলে শুষ্ক অঞ্চলে বৃষ্টির জল আলে বাধা পেয়ে মৃত্তিকায় অনুপ্রবেশ করে এবং অধিক বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে অতিরিক্ত জল নালার মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে যায়, এই শস্যায়নকে সমােন্নতি শস্যায়ন বলে। ঢালু জমিতে মৃত্তিকাকে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করার অন্যতম পদ্ধতি হল এই সমােন্নতি শস্যায়ন।
- রেগােলিথ মাটি নয় কেন?
উত্তর : সময়ের সঙ্গে পরিণত পর্যায়ের শেষে আবহবিকারজাত সূক্ষ্ম শিলাচূর্ণের সঙ্গে খনিজদ্রব্য, জৈবপদার্থ, জল ইত্যাদি মিশে মাটি তৈরি হয়। একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে আবহবিকারের ফলে শিলা বিচূর্ণীভূত হয়ে রেগােলিথ সৃষ্টি হয় যা ভূত্বকের উপর পাতলা, কোমল ও শিথিল আস্তরণরূপে বিরাজ করে। এদের বিশেষ কোনাে ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম থাকে না। তাই রেগােলিথকে মাটি বলা যায়না। এজন্য যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট পর্বতের পাদদেশীয় ঢালে সঞ্জিত ট্যালাস বা স্ক্রি-কে মাটি বলা যায় না।
- আবহবিকার কাকে বলে?
উত্তর : আবহবিকার’ শব্দটি আবহাওয়া থেকে সৃষ্ট। আবহবিকার শব্দটির সরল অর্থ হল আবহাওয়ার দ্বারা ভূপৃষ্ঠের বিকার বা পরিবর্তন।
আহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানের (উষ্ণতা, আদ্রর্তা, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত, তুষারপাত ইত্যাদি) প্রভাবে ভূপৃষ্ঠের শিলাসমূহের উপরিভাগের যে বিচূর্ণীভবন ও বিয়ােজন হয়, তাকে আবহবিকার বলে। এর ফলে, শিলাসমূহের উপরিভাগ চূর্ণবিচূর্ণ অবস্থায় মূল শিলাস্তর থেকে বিয়ােজিত হয়ে ওই স্থানেই অবস্থান করে।
উদাহরণ : লােহাতে মরচে পড়া, পুরানাে বাড়ির ঢালাই ফেটে যাওয়া এগুলি সবই আবহবিকারের ক্ষুদ্র সংস্করণ। এ ছাড়া, শীতল পার্বত্য অঞ্চল, উষ্ণমরু অঞলে আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন ভূমিরূপ দেখা যায়।
শ্রেণিবিভাগ : আবহবিকার প্রধানত তিন ভাগে বিভক্ত। যথা-
- যান্ত্রিক আবহবিকার
- রাসায়নিক আবহবিকার
- জৈব আবহবিকার
তবে, জৈব আবহবিকার যান্ত্রিক ও রাসায়নিক উভয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে থাকে।
- রাসায়নিক আবহবিকার কোন্ ধরনের জলবায়ু অঞ্চলে অধিক মাত্রায় কার্যকরী হয়?
অথবা, বৃষ্টিবহুল ক্রান্তীয় অঞলে কোন্ ধরনের আবহবিকার দেখা যায় ?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠে যান্ত্রিক আবহবিকারের তুলনায় রাসায়নিক আবহবিকারের গুরুত্ব অনেক বেশি। কারণ, পৃথিবীর সর্বত্র রাসায়নিক আবহবিকার বেশি মাত্রায় সংঘটিত হয়।
রাসায়নিক আবহবিকার প্রধানত দু’ধরনের জলবায়ুতে দেখা যায়। যথা-
- নিরক্ষীয় জলবায়ু : সারাবছর বৃষ্টিপাত হওয়ায় এখানে জলের প্রভাবে অবিশ্লেষণ, অঙ্গারযােজন, জারণ, দ্রবণ রাসায়নিক আবহবিকার প্রক্রিয়াগুলি কার্যকরী হয়। আবার, এই অঞ্চলে যে ঘন চিরহরিৎ অরণ্যের সৃষ্টি হয়েছে তার ভাল, পাতা, ফল, ফুল প্রভৃতি মাটিতে পড়ে পচে হিউমিক অ্যাসিড সৃষ্টি হয় এবং এর প্রভাবে শিলার রাসায়নিক আবহবিকার ঘটে।
- মৌসূমি জলবায়ু : মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চলে একটানা আর্দ্র ও শুষ্ক ঋতু চলার ফলে পর্যায়ক্রমে ধৌত ও কৈশিক প্রক্রিয়ায় যান্ত্রিক ও রাসায়নিক উভয় প্রকার আবহবিকার অধিক পরিমাণে সংঘটিত হয়ে থাকে।
- এছাড়া দআর্দ্র নাতিশীতোেম্ন অঞলেও রাসায়নিক আবহবিকারের প্রভাব বেশি।
- ঝুম চাষ কাকে বলে ?
