Borjo Byabosthapona Geography Bhugol Wbbse Madhyamik Class 10

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা Borjo Byabosthapona Geography Bhugol Subject Wbbse Madhyamik Class 10

আপনি এখানে শিখবেন এই অধ্যায়ে এবং বিষয়ের ফাউন্ডেশন অংশটা, এই বিষয়টিকে সহজ-সরলভাবে পড়িয়েছেন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ভিডিও লেকচার এর মাধ্যমে এবং এই পুরো অধ্যায়কে চার ভাগে খন্ডিত করে আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে

প্রথম খন্ডে আপনি শিখবেন ফাউন্ডেশন অংশটা যেখানে অধ্যায়ের ব্যাপারে আপনাকে বোঝানো হয়েছে তার মানে definitions,basics গুলো সহজভাবে. এবং এটাকে আপনি বুঝতে পারবেন যেটা আপনাকে পরীক্ষার জন্য ক্রীপের করতে সাহায্য করবে
দ্বিতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন MCQ মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন যেটা সাধারণত এক Marks’er আসে পরীক্ষায়
তৃতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন শর্ট অ্যানসার এবং কোয়েশ্চেন, যেটা আপনার পরীক্ষার সাজেশন মধ্যে পড়ে এবং এটা 3-4 marks’er প্রশ্ন আসে আপনার পরীক্ষা
চতুর্থ মডিউল আপনি শিখবেন লং আনসার এবং questions যেটা সাধারণত 5-6 marks er হয়
আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন যাতে কি আপনাকে আমরা সাহায্য করতে পারি

Here you will learn the basics of বায়ুমণ্ডল (Atmosphere) in a simple language it is for Bengali medium students who are studying under West Bengal Board of Secondary Education and preparing for their Madhyamik exam (Class 10 WBBSE) Here you will find all necessary and important WBBSE Madhyamik Suggestions, notes, solved sample question paper in Bangla along with video lectures from expert teachers

বর্জ্য সম্পর্কে ধারণা 

আমরা যে পরিবেশে বাস করি তার চারপাশেই রয়েছে বর্জ‍্য । বর্জ্য হল কঠিন, গ্যাসীয় বা তরলযুক্ত এমন এক ধরনের পদার্থ যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কাজে আসে না । প্রতিদিনকার জীবনে ব‍্যবহৃত সবজির খোসা, টুথব্রাশ, নষ্ট পেন ইত‍্যাদি হল বর্জ‍্য । প‍্যাকেট, পুরানো জলের বোতল, সবজির খোসা, তুলো রক্ত এগুলো হল বর্জ‍্য পদার্থ ।

বর্জ্যের প্রকারভেদ

বর্জ্যপদার্থের বৈশিষ্ট্য :

  • বর্জ্য পদার্থ দুই প্রকার হতে পারে যেমন – জৈব ভঙ্গুর এবং জৈব অভঙ্গুর।
  • বর্জ্য পদার্থকে পুনর্নবীকরণের মাধ্যমে পুনরায় সম্পদে পরিণত করা সম্ভব।

বর্জ্যের প্রকারভেদ

  • কঠিন বর্জ‍্য : কঠিন পদার্থ দিয়ে তৈরি যে সমস্ত দ্রব্য কিছুদিন ব্যবহারের পর আর ব্যবহার হয় না, সেই সমস্ত দ্রব্যকে কঠিন বর্জ্য বলে। যেমন-ভাঙা বা পুরানো কাঠ, প্লাই, প্লাস্টিক, কাচ, বাড়ির ভাঙা দ্রব্য ইত্যাদি ।
  • তরল বর্জ‍্য : যে সমস্ত তরল ব্যবহারের অযোগ্য সেগুলিকে তরল বর্জ্য বলে । যেমন – গৃহস্থালির ব্যবহারের পর পরিত্যক্ত জল, কৃষিকাজে ব‍্যবহৃত সার মেশানো জল, কারখানার পরিত্যক্ত জল, হাসপাতাল ধোয়া জল ও রোগীর মলমূত্র, পয়ঃপ্রণালীর নোংরা জল ইত্যাদি।
  • গ‍্যাসীয় বর্জ‍্য : রাসায়নিক শিল্প থেকে নির্গত ক্লোরিন ও হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ‍্যাস, আবর্জনার স্তূপ থেকে নির্গত হাইড্রোজেন, সালফাইড  মিথেন, অ্যমোনিয়া প্রভৃতি গ‍্যাস। এগুলো হল গ‍্যাসীয় বর্জ‍্য।

বিষক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে বর্জ‍্যপদার্থের প্রকারভেদ

  • বিষাক্ত বর্জ‍্য : যেসব বর্জ‍্য পদার্থ যেমন – সিসা, পারদ, অ্যাসিড, কীটনাশক প্রভৃতি পদার্থ প্রাণী ও মানব দেহে প্রবেশ করলে বিভিন্ন শারীরিক ও বিপাকীয় কাজে বাধার সৃষ্টি হয়, এর থেকে নানারকম রোগের সৃষ্টি করে মানুষকে মৃত‍্যুর দিকে নিয়ে যায় সেই সব পদার্থই হল বর্জ‍্য পদার্থ ।

বিষহীন বর্জ‍্য : যে বর্জ্য প্রাণীদেহ বা পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক নয়। উদ্ভিদ ও প্রাণীজাত বর্জ‍্য পদার্থ হল বিষহীন বর্জ‍্য ।

বর্জ‍্য উৎসের ধারণা 

প্রতিদিনের জীবনে ব্যবহৃত জিনিসপত্র থেকে বর্জ‍্য পদার্থ উৎপন্ন হয় । বিভিন্ন বর্জ্যের উৎসগুলি হলো –

  • গৃহস্থালির বর্জ‍্য : তরিতরকারির খোসা, মাছ মাংসের উচ্ছিষ্ট, পাতা, মাছ, মাংস ধোয়া জল, বাথরুমের জল, প্লাস্টিক প্রভৃতি গৃহস্থালির ব্যবহারে অযোগ‍্য জিনিসগুলো থেকে বর্জ‍্য উৎপন্ন হয় ।
  • শিল্প বর্জ‍্য : তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই, রং, ধাতু, জৈব ও অজৈব পদার্থ প্রভৃতি থেকে বর্জ্য পদার্থের সৃষ্টি হয় ।
  • কৃষিজ বর্জ‍্য : গাছের কান্ড ও মূল, ধানের খোসা, পাটকাঠি, নারকেলের ছোবড়া, খড়, ধানের খোসা প্রভৃতি থেকে উৎপন্ন হয় ।
  • পৌরসভার বর্জ‍্য : শহরাঞ্চলের প্লাস্টিক, কাচের বোতল, পিচবোর্ড, বৈদুতিক জিনিস প্রভৃতি থেকে উৎপন্ন হয় ।
  • জৈব বর্জ‍্য : মাছ, মাংস, খাবারের উচ্ছিষ্ট, কাগজের প্লেট, ফল ও শাকসবজি ইত্যাদি জৈব পদার্থ থেকে বর্জ্য পদার্থের সৃষ্টি হয় ।
  • চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ‍্য : হাসপাতাল থেকে নির্গত পদার্থ যেমন – অপারেশনে বাদ যাওয়া অঙ্গপ্রত‍্যঙ্গ, তুলো, গজ, ওষুধের ফয়েল, গজ, ছুঁচ, সিরিঞ্জ, কাপড় প্রভৃতি পদার্থ হল বর্জ‍্যপদার্থ ।
  • তেজস্ক্রিয় বর্জ‍্য : তেজস্ক্রিয় বর্জ‍্য পদার্থ যেমন পারমাণবিক চুল্লি, যুদ্ধাস্ত্র নির্মাণ কেন্দ্র প্রভৃতি থেকে নির্গত গ‍্যাস ।

পরিবেশের উপর বর্জ‍্যের প্রভাব

  • স্বাস্থ‍্য : হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে নির্গত বর্জ‍্য পদার্থের ফলে বিভিন্ন রোগ ছড়ায় যেমন- আমাশয়, জন্ডিস, কৃমির প্রকোপ, চর্মরোগ, টাইফয়েড, ব্রংকাইটিস, আলসার প্রভৃতি । উদ্ভিদের ক্ষেত্রে ক্লোরোসিস, নেক্রোসিস রোগ হয়।
  • মৃত্তিকা : যেসব রাসায়নিক পদার্থ (কীটনাশক, ডিটারজেন্ট) ও প্লাস্টিক জাতীয় দ্র‍ব‍্য মাটির সঙ্গে না মিশে, মাটিতে সঞ্চিত হয় এবং মাটি দূষিত করে । এর কারণে মানুষ ও অনান‍্য প্রাণীর ক্ষতি হয় ।
  • বায়ু : খোলা জায়গায় বহুবছর ধরে বর্জ‍্য পদার্থগুলো জমিয়ে রাখলে তা পচে গিয়ে বায়ুকে দূষিত করে । এর ফলে মানুষের দেহের সৌন্দর্য নষ্ট হয়, দেহ ও মনের অস্বস্তি বাড়িয়ে তোলে।
  • জল : বেশি প্লাস্টিকের ব‍্যবহারের কারণে ড্রেনগুলিতে প্লাস্টিকের সঞ্চয় হচ্ছে, এর ফলে ড্রেনগুলির মুখ বুজে যায় দূষিত জল বেরোতে পারেনা । এর কারণে বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ ঘটছে ।

