চিঠি- (Chithi) Bangla Literature Subject WBBSE Class 9

আপনি এখানে শিখবেন এই অধ্যায়ে এবং বিষয়ের ফাউন্ডেশন অংশটা, এই বিষয়টিকে সহজ-সরলভাবে পড়িয়েছেন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ভিডিও লেকচার এর মাধ্যমে এবং এই পুরো অধ্যায়কে চার ভাগে খন্ডিত করে আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে

  • প্রথম খন্ডে আপনি শিখবেন ফাউন্ডেশন অংশটা যেখানে অধ্যায়ের ব্যাপারে আপনাকে বোঝানো হয়েছে তার মানে definitions,basics  গুলো সহজভাবে.  এবং এটাকে আপনি বুঝতে পারবেন যেটা আপনাকে পরীক্ষার জন্য ক্রীপের করতে সাহায্য করবে
  • দ্বিতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন MCQ মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন যেটা সাধারণত এক Marks’er আসে পরীক্ষায়
  • তৃতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন শর্ট অ্যানসার এবং কোয়েশ্চেন, যেটা আপনার পরীক্ষার সাজেশন মধ্যে পড়ে এবং এটা 3-4 marks’er  প্রশ্ন আসে আপনার পরীক্ষা
  • চতুর্থ মডিউল আপনি শিখবেন লং আনসার এবং questions যেটা সাধারণত 5-6 marks er হয়

আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন যাতে কি আপনাকে আমরা সাহায্য করতে পারি

বিষয়সংক্ষেপ

29শে জুলাই, 1897 তারিখে ভারতের আলমোড়া থেকে মিস মার্গারেট নোবেলকে লেখা একটি চিঠিতে ,স্বামী বিবেকানন্দ তাকে গঠনমূলক কার্যকলাপে নিযুক্ত হওয়ার জন্য  ভারত সফরে স্বাগত জানিয়েছিলেন।  দেশের প্রাকৃতিক ও সামাজিক প্রতিকূলতার পাশাপাশি ভারতীয় ও শ্বেতাঙ্গদের মনোভাবগুলির রূপরেখা তুলে ধরেছিলেন তার সামনে । এ ব্যতীত , স্বামীজি চিঠিতে এও ব্যাখ্যা করেছিলেন যে মিস নোবেল এই দেশে আসার পরে তার কার্যপ্রণালী কেমন হবে তা জানিয়েছেন । 

স্টার্ডি সাহেবের চিঠি থেকে স্বামীজি জানতে পেরেছিলেন যে মিস নোবেল ভারতে গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি সরাসরি পর্যবেক্ষণ করতে বদ্ধপরিকর। উপরন্তু, স্বামীজি মিস মুলারের কাছ থেকে নোবেল সম্পর্কে  যা শুনেছিলেন তার উপর ভিত্তি করে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন  সমগ্র পরিস্থিতি সম্পর্কে মিস নোবলকে সরাসরি চিঠি লেখাই শ্রেয়। 

স্বামীজির বিশ্বাস ছিল  ভারতের কাজে মিস নোবেলের এক উজ্জ্বল ভবিষ্যত রয়েছে। তিনি বিশ্বাস করতেন যে মিস নোবেলের উপস্থিতি ভারতের সমাজে মহিলাদের তাদের চাহিদা পূরণ করে তাদের ভবিষ্যৎ উন্নতিতে সাহায্য করবে৷ স্বামীজি বিশ্বাস করতেন যে মিস নোবেল তার শিক্ষা, তার স্বাধীনতা, তার পবিত্র আত্মা, তার সীমাহীন ভালবাসা, তার চরিত্রের দৃঢ়তা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তার শিরায় প্রবাহিত কেল্টিক রক্তের কারণে অসামান্য হয়ে উঠবেন এদের মাঝে এবং অপরকেও প্রভাবিত করবেন।

এখানে কাজ করতে আসার আগেই স্বামীজি মিস নোবেলকে জাতির সাধারণ অবস্থা সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিলেন। স্বামীজি বিনয়ের সাথে মিস নোবেলকে  বলেছিলেন যে তিনি ভারতে তার প্রভাবের মাত্রা পর্যন্ত নোবেলকে সম্পূর্ণ সমর্থন করবেন। মিস নোবেলের কাছে চিঠিতে, স্বামীজি তাকে কাজ শুরু করার আগে সমস্ত পরিস্থিতিটি সাবধানে বিবেচনা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে তিনি যদি কখনো ব্যর্থতা বা হতাশার সম্মুখীন হন তবে তিনি সর্বদা তার পাশে থাকবেন।

বস্তুত স্বামীজি নোবেলকে স্বাধীন হতে অর্থাৎ স্বাবলম্বী হওয়াতে চেয়েছিলেন। মিস নোবেল যখন প্রথম আমাদের দেশে এসেছিলেন, স্বামীজি তাকে মিস মুলার বা অন্য কারও কাছে আশ্রয় নিতে নিষেধ করেছিলেন। মিস মুলারের মনোভাব স্বামীজির দ্বারা সমালোচিত হয়েছিল।  তিনি বলেছিলেন “দুর্ভাগ্যক্রমে এই ধারনা ছেলেবেলা থেকেই তাঁর মাথায় ঢুকেছে যে , তিনি আজন্ম নেত্রী আর দুনিয়াকে উল্টে পাল্টে দিতে টাকা ছাড়া আর অন্য কিছুর ই প্রয়োজন নেই।”

কথাপ্রসঙ্গে , আলোচিত হয়েছেন সেভিয়ার দম্পতিও। মিস্টার সেভিয়ার এবং মিসেস সেভিয়ার যখন ভারতে এসেছিলেন, তারা ভারতীয়দের ভালোবাসতেন এবং তাদের সমর্থন করেছিলেন। তবে তারা তখনো কোনো কর্মপরিকল্পনা বেছে নিতে পারেননি। স্বামীজির মনে হয়েছিল  মিস নোবেল এর ভারত সফরের পর তিনি সোভিয়েত দম্পতির নারীদের উন্নতি প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে পারেন। তাদের পাশে দাঁড়াতে পারেন । আসন্ন শরৎকালে স্বামীজির দুই বন্ধু, মিস ম্যাকলাউড এবং মিসেস বুল অফ বোস্টন ভারতে আসবেন আমেরিকান সংবাদ অনুসারে। যেহেতু তারা ইউরোপ হয়েই ভারতে প্রবেশ  করবেন, তাই স্বামীজি মিস নোবেলকে তাদের সাথে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। এটি তাকে তার দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি থেকে মুক্ত করবে, স্বামীজি মন্তব্য করেছিলেন।

অবশেষে, স্বামীজি মিঃ স্টার্ডির চিঠিটির প্রসঙ্গ আরও একবার তুলে ধরেন, তিনি বলেন যে চিঠিটি  অত্যন্ত প্রাণহীন এবং শুষ্ক ছিল এবং তিনি লন্ডন প্রকল্পের ক্ষতির জন্য তিনি যে যারাপনারাই  হতাশ ছিলেন তা সেখানে  প্রকাশ হয়েছে। মিস্টার স্টার্ডির মনোভাব  বুঝতে স্বামীজির কোনো অসুবিধা হয়নি। স্বামীজি  তাঁর চিঠির শেষ অনুচ্ছেদে মিস নোবেলের প্রতি তাঁর ভালোবাসা জানিয়ে চিঠি সমাপ্ত করেন।