উত্তর : ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গারো-খাসি-লাগা প্রভৃতি আদিবাসী মানুষ বন কেটে পুড়িয়ে চাষের জমি তৈরি করে সেখানে বৃষ্টির জলের সাহায্যে আলু, ভুট্টা, সবজি প্রভৃতি চাষ করে। দু-তিন বছর চাষ করার পর সেই জমি ত্যাগ করে একইভাবে অন্য স্থানে জমি তৈরি করে চাষ করে। এই কৃষিকাজ স্থানান্তর কৃষি বা ঝুম চাষ নামে পরিচিত। ওড়িশায় একে ‘পড়ু’; কেরালায় ‘পােনম বলে।
প্রভাব :
মৃত্তিকায় বৃদ্ধি : বনভূমি পুড়িয়ে ফেলার ফলে মৃত্তিকা আলগা হয়ে পড়ে এবং সহজেই ক্ষয়ের শিকার হয়।
মৃত্তিকার উর্বরতা হ্রাস : অবৈজ্ঞানিক প্রথায় ঝুম চাষের ফলে মাটির ক্ষুদ্র জীবাণু নষ্ট হয়ে উক্ত জমির উর্বরতা দ্রুত হ্রাস পায়। এ কারণে দু-তিন বছর অন্তর ঝুম চাষিরা জমি পরিবর্তন করেন।
পরিবেশ দূষণ : বনভূমি পােড়ানাের ফলে প্রচুর CO, বাতাসে মেশে, এ ছাড়া উদ্ভিদ হ্রাসের কারণে বাতাসে CO, বৃদ্ধি পায়। ফলে, বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়তে থাকে।
বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস : ঝুম চাষের ফলে বনভূমির বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। পশুপাখি তাদের বাসস্থান হারায়, জীববৈচিত্র্য হ্রাস পায়।
ধস : পাহাড়ের ঢালে ঝুম চাষের ফলে ধসের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
Long Questions – 5 Marks of অববাহিকার Abohobikar
- যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রক্রিয়াগুলি সংক্ষেপে লেখাে৷
অথবা, যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতিগুলি আলােচনা করো। * * *
উত্তর : যান্ত্রিক বা ভৌত আবহবিকার : উষ্ণতার তারতম্য, আদ্রর্তা ও শুষ্কতার পার্থক্য, শিলাস্তরে চাপের প্রভেদ, তুষার ও লবণের কেলাস গঠন, জৈবিক কার্যকলাপ ইত্যাদির প্রভাবে শিলার আবহবিকার ঘটলে, তাকে যান্ত্রিক বা ভৌত আবহবিকার বলে। যান্ত্রিক আবহবিকারে শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয় এবং পরিশেষে মৃত্তিকায় পরিণত হয়।
যান্ত্রিক আবহবিকারের গতিসমূহ এ সৃষ্ট ভূমিরূপ :
(A) তাপীয় প্রসারণ, (B) কেলাসন প্রক্রিয়া, (C) শিলাস্তরের চাপ হ্ৰাসজনিত প্রক্রিয়া, (D) বৃষ্টিপাতের ক্রিয়া, (E) কলয়েড উৎপাটন এবং (F) কলিকরণ ইত্যাদি পদ্ধতির দ্বারা যান্ত্রিক আবহবিকার সংঘটিত হয়।
(A) তাপীয় প্রসারণ :
- প্রস্তর চাই খঙীকরণ : উষ্ণতার তারতম্যের কারণে সৃষ্ট প্রসারণ ও সংকোচন বলের প্রভাবে শিলাস্তর যখন বড়াে বড়াে চাই-এর আকারে ভেঙে যায়, তখন তাকে প্রস্তর চাই খণ্ডীকরণ বলে।
প্রক্রিয়া : দিনের বেলা প্রখর সূর্যতাপে শিলাস্তর উষ্ণ হয়ে প্রসারিত হয় এবং রাতের বেলা তাপ বিকিরণ করে সংকুচিত হয়ে পড়ে। এইভাবে, প্রতিনিয়ত অসম প্রসারণ ও সংকোচনের কারণে শিলাস্তরে ব্যাপক পীড়নের সৃষ্টি হয়। পীড়ন নির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করলে শিলাস্তরে অসংখ্য উল্লম্ব ও সমান্তরাল ফাটলের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীকালে, এই ফাটল বরাবর বড়াে বড়াে চাই মূল শিলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