বর্জ‍্য ব‍্যবস্থাপনার পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয়তা 

বর্জ‍্য ব‍্যবস্থাপনার ধারণা : মানব সভ‍্যতার ভয়ানক সংকট মোচন করার জন‍্য গড়ে উঠছে বর্জ‍্য ব‍্যবস্থাপনা । পরিবেশ দূষণ রোধে বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস, বর্জ্যের পুনরায় ব্যবহার এবং পুনর্নবীকরণ করাকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলে ।

তিনটি প্রক্রিয়ায় বর্জ‍্য পদার্থ কমিয়ে আনা সম্ভব ।

  • বর্জ‍্যের পরিমাণগত হ্রাস (Reduction) : প্লাস্টিক, পলিথিন এসব পদার্থ পুনরায় আর ব‍্যবহার করা যায় না, তাই এগুলোর ব‍্যবহার কম করতে হবে ।
  • পুনর্বব‍্যহার (Reuse) : যেসব বর্জ‍্য পদার্থ যেমন – তরকারির খোসা, গোবর, পচা ডাল পাতা এগুলোকে জমিয়ে মাটি চাপা দিয়ে রাখলে জৈব সার উৎপন্ন হবে । এইসব বর্জ‍্য পদার্থকে একজায়গায় জমিয়ে না রেখে তা পুনরায় ব‍্যবহার করার ব‍্যবস্থা  করতে হবে।
  • পুনর্ননবীকরণ (Recycling) : যেসব বর্জ‍্য পদার্থ (পুরানো লোহা গলিয়ে নতুন লোহা) দিয়ে নতুন করে আবার জিনিস বানানো যায় সেইসব পদার্থের পুনর্নবীকরণের ব‍্যবস্থা করতে হবে‌।

কঠিন, তরল ও গ‍্যাসীয় বর্জ‍্য ব‍্যবস্থাপনা 

স্ক্রাবার : বায়ুদূষণ রোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র হল স্ক্রাবার । স্ক্রাবার চিমনির কাজ করে । এই যন্ত্রের সাহায‍্যে উষ্ণবায়ু তাপমুক্ত করা হয়‌, বায়ুকে পরিশ্রুত করা হয়, বিভিন্ন ধরণের দূষক ও ধূলিকণা পরিশ্রুত করণে ব‍্যবহৃত হয় ।

বর্জ‍্য পৃথকীকরণ : শহরাঞ্চলের বর্জ‍্যপদার্থ নিষ্পত্তির জন‍্য এক স্থান থেকে অন‍্যস্থানে নিয়ে গিয়ে জৈবসার তৈরি হবে এমন বর্জ‍্য পদার্থকে আলাদা করা হয় । এখান থেকে ধাতু, কাগজ প্রভৃতি বেছে নিয়ে কারখানায় কাঁচামাল হিসাবে ব‍্যবহার করা হয় ।

ভরাটকরণ : মোবিল, তেল, মরা প্রাণী প্রভৃতি বর্জ‍্য পদার্থ থেকে জৈব পদার্থ গুলিকে আলাদা করা হয় এবং সেই বর্জ্য ফেলার জন্য পরিকল্পিত যে স্থান নির্বাচন করা হয় তাকে ভরাটকরণ বলে। এই জৈব পদার্থগুলিকে মাটি দিয়ে ভরাটকরণ করা হয় । 4-6 মাসের মধ‍্যে জৈবপদার্থের পচন শেষ হয় ।

কম্পোস্টিং : যে পদ্ধতিতে জৈব বর্জ্য পদার্থকে ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে বিয়োজন ঘটিয়ে হিউমাসে পরিণত করা তাকে বলা হয় কম্পোস্টিং । সমস্ত জৈব‍ পদার্থগুলিকে যন্ত্রের সাহায‍্যে চূর্ণবিচুর্ণ করে বায়বীয় ব‍্যকটেরিয়ার দ্বারা কম্পোস্ট সার তৈরি করা হয় ।  আবার মাটির সাথে  জৈব পদার্থ বিছিয়ে কয়েকটি স্তর গঠন করে ব‍্যাকটেরিয়ার দ্বারা কম্পোস্ট সার তৈরি করা হয় ।

নিষ্কাশন/নিকাশি : জলীয় বর্জ‍্য পদার্থ নিস্কাশন করে পরিস্কার জল সংগ্রহ করা হয় ।

বর্জ‍্য ব‍্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা

  • বর্জ‍্য ব‍্যবস্থাপনার মাধ‍্যমে পরিবেশকে দূষণ মুক্ত করা সম্ভব ।
  • বিভিন্ন ক্ষতিকার বর্জ‍্যপদার্থের সঠিক ব‍্যবহারের ফলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটবে ।
  • ক্ষতিকারক দিক থেকে মানুষকে সচেতন করা যাবে ।

বর্জ‍্য ব‍্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থী 

  • নালানর্দমা পরিস্কার : নালানর্দমা পরিস্কার রাখতে হবে । DDT স্প্রে করতে হবে । ড্রেনে তেল দিতে হবে যাতে মশার লার্ভা ও ডিম ধ্বংস হয়।
  • জনসচেনতা বৃদ্ধি করা : কাছাকাছি থাকা হাট-বাজারে প্লাস্টিক ব‍্যবহারের ক্ষতিকর দিকটা মানুষের কাছে জানিয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে ।
  • উচ্ছিষ্ট পদার্থ যত্রতত্র না ফেলা : মিড ডে মিল সংক্রান্ত উচ্ছিষ্ট, সবজির খোসা, ভাতের মাড় যেখানে সেখানে না ফেলে নির্দিষ্ট জায়গায় সঞ্চয় করতে হবে ।
  • পারিপার্শ্বিক পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা : ক্লাসরুম পরিস্কার রাখতে হবে, সমস্ত ময়লা আবর্জনা ডাস্টবিনে ফেলতে হবে ।
  • উপযুক্ত স্থানে বর্জ‍্যপদার্থ নিক্ষেপ : ঘরের সমস্ত বর্জ‍্য পদার্থ যেখানে সেখানে না ফেলে নির্দিষ্ট পাত্রে ফেলে দিতে হবে ।
  • জৈব সার প্রস্তুত : ঘরের বর্জ‍্য পদার্থগুলোকে একসাথে নিয়ে সেগুলো পৃথককরণ করে জৈব সার তৈরি করতে হবে ।

ভাগীরথী – হুগলি নদীর উপর বর্জ‍্যের প্রভাব 

ভাগীরথী ও হুগলি নদীর দু-ধারেই জনবসতি এবং অনেক কারখানাও রয়েছে ।

  • নদীর দু-ধারে জনবসতি থাকায় জনবসতিদের  সব বর্জ‍্য পদার্থ নদীর জলে এসেই পড়ছে, এর কারণে নদীর জল দূষিত হচ্ছে ।
  • নদীর কাছে শিল্পকারখানা থাকায় সেখানকার বর্জ‍্যপদার্থ নদীর জলে মিশছে, জল দূষিত হচ্ছে ।
  • 100 মিলি জলে কলিফর্ম ব‍্যাকটেরিয়া 500 হলে সেই জল ভালো জল । কিন্তু হাওড়ায় এর মাত্রা 423125 এবং দক্ষিণেশ্বরে 110000 ।
  • নদীতে প্রতিমা নিরঞ্জনের ফলে প্রতিমায় ব‍্যবহৃত পদার্থ নদীর জলে মিশে জল দূষিত হচ্ছে ।
  • লোকেরা নদীর জলে প্রাতঃক্রিয়া সম্পন্ন করায় জল দূষিত হচ্ছে। এর ফলে, নানা ধরণের রোগ দেখা দিচ্ছে । মাছ বিলুপ্ত হচ্ছে । বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস হচ্ছে ।

SOLVED QUESTIONS & ANSWERS of বর্জ্য ব্যবস্থাপনা BORJO BYABOSTHAPONA

1 MARKS QUESTIONS of বর্জ্য ব্যবস্থাপনা BORJO BYABOSTHAPONA

১. কবে চেরনোবিল দুর্ঘটনা ঘটে?

উত্তর: ১৯৮৬ সালের ২৬ শে এপ্রিল।

২. কবে ভূপাল গ্যাস দুর্ঘটনা ঘটে? 

উত্তর: ১৯৮৪ সালের ৩রা ডিসেম্বর।

৩. কোন গ্যাসটি ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার জন্য দায়ী?

উত্তর: মিথাইল আইসোসায়ানেট (MIC)

৪. কোথা থেকে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য নির্গত হয়? 

উত্তর: পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

৫. কোথায় বেশি ইউট্রোফিকেশন ঘটে?

উত্তর: বদ্ধ পুকুরে।

৬. কোন দেশে মিনামাটা ব্যাধি দেখা গিয়েছিল? 

উত্তর: জাপান।

৭. কবে থেকে কিয়োটো চুক্তি কার্যকর হয়েছে? 

উত্তর: ২০০৫ সালের ১৬ই ফেব্রয়ারি।

৮. ফ্লাই অ্যাশ কি?

উত্তর: তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ধোঁয়া মিশ্রিত সূখ্য ছাই।

৯.  লেক ঘাতক কাকে বলে? 

উত্তর: অম্ল বৃষ্টি।

১০. MIC- এর পুরো নাম কি? 

উত্তর: মিথাইল আইসোসায়ানেট।

১১. যে বিষাক্ত জল দূষণ শৈবাল পচনের ফলে ঘটে তার নাম কি? 

উত্তর: স্ট্রিকনিন।

১২. কয়েকটি বিষাক্ত বর্জ্যরে উদাহরণ দাও। 

উত্তর: প্লাস্টিক, পলিথিন, কীটনাশক ওষুধ, তেজস্ক্রিয় পদার্থ ইত্যাদি।

১৩. e-waste কি?