নামকরণের তাৎপর্য

মিস মার্গারেট নোবেল সামাজিক ও গঠনমূলক কাজ করতে ভারতে আসবেন জেনে স্বামী বিবেকানন্দ তাকে স্বাগত জানাতে চিঠি লেখেন। তিনি তার চিঠিতে নোবেলকে উদ্দেশ্য করে পরামর্শ এবং নির্দেশনা দেন। বিবেকানন্দ মিস নোবেলকে এদেশের প্রতিকূলতা, খারাপ অবস্থা, স্বাচ্ছন্দ্যের অভাব ইত্যাদির কথা মনে করিয়ে দেন, যা তাকে এই দেশে তার কার্যক্রমে বাধা দেবে। তিনি মিস নোবেলকে সতর্ক করেন যে দেশের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ, কুসংস্কার, দাসত্ব ইত্যাদি তার কাজকে প্রতিবন্ধকতা দেবে।  অন্তঃপর বিবেকানন্দ যে  সর্বদা তাঁর পাশে থাকবেন এটি জানতে তিনি দুবার ভাবেননি। এছাড়াও, বিবেকানন্দ মিস নোবেলকে ভারতে তার কাজের জন্য নিজেই পরিকল্পনা তৈরি করার এবং অন্যদের দ্বারা প্রভাবিত না হওয়ার  পরামর্শ দেন। ঘটনাক্রমে, বিবেকানন্দ এই জাতির সাথে যুক্ত অনেক ইউরোপীয় মহিলা সম্পর্কে তার মতামত প্রকাশ করেছিলেন। মিস মার্গারেট নোবেলের মতো ব্যক্তিরা ভারতের মতো দেশগুলিতে মহিলাদের অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তাও তিনি জোর দিয়ে জানিয়েছিলেন । বিবেকানন্দ এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে ভারতে তার মতো যোগ্যতার একজন মহিলার প্রয়োজন। তার শিক্ষা, নির্জনতা, পবিত্রতা, প্রেম, দৃঢ়তা দ্বারা তিনি যেভাবে গড়ে উঠেছেন তাই একমাত্র কাম্য ভারতীয় নারীদের অগ্রসারী করার জন্য। অতএব, শৈলীর দৃষ্টিকোণ থেকে, রচনাটির জন্য “চিঠি” নামটি উপযুক্ত বলে মনে হয়।

SOLVED QUESTIONS & ANSWERS of পচিঠি- (Chithi)

1 MARKS QUESTIONS of চিঠি- (Chithi)

  1. ‘কল্যাণীয়া মিস নোব্‌ল্’ বলে সম্বোধন করে স্বামী বিবেকানন্দ যাঁকে চিঠি লিখেছেন তাঁর সম্পূর্ণ নাম কী?

উত্তর: ‘কল্যাণীয়া মিস নোব্‌ল্’ বলে যাঁকে সম্বোধন করা হয়েছে, তাঁর সম্পূর্ণ নাম মার্গারেট এলিজাবেথ নোবেল।

  1. আলমোড়া থেকে স্বামীজি মিস নোব্‌ল্‌কে পাঠ্য চিঠিটি লিখেছিলেন । দু-এক কথায় আলমোড়ার বর্ণনা দাও।

উত্তর: ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে আলমোড়া অবস্থিত। আলমোড়ার ওপর দিয়ে কোশী নদী প্রবাহিত হয়েছে। এখানকার নৈসর্গিক শোভা অতুলনীয়।

  1. “স্টার্ডি-র একখানি চিঠি কাল পেয়েছি।”—স্টাৰ্ডি কে?

উত্তর: মি. স্টার্ডি ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দের একজন ইংরেজ ভক্ত, যিনি স্বামীজিকে ইংল্যান্ডে বেদান্ত প্রচারে সহায়তা করেন।

  1. “…তা তুমি ধারণা করতে পারো না।”— কী ধারণা করতে না পারার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: স্বামীজি মিস নোবেল ভারতবর্ষের মানুষের দুঃখ, কুসংস্কার, দাসত্ব প্রভৃতির ব্যাপকতা সম্পর্কে ধারণা না করতে পারার কথা বলেছেন।

5 “… এখন আমার দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে যে …” —বিশ্বাসটি কী? 

উত্তর: স্বামীজির দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে যে, ভারতের কাজে মিস নোবেল এক বিরাট ভবিষ্যৎ রয়েছে।

  1. ভারতের নারীসমাজের উন্নতির জন্য কেমন ব্যক্তির প্রয়োজন?

উত্তর: ভারতের নারীসমাজের উন্নতির জন্য একজন প্রকৃত সিংহীর মতো পরাক্রমশালী নারীর প্রয়োজন।

  1. “…তুমি ঠিক সেইরূপ নারী, যাকে আজ প্রয়োজন।”  মিস নোব্‌লের মধ্যে কোন্ গুণাবলি লক্ষ করে স্বামীজি একথা  বলেছেন?

উত্তর: মিস নোবেলের  শিক্ষা, ঐকান্তিকতা, পবিত্রতা, অসীম ভালোবাসা, দৃঢ়তা ইত্যাদি গুণাবলি লক্ষ করে স্বামীজি একথা বলেছেন।

1৪. “কিন্তু বিঘ্নও আছে বহু।” কোন্ কাজে বিঘ্ন আছে?

উত্তর: ভারতবর্ষের বিশেষত ভারতের নারীসমাজের সার্বিক উন্নয়নের কাজে প্রচুর বিঘ্ন আছে।

  1. “কিন্তু বিঘ্নও আছে বহু।”—বিঘ্নগুলি কী কী?

উত্তর: ভারতবর্ষের দুঃখ, কুসংস্কার, দাসত্ব, জাতিভেদ, অস্পৃশ্যতা ইত্যাদি দেশের উন্নতির কাজে বিঘ্ন হয়ে দাঁড়াতে পারে।

  1. মিস নোব্‌ল্ এদেশে এলে নিজেকে কীভাবে দেখতে পাবেন?

উত্তর: মিস নোবেল এদেশে এলে নিজেকে অসংখ্য অর্ধ-উলঙ্গ নরনারীতে পরিবেষ্টিত অবস্থায় দেখতে পাবেন।

  1. ভয়ে বা ঘৃণায় ভারতীয়রা শ্বেতাঙ্গদের কী করে?

উত্তর: ভয়ে হোক বা ঘৃণায় ভারতীয়রা শ্বেতাঙ্গদের এড়িয়ে চলে।

  1. শ্বেতাঙ্গরা ভারতীয়দের প্রতি কীরূপ মনোভাব পোষণ করে? 

উত্তর: শ্বেতাঙ্গরা ভারতীয়দের প্রতি অত্যন্ত ঘৃণার মনোভাব পোষণ করে।

  1. ভারতবর্ষের জলবায়ু কেমন?

উত্তর: ভারতবর্ষের জলবায়ু অত্যন্ত গ্রীষ্মপ্রধান। এদেশের শীত ইউরোপের গ্রীষ্মের মতো আর দক্ষিণাঞ্চলে সর্বদাই আগুনের হলকা প্রবাহিত হয়।

  1. “এসব সত্ত্বেও যদি তুমি কর্মে প্রবৃত্ত হতে সাহস কর”এখানে ‘এসব’ বলতে কোন্ সবের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: ভারতবর্ষের মানুষের দুঃখ, দাসত্ব, কুসংস্কার, অস্পৃশ্যতা, এখানকার গ্রীষ্মপ্রধান জলবায়ু এবং ইউরোপীয় সুখস্বাচ্ছন্দ্যের অভাবের কথা বলা হয়েছে।

  1. তবু আমার যেটুকু প্রভাব আছে …”—সেই প্রভাব দিয়ে বক্তা কী করবেন বলেছেন?