উদাহরণ : মরু বা মরুপ্রায় অঞ্চলে পাললিক শিলা ও ব্যাসল্ট শিলায় এই আবহবিকার অধিক দেখা যায়।
- শল্কমােচন : শল্ক’ শব্দের অর্থ ‘পেঁয়াজের খােসা’, এবং “মােচন’-এর অর্থ ত্যাগ। উষ্ণতার হ্রাস-বৃদ্ধির কারণে যখন কোনাে শিলার উপরের স্তরটি পেঁয়াজের খােসার মতাে খুলে যায়, তখন তাকে শল্কমােচন বলে।
প্রক্রিয়া : একই জাতীয় খনিজ দ্বারা গঠিত সমসত্ত্ব শিলার স্তরগুলি যদি সমকেন্দ্রিক হয় তাহলে দিনেরবেলা সূর্যতাপে উপরের স্তরটি ভিতরের স্তরগুলির তুলনায় অধিক উষ্ণ ও প্রসারিত হয় এবং রাতে অধিক শীতল ও সংকুচিত হয়। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে সংকোচন ও প্রসারণের ফলে উপরের স্তরটি পেঁয়াজের খােসার মতাে খুলে যায়। এর ফলে, শিলার আকৃতি গােলাকার বা উপগােলাকার হয় বলে শল্কমােচনকে গােলাকার বা উপগােলাকার (Spheroidal) আবহবিকার বলে।
উদাহরণ : গ্রানাইট শিলায় এই আবহবিকার অধিক দেখা যায়। তামিলনাড়ুর মহাবলীপুরমের কৃষ্ণ ভেন্নাই পান্ধ’ নামক বিখ্যাত গ্রানাইট গম্বুজটি এভাবে সৃষ্ট।
- ক্ষুদ্রকণা বিসরণ : দিন ও রাতের উষ্ণতার তারতম্যের কারণে সৃষ্ট সংকোচন ও প্রসারণের প্রভাবে যখন কোনাে শিলা ফেটে গিয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণায় পরিণত হয়, তখন তাকে ক্ষুদ্রকণা বিসরণ বলে।
প্রক্রিয়া : বিভিন্ন খনিজ দ্বারা গঠিত বিষমসত্ত্ব শিলার বিভিন্ন খনিজগুলি উষ্ণতার হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে ভিন্ন ভিন্ন হারে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়। এইভাবে, বারংবার অসম সংকোচন ও প্রসারণের ফলে শিলাটি বিভিন্ন খনিজের সংযােগ বরাবর সশব্দে ফেটে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণায় ভেঙে যায়।
উদাহরণ : থর, সাহারা, কালাহারি প্রভৃতি মরুভূমিতে সূর্যাস্তের পর প্রায়ই পিস্তলের গুলি ছােড়ার মতাে শব্দ করে শিলা ফেটে যায়।
- গণ্ডশিলা বিদারণ : অনেক সময় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা দ্বারা গঠিত শিলার মধ্যে থাকা কোনাে বড়াে বােল্ডারের অর্ধেক অংশ ভূপৃষ্ঠে উন্মুক্ত থাকলে ওই অংশ তাপের প্রভাবে ভেঙে গিয়ে ভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, এই পদ্ধতিকে গণ্ডশিলা বিদারণ বলে।
- ডার্ট ক্র্যাকিং : শিলাস্তরের ফাটলের মধ্যস্থিত পদার্থসমূহ সূর্যতাপে উত্তপ্ত ও প্রসারিত হলে ফাটলরেখা বরাবর শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়, একে ডার্ট ক্র্যাকিং বলে।
(B) কেলাসন প্রক্রিয়া : কেলাসন প্রক্রিয়া দুভাবে সংঘটিত হয় তুষার কেলাস গঠন এবং লবণ কেলাস গঠন।
তৃষার কেলাস গঠন বা তুষার কার্য :