উত্তর: বৈদ্যুতিক ও বৈদ্যুতিন উৎস থেকে নির্গত বর্জ্য।

১৪. e-waste এর কয়েকটি উদাহরণ দাও। 

উত্তর: ভাঙা টিভি, ভাঙা ডিভিডি, খারাপ টেলিফোন, কম্পিউটার ইত্যাদি।

১৫.ASSOCHAM- এর পুরো নাম লেখ। 

উত্তর: The Associated Chambers of Commerce and Industry of India.

১৬. চিকিৎসা সংক্রান্ত কয়েকটি বর্জ্যের উদাহরণ দাও। 

উত্তর: ফেলেদেওয়া সিরিঞ্জ, ছুঁচ, তুলো, ব্যান্ডেজ, ওষুধের ফয়েল, প্যাথলজি সংক্রান্ত কিংবা অপারেশন সংক্রান্ত আবর্জনা ইত্যাদি।

১৭. কম্পোস্টিং কাকে বলে?

উত্তর: জৈব বর্জ্য অর্থাৎ গবাদি পশুর মলকে ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে পচিয়ে হিয়ামাসে পরিণত করা।

১৮.FBF- এর পুরো নাম লেখ। 

উত্তর: Fluidised Bed furnace

১৯. PCV – এর পুরো নাম কি?

উত্তর: Polychlorinated Biphyniles.

২০. কয়েকটি তেজস্ক্রিয় পদার্থের উদাহরণ দাও। 

উত্তর: রেডন – 222, রেডিয়াম – 226 , রেড়িয়াম- 228 ইত্যাদি।

Multiple Choice Questions – 1 Marks of বর্জ্য ব্যবস্থাপনা BORJO BYABOSTHAPONA

১. একটি কঠিন বর্জ্যের উদাহরণ হল –

[a] অব্যবহার্য্য সিরিঞ্জ,

[b] C6H6O (ফেনল),

[c] H3AsO4 (আর্সেনিক),

[d] NO ( নাইট্রোজেন অক্সাইড)

উত্তর: [a] অব্যবহার্য্য সিরিঞ্জ,

২. বিষহীন বর্জ্যের উদাহরণ হল – 

[a] প্রোটিন,

[b] খালি ওষুধের ফয়েল,

[c] NO (নাইট্রোজেন অক্সাইড),

[d] লেড ঘটিত যৌগ

উত্তর: [a] প্রোটিন,

৩. পৌর বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনের উপযোগী পদ্ধতি হল- 

[a] দূরে যেকোনো জায়গায় ফেলে দেওয়া,

[b]স্যানিটারি ল্যান্ডফিল,

[c] পুকুরে বা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া,

[d] খোলা জায়গায় ফেলে দেওয়া

উত্তর: [b]স্যানিটারি ল্যান্ডফিল,

৪. পয়ঃ প্রণালী থেকে বের হওয়া কঠিন বর্জ্য পদার্থকে ব্যবহার করা হয়- 

[a] কম্পোস্ট সারে পরিণত করে,

[b] জীবাশ্ম জ্বালানিতে পরিণত করে,

[c] রাসায়নিক সারে পরিবর্তিত করে,

[d] বায়ো ডিজেলে পরিণত করে

উত্তর: [a] কম্পোস্ট সারে পরিণত করে,

৫. কঠিন বর্জ্য পদার্থ থেকে নতুন ও প্রয়োজনীয় পদার্থ তৈরীর প্রক্রিয়াকে বলা হয়-

[a] বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার

[b] বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরন

[C] বর্জ্য পরিচালনা

[d] বর্জ্য সংরক্ষন

উত্তর: [a] বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার

৬. একটি পরিবেশবান্ধব বর্জ্যের উদাহরন হল – 

[a] লেড (সিসা)

[b] চট

[C] প্লাষ্টিকের তৈরি জিনিস

[d] কাঁচের জিনিস

উত্তর: [b] চট

৭. নিম্ন লিখিত কোনটির উদাহরণ হল শ্যাম্পু, ডিটারজেন্ট, সাবান ইত্যাদি – 

[a] গৃহস্থালীর বর্জ্য

[b] জৈব বর্জ্য

[C] কৃষিকাজে উৎপন্ন বর্জ্য

[d] শিল্প – কাজে উৎপন্ন বর্জ্য

উত্তর: [a] গৃহস্থালীর বর্জ্য

৮. বৃষ্টির জলে কৃষিক্ষেত্র থেকে ধুয়ে আসা অজৈব রাসায়ানিক গুলির মধ্যে উল্লেখ্য হল –

[a] HCO3 (কর্বনেট)

[b] NO3 ( নাইট্রেট)

[c] K (পটাশিয়াম)

[d] CL  (ক্লোরিন)

উত্তর: [b] NO3 ( নাইট্রেট)

৯. পারদ ঘটিত দূষণের একটি প্রধান উৎস হল-

[a] মিথাইল মার্কারি,

[b] Cl (ক্লোরিন),

[c] ক্লোরোঅ্যালকালি,

[d]CFC (ক্লোরোফ্লুরোকার্বন)

উত্তর: [a] মিথাইল মার্কারি

১০. জাপানের কোন শহরে ক্যাডমিয়াম ঘটিত রোগ ইটাই – ইটাই দেখা গিয়েছিল – 

[a] মিনামাটা

[b] কোবে

[c] তোয়ামা

[d] হুবেই

উত্তর: [c] তোয়ামা

১১. রাসায়ানীকের সাহায্যে জলের মধ্যে থাকা আবর্জনা কণার থিতিয়ে পরার প্রক্রিয়াকে বলে –

[a] পরিস্রাবন,

[b] তঞ্চন,

[c] আস্রাবন,

[d] পাতন

উত্তর: [a] পরিস্রাবন,

১২. যে সব বর্জ্য পদার্থ গ্যাসীয় তার প্রধান উৎস হল – 

[a] মোটর চালিত যানবাহন

[b] স্বাস্থ্যকেন্দ্র

[c] কৃষিক্ষেত্র

[d] গৃহস্থালী

উত্তর: [a] মোটর চালিত যানবাহন

১৩. বর্জ্য পদার্থ দিয়ে জমি ভরাট করার ফলে যে গ্যাস উৎপন্ন   হয় তা হল – 

[a] SO₂ ,

[b] NO,

[c] NH3,

[d] ক্লোরোফ্লুরকার্বন (CFC)

উত্তর: [c] NH3,

১৪. যে শিল্পের বর্জ্য পদার্থে অ্যানথ্রাক্স ব্যাসিলি পাওয়া যায় সেটি হল –

[a] রাসায়ানিক

[b] লোহা ও ইস্পাত শিল্প

[c] ট্যানারি শিল্প

[d] খেলনা শিল্প

উত্তর: [c] ট্যানারি শিল্প

১৫. যে শিল্পকেন্দ্র থেকে ফ্লুরাইড নির্গত হয় – 

[a] সিরামিক

[b] Cu (তামা)

[c] কার্পাস বয়ন

[d] বস্ত্রবয়ন

উত্তর: [c] কার্পাস বয়ন

১৬. কল – কারখানার নর্দমার দূষিত জল পরিশোধনে  যা ব্যাবহার করা হয় –

[a] কার্বন,

[b] O2(অক্সিজেন),

[c] সক্রিয় চারকোল,

[d] NACL2

উত্তর: [c] সক্রিয় চারকোল,

১৭. বাতাসের ধুলো ও ধোঁয়া অপসারণ করতে ব্যবহার করা হয় – 

[a] স্ক্র্যাবার

[b] ক্যাটালিটিক কনভার্টার,

[c] ইলেকট্রোস্ট্যাটিক প্রেসিপিটেটর,

[d] কম্পোস্টিং

উত্তর: [c] ইলেকট্রোস্ট্যাটিক প্রেসিপিটেটর,

১৮. অ্যাসিড বৃষ্টির জন্যে দায়ী প্রধান গ্যাসটি হল –

[a] সালফার ডাই অক্সাইড ,

[b] CO2,

[c] Na₂O,

[d] N₂O

উত্তর: [a] সালফার ডাই অক্সাইড ,

১৯. ব্ল্যাকফুট রোগের কারণ – 

[a] সিসার প্রভাব,

[b] Cd- এর প্রভাব,

[c] As- এর প্রভাব,

[d] Cr- এর প্রভাব

উত্তর: [c] As- এর প্রভাব,

২০. যে বর্জ্য বায়ুতে তাড়াতাড়ি জীবাণু ছড়ায়-

[a] তেজস্ক্রিয় বর্জ্য,

[b]চিকিৎসাকেন্দ্রের বর্জ্য,

[c] জৈব বর্জ্য,

[d] বাড়ির বর্জ্য

উত্তর: [a] তেজস্ক্রিয় বর্জ্য,

Short Questions – 2-3 Marks of বর্জ্য ব্যবস্থাপনা BORJO BYABOSTHAPONA

১. বর্জ্য পদার্থ কি?

উত্তর: বিভিন্ন প্রাকৃতিক তরল, গ্যাসীয়, কঠিন পদার্থ যার খুব একটা দাম নেই, বা মানুষের অভাব পূরণে অনুপযোগী বরং পরিবেশ দূষণ ঘটায়, সেই পদার্থগুলোকে বর্জ্য  পদার্থ বলে।

২. কঠিন বর্জ্য পদার্থ কাকে বলে? 