উত্তর: বক্তার যেটুকু প্রভাব আছে, তা দিয়ে তিনি ভারতীয়দের উন্নতির কাজে মিস নোবেলকে  সাহায্য করবেন বলেছেন।

  1. কর্মে ঝাঁপ দেবার পরে সাফল্যের পাশাপাশি আর কী কী ঘটার সম্ভাবনা থাকতে পারে?

উত্তর: মানবসেবার কর্মে ঝাঁপ দেবার পর সে কাজে বিফল হবার এবং কর্মে বিরক্তি আসার সম্ভাবনা থাকতে পারে।

  1. “মরদ কি বাত হাতি কা দাঁত”—প্রবাদটির অর্থ লেখো। 

উত্তর: প্রবাদটির অর্থ হল, প্রকৃত মানুষ কথা দিলে তা রাখার সর্বতোভাবে চেষ্টা করে, নড়চড় হয় না।

18 “মরদ কি বাত হাতি কা দাঁত”—পুরুষের কথার সঙ্গে হাতির দাঁতের কোন্ সাদৃশ্যসূত্র লেখক দেখেছেন?

উত্তর: হাতির দাঁত যেমন একবার বেরোলে আর ভিতরে যায় না তেমনি যথার্থ পুরুষের প্রতিশ্রুতির কখনও নড়চড় হয় না।

  1. “…আমাকে আমরণ তোমার পাশেই পাবে …. ” -কী কী ঘটলেও বক্তা উদ্দিষ্ট ব্যক্তির পাশেই থাকবেন?

উত্তর: কোনো কারণে ভারতীয়দের জন্য কাজ না করলে, এমনকি বেদান্ত ধর্ম ত্যাগ করলেও বক্তা উদ্দিষ্ট ব্যক্তির পাশেই থাকবেন।

  1. “আবার তোমাকে একটু সাবধান করা দরকার …”— বিষয়ে উদ্দিষ্ট ব্যক্তিকে সাবধান করা দরকার?

উত্তর: ভারতে জনহিতকর কিংবা অন্যের আশ্রয়ে না থেকে মিস নোবেলকে আত্মনির্ভর হতে হবে।

  1. “…এই ধারণা ছেলেবেলা থেকেই তাঁর মাথায় ঢুকেছে …” —কার মাথায় কোন্ ধারণা ঢুকেছে?

উত্তর: মিস মুলারের বদ্ধমূল ধারণা যে তিনি আজন্ম নেত্রী এবং টাকা দিয়ে পৃথিবীকে ওলট-পালট করা যায়।

  1. “…তাঁর সঙ্গে বনিয়ে চলা অসম্ভব।”—কার সঙ্গে কেন। বনিয়ে চলা অসম্ভব?

উত্তর: মিস মুলারের নেত্রীসুলভ মনোভাব এবং দুনিয়াকে বদলাতে কেবল টাকারই দরকার, এই ধারণার কারণে তাঁর সঙ্গে মানিয়ে চলা অসম্ভব।

  1. মিস মুলারের চরিত্রের দুটি গুণের পরিচয় দাও।

উত্তর: মিস মুলার ছিলেন সহৃদয় ও অমায়িক মহিলা। 

  1. মিস মুলারের চরিত্রের দুটি ত্রুটির উল্লেখ করো।

উত্তর: মিস মুলারের মেজাজ রুক্ষ এবং তিনি অস্থিরচিত্ত ।

  1. “তিনি কলকাতায় একটি বাড়ি ভাড়া নেবেন”  ‘তিনি’ কেন কলকাতায় বাড়ি ভাড়া নেবেন?

উত্তর: মিস মুলার নিজের এবং মিস নোবেল-সহ যারা ইউরোপ-আমেরিকা থেকে আসবেন, তাঁদের থাকার জন্য বাড়ি ভাড়া নেবেন ।

  1. স্বামী বিবেকানন্দ মিসেস সেভিয়ারকে কোন্ অভিধায় ভূষিত করেছেন?

উত্তর: স্বামী বিবেকানন্দ মিসেস সেভিয়ারকে ‘নারীকুলের রত্নবিশেষ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

  1. মিসেস সেভিয়ার কেমন মহিলা?

উত্তর: মিসেস সেভিয়ার অত্যন্ত ভালো ও স্নেহময়ী মহিলা স্বামীজি তাঁকে ‘নারীকুলের রত্নবিশেষ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

28 “…তার সবই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।”—কার সবই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়?

উত্তর: যে ব্যক্তি নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন অর্থাৎ স্বনির্ভর হতে পারেন, তাঁর সবই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। 

  1. সেভিয়ার দম্পতি কেমন মানুষ?

উত্তর: সেভিয়ার দম্পতি ভারতবর্ষের মানুষকে ঘৃণা করেন না এবং ভারতীয়দের ওপর কর্তৃত্ব ফলাতে তাঁরা এদেশে আসেননি।

  1. “তুমি এলে তোমার সহকর্মীরূপে তাঁদের পেতে পারো…”সেভিয়ার দম্পতিকে সহকর্মীরূপে পেলে কী সুবিধা হবে?

উত্তর: মিস নোবলের সঙ্গে সেভিয়ার দম্পতি এদেশের উন্নয়নের কাজে যোগ দিলে এদেশের মানুষের বিশেষত নারীসমাজের উন্নতি ত্বরান্বিত হবে।

multiple choice questions – 1 marks of চিঠি- (Chithi)