(1) তুহিন খণ্ডীকরণ বা তুষার কীলক গঠন : পার্বত্য অঞ্চলে বৃষ্টির জল শিলাস্তরের ফাটলের মধ্যে ঢুকে গিয়ে শৈত্যের প্রভাবে তা বরফে পরিণত হয়। জল জমে বরফে পরিণত হলে তা আয়তনে শতকরা দশভাগ বেড়ে যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, শিলাস্তরে প্রবিষ্ট তীক্ষমুখী বরফের ফলাকে তুষার কীলক বলে। এর ফলে ফাটলের দুপাশের শিলাস্তরে প্রচণ্ড চাপের সৃষ্টি করে। এই চাপের প্রভাবে ফাটল ক্রমশ বৃদ্ধি পায় এবং শেষে শিলাস্তর ফেটে গিয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কোণযুক্ত শিলাখণ্ডের সৃষ্টি হয়। ওই প্রস্তরখণ্ডগুলি পর্বতের পাদদেশ বরাবর সমান্তরালভাবে জমা হলে, তাকে ফেলসেনমার বা ব্লকস্পেড (Felsenmer or Blockspade) বলা হয়। আবার, ওই প্রস্তরখণ্ডগুলি পর্বতের গা বরাবর উপর-নীচে অর্থাৎ, উল্লম্বভাবে সঞ্চিত হলে, তাকে স্ত্রি বা ট্যালাস (Scree or Tallus) বলে।
(ii) হিমায়িত স্ফীতি : নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে বৃষ্টির জল সচ্ছিদ্র মৃত্তিকার মধ্যে ঢুকলে শীতকালে তা শৈত্যের প্রভাবে বরফে পরিণত হয়। এর ফলে, স্ফীত বরফের চাপে মাটি ফেটে যে আবহবিকার সংঘটিত হয়, তাকে হিমায়িত স্ফীতি বলে। এরকম ঘটনা ঘটলে চাষ আবাদের পক্ষে বিশেষ সুবিধা হয়।
লবণ কেলাস গঠন : শুষ্ক অঞলে ভৌমজলে দ্রবীভূত লবণ কৈশিক প্রক্রিয়ায় উপরে উঠে এবং শিলাস্তরের ফাটলে লবণের কেলাস গঠিত হয়। ফলে, প্রচণ্ড চাপে শিলা ভেঙে টুকরাে টুকরাে হয়ে যায়, একে লবণ কেলাস গঠন বলে।
(C) চাপ ঘাসজনিত প্রক্রিয়া : শিলার উপরের চাপ হ্রাস পেলে শিলা প্রসারিত হয় এবং ফেটে যায়। কোনাে শিলার ভূপৃষ্ঠের সমান্তরাল ফাটলের মাধ্যমে পাতলা পাতলা পাতের আকারে ভেঙে প্রতিক্রিয়া যাওয়াকে শিটিং (Sheeting) বলে। পাতলা পাতের পরিবর্তে টুকরাে টুকরাে খণ্ডে বিভক্ত হয়ে পড়াকে স্প্যালিং (Spalling) বলে।
(D) বৃষ্টিপাতের ক্রিয়া : বৃষ্টিপাতের ফলে বিভিন্নভাবে যান্ত্রিক আবহবিকার হয়ে থাকে। যথা – কোমল শিলাস্তর দীর্ঘকাল ধরে বৃষ্টির ফোটার আঘাতে দুর্বল হয়ে ভেঙে যায়, অনেক সময় শিলার মধ্যস্থিত খনিজ পদার্থ রাসায়নিক বিক্রিয়া ছাড়াই বৃষ্টির জলের সংস্পর্শে আয়তনে বেড়ে যায় এবং অবশেষে ভেঙে যায়, শিলার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্রগুলি বৃষ্টির জলে ভরে যায়, আবার সূর্যের তাপে শুকিয়েও যায়। ক্রমাগত আদ্রর্তা ও শুষ্কতার পরিবর্তনে শিলা টুকরাে টুকরাে হয়ে যায়, মরু অঞ্চলে অতি উষ্ণ শিলার উপর হঠাৎ বৃষ্টির জল পড়লে শিলা সংকুচিত হয় ও ফেটে যায়।
(E) কলয়েড উৎপাটল : কলয়েড’ শব্দের অর্থ আঠা। খনিজ ও জৈব সংমিশ্রণে সৃষ্ট মাটির একপ্রকার আঠালাে উপাদান হল কলয়েড। এই কলয়েড ধর্মের জন্য শিলার গায়ে লেগে থাকা মাটি শুকিয়ে পড়ে যাওয়ার সময় শিলার গা থেকে কিছু অংশ উৎপাটন করে, একে কলয়েড উৎপাটন (Coloid PIucking) বলে।
(F) কলিকরণ (Slaking) : সমুদ্র উপকূল বরাবর পর্যায়ক্রমে জোয়ার-ভাটা বা সমুদ্রতরঙ্গের প্রভাবে শিলা আর্দ্র এবং সূর্যতাপে শুষ্ক হয়। ফলে, শিলাস্তরে অসম টান বা পীড়নের সৃষ্টি হয় ও শিলা ফেটে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। এই আবহবিকার প্রক্রিয়াটি কলিকরণ নামে পরিচিত।