উত্তর: সাধারণত রোজকার ব্যাবহারের জিনিস যখন ব্যাবহার করার পর  ময়লা ফেলার স্থানে পরিত্যক্ত পদার্থ হিসাবে স্তুপ করা থাকে তাদের কঠিন বর্জ্য বলে, এগুলি বিভিন্ন কঠিন পদার্থের মিশ্রনে তৈরি হয়।

৩. তরল বর্জ্য পদার্থ কি?

উত্তর: বিভিন্ন প্রাকৃতিক তরল পদার্থ যাদের কোনো কাজে ব্যবহার করা যায় না, তাদের তরল বর্জ্য বলে। যেমন: চাষের কাজে ব্যাবহার করা সার ও কীটনাশক মেশানো জল।

৪. কঠিন বর্জ্য পদার্থের বৈশিষ্ট্য গুলি কি কি?

উত্তর: (a) কঠিন বর্জ্য পদার্থ অনেক বেশি স্থান দখল করে থাকে।

(b) ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে কঠিন বর্জ্য পদার্থের বিয়োজন হয় এবং কম্পোস্ট সারে পরিনত হয়।

(c) কঠিন বর্জ্য পদাথের প্রকৃতিতে মিশে যেতে অনেক সময় লাগে।

৫. তরল বর্জ্য পদার্থের বৈশিষ্ট্য গুলি কি কি?

উত্তর: (a) তরল বর্জ্য পদাঠের পরিমাণ শহর ও নগরে অনেক বেশি।

(b) তরল বর্জ্যের  কারণে জলাশয়ে অতিরিক্ত পুষ্টি উপাদান তৈরী হওয়ার ফলে কচুরিপানা, অ্যালগি বডির সংখ্যা অত্যধিক বেড়ে যায় , যার ফলে জলে অক্সিজেনের অভাব দেখা যায় এবং জলচর প্রাণীদের মৃত্যু ঘটে, একে ইউট্রোফিকেশন বলে।

৬. গ্যাসীয় বর্জ্য পদার্থের বৈশিষ্ট্য গুলি কি কি? 

উত্তর: (a) গ্যাসীয় বর্জ্য পদার্থ সরাসরি বাতাসে মিশে যায়।

(b) বাতাসে এর মাত্রা বেড়ে গেলে শ্বাসকষ্ট, ব্রঙ্কাইটস, ঝিমুনি ইত্যাদি রোগ দেখা দেয়।

৭. কয়েকটি বিষাক্ত ও বিষ হীন বর্জ্য পদার্থের নাম লেখ।

উত্তর: বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ – সিসা, DDT, কীটনাশক প্রভৃতি।

বিষ হীন বর্জ্য – শাক সবজির খোসা, পয়ঃ – প্রণালী জল প্রভৃতি।

৮. জীব বিশ্লেষ্য বর্জ্য কাকে বলে?

উত্তর: যে সমস্ত বর্জ্য পদার্থ সহজেই অণুজীব বা ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করে পরিবেশে মিশে যায় তাদেরকে জীব বিশ্লেষ্য বর্জ্য বলে।

উদাহরণ : শাক সবজির খোসা, কাগজ, পাটের তৈরি জিনিস।

৯. জীব অবিশ্লেষ্য বর্জ্য কাকে বলে?

উত্তর: যে বর্জ্য পদার্থ গুলি পরিবেশে সহজে মিশে যেতে পারে না অবিশ্লেষ্য অবস্থায় থাকে ও পরিবেশ দূষণ ঘটায় তাদের জীব অবিশ্লেষ্য বর্জ্য বলে।

উদাহরণ: পলিথিন, প্লাস্টিক, কাঁচ প্রভৃতি।

১০. ‘Hazardous waste ‘ কি?

উত্তর: কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় আকারে পরিবেশে বর্তমান যে সকল বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ বায়ু জল ও মাটির সাথে মিশে দূষণ ঘটায় তাদের কে ক্ষতিকারক বর্জ্য বা Hazardous waste।

উদাহরন: ক্যাডমিয়াম, সিসা, আসবেস্টস।

১১. ফ্লাই অ্যাশ কাকে বলে ও এর ব্যবহার লেখ। 

উত্তর: তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন কয়লাকে পড়ানো হলে যে সূক্ষ্ম আণুবীক্ষণিক ছাই তৈরি হয় তাকে ফ্লাই অ্যাশ  বলে।

ব্যবহার : ১. সিমেন্টের বিকল্প হিসাবে বাঁধ তৈরিতে ফ্লাই অ্যাশ ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও নিচু জমি ভরাট করতে, চাষের জমিতে, মাছ চাষে ফ্লাই অ্যাশ ব্যবহার করা হয়।

২. ফ্লাই অ্যাশ দিয়ে ইট তৈরি করা হয়। এই ইট কম সময়ে ও কম তাপমাত্রায় তৈরি করা যায় এবং এতে নোনা ধরে না।

১২. তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য (Radioactive Waste) কাকে বলে? 

উত্তর: বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক তেজষ্ক্রিয় মৈলক পদার্থ, বিস্ফোরক পদার্থগুলি যা প্রাণী জগতের জন্য ক্ষতিকর তাদের তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য বলে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, বোমা বিষ্ফোরণ এবং স্যস্থ্য কেন্দ্র থেকে এই বর্জ্য পদার্থ গুলি নির্গত হয়। এই ধরনের তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য গুলি অত্যন্ত বিষাক্ত এবং বিভিন্ন মারণ ব্যাধির সৃষ্টি করে।

উদাহরন: প্লুটোনিয়াম (239), ইউরেনিয়াম(238), রেডিয়াম (226), বেরিয়াম (142), রেডন, কৃপ্টন, মিথানল, মিথাইল আইসোসায়ানেট, বিউটেন, টলুইন, নাইট্রো গ্লিসারিন, ট্রাই – নাইট্রো – টলুন (TNT), হাইড্রোফ্লুরিক, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (HCL), H2SO4, HNO3 ইত্যাদি।

১৩. চিকিৎসা বর্জ্য (Medical Waste)কাকে বলে? 

উত্তর: নানান সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলি থেকে প্রত্যেকদিন যে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য পদার্থ তৈরি হয় তাদেরকে চিকিৎসা বর্জ্য বলে।

উদাহরণ: ইঞ্জেকশন সিরিঞ্জ, ব্যান্ডেজ, রক্ত মাখা তুলো, গজ, প্লাস্টার, ওষুধের বোতল, স্যালাইনের বোতল, সূঁচ, ছুরি, কাঁচি, ব্লেড, ওষুধের খাপ, সুতো, কাপড়, রক্তের পাউচ, রোগীর মল মূত্র, মানুষের কাটা অঙ্গের অংশ ইত্যাদি।

১৪. দুটি শিল্প জাত বায়ু দূষণের উদাঃ দাও। 

উত্তর: দুটি শিল্পজাত বায়ু দূষক হল – নাইট্রোজেন অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড।

১৫. তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত দুটি বায়ু দূষকের উদাহরণ দাও।

উত্তর: তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত দুটি বায়ু দূষণের নাম হল – SO2 এবং  CO2।

১৬. দুটি বিষাক্ত ভারী উপাদানের উদাহরণ দাও। 

উত্তর: দুটি বিষাক্ত ভারী উপাদানের নাম হলো – পারদ ও সিসা।

১৭. বস্তুকণা দূষক (Particulate Pollutants) কাকে বলে? 

উত্তর: দীর্ঘ কল ধরে যে সমস্ত বস্তুকণা বায়ুমণ্ডলে অবস্থান করে পরিবেশে সমস্যা সৃষ্টি করে তাদের বস্তুকণা দুষক বলে । এটি সাধারণত দু ধরনের হয় প্রাকৃতিক উৎস (পতিত জমি, অগ্নেয়োগীরি এবং মরুভূমি থেকে উৎপন্ন) এবং মানবীয় উৎস(শিল্প, কলকারখানা, চাষের জমি থেকে উৎপন্ন বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ)।

১৮. লিচেট কি? 

উত্তর: বৃষ্টির জলে ধুয়ে ল্যান্ডফিলের বর্জ্য পদার্থগুলো নদী পুকুর প্রভৃতির জলের সাথে মেশে, এই ময়লা ধোয়া জলকে লিচেট বলে। এই দূষিত জল নদী, জলাশয়ের জলকে দূষিত করে।

১৯. গাছপালা পোড়ালে যে দুটি প্রধান গ্যাস তৈরি হয় তার নামে লেখ।

উত্তর: গাছপালা পোড়ানোর ফলে নির্গত হওয়া দুটি প্রধান গ্যাস হল নাইট্রোজেন অক্সাইড ( NO 2), কার্বন মনোক্সাইড ( CO)।

২০. ভরাটকরণ বা ল্যান্ডফিল বলতে কি বোঝ?

উত্তর: যে পদ্ধতিতে পূর্ব নির্বাচিত কয়েকটি স্থানে প্রথমে জৈব বর্জ্যগুলিকে ফেলে তার ওপর মাটির স্তর দিয়ে পর পর বিভিন্ন স্তরে কঠিন বর্জ্যগুলি ফেলে নিচুস্থান বর্জ্য দ্বারা ভর্তি করা হয় তাকে ল্যান্ডফিল বা ভরাটকরণ বলে।

Long Questions – 5 Marks of বর্জ্য ব্যবস্থাপনা BORJO BYABOSTHAPONA

১. বর্জ্য কি?এটি কয়প্রকার ও কি কি ?