1. ‘কল্যাণীয়া মিস’ বলে সম্ভাষণ করা হয়েছে—
A ম্যাকলাউডকে B) মুলারকে C) নোব্‌ল্‌কে D)সেভিয়ারকে
উত্তর: C) নোবেলকে
2. চিঠিতে উল্লিখিত মিস নোবলের সম্পূর্ণ নাম—
A) মিস মার্গারেট ই নোবেল B) মিস মার্গারেট আলভা নোবল
C)মিস মার্গারেট আলভা এডিসন নোবল D)মিস মার্গারেট সেভিয়ার নোবল
উত্তর:B) মিস মার্গারেট আলভা নোবেল।
3. স্বামী বিবেকানন্দ কল্যাণীয়া মিস নোবেলকে পাঠ্য চিঠিটি লিখেছেন—
A) আলমোড়া থেকে B) শিলচর থেকে C) মাদ্রাজ থেকে D) শিলং থেকে
উত্তর: A) আলমোড়া থেকে
4. পাঠ্য চিঠিটি লেখার তারিখটি হল –
A) ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২১ জুলাই B)১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২৯ আগস্ট
C) ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই D) ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই
উত্তর: C) ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই
5. “স্টার্ডি-র একখানি চিঠি কাল পেয়েছি।”— মি. ই টি স্টাডি ভারতে থাকাকালীন তপস্যা করেন—
A) বেলুড়ে B) দক্ষিণেশ্বরে C) আলমোড়ায় D) লখনউতে
উত্তর: C) আলমোড়ায়
6. ইংল্যান্ডে স্বামী বিবেকানন্দকে বেদান্ত প্রচারের কাজে সাহায্য করেন
A) মিস্টার স্টার্ডি B) মিস মুলার C) মিসেস সেভিয়ার D) মিসেস বুল
উত্তর: A) মিস্টার স্টার্ডি
7. “তাতে জানলাম যে, তুমি ভারতে আসতে এবং সবকিছু চাক্ষুষ দেখতে দৃঢ়সংকল্প।”—লেখক একথা জেনেছেন—
A) মিস নোব্‌ল্-এর লেখা চিঠি থেকে B) মিস সেভিয়ারের বক্তব্য থেকে
C) মি. স্টার্ডির লেখা চিঠি থেকে D)মিসেস বুল-এর লেখা চিঠি থেকে
উত্তর: C) মি. স্টার্ডির লেখা চিঠি থেকে
8. “সবকিছু চাক্ষুষ দেখতে দৃঢ়সংকল্প”—কে দৃঢ়সংকল্প?
A) স্বামী বিবেকানন্দ B) মিসেস বুল C) মি. স্টার্ডি D) মিস নোব্‌ল্
উত্তর: D) মিস নোবেল
9. “কাল তার উত্তর দিয়েছি।” জুলাই ৩০ জুলাই ‘— ‘কাল’ বলতে কত তারিখ?
A) ২৮ জুলাই B) ২৯ জুলাই C) ৩০ জুলাই D) ৩১ জুলাই
উত্তর: A) ২৮ জুলাই
10. “কাল তার উত্তর দিয়েছি।” ”—লেখক যে প্রসঙ্গে তাঁর উত্তর দিয়েছেন, সেটি হল—
A)ভারতবর্ষে মিস নোবেল-এর আসা এবং সবকিছু চাক্ষুষ দেখতে চাওয়া
B) ভারতবর্ষে বেদান্তের প্রচারে স্বামীজিকে সাহায্য করতে নোবেল এর আসার প্রসঙ্গ
C) মিস মুলারের কর্মপ্রণালী সম্পর্কে স্বামীজির অভিমত
D)সেভিয়ার দম্পতির ভারতে আসার প্রসঙ্গ
উত্তর: A)ভারতবর্ষে মিস নোবেল-এর আসা এবং সবকিছু চাক্ষুষ দেখতে চাওয়া
11. তোমার কর্মপ্রণালী সম্বন্ধে যা জানতে পারলাম…”লেখক উদ্দিষ্ট ব্যক্তির কর্মপ্রণালী সম্বন্ধে জেনেছেন—
A) মিস ম্যাকলাউডের চিঠি থেকে B) মিস মুলারের চিঠি থেকে
C) সেই ব্যক্তির নিজের পাঠানো চিঠি থেকে D) মিসেস সেভিয়ারের চিঠি থেকে
উত্তর: B) মিস মুলারের চিঠি থেকে
12 ” মনে হচ্ছে, সরাসরি তোমাকে লেখা ভালো।”— লেখক যে বিষয়ে উদ্দিষ্ট ব্যক্তিকে লিখতে চান, তা হল—
A) ভারতবর্ষে এসে তাঁর কার্যপ্রণালী কী হবে
B) ভারতবর্ষে তিনি কাদের সঙ্গে আসলে ভালো হয়
C) কেন ভারতবর্ষে তাঁর আসা প্রয়োজন
D) ভারতে না এসেও কীভাবে তিনি ভারতবর্ষের জন্য কাজ করতে পারেন
উত্তর: A) ভারতবর্ষে এসে তাঁর কার্যপ্রণালী কী হবে
13 . এখন আমার দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে যে….” লেখকের দৃঢ় বিশ্বাসটি হল—
A) ভারতবর্ষ সম্বন্ধে মিস নোবেলের অনুরাগ রয়েছে
B) ভারতবর্ষের জন্য মিস নোবল সত্যিই কাজ করতে আগ্রহী
C) ভারতবর্ষে মিস নোবেল কাজের ক্ষেত্রে এক বিরাট ভবিষ্যৎ রয়েছে
D) ভারতের গ্রীষ্মপ্রধান জলবায়ু এবং ইউরোপীয় সুখস্বাচ্ছন্দ্যের অভাব মিস নোবেলকে পীড়িত করে তুলবে
উত্তর: C) ভারতবর্ষে মিস নোবেলের কাজের ক্ষেত্রে এক বিরাট ভবিষ্যৎ রয়েছে।
14. “ভারতের কাজে তোমার এক বিরাট”—
A) প্রয়োজন রয়েছে B). ভূমিকা রয়েছে C) গুরুত্ব রয়েছে D) ভবিষ্যৎ রয়েছে
উত্তর: D) ভবিষ্যৎ রয়েছে
15. বিশেষত ভারতের নারীসমাজের জন্য কার প্রয়োজন রয়েছে?
A)একজন প্রকৃত সিংহীর B)একজন প্রকৃত সিংহের
C) একজন প্রকৃত পুরুষের D) একজন প্রকৃত নেত্রীর
উত্তর: A)একজন প্রকৃত সিংহীর
16. “…সর্বোপরি তোমার ধমনিতে প্রবাহিত …”—এখানে কী প্রবাহের কথা বলা হয়েছে?
A)জার্মান রক্ত B)স্পেনীয় রক্ত C)কেল্টিক রক্ত D) মিশরীয় রক্ত
উত্তর: C) কেল্টিক রক্ত
17. ” …তুমি ঠিক সেইরূপ নারী,____”
A) যে বিদ্রোহিণী B) যাকে আজ প্রয়োজন
C) যে শান্ত-নম্র D) যাকে তোমার দেশের প্রয়োজন
উত্তর: B) যাকে আজ প্রয়োজন
18. ”তুমি ঠিক সেইরূপ নারী, যাকে আজ প্রয়োজন।”— এই প্রয়োজন বিশেষত—
A) ভারতীয় পুরুষজাতির উন্নতিসাধনের জন্য
B) ভারতীয় নারীসমাজের উন্নতিসাধনের জন্য
C) বেদান্তের প্রচারের জন্য
D) কুসংস্কার দূরীকরণের জন্য
উত্তর: B)ভারতীয় নারীসমাজের উন্নতিসাধনের জন্য
19. “তা তুমি ধারণা করতে পারো না।”—কী ধারণা করতে না পারার কথা বলা হয়েছে?
A) এদেশের দুঃখ-কুসংস্কার দাসত্বের ধরন
B) এদেশের আবহাওয়ার ধরন
C) এদেশের শাসকদের মানসিকতার ধরন
D) এদেশের ভৌগোলিক সীমার ব্যাপ্তি
উত্তর: A) এদেশের দুঃখ-কুসংস্কার দাসত্বের ধরন
20 “… তারা শ্বেতাঙ্গদের এড়িয়ে চলে …” —কারা?
A) এদেশের সাধারণ মানুষ B) এদেশের জমিদার শ্রেণির মানুষ
C) এ দেশের নারীসমাজ D) এ দেশের শিক্ষিত মানুষ
উত্তর: A) এদেশের সাধারণ মানুষ
21. তারা শ্বেতাঙ্গদের এড়িয়ে চলে তারা এড়িয়ে চলে কেন?
A) ভয়ে B) ঘৃণায় C) ভয়ে বা ঘৃণায় D) বিদেশি বলে
উত্তর: C) ভয়ে বা ঘৃণায়
22 “তোমাকে খামখেয়ালি মনে করবে এবং প্রত্যেকটি গতিবিধি সন্দেহের চক্ষে দেখবে।”— যাদের সম্পর্কে একথা বলা হয়েছে, তারা হল
A) ভারতীয় পুরুষ B) ভারতীয় নারী C) শ্বেতাঙ্গ D) ভারতীয় শিশু
উত্তর: C) শ্বেতাঙ্গ
23. ভারতবর্ষের জলবায়ু—
A) অত্যন্ত শীতপ্রধান B) অত্যন্ত আরামদায়ক
C) অত্যন্ত বৃষ্টিপ্রধান D) অত্যন্ত গ্রীষ্মপ্রধান
উত্তর: D) অত্যন্ত গ্রীষ্মপ্রধান
24. “সর্বদাই আগুনের হলকা চলছে”— লেখক ভারতের যে অঞ্চলের জলবায়ুর পরিচয় দিতে চেয়েছেন, তা হল—
A) পশ্চিমাঞ্চল B) পূর্বাঞ্চল C) উত্তরাঞ্চল D) দক্ষিণাঞ্চল
উত্তর: D) দক্ষিণাঞ্চল
25 “এদেশের প্রায় সব জায়গার শীতই তোমাদের কীসের মতো?
A) শরতের মতো B) হেমন্তের মতো C) বসন্তের মতো D) গ্রীষ্মের মতো
উত্তর: D) গ্রীষ্মের মতো
26. “এসব সত্ত্বেও যদি তুমি কর্মে প্রবৃত্ত হতে সাহস কর” ‘এসব’ বলতে কীসের কথা বোঝানো হয়েছে?
A) জলবায়ুর বিরূপতা সুখস্বাচ্ছন্দ্যের অভাব ইত্যাদি
B) নারীসমাজের অসহযোগিতা হিন্দুধর্মের রক্ষণশীলতা ইত্যাদি
C) পুরুষদের বিরুদ্ধতা, যোগাযোগের অপ্রতুলতা ইত্যাদি
D) ইউরোপীয় অহংকার, শিক্ষার বড়াই ইত্যাদি
উত্তর: A) জলবায়ুর বিরূপতা সুখস্বাচ্ছন্দ্যের অভাব ইত্যাদি
27. “তোমাকে শতবার স্বাগত জানাচ্ছি।”—বক্তা কোথায় স্বাগত জানাচ্ছেন?
A) ইউরোপে B) ভারতবর্ষে C) আলমোড়ায়D) ধর্মসভায়
উত্তর: B) ভারতবর্ষে
28. তোমাকে শতবার স্বাগত জানাচ্ছি।”—লেখকের শতবার স্বাগত জানানোর কারণ—
A) তিনি চান উদ্দিষ্ট ব্যক্তির উদ্যোগে ভারতীয়দের উন্নতি ঘটুক
B) তিনি এলে লেখকের বেদান্ত প্রচারে সহায়ক হবেন
C) বহুবছর ধরে তিনি ভারতবর্ষে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন
D) তিনি সঙ্গে প্রচুর কর্মোদ্যোগী যুবক নিয়ে আসবেন
উত্তর: A) তিনি চান উদ্দিষ্ট ব্যক্তির উদ্যোগে ভারতীয়দের উন্নতি ঘটুক
29. ”… আমার দিক থেকে নিশ্চয় জেনো যে______”
A) আমাকে আমরণ তোমার পাশেই পাবে
B) আমাকে সর্বদা তোমার পাশে পাবে না
C) এদেশের নারীরা তোমাকে সাহায্য করবে
D) তোমার কাজের পুরস্কার পাবে
উত্তর: A) আমাকে আমরণ তোমার পাশেই পাবে
30. “…আমাকে আমরণ তোমার পাশেই পাবে…” কী করলে পাশে পাওয়ার কথা বলা হয়েছে?
A) ভারতবর্ষের জন্য কাজ করলে
B) বেদান্ত ধর্ম ধরে থাকলে
C) ভারতের ভারতের জন্য কাজ করলে বা না করলে, বেদান্ত ধর্মত্যাগ করলে বা ধরে থাকলে
D) তোমার দেশের জন্য কাজ করলে
উত্তর: C) ভারতের ভারতের জন্য কাজ করলে বা না করলে, বেদান্ত ধর্মত্যাগ করলে বা ধরে থাকলে