এছাড়াও,
(G) বুদ্বুদজনিত আবহবিকার : শিলার ফাটলের মধ্যে জলের বুদ্বুদ প্রবেশ করে ফেটে গেলে তা শিলাস্তরে প্রচণ্ড চাপ দিয়ে শিলাকে ফাটিয়ে দেয়।
(H) অ্যাল্য যান্ত্রিক আবহবিকার : ক্রমান্বয়ে শিলা আর্দ্র ও শুষ্ক হওয়ার ফলে, মরু অঞ্চলে প্রচণ্ড উত্তপ্ত শিলার উপর হঠাৎ বৃষ্টির জল পড়লে, দাবানলের প্রচণ্ড তাপে, বৃহৎ উল্কাপিণ্ডের সংঘাতে শিলাস্তর ফেটে গিয়ে আবহবিকারপ্রাপ্ত হয়।
- জৈব আবহবিকার কাকে বলে ? জৈব আবহবিকার কী কী পদ্ধতিতে সংঘটিত হয়? *
অথবা, জৈব আবহবিকার একই সঙ্গে যান্ত্রিক এবং রাসায়নিক – প্রমাণ করাে।
উত্তর : জীবজগৎ দ্বারা যান্ত্রিক ও রাসায়নিক পদ্ধতিতে শিলা চূর্ণবিচূর্ণ ও বিয়ােজিত হলে, তাকে জৈব আবহবিকার বলে।
পদ্ধতি : জৈব আবহবিকার প্রধানত দুটি পদ্ধতিতে সংঘটিত হয়। যথা – জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার ও জৈব-রাসায়নিক আবহবিকার।
জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার : জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার আবার তিন ভাগে বিভক্ত। যথা – (i) উদ্ভিদ দ্বারা সৃষ্ট জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার এবং (ii) প্রাণীদের দ্বারা সৃষ্ট জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার এবং (iii) মানুষের বিভিন্ন কার্যাবলি।
- উদ্ভিদ দ্বারা সৃষ্ট জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার : শিলাস্তরের উপর কোনাে গাছপালা জন্মালে ওই গাছপালার শিকড় শিলার মধ্যস্থিত ফাটলের মধ্যে প্রবেশ করে শিলাস্তরকে ফাটিয়ে দেয়। এর ফলে, শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে মূল শিলাস্তর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
- প্রাণীদের দ্বারা সৃষ্ট জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার : কেঁচো, ছুঁচো, ইদুর, খরগোেশ, প্রেইরী কুকুর ইত্যাদি প্রাণী এবং নানা প্রকার কীটপতঙ্গ শিলার উপর গর্ত খুঁড়ে শিলার আবহবিকারে সাহায্য করে।
- মানুষের বিভিন্ন কার্যাবলি : রাস্তা নির্মাণ, কৃষিকাজ, খনিজ দ্রব্য উত্তোলন, বৃক্ষচ্ছেদন-এর ফলেও শিলায় আবহবিকার হয় এবং এর ফলে শিলা বিচূর্ণও হয়ে থাকে।
জৈব-রাসায়নিক আবহবিকার : শিলার উপর অনেক সময় মস্, লিচেন, শৈবাল ইত্যাদি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভিদ জমে থাকে। এরা শিলাস্তরের উপরিভাগে জল আটকে রাখে। ওই সমস্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভিদসমূহ কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে পচে গিয়ে হিউমাস সৃষ্টি করে। ওই হিউমাস-র ওপর বৃষ্টির জল পড়লে হিউমিক অ্যাসিড বা জৈব অ্যাসিডের (CH০) সৃষ্টি হয়। ওই হিউমিক অ্যাসিড ব্যাসল্ট, ম্যাগনেশিয়াম, ফেণ্ডাপার এবং সালকার যৌগ দ্বারা গঠিত শিলাস্তরে খুব দ্রুত রাসায়নিক আবহবিকার ঘটায়।