উত্তর:   বর্জ্য:  বিভিন্ন প্রাকৃতিক তরল, গ্যাসীয়, কঠিন পদার্থ যার খুব একটা দাম নেই, বা মানুষের অভাব পূরণে অনুপযোগী বরং পরিবেশের দূষণ ঘটায়, সেই পদার্থগুলোকে বর্জ্য বলে।

বর্জ্যের প্রকারভেদ :  বর্জ্য পদার্থকে প্রধানত পাঁচ ভাগ ভাগ করা যায়। যথা- (ক) কঠিন বর্জ্য, (খ) তরল বর্জ্য, (গ) গ্যাসীয় বর্জ্য, (ঘ) বিষাক্ত বর্জ্য, (ঙ)বিষ হীন বর্জ্য ।

(ক) কঠিন বর্জ্য- সাধারণত শহরে ময়লা ফেলার স্থানে যে সব পরিত্যক্ত পদার্থ স্তুপ করা থাকে তাদের কঠিন বর্জ্য বলে ।

যেমন–গৃহস্থালীর দ্রব্য, খাবারের অবশিষ্টাংশ, পরিত্যক্ত টিভি, মোবাইল, আসবাবপত্র ইত্যাদি ।

যেমন:  বাড়ির ভাঙা জিনিস , কাঠের টুকরো, প্লাই উড, ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক, শিল্পের ব্যবহার না হওয়া যন্ত্রাংশ ইত্যাদি।

(খ) তরল বর্জ্য – বিভিন্ন প্রাকৃতিক তরল পদার্থ যাদের কোনো কাজে ব্যবহার করা যায় না, তাদের তরল বর্জ্য বলে।

যেমন: চাষের কাজে ব্যাবহার করা সার ও কীটনাশক মেশানো জল, মল, মূত্র এবং বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ।

(গ) গ্যাসীয় বর্জ্য পদার্থ – যে বর্জ্য পদার্থ গুলি গ্যাসীয় অবস্থায় নির্গত হয় তাকে গ্যাসীয় বর্জ্য বলে।

যেমন – NO2 ( নাইট্রোজেন অক্সাইড), SO₂ ( সালফার ডাই অক্সাইড), CO ( কার্বন মনোক্সাইড ) ইত্যাদি।

(ঘ) বিষাক্ত বর্জ্য – যেসব বর্জ্য জীবের মৃত্যু ঘটায়, শারীরিক ভাবে অসুস্থ বা পঙ্গু করে দেয় , তাদের বিষাক্ত বর্জ্য বলে ।

যেমন: রাসায়নিক ভারী ধাতু- সিসা জিংক, পারদ, ক্যাডমিয়াম ইত্যাদি ।

(ঙ) বিষ হীন বর্জ্য – প্রকৃতির মধ্যে অবস্থিত যে সব কঠিন, তরল, ও  গ্যাসীয় পদার্থ মানুষ ও জীব জগতের পক্ষে ক্ষতিকারক নয় তাদের বিষ হীন বর্জ্য বলে।

যেমন: কাঠ, পাতা, ফল ও  শাক সবজির ফেলে দেওয়া অংশ ইত্যাদি।

২. বর্জ্যের বিভিন্ন উৎস গুলি সম্পর্কে লেখ। 

উত্তর: (i) গৃহস্থালীর বর্জ্য: বাড়ি থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন রকম বর্জ্য উৎপন্ন হয়, সেগুলি হল –

(a) রান্নাঘর: শাক সবজির খোসা, শাক সবজি – ফলমূল – মাংসের অবশিষ্ট অংশ, ফেলে দেওয়া মাছের অংশ, প্লাস্টিক পলিথিনের প্যাকেট ইত্যাদি।

(b) বাথরুম: মল, মূত্র, ডিটারজেন্ট ধোয়া জল।

(c) গবাদি পশুর গোয়াল ঘর: গোয়াল ঘরের গরু মোষ ছাগল ইত্যাদির মল মূত্র, হাঁস ও মুরগির মল ইত্যাদি।

(ii) শিল্প বর্জ্য: কলকারখানা গুলি থেকে প্রচুর শিল্পজাত বর্জ্য উৎপন্ন হয়, সেগুলি হল –

(a) ফ্লাই অ্যাশ

(b) রাসায়নিক কারখানা থেকে উৎপন্ন ফেনল, সিসা ঘটিত যৌগ, পারদ ঘটিত যৌগ, রঙ ইত্যাদি।

(c) নানা প্রকার ধাতু যা আকরিক নিষ্কাশনের ফলে নির্গত হয়।

(iii) কৃষিজ বর্জ্য: চাষের ফলে নানা রকম বর্জ্য উৎপন্ন হয়, সেগুলি হল –

(a) ফসল থেকে:  ধানের খোসা, তুষ, খড়, আখের ছিবড়ে, নারকোলের মালা, পাট কাঠি ইত্যাদি।

(b) সার ও কীনাশক: বিভিন্ন রাসায়ানিক সার ও  কীটনাশক ধোয়া জল।

(iv) পৌর বর্জ্য: প্রতিদিন শহরে বা পৌরসভা গুলিতে নানা রকম বর্জ্য এসে জমা হয়, সেগুলি হল –

(a) গৃহস্থালী থেকে: পৌরসভা প্রত্যেকটি বাড়ির রোজকার নানা রকম বর্জ্য – শাক সবজির খোসা, খাবারের অবশিষ্টাংশ, মাছের কাঁটা, মাংসের হাড়, প্লাস্টিক, মোড়ক, প্যাকেট, পলিথিন, ছেরা কাপড় ইত্যাদি।

(b) দোকান ও বাজারের বর্জ্য: শহরে দোকান ও বাজার থেকে প্রতিদিন নানা রকম বর্জ্য উৎপন্ন হয়।

(c) হোটেল ও রেস্টুরেন্টের বর্জ্য: হোটেল ও রেস্টুরেন্ট থেকে নানা রকম অবশিষ্ট খাবারের অংশ, বোতল, পলিথিন, প্লাস্টিক, প্যাকেট, মোড়োক, শাক সবজির খোসা প্রভীতি বর্জ্য উৎপন্ন হয়।

(d) স্কুল কলেজের বর্জ্য : প্রতিদিন স্কুল ও কলেজ থেকে প্লাস্টিক, ফাস্টফুডের প্যাকেট, মোড়োক, ছেঁড়া কাগজ, ব্যাবহার না করা কাগজ ইত্যাদি পাওয়া যায়

(e) হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমের বর্জ্য : প্রতিদিন হাসপাতাল ও নার্সিং হোম থেকে ওষুধের ফাঁকা খাপ, ব্যান্ডেজ ইত্যাদি বর্জ্য হিসাবে পাওয়া যায়।

(v) জৈব বর্জ্য – (a) উদ্ভিদ থেকে : চাষের জমিতে ফসল কাটার পর অবশিষ্ট গাছের গোড়া, খসে পড়া ডাল, ফল, ফুল ইত্যাদি।

(b) প্রাণী থেকে: প্রানীদের মল মূত্র ইত্যাদি।

(vi) চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্য: সরকারি ও বেসরকারি অপরেশন থিয়েটার, প্যাথলজি সেন্টার, পশু হাসপাতাল প্রভৃতি থেকে যে দ্রব্য গুলি ফেলে দেওয়া হয় সেগুলিই হল চিকিৎসা সংক্রন্ত বর্জ্য। এগুলি হল  ফেলে দেওয়া সিরিঞ্জ, কাঁচি, তুলো, ব্যান্ডেজ, ওষুধের ফেলে দেওয়া খাপ ইত্যাদি।

(vii) তেজস্ক্রিয় বর্জ্য: 

(a) ধাতু: নানা রকম ধাতু যেমন সিসা,  জিংক, আর্সেনিক, পারদ, ক্যাডমিয়াম ইত্যাদি থেকে উৎপন্ন বর্জ্য।

(b) গ্যাস: কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রিক অক্সাইড ইত্যাদি গ্যাস।(c)পারমাণবিক চুল্লি থেকে উৎপন্ন বর্জ্য।

(d) পারমানবিক বিস্ফোরণ থেকে উৎপন্ন বর্জ্য।

৩.  পরিবেশের উপর বর্জ্যের প্রভাব গুলি বিশ্লেষণ কর।

উত্তর: পরিবেশের উপর বর্জ্যের প্রভাব: পৃথিবীতে ক্ষতিকারক বর্জ্য পদার্থের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। ফলে  বর্জ্য পরিবেশের উপর নানা প্রভাব ফেলছে যথা –

(i) স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব – চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্যের ফলে মানুষের শরীরে নানা রোগের আবির্ভাব ঘটছে। সংক্রামক বর্জ্যের জন্য কৃমি, ফুসফুসের রোগ, হেপাটাইটিস বি, চর্মরোগ, জন্ডিস, টিটেনাস ইত্যাদি রোগ দেখা যাচ্ছে।

(ii) জলের উপর প্রভাব: বর্তমানে সমস্ত রকম জলাশয়  বর্জ্য পদার্থ জমা রকাহার জায়গা হয়ে উঠেছে। পয়ঃপ্রণালী বা নর্দমার বর্জ্য কারখানার বর্জ্য সরাসরি পাইপের মধ্যে দিয়ে জলাশয় এসে জলাশয়কে দূষিত করছে। এর ফলে জলজ বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হচ্ছে।

(iii) বায়ুর উপর প্রভাব: পচে যাওয়া বর্জ্য পদার্থ থেকে বেরানো গ্যাস ও নানা রকম তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য বায়ুতে মিশে বায়ু দূষণ ঘটায়। যেমন –  ১৯৮৪ সালে ৩রা ডিসেম্বর ভারতের মধ্যপ্রদেশে অবস্থিত ভোপালের ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া লিমিটেড কোম্পানির কীটনাশক তৈরির কারখানা থেকে দুর্ঘটনা বসত মিথাইল আইসোসায়ানেট ছড়িয়ে পড়ে । এর ফলে বহু মানুষের মৃত্যু হয় এবং পরবর্তী কালে সেখানে বিকলাঙ্গ শিশু জন্মাতে দেখা যায়।