short questions – 2-3 marks of চিঠি- (Chithi)

  1. “কিন্তু বিঘ্নও আছে বহু।”—কোন্ কোন্ বিঘ্নের কথা বলা হয়েছে লেখো।

উত্তর: এই দেশের মানুষের দারিদ্র্য, কুসংস্কার এবং দাসত্ব ছিল মিস নোবেলের প্রথম বিঘ্ন যা স্বামী বিবেকানন্দ জানিয়েছেন। ভারতবাসীর দারিদ্রতাই হলো মূল বাধা। আবার জাতি ভেদাভেদ ও অস্পৃশ্যতার কারণে তারা আলাদা এমনকি শ্বেতাঙ্গদের সাথে যোগাযোগের পথেও সেই কারণটিই বাধা হয়েছিল । সম্ভবত ঘৃণা বা ভয় কোনো এক কারণেই, তারা শ্বেতাঙ্গদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিলো । এই ক্ষেত্রে, শ্বেতাঙ্গরা নোবেলকে অবিশ্বাস করতে পারে যদি সে ভারতবাসীর সাথে সাক্ষাত করে। এগুলি ছাড়াও, শহরের বাইরের স্বাচ্ছন্দের অভাব এবং গ্রীষ্মপ্রধান জলবায়ু বাধা হয়ে উঠতে পারে ।

  1. “এই আমার প্রতিজ্ঞা।”—কোন্ প্রতিজ্ঞার কথা এখানে বলা হয়েছে?

উত্তর: মিস নোবেল যখন কাজ করার জন্য ভারতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তখন স্বামী বিবেকানন্দ তাকে যে অসুবিধার মুখোমুখি হতে হবে সে সম্পর্কে তাকে সতর্ক করেছিলেন। তারপর তিনি তাকে আশ্বস্ত করেন যে, তিনি কাজে সফল বা ব্যর্থ যাই হোক কিংবা সেই কাজে যদি তার বিরক্তি আসে তাহলে বিবেকানন্দ তার জন্য চিরকাল পাশে থাকবেন। এমনকি যদি মিস নোবেল কাজ সম্পূর্ণ করতে ব্যর্থ হন বা বেদান্ত ত্যাগ করেন, বিবেকানন্দ তখনও তাঁর পাশে থাকবেন । তার ভাষায়- ‘মরদ কি বাত হাতি কা দাঁত’ এটা তার অলঙ্ঘনীয় অঙ্গীকার।

  1. “তাঁর সঙ্গে বনিয়ে চলা অসম্ভব।” —কার সম্পর্কে কেন এ মন্তব্য করা হয়েছে?