- মৃত্তিকা সংরক্ষণ বলতে কী বােঝাে? মৃত্তিকা সংরক্ষণের উপায় গুলি লেখো। *
উত্তর : ক্ষয় ও অবনমনের হাত থেকে রক্ষা করে, মৃত্তিকা সম্পদকে মানুষের কল্যাণে সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করার জন্য যেসমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তাকে মৃত্তিকা সংরক্ষণ বলে।
মৃত্তিকা সংরক্ষণ উপায় বা পদ্ধতিসমূহ :
বৃক্ষরােপণ (Afforestation) : গাছের শিকড় মাটিকে দৃঢ়ভাবে ধরে রেখে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করে। তাই, মৃত্তিকাক্ষয় রােধ করার জন্য বৃক্ষরােপণের উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়ােজন।
নিয়ন্ত্রিত পশুচারণ : ভূমির উপর তৃণের আচ্ছাদন জলের পৃষ্ঠপ্রবাহের হাত থেকে মৃত্তিকাকে রক্ষা করে। তাই, পশুচারণ নিয়ন্ত্রণ করে তৃণভূমির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখলে মৃত্তিকা সংরক্ষণ করা যায়।
শস্যাবর্তন (Crop totation) : কৃষি জমি পতিত না রেখে সারাবছর বিভিন্ন ধরনের ফসল শস্যাবর্তন পদ্ধতিতে চাষ করলে একদিকে যেমন মৃত্তিকার উর্বরতা বজায় থাকে, তেমনি অপর দিকে সারাবছরই মাটি শস্য দ্বারা আবৃত থাকায় ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা পায়।
ধাপ চাষ (Step farming) : পাহাড় বা পর্বতের ঢালে ধাপ কেটে চাষ করলে জলের গতি হ্রাস পায় ও মৃত্তিকায় নিয়ন্ত্রিত হয়।
সমােন্নতিরেখার বরাবর চাষ (Contour farming) : পার্বত্য অঞলে সমােন্নতিরেখা বরাবর বাঁধ দিয়ে চাষ করলে প্রবাহিত জলধারা বাবপ্রাপ্ত হয়ে মৃত্তিকা, হ্রাস পায়।
ফালি চাষ (Stric cropping) : সমােন্নতিরেখার সমান্তরালে চাষ না করে ঢালের আড়াআড়িভাবে ফালি তৈরি করে চাষ করলে মাটি স্থানান্তর কৃষি (Shifting cultivation) বােধ : আদিবাসী কৃষকদের সচেতন করে স্থানান্তর কৃষি বা বুমচাষ বন্ধ করতে পারলে অন সর সঙ্গে সঙ্গে মাটির , বােধ রা সম্ভব হবে।
জৈবসারের ব্যবহার বৃদ্ধি : মৃত্তিকাতে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে অধিক পরিমাণে জৈবসার ব্যবহার করলে মৃত্তিকার গঠন, গ্ৰথন, প্রবেশ তা প্রভৃতি ধর্মগুলি বজায় থাকে, ফলে মৃত্তিকা সংরক্ষণ সম্ভব হয়।
বাঁধ নির্মাণ : নদীপাড়ে বা সমুদ্র উপকূলে বাঁধ নির্মাণ করলে, অথবা কংক্রিট দিয়ে নদীপাড় ও উপকূল অংশ বাঁধালে মৃত্তিকায় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব
শেল্টার বেল্ট (Shelter Belt) : শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহের গতিপথে অসংখ্য গাছ সমান্তরালভাবে রােপণ করলে বায়ুপ্রবাহে গতি প্রতিরোধ করে মৃত্তিকারের পরিমাণ হ্রাস করা যায়। মরু অঞ্চলে এভাবে মাটির ক্ষয় রােধ করা সম্ভব।
অনন্য পদ্ধতি : এ ছাড়া অন্নধর্মী মৃকিায় চুন মিশিয়ে অজ্ঞতা নিয়ন্ত্রণ, জল নিষ্কাশনের সুব্যবস্থার মাধ্যমে মৃত্তিকরবণতা হস,প্রভৃতি ব্যবস্থার মাধ্যমে মৃত্তিকা সংরক্ষণ করা যায়।