(iv) মাটির উপর প্রভাব: মানুষের ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ যেমন –  কীটনাশক,  ডিটারজেন্ট ইত্যাদি বর্জ্য মাটিতে মিশে গিয়ে দূষণ ঘটায়। জৈব অবিশ্লেষ্য পদার্থ হিসাবে পলিথিন, প্লাস্টিক ইত্যাদি মাটির মধ্যেকার জলের স্বাভাবিক গিতিক রোগ করে ও মাটির উর্বরা শক্তি হ্রাস করে।

৪. বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় 4R – এর গুরুত্ব গুলি লেখ।

উত্তর : বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় 4R – এর গুরুত্ব: বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য বা অব্যবহৃত পদার্থগুলোকে নতুন ও প্রয়োজনীয় দ্রব্যে পরিবর্তনের মাধ্যমে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখার প্রক্রিয়াকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলে।  সাধারণত চারটি প্রক্রিয়ার দ্বারা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হয় যথা

(১) Reduce

(২) Reuse

(৩) Recycle

(৪) Refuse

(১) বর্জ্যের পরিমাণগত হ্রাস (Reduce) : বর্জ্যের পরিমাণকে কম করা হল এর প্রথম পর্যায়। এর জন্য যে বিষয় গুলির উপর নজর দিতে হবে সেগুলি হল –

(a) সাধারণ মানুষকে আরো বেশি সচেতন করা।

(b) কঠিন বর্জ্য গুলিকে জ্বালিয়ে দেওয়া বা মাটির নিচে চাপা দেওয়া।

(c) যাতে বর্জ্যের পরিমাণগত হ্রাস ঘটে সেদিকে নজর রাখা ইত্যাদির দ্বারা বর্জ্যের পরিমাণকে কমানো সম্ভব।

(২) পুনর্ব্যবহার (Reuse) : কোনো জিনিসকে একবার ব্যবহারের পর ফেলে না দিয়ে আবার ব্যবহার করাকে পুনর্ব্যবহার বলে। যেমন –

(a) পুরনো খবরের কাগজে মোড়ক হিসাবে ব্যবহার করা।

(b)বর্জ্য হিসাবে ফেলে দেওয়া জিনিস গুলোকে ব্যবহার যোগ্য জিনিস পরিণত করা। যেমন – খেলনা, ঘর সাজানোর জিনিস ইত্যাদি।

(৩) পুনর্নবীকরণ (Recycle) : যে প্রক্রিয়ায় বর্জ্য পদার্থগুলোকে  ‘ পুনরায় উৎপাদন পদ্ধতিতে ‘ একই জিনিস তৈরি করতে ব্যাবহার করা হয় তাকে বর্জ্যের পুনর্নবীকরণ বলে। যেমন – (a) ইস্পাত তৈরির জন্য পুরনো লোহা ব্যবহার করা। (b) প্লাস্টিক থেকে আবার নতুন জিনিস তৈরি করা।

(৪) প্রত্যাখ্যান করা (Refuse) : যে সকল দ্রব্য পরিবেশের ক্ষতি করে প্রতিটি মানুষকে সেগুলির ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে যেমন ক্যারি ব্যাগ রূপে পলিথিন।

৫. বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলতে কি বোঝ? এর পদ্ধতিগুলি সবিস্তারে আলোচনা কর। 

উত্তর: বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য বা অব্যবহৃত পদার্থগুলোকে নতুন ও প্রয়োজনীয় দ্রব্যে পরিবর্তনের মাধ্যমে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখার প্রক্রিয়াকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি: নানা রকম বর্জ্যের ব্যাবস্থাপনা গুলি হল –

(i) বর্জ্য পৃথক করন: বর্জ্য পদার্থ গুলিকে একজায়গায় জড়ো করে সেগুলি থেকে জৈব ভঙ্গুর ও  জৈব অভঙ্গুর বর্জ্য গুলিকে আলাদা করা হয়। জৈব ভঙ্গুর যারা উদ্ভিদ ও প্রাণী থেকে সৃষ্ট তাদের ভাঙার জন্য সাহায্য করে কিছু অনুবিক্ষণিক বিয়োজক যেমন ব্যাক্টেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদি। প্লাস্টিক, পলিথিন, কাঁচ ইত্যাদি হল জৈব অভঙ্গুর।

(ii)ভরাটকরণ: যে পদ্ধতিতে পূর্ব নির্বাচিত কয়েকটি স্থানে প্রথমে জৈব বর্জ্যগুলিকে ফেলে তার ওপর মাটির স্তর দিয়ে পর পর বিভিন্ন স্তরে কঠিন বর্জ্যগুলি ফেলে নিচুস্থান বর্জ্য দ্বারা ভর্তি করা হয় তাকে ল্যান্ডফিল বা ভরাটকরণ বলে।

(iii) কম্পোস্টিং: অণুজীব বা জীব দ্বারা বিশ্লেষ্য বর্জ্য গুলিকে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিয়োজন করার পদ্ধতিকে কম্পোস্টিং বলে।

(iv) নিষ্কাশন বা নিকাশি: পেট্রো – রাসায়ানিক শিল্পের বর্জ্য, ইঞ্জিনেয়ারিং শিল্পের বর্জ্য ও নানারকম দূষিত রাসায়ানিক পদার্থ  নালা নর্দমার মাধ্যমে নদী বা সমুদ্রের জলে মেশে। বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে এই পদ্ধতিতে মাটির ক্ষয় রোধ করে খাল বা নালার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার বর্জ্য থেকে দূষিত পদার্থ নিষ্কাশন করে তারপর নদী বা সমুদ্রে অথবা জলাশয়ে ফেলা হয়।

(v) স্ক্রাবার বা পরিশোধন: এটি একটি যন্ত্র যার সাহায্যে কলকারখানার দূষিত ধোয়া ও ভাসমান দূষিত কণা বা গ্যাসীয় বর্জ্যকে বিশুধ্য করা হয় এবং বায়ুতে মুক্ত করা হয়। দূষিত গ্যাসীয় বর্জ্য কে ফিল্টার করার ব্যবস্থা থেকে এই যন্ত্রে।

৬. কম্পোস্টিং – এর পদ্ধতি গুলি আলোচনা কর।

উত্তর: অণুজীব বা জীব দ্বারা বিশ্লেষ্য বর্জ্য গুলিকে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিয়োজন করার পদ্ধতিকে কম্পোস্টিং বলে।

পদ্ধতি: এটি দুটি পদ্ধতিতে করা হয়। যথা –

(১) সবাত কম্পোস্টিং (Aerobic Composting) : যে পদ্ধতিতে জৈব পদার্থ বায়ুর উপস্থিতিতে জীবাণু বা ব্যাক্টেরিয়া দ্বারা বিয়োজিত হয় সেই পদ্ধতিকে সবাত কম্পোস্টিং বলে।

(২) অবাত কম্পোস্টিং (Anaerobic Composting) : যে পদ্ধতিতে জৈব পদার্থ বায়ুর অনুপস্থিতিতে জীবাণু বা ব্যাক্টেরিয়া দ্বারা বিয়োজিত হয় সেই পদ্ধতিকে অবাত কম্পোস্টিং বলে। বেঙ্গালুরুতে বেশি মাত্রায় প্রয়োগ হাওয়ায় এই পদ্ধতি বেঙ্গালুরু পদ্ধতি নামেও পরিচিত।

গৃহস্থালীর রোজকার অব্যবহৃত জিনিস যেমন – খাবারের ফেলেডেওয়া অংশ, শাকসবজির খোসা, গবাদি পশুর মলমূত্র ইত্যাদিকে মাটিতে গর্ত করে ভর্তি করা হয় এবং মাটির স্তর দিয়ে চাপা দেওয়া হয় এর ফলে কিছু মাস পরে জীবাণু দ্বারা ওই জৈব পদার্থ গুলি বিয়োজিত হয়।

সুবিধা  – (a) কম্পোস্টিং পদ্ধতিতে উৎপন্ন জৈব সারের মধ্যে উদ্ভিদ বৃদ্ধির জন্য পুষ্টিকর উপাদান নাইট্রোজেন, ফসফেট ইত্যাদি থাকে।

(b) চাষের কাজে জৈব সার ব্যাবহার করলে মাটির গুণাগুণ বজায় থাকে এবং তার সাথে সাথে উর্বরতা বাড়ে এবং উৎপাদন ক্ষমতাও বাড়ে

(৩) অসুবিধা: এই পদ্ধতিটি লোকালয় থেকে দূরে খোলা জায়গায় না করলে দূষণের সৃষ্টি হোয় এবং নানা রকম রোগজীবাণু আক্রমণের সম্ভাবনা থাকে।

৭. নিষ্কাশন ব্যবস্থা বা নিকাশি পদ্ধতিটি লেখ। 

উত্তর: পেট্রো – রাসায়ানিক শিল্পের বর্জ্য, ইঞ্জিনেয়ারিং শিল্পের বর্জ্য ও নানারকম দূষিত রাসায়ানিক পদার্থ  নালা নর্দমার মাধ্যমে নদী বা সমুদ্রের জলে মেশে। বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে এই পদ্ধতিতে মাটির ক্ষয় রোধ করে খাল বা নালার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার বর্জ্য থেকে দূষিত পদার্থ নিষ্কাশন করে তারপর নদী বা সমুদ্রে অথবা জলাশয়ে ফেলা হয়।