উত্তর: মিস নোবেলকে উদ্দেশ্য করে মিস মুলার সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দ এরূপ মন্তব্য করেছেন । বিবেকানন্দ মিস মুলারকে তার নিজের ভাবের একজন চমৎকার মহিলা হিসাবে বর্ণনা করেছেন । কিন্তু মিস মুলারের ছোটবেলা থেকেই একজন নেত্রী হিসাবে আত্ম-পরিচয় এবং তার নিজের ক্ষমতার উপর অতিরিক্ত আস্থা তাঁকে ছোটবেলা থেকেই বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। বিবেকানন্দ মনে করতেন যে মিস নোবেল দ্রুত বুঝতে পারবেন যে মিসেস মুলারের সাথে সহযোগিতা করা অসম্ভব।

  1. “…কিন্তু তাঁর মঠাধ্যক্ষাসুলভ সংকল্পটি দুটি কারণে কখনও সফল হবে না…।”—মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: লেখক স্বামী বিবেকানন্দের এই বিবৃতিটি মিস মুলারের কলকাতায় একটি বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গে বলেছেন । মিস নোবেল এবং নিজের জন্য বাড়িটি মুলার ভাড়া নিতে চেয়েছেন । উপরন্তু, তিনি ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে আসার বন্ধুদের জন্য বাসস্থান খুঁজছিলেন। যদিও এটি মুলারের সহৃদয়তার পরিচয় কিন্তু তাঁর এই রুক্ষ মেজাজ  এবং অস্থিরচিত্ততা তাঁকে এই সংকল্প অর্জন করতে বাধা দেবে।

  1. “তাতে তোমার ও তাঁদের—উভয়েরই সুবিধা হবে।” কোন্ প্রসঙ্গে লেখক এ কথা বলেছেন উল্লেখ করো।

উত্তর: বিবেকানন্দ বিশেষ করে ইউরোপীয়দের মধ্যে সেভিয়ার দম্পতির প্রশংসা করেছিলেন যারা মানবসেবা করতে এই দেশে এসেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন যে তারাই একমাত্র ইংরেজ যারা ভারতবাসীদের তুচ্ছ বা ঘৃণা করেননি এমনকি তাদের ওপর কতৃত্ব ফলাইনি । তাঁরা অবশ্য কোনো বিশেষ কার্যপ্রণালী অনুসরণ করেননি । সুতরাং উভয় পক্ষের জন্যই সুবিধা হবে যদি মিস নোবেল এই দেশে আসেন এবং তাঁরা একে ওপরের সাথে পরিচিত হন।

  1. “তাঁদের সঙ্গে এলে তোমার পথের একঘেয়েমি দূর হতে পারে।”—যে পরিপ্রেক্ষিতে লেখকের এই মন্তব্য তা বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: বিবেকানন্দ জানতে পারেন যে সেখানে তার দুই পরিচিত মিস ম্যাকলাউড এবং মিসেস বুলও মিস নোবেলের সফরের মাঝে ভারতে আসছেন । আবার মিস ম্যাকলাউড এবং নোবেল একে অপরকে আগে থেকেই চিনতেন । তাই বিবেকানন্দ মনে করেন যে মিস নোবেল যদি তাদের সাথে ভ্রমণ করেন তাহলে দীর্ঘ যাত্রাপথের একঘেয়েমি দূর হবে ।

long questions – 5 marks of চিঠি- (Chithi)

  1. পত্রসাহিত্য বলতে কী বোঝ? পাঠ্য ‘চিঠি’কে কি পত্রসাহিত্যের দৃষ্টান্ত হিসেবে গ্রহণ করা যায়? যুক্তি-সহ লেখো। 

উত্তর: একটি চিঠিকে এপিস্টোলারি সাহিত্য বলে মনে করা হয় যখন সমাজ, প্রকৃতি বা কল্পনা ব্যক্তিগত বা সাধারণ সংবাদ, তথ্য ইত্যাদির পরিধির বাইরে এটিকে প্রাধান্য দেয়। যখন একটি চিঠির বিষয় ব্যক্তিগত মতামত এবং কালজয়ী সত্য উভয়ই প্রতিফলিত করে, তখন এটি সাহিত্যে পরিণত হয়।

নোবেলের মতে এই জাতির দুর্ভোগ, কুসংস্কার, দাসত্ব ইত্যাদি বোঝার বাইরে। স্বামী বিবেকানন্দের কয়েকটি চিঠি তাদের মৌলিকতার জন্য সাহিত্যের ক্যাননে প্রবেশ করেছে। এমনই একটি কেস হল প্রশ্নবিদ্ধ চিঠি। এক্ষেত্রে লেখকের সামাজিক দর্শন ও দেশপ্রেম ব্যক্তিগত বিবরণের চেয়ে প্রাধান্য পেয়েছে। সাহিত্য ব্যক্তি ও সমাজ নিয়ে আলোচনা করে। তৎকালীন ভারতীয় জনগণের দুর্ভোগ, সেইসাথে সমাজে নারীর অবমাননা স্বামীজিকে ব্যথিত করেছিল। শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশ শাসকদের নিপীড়ন, অস্পৃশ্যতা, বর্ণবৈষম্য ইত্যাদির হাত থেকে ভারতীয় জনগণকে উদ্ধার করার জন্য স্বামীজি একটি সমাধান খুঁজছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে মিস নোবেলের মতো শক্তিশালী, সতী নারীদের সমাজে মহিলাদের মর্যাদা উন্নত করতে ভারতে বিশেষভাবে প্রয়োজন। পাঠ্য বার্তাটি একজন অস্থির মহাপুরুষের মানসিক চিত্র প্রকাশ করে যিনি বহু মানুষের কল্যাণ এবং মানবতার স্বাধীনতার কথা ভাবছেন। এই চিঠির তথ্য তাই সাহিত্যকর্মের চেয়ে সমাজের কাছে বেশি সার্বজনীন এবং সত্য।

  1. স্বামী বিবেকানন্দ রচিত পাঠ্য ‘চিঠি’কে ব্যক্তিগত পত্র না সামাজিক পত্র—কোন্ শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করা যায় ?

উত্তর: চিঠির বিষয়বস্তু অনুযায়ী চিঠিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। ব্যক্তিগত পত্র ও সামাজিক পত্র হল এর প্রধান দুটি ভাগ। আমাদের পাঠ্য ‘চিঠি’ রচনাটি স্বামী বিবেকানন্দ মিস নোবেল-এর উদ্দেশ্যে লিখেছেন। অর্থাৎ আমরা বলতে পারি এই চিঠিটি ব্যক্তিগত পত্র। কিন্তু প্রতিটি চিঠির সাথে একটি নির্দিষ্ট ব্যক্তির কিছু সংযোগ রয়েছে। ব্যক্তিগত চিঠিতে, ব্যক্তিগত খবরা-খবর বা তথ্যাদি প্রাধান্য পায়। বিবেকানন্দের এই চিঠিটি ব্যক্তিগত স্তর পেরিয়ে সামাজিক স্তরে উত্তীর্ণ হয়েছে। এই চিঠিতে লক্ষণীয় বিষয় হলো উনিশ শতকের ভারত ও তার দুর্দশায় সমাজ চিত্র। এই চিঠি আসলে ব্যক্তিগত স্বার্থে লেখা হয়নি বরং মানবসেবার বৃহত্তর স্বার্থে লেখা হয়েছে। 

মিস নোবেল ভারতীয় সমাজে মানব সেবার জন্য এদেশে আসতে চান, এই কথা জানার পর স্বামীজি এই দেশের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বর্ণনা করার জন্য তাকে এই চিঠি লিখেছিলেন। স্বামীজি মিস নোবেলকে ভারতীয়দের দাসত্ব, নিঃস্বতা, কুসংস্কার, বর্ণবাদ এবং অস্পৃশ্যতা সম্পর্কে অবহিত করেছিলেন। উপরন্তু, তিনি স্থানীয় জলবায়ু এবং শ্বেতাঙ্গদের সম্পর্কে ভারতীয়দের ধারণার মতো তথ্যের উপর পাঠকদের একটি প্রধান সূচনা দিতে চেয়েছিলেন। এই চিঠিতে ব্যক্তিগত সুখ-দুঃখের পরিবর্তে সামাজিক দুঃখের বিষয়বস্তু এবং কীভাবে এটি শেষ করা যায় তা আলোচনা করা হয়েছে। আলোচিত ‘চিঠি’ তাই সামাজিক চিঠি হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।

  1. পাঠ্য ‘চিঠি’কে উনিশ শতকের ভারতের একটি ঐতিহাসিক ও সামাজিক দলিলরূপে গ্রহণ করা যায় কি না আলোচনা করো।

উত্তর: মিস নোবেল, প্রাপক এবং পাঠ্যটির লেখক স্বামী বিবেকানন্দ উভয়ই সুপরিচিত ঐতিহাসিক চরিত্র। উভয়ই ভারতীয় ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে এবং মানব সভ্যতার বিকাশে স্থায়ী উত্তরাধিকার রেখে গেছে। অন্যদিকে আলোচনার চিঠিগুলি 19 শতকের শেষভাগে ভারতীয় জনগণের জীবনযাত্রা, তাদের বিশ্বাস ও চিন্তাভাবনা, তাদের দুঃখ ইত্যাদির ক্ষেত্রে একটি অনন্য মুহূর্ত প্রকাশ করে। তাই, “চিঠি” একটি ঐতিহাসিক দলিলরূপে হিসাবে বিবেচিত হয় ।

অন্যদিকে, চিঠিতে যে সামাজিক পরিবেশের রূপরেখা দেওয়া হয়েছে যেখানে মিস নোবেল মানবিক সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি নিয়ে একটি সমস্যাগ্রস্ত ভারতে আসতে চান। স্বামীজি চিঠিতে নোবেলকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে এই দেশের দুঃখ, কুসংস্কার, দাসত্ব ইত্যাদির শিকড় অত্যন্ত গভীর। অস্পৃশ্যতা এবং বর্ণ-ভিত্তিক কুসংস্কার তাকে ভারতের রাজনৈতিক পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করে তোলে এবং তাকে নিজের দুই পায়ে দাঁড়াতে উৎসাহিত করে। খাদ্যের ঘাটতির কারণে এদেশের অনেক নারী শুধু আংশিক বস্ত্র পরিহিত বা উলঙ্গ। ভারতীয় নারী শিক্ষার কোনোরকম সুযোগ ছিল না । সাথে ব্রিটিশ শাসকদের অত্যাচার ও শোষণ ছিল । ভারতীয়রা শ্বেতাঙ্গদের ঘৃণা করে এবং ভয় পায়। শ্বেতাঙ্গরাও এই জাতির নাগরিকদের ঘৃণা করে। এই ধরনের সামাজিক বাস্তবতার কাঠামোর মধ্যে মানবসেবা প্রদানের জন্য মিস নোবেলের প্রয়োজন।

অতএব, “চিঠি” 19 শতকের ভারতের একটি ঐতিহাসিক এবং সামাজিক দলিল হিসাবে স্বীকৃত।

  1. পাঠ্য ‘চিঠি’ অবলম্বনে স্বামী বিবেকানন্দের বিচক্ষণতা ও উদারতার পরিচয় দাও।

উত্তর: মিস্টার স্টার্ডির চিঠি পড়ার পর, স্বামী বিবেকানন্দ জানতে পারেন যে, এ দেশে কাজ করার জন্য মিস নোবেল ভারতে আসছেন তখন তিনি নোবেলকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা এবং জ্ঞান প্রদান করেন। 

ভারতের সামাজিক ও ভৌগলিক পরিবেশ ইউরোপ-আমেরিকার পরিবেশের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আর সেই জন্যই স্বামীজি মিস নোবেলকে চিঠি লিখে এই দেশের মানুষের জীবনযাত্রা, সামাজিক সমস্যা, নানান বিঘ্নের কথা জানিয়ে সচেতন করেছেন এবং তার জন্য মিস নোবেলকে ‘নিজের পায়ে’ দাড়াঁনোর কথা বলেছেন। যা থেকে আমরা স্বামীজীর বিচক্ষণতার পরিচয় পায়। 

স্বামীজি মিস নোবেলকে আশ্বস্ত করে তার উদারতা প্রকাশ করেছেন যে তিনি সর্বদা তার জন্য থাকবেন, তিনি ভারতের জন্য কাজ করুক বা না করুক এবং তিনি বেদান্তকে গ্রহণ করুন বা ত্যাগ করুন । যদিও স্বামীজি মিস মুলারের ত্রুটি সম্পর্কে অবগত হন, তবুও তিনি তার দয়ার জন্য কৃতজ্ঞ। তিনি মিসেস সেভিয়ারকে উৎসাহিত করেন, যাকে তিনি ‘নারীকুলের রত্নবিশেষ’, ‘স্নেহময়ী’ এবং ‘ভালো’ বলে উল্লেখ করেন এবং তাঁর সাথে সহযোগিতা করতে বলেন। দীর্ঘ যাত্রার একঘেয়েমি এড়াতে স্বামীজি নোবেলকে পরামর্শ দিয়েছিলেন মিস ম্যাকলাউড এবং মিসেস বুলকে সহযাত্রী হিসেবে ভারতে আসার । স্বামীজীর এই সমস্ত ভাবনার মধ্যে তাঁর উদারতার পরিচয় পাওয়া যায়। 

  1. “এদেশের দুঃখ, কুসংস্কার, দাসত্ব প্রভৃতি কী ধরনের, তা তুমি ধারণা করতে পারো না।”—স্বামীজির এই উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে তাঁর স্বদেশপ্রীতির কী পরিচয় পাও?

উত্তর: স্বামী বিবেকানন্দ মিস নোবেলের কাছে একটি পাঠ্য “চিঠি”-তে উদ্ধৃত কথাগুলি জানিয়েছিলেন । মিস নোবেল ভারতের মানবিক ক্ষেত্রে কাজ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, স্বামীজি, মি: স্টার্ডির চিঠিতে তা জানতে পেরে মিস নোবেলকে এদেশের সামাজিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্য এই কথাগুলি বলেছিলেন। 19 শতকের শেষ দশকে ভারতে শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশদের দুঃশাসন ছিল একটি বিপর্যয়। অজ্ঞতা, নিরক্ষরতা, দারিদ্র্য এবং নারীদের প্রতি অবজ্ঞার কারণে ভারতীয় সমাজ জীবন ভুগছিল। স্বামীজি ভারতীয় জনগণকে সকল প্রকার দাসত্ব ও বিধিনিষেধ থেকে মুক্ত করার কল্পনা করেছিলেন। 

মিস নোবেলের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত দক্ষতা রয়েছে। 

জাতিভেদ, অস্পৃশ্যতা এবং কুসংস্কার ভারতীয় বিচ্ছিন্নতা ও বিভাজনকে স্থায়ী করেছে। 

মিস নোবেলের মাধ্যমে, তিনি নারীজাতির শিক্ষার দিকে মনোযোগ দিতে এবং আত্মনির্ভরের উপর জোর দিতে চেয়েছেন। তিনি বারংবার মিস নোবেলকেও বলেছেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে – ‘যে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, তার সবই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়’ । উপরিউক্ত পাঠ্যতে আমরা স্বামীজীর স্বদেশপ্রীতির কথা জানতে পারি। 

  1. “এদেশে এলে তুমি নিজেকে অর্ধ-উলঙ্গ অসংখ্য নরনারীতে পরিবেষ্টিত দেখতে পাবে।”— ‘তুমি’ কে? বক্তা এমন কথা বলেছেন কেন? এই প্রসঙ্গে বক্তার সমাজভাবনার পরিচয় দাও।