পদ্ধতি: কারখানা, গৃহস্থালী, হোটেল পৌর অঞ্চল,  স্বাস্থ্য কেন্দ্র ইত্যাদির তরল বর্জ্যকে পর্যায়ক্রমে শোধন করে অন্যত্র পাঠানো হয়, সেগুলি হল –

(i) প্রথম পর্যায় – প্রথম পর্যায়ে বর্যেকে বড় জলাধারে ধরে রেখে সেখানে অপেক্ষাকৃত ভারী বর্জ্য কে নিচে থিতিয়ে পড়তে দেওয়া হয়।

(ii) দ্বিতীয় পর্যায় – জলের ওপর ভাসমান এবং দ্রবীভূত পদার্থ কে দ্বিতীয় পর্যায় আলাদা করা হয়।

(iii) তৃতীয় পর্যায় – তৃয় পর্যায়ে জলকে ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মধ্যে দিয়ে নিয়ে গিয়ে  ত পরিশোধন করার পর সমুদ্রে নদীতে বা অন্য কোনো জলাশয়ে ফেলা হয়।

সুবিধা – (i) তরল বর্জ্য নর্দমার, নালা বা পয়ঃপ্রণালীর মাধ্যমে, যেমন কলকারখানার তরল, মল মূত্র ইত্যাদি নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে গেলে ত থেকে দূষণ ছড়ায় না।

(ii) অন্য জলা ভূমিতে ফেলার আগে তরল বর্জ্যকে পরিশোধন করা হয় বলে তা থেকে দূষণ ছড়ায় না।

(iii) পরিশোধিত তরল অনেকসময় পুনরায় ব্যবহার করা যায়।

৮. স্ক্রাবার বা পরিষ্করণ সম্পর্কে লেখ। 

উত্তর:   স্ক্রাবার হল একটি বিশেষ যন্ত্র যা বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়। এর মাধ্যমে বায়ুর মধ্যে মিশে থাকা ধোঁয়া ধুলো প্রভৃতিকে আলাদা করে বিশুদ্ধ বায়ু নিষ্কাশন করা হয়।

পদ্ধতি:  স্ক্রাবিং দুভাবে করা যায়। যথা –  (১) শুষ্ক স্ক্রাবার:  শুষ্ক স্ক্রাবারের মাধ্যমে গ্যাসীয় দূষিত পদার্থ যথা হাইড্রোকার্বন পরিশোধন করা হয়। এর মাধ্যমে কারখানা থেকে বেরানো দূষিত ধোঁয়াকে অম্ল মুক্ত করা হয়।

(২) আর্দ্র স্ক্রাবার: আর্দ্র স্ক্রাবারের মাধ্যমে মূলত রাসায়নিক, অ্যাসিড, পীচ তৈরির কারখানা থেকে বেরোনো অ্যাসিডিক ধোঁয়াকে পরিশোধন করা হয়। এই স্ক্রাবারের মাধ্যমে বায়ুতে জল সিঞ্চন করে অ্যামোনিয়া ও সালফার ডাইঅক্সাইড দুর করা হয়।

৯. বর্জ্য পদার্থ হিসাবে ধাতুর ভূমিকা আলোচনা করো। 

উত্তর: কলকারখানা বা পৌরসভা থেকে আগত কঠিন বর্জ্য পদার্থের একটা বড়ো অংশ হল ধাতব অংশ। স্টীল, তামা, অ্যালুমিনিয়াম ও অন্যান্য অনেক ধাতুই থাকে এই ধাতব বর্জ্য পদার্থে। নন – ফেরাস ধাতুগুলিকে রাসায়নিক পদ্ধতিতে এবং ফেরাস ধাতুগুলিকে চৌম্বক পদ্ধতিতে আলাদা করে জড়ো করা হয়। নন – ফেরাস ধাতুগুলোর মধ্যে প্রধান হল অ্যালুমিনিয়াম, তামা, সিসা ইত্যাদি। এগুলোকে যথাক্রমে রাসায়নিক, চৌম্বক, তাপীয় ইত্যাদি পদ্ধতির মাধ্যমে আলাদা করে গলিয়ে আবার সেই সব ধাতু দিয়ে তৈরি জিনিস তৈরি করা যায়।

১০. প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য পদার্থের দূষণ ও তার প্রতিকার সবিস্তারে লেখ।

উত্তর: প্লাস্টিক কঠিন হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন দিয়ে তৈরি হলেও এটি মাটিতে মিশে যায় না, অবিকৃত থাকে। অনেক সময়ে নর্দমার মুখে এগুলি আটকে গিয়ে নিকাশি ব্যবস্থা কে বিপর্যস্ত করে। এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব একমাত্র বর্জ্য প্লাস্টিক কে আবার কাজে লাগিয়ে। বর্জ্য পদার্থের  মধ্যে নানা রকম প্লাস্টিক থাকে, যার মধ্যে প্রধান প্লাস্টিক গুলি হল পলিইথিলিন, পলিস্টাইরিন ও পলিভিনাইল ক্লোরাইড।

প্লাস্টিক জাতিও পদার্থ বর্জ্য পদার্থ থেকে আলাদা করে গলিয়ে পুনরায় ব্যাবহারের উপযোগী করা হয়। এর ফলে যেমন কঠিন বর্জ্যের সমস্যা দূর হয় তেমনি পরিবেশ দূষণও কম হয়। এছাড়াও প্লাস্টিক বা পলিথিনের ব্যাবহার কমিয়ে কাঁচ ও চটের ব্যাবহার করলে এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।

১১. তরল বর্জ্য কয় প্রকার ও কি কি? প্রত্যেক প্রকারের সম্পর্কে লেখ। 

উত্তর: তরল বর্জ্যের বেশির ভাগেই রাসায়নিক মিশে থাকে, যথা –

(১) গৃহস্থালীর তরল বর্জ্য: বাড়িতে ব্যবহৃত বাথরুমের নোংরা জামাকাপড় কাচার জল, স্নানের জল, নর্দমার জল, পুকুরের নোংরা জল ইত্যাদি।

(২) শিল্প কারখানার তরল বর্জ্য: বিভিন্ন কারখানা থেকে নির্গত তরল যেমন – বস্ত্র কারখানা, ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানা, রঙের কারখানা ইত্যাদি।

(৩) কৃষিজ তরল বর্জ্য: চাষের জমিতে বৃষ্টির জলের সঙ্গে রাসায়নিক কীটনাশক ও সার মেশানো জল নালা দিয়ে পুকুরে বা মাটির নিচে চলে যায়।

(৪) পৌর বর্জ্য: মিউনিসিপ্যালিটি এলাকায় ম্যানহোলের মধ্যে অনেক দিন ধরে জমে থাকা নোংরা ও জল।

(৫) তেজস্ক্রিয় বর্জ্য: রাসায়নিক কারখানার জল যা আশেপাশের নদী বা সমুদ্রে অথবা এসে মেশে ও খাদ্য শৃঙ্খলের দ্বারা প্রাণীদের শরীরে প্রবেশ করে।

১২. প্রাকৃতিক উৎসের ভিত্তিতে গ্যাসীয় বর্জ্যকে কোয় ভাগ ভাগ করা যায়? প্রত্যেক প্রকারের সম্পর্কে লেখ। 

উত্তর: গ্যাসীয় বর্জ্যের প্রকারভেদ গুলি হল –

(১) ভূপৃষ্ঠে নাইট্রাইট এবং নাইট্রেটের সংস্পর্শে জাতীয় ব্যাকটেরিয়া এলে NO2 সৃষ্টি হয় যা ওজন স্তরের ক্ষতি করে।

(২) যে বিষাক্ত গ্যাস গুলি দাবানল ও অগ্নুৎপাতের সময়ে নির্গত হয় ত পরিবেশের দূষণ ঘটায়।

১৩.  গ্যাসীয় বর্জ্যের কৃত্রিম উৎস গুলি সম্পর্কে লেখ। 

উত্তর: গ্যাসীয় বর্জ্যের কৃত্রিম উৎস গুলি হল –

(১) পরীক্ষার জন্য বা যুদ্ধ ব্যবহার করা পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্ফোরণের ফলে নির্গত বিপুল পরিমাণ শক্তি,  নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড সৃষ্টি করে।

(২) CO2, NO2, জলীয় বাষ্পের ওজোন স্তরে যুক্ত হওয়ার মূল কারণ হল যেত বিমানের চলাচল।

(৩) এসি মেশিন, রেফ্রিজারেটর থেকে নির্গত CFC বায়ুমণ্ডলের দূষণ ঘটায়।

(৪) ম্যানহোল, ধান জমি, জলাজমি হল মিথেন গ্যাসের প্রধান উৎস।

(৫) শিল্প কেন্দ্র থেকে নির্গত SOx, CO2 ইত্যাদি গ্যাস গুলি বায়ুমণ্ডলের দূষণ ঘটায়

১৪. কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পর্যায় গুলি আলোচনা কর।

উত্তর: সাধারণত কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় তিনটি পর্যায় থাকে, সেগুলি হল –

(১) বর্জ্য সংগ্রহ করা (Collection of Waste),  (২) Disposal বা ছোট ছোট অংশে ভেঙে ফেলা, (৩) সম্পদ হিসেবে ফিরিয়ে আনা (Resource Recovery)

(১) বর্জ্য সংগ্রহ: শহরের কোনো একটি নির্দিষ্ট জায়গায় গাড়িতে করে সারা শহরের বর্জ্য গুলি জমা করা হয়। উদাঃ – ধাপার মাঠে কলকাতার সব ময়লা জমা করা হয়।

(২) বর্জ্য ডিসপোজাল: বর্জ্য গুলি জমা করার পর নানান পদ্ধতিতে ডিসপোজাল করা হয়। যথা:

(i) সঞ্চয়ন (Dumping): এই পদ্ধতিতে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বর্জ্য গুলি কমানো হয়।

(ii)ভরাটকরণ (Landfill): যে পদ্ধতিতে পূর্ব নির্বাচিত কয়েকটি স্থানে প্রথমে জৈব বর্জ্যগুলিকে ফেলে তার ওপর মাটির স্তর দিয়ে পর পর বিভিন্ন স্তরে কঠিন বর্জ্যগুলি ফেলে নিচুস্থান বর্জ্য দ্বারা ভর্তি করা হয় তাকে ল্যান্ডফিল বা ভরাটকরণ বলে।

(iii) দাহকরণ (Incineration): এই পদ্ধতিতে একসঙ্গে অনেক পরিমাণে কঠিন বর্জ্যকে পুড়িয়ে ফেলা হয়।

(iv) মিশ্রণ (Composting): অণুজীব বা জীব দ্বারা বিশ্লেষ্য বর্জ্য গুলিকে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিয়োজন করার পদ্ধতিকে কম্পোস্টিং বলে।

(v) বায়ো গ্যাস প্রযুক্তি (Biogas Technology): এই পদ্ধতিতে কঠিন বর্জ্য থেকে বায়ো গ্যাস তৈরি করা হয়।

(vi) পুনর্নবীকরণ (Recycle) : যে প্রক্রিয়ায় বর্জ্য পদার্থগুলোকে  ‘ পুনরায় উৎপাদন পদ্ধতিতে ‘ একই

জিনিস তৈরি করতে ব্যাবহার করা হয় তাকে বর্জ্যের পুনর্নবীকরণ বলে।

 ১৫. কঠিন বর্জ্য পদার্থের পুনর্চক্রিকরণ পদ্ধতি গুলি লেখ। 

উত্তর:  (i) আখের ছিবড়ে এবং বাতিল করা কাগজ দিয়ে পুতুল, কার্ডবোর্ড প্রভৃতি তৈরি হয়।

(ii) নানা রকম ধাতব দ্রব্যগুলো শিল্পের স্ক্র্যাপ হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

(iii) চাষের বর্জ্য থেকে ইথাইল অ্যালকোহল তৈরি করা হয়।

(iv) বায়োলিচিং পদ্ধতির মাধ্যমে ভারী ধাতুগুলো নিষ্কাশন করা হয়।

(v) নতুন কাচের দ্রব্য প্রস্তুতিতে পুরনো ভেঙে যাওয়া কাচের টুকরো ব্যবহার করা হয়।

(vi) ব্যবহার করা ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক থেকে নতুন প্লাস্টিক তৈরি করা হয়।

১৬. তেজস্ক্রিয় বর্জ্য কাকে বলে? এর কয়েকটি উৎসের নামে লেখ।

উত্তর:  বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক তেজষ্ক্রিয় মৌলিক পদার্থ, বিস্ফোরক পদার্থগুলি যা প্রাণী জগতের জন্য ক্ষতিকর তাদের তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য বলে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, বোমা বিষ্ফোরণ এবং স্যস্থ্য কেন্দ্র থেকে এই বর্জ্য পদার্থ গুলি নির্গত হয়। এই ধরনের তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য গুলি অত্যন্ত বিষাক্ত এবং বিভিন্ন মারণ ব্যাধির সৃষ্টি করে।

তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের উৎস: (i) ইউরেনিয়াম খনি, (ii) পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, (iii) পারমাণবিক অস্ত্র, (iv) পারমাণবিক গবেষণাকেন্দ্র, (v) নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টার প্রভৃতি।

১৭.  মাটিদুষণে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পদার্থের ভূমিকা কি?

উত্তর: বহু হাজার বছর ধরে রেডিয়াম, ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম, প্লুটোনিয়াম ইত্যাদি তেজষ্ক্রিয় পদার্থগুলো মাটির মধ্যে সক্রিয় থাকে। এগুলিই মাটি দূষণের অন্যতম উপাদান। মাটির রাসায়নিক ধর্মকে এইসব পদার্থ নষ্ট করে দিতে পারে। যথা –

(i) তেজস্ক্রিয় নিউক্লাইডযুক্ত বৃষ্টির জল মাটিতে পড়ে মাটি দ্বারা শোষিত হয়ে মাটির মধ্যে প্রবেশ করে। ফলে গাছ – পালার মাধ্যমে তেজস্ক্রিয়তা খাদ্যশৃঙ্খলে প্রবেশ করে এবং মানুষের দেহে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে।

(ii) মাটি থেকে তেজষ্ক্রিয় দূষক বৃষ্টির জলে ধুয়ে নদীর জলে এসে মেশে ফলে জলজ বাস্ততন্ত্রের ক্ষতি হয়। এর জন্য জলের মাছ ও অন্যান্য প্রাণীর বিপাক ও শারীরিক কার্যকলাপ বিঘ্নিত হয়।

(iii) মাটির ওপর বা ভূগর্ভে পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণের ফলে তেজস্ক্রিয় উপাদানগুলি মাটির সাথে মিশে যায়।

(iv) মাটির উর্বরতার উপর তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিশেষ প্রভাব পড়ে। অনেক পরিমাণে তেজস্ক্রিয় পদার্থ মাটিতে মিশে গেলে বহু গাছ – পালার মৃত্যু ঘটে।

১৮. কিভাবে শহরের বর্জ্য মাটি দূষণ ঘটায়? 

উত্তর:  বর্তমানে প্রতিদিন শহরাঞ্চল থেকে প্রচুর বর্জ্য পদার্থ উৎপন্ন হয় ফলে এগুলির সঠিক পরিচালন ব্যবস্থার অভাব অন্যতম প্রধান পরিবেশগত সমস্যা। প্রতিবছর ভারতের প্রথম শ্রেণীর শহরে ২ মিলিয়ন টনের বেশি  এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর শহরে ০.২৫ মিলিয়ন টন বর্জ্য তৈরি হয়। এই বিপুল পরিমাণ বর্জ্য অনেকদিন ধরে মাটির ওপরে থাকার ফলে তা মাটি দূষণের প্রধান কারণ হয়ে ওঠে। যথা –

(১) শহর থেকে বের হওয়া বর্জ্য জলে মধ্যে নানান রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু (ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস, প্রোটোজোয়া ইত্যাদি) থাকে যাদের মাধ্যমে কলেরা উদরাময় টাইফোয়েড ইত্যাদি রোগ ছড়ায়। প্রাণীদের মলমূত্রের মধ্যে থাকা জীবাণু মাটির সাথে মিশে যায় এবং দূষণ ঘটায়।

(২) দূষিত ময়লা আবর্জনার ও পাঁক মিশ্রিত বর্জ্য জল জমিতে ঢাললে মাটির উপকারী জীবাণু গুলির সংখ্যা কমে যায় ফলে মাটির উর্বরতা হ্রাস পায় এবং শস্যহানী হয়।

১৯. কি কি ভাবে পরিবেশে তেজস্ক্রিয় দূষণের সৃষ্টি হয়? 

উত্তর: নিম্নলিখিত ভাবে পরিবেশে তেজষ্ক্রিয় দূষণ  হয় –

(১) তেজস্ক্রিয় আকরিক খনন, তেজস্ক্রিয় ধাতু নিষ্কাশন ও শোধন: উত্তোলন ও বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিছু পরিমাণ তেজস্ক্রিয় পদার্থ জলকে দূষিত করে। খনন ধৌত করন ও বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তেজস্ক্রিয় পদার্থ বায়ু দূষণের ঘটায়।

(২) পারমাণবিক চুল্লিতে পারমাণবিক জ্বালানির ব্যবহার: কোনো কারণে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তেজস্ক্রিয় দূষণ পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে। রাশিয়ার চেরনোবিলে ১৯৮৬ সালে এবং জাপানের ফুকুশিমায় ২০১১ সালে এরকম দুর্ঘটনা ঘটে।

(৩) পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা: পৃথিবীর নানা দেশে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষার জন্য  পরিবেশ তেজষ্ক্রিয় পদার্থ দ্বারা দূষিত হয়।

২০. ইউট্রোফিকেশন (Eutrophication) কাকে বলে?

উত্তর: ইউট্রোফিকেশন হল পরোক্ষ ভাবে জৈব পদার্থের সঞ্চয়ের মাধ্যমে জলাশয়ের ভরাটকরন। গ্রিক শব্দ  ‘Eutrophy ‘ থেকে ইউট্রোফিকেশন কথাটি এসেছে। ইউট্রোফিকেশন – এর কারণ:  জলাশয়ে অতিরিক্ত পরিমাণে ডিটারজেন্ট ধোয়া জল, সাবান জল এসে মিশলে  কচুরিপানা, অ্যালগী বডির সংখ্যা অত্যধিক বেড়ে যায় , যার ফলে জলে অক্সিজেনের অভাব দেখা যায় এবং জলচর প্রাণীদের মৃত্যু ঘটে, একে ইউট্রোফিকেশন বলে।

error: Content is protected !!
Scroll to Top
×

এই ওয়েবসাইটের সব কনটেন্ট এক্সেস করুন শুধু একটা মেম্বারশীপের সাথে।  আজকেই ক্লিক করুন নিচে রেজিস্টার করার জন্যে।  অসুবিধে হলে হোয়াটস্যাপ করুন আমাদের  +919804282819