উত্তর: স্বামী বিবেকানন্দ রচিত পাঠ্য ‘চিঠি’তে ‘তুমি’ বলতে মিস নোবেলকে বুঝিয়েছেন। 

উদ্ধৃতাংশটির বক্তা হলেন স্বামী বিবেকানন্দ । তিনি মি: স্টার্ডি চিঠিতে জানতে পারেন, মিস নোবেল “ভারতে আসতে এবং সবকিছু চাক্ষুস দেখতে দৃঢ়সংকল্প । তিনি নোবেলের কার্যপ্রণালী সম্পর্কে জানতে পারেন মিস মুলারের চিঠি থেকে । 

ভারতের সামাজিক অবস্থা ইউরোপের থেকে আলাদা। ভারতীয়দের জীবন দুঃখ-দুর্দশায় ঘেরা। মিস নোবেলকে এদেশের অভাবগ্রস্থ অর্ধনগ্ন দুঃখী মানুষগুলোর মাঝে থেকে কাজ করতে হবে এবং সেই কাজের জন্য তিনি মানসিকভাবে প্রস্তুত কিনা সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে এবং এই দেশের সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা দিতেই স্বামীজি এই কথাগুলো বলেছেন। 

কথোপকথনের প্রেক্ষাপটে বক্তা স্বামীজির গভীর সামাজিক দর্শন প্রকাশ পায়। ভারতের চরম দারিদ্র্য সম্পর্কে তার অকৃত্রিম উপলব্ধি রয়েছে। এই দেশের প্রত্যেক মানুষের সাথে অতপ্রতভাবে কুসংস্কার জড়িয়ে রয়েছে । তারা ক্ষুধা, জাতিগত কুসংস্কার, অস্পৃশ্যতা, ব্রিটিশ দুঃশাসন এবং ঘৃনায় জর্জরিত । 

তারা ভয় বা ঘৃণা থেকে শ্বেতাঙ্গদের থেকে দূরে থাকে। নারীরা শিক্ষার উজ্জ্বল দিক থেকে বঞ্চিত। স্বামীজি দেশের নাগরিকদের তাদের দাসত্ব থেকে অজ্ঞতা ও বশ্যতা থেকে সম্পূর্ণ মুক্তির পাশাপাশি সত্যিকারের মানবতার উত্তরণের কল্পনা করেছিলেন। স্বামীজি বিশ্বাস করতেন যে মিস নোবেলের মতো একজন সেবা-ভিত্তিক, বুদ্ধিমান এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মহিলা সেই আদর্শকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য প্রয়োজনীয়।

  1. “শ্বেতাঙ্গেরা তোমাকে খামখেয়ালি মনে করবে এবং প্রত্যেকটি গতিবিধি সন্দেহের চক্ষে দেখবে।”—মিস  নোব্‌ল্ স্বামীজির এমন সতর্কবার্তা পাঠানোর কারণ কী? কেন শ্বেতাঙ্গরা তাঁকে খামখেয়ালি মনে করবে এবং তাঁর প্রত্যেকটি গতিবিধি সন্দেহের চোখে দেখবে বলে তিনি মনে করেন? 

উত্তর: স্বামীজি মি: স্টার্ডির চিঠিতে যখন জানতে পারেন যে, মিস নোবেল ভারতে এসে ভারতীয়দের পরিস্থিতি নিজের চোখে দেখতে বদ্ধপরিকর তখন 1897 খ্রিস্টাব্দের 29 শে জুলাই তিনি মিস নোবেলকে উদ্ধৃত সতর্কবার্তা দিয়ে চিঠি লেখেন। আসলে স্বামীজি এদেশে আসার আগেই তাঁকে দেশের প্রকৃত পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা দিতে চেয়েছেন । আর সেই কারণেই স্বামীজি সরাসরি চিঠি লিখে ভারতীয়দের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করেন।

স্বামীজি বিশ্বাস করেন যে মিস নোবেল যদি এমন একটি পরিবেশে ভারতীয়দের উন্নতির জন্য নিজেকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করেন যেখানে শ্বেতাঙ্গরা জাতি এবং স্পর্শ সম্পর্কে তাদের দৃঢ় ধারণার কারণে ভারতীয়রা ভয় পায় বা তুচ্ছ করে এবং ভারতীয়রা শ্বেতাঙ্গদের দ্বারা তুচ্ছ হয়, তাহলে তার প্রতিটি কাজ শ্বেতাঙ্গদের কাছে তা সন্দেহজনক হয়ে উঠবে । 

মিস নোবেল শ্বেতাঙ্গ মহিলা হওয়ার কারণে, এই দেশের জনগণের সেবার কাজে নিজেকে উৎসর্গ করলে একদিকে তাদের অবিশ্বাস জাগিয়ে তুলবে, অন্যদিকে, তারা তাকে খামখেয়ালি  হিসাবে দেখবে।

  1. “কর্মে ঝাপ দেবার পূর্বে বিশেষভাবে চিন্তা করো…”. কে, কোন্ কর্মে ঝাঁপ দিতে চান? ঝাঁপ দেবার পূর্বে কেন ‘বিশেষভাবে’ চিন্তা করা দরকার ?

উত্তর: ইংল্যান্ড থেকে মিস নোবেল ভারতে এসে সেখানকার বাসিন্দাদের সেবামূলক কাজ বিশেষ করে ভারতীয় নারী সমাজের উন্নতির কর্মে ঝাপ দিতে চান। 

মিজ নোবেল একজন যুবতী মহিলা, তাই এটি বোঝায় যে তিনি বেশ সংবেদনশীল হবেন। তিনি ভারত সম্পর্কে অজ্ঞ। তাই স্বামীজি তাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে তিনি সর্বদা বৃহত্তর কাজ শুরু করার আগে তার কাজগুলিকে সাবধানতার সাথে বিবেচনা করুন। মিস নোবেল মানব সেবায় কাজ শুরু করার আগে, স্বামীজি তাকে এই জাতির আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা দিতে চেয়েছিলেন । স্বামীজি জাতির দুর্ভোগ, কুসংস্কার, দাসত্ব ইত্যাদির সুনির্দিষ্ট বিবরণ প্রদান করেছিলেন। তিনি এও জানিয়েছিলেন যে মিস নোবেলকে এই দেশে আসার পরে অর্ধনগ্ন মহিলাদের জন্য কাজ করতে হবে। ভারতীয় সমাজে জাতপাত ও অস্পৃশ্যতা বিস্তৃত। ভয়ে বা শত্রুতার কারণে ভারতীয়রা শ্বেতাঙ্গদের থেকে দূরে থাকে। শ্বেতাঙ্গরাও ভারতীয়দের ঘৃণা করে। প্রভাবশালী ইংরেজরা মিস নোবেলকে খামখেয়ালি হিসাবে দেখবে এবং সে যা কিছু করেছে সে সম্পর্কে সতর্ক থাকবে। ভারতের জলবায়ু ইউরোপ-আমেরিকার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হওয়ায় স্বামীজি মিস নোবেলকে পরামর্শ দেন যে, এই প্রতিকূলতা জয় করার মানসিক দৃঢ়তা অর্জনের জন্য পদক্ষেপের আগে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

  1. “মিসেস সেভিয়ার নারীকুলের রত্নবিশেষ…”—এই উক্তির আলোকে নারীজাতির প্রতি স্বামী বিবেকানন্দের দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দাও।

উত্তর: স্বামী বিবেকানন্দ মিস নোবেলকে লেখা তাঁর চিঠিতে মিসেস সেভিয়ারকে নারী জাতির রত্ন, একজন অত্যন্ত ভালো এবং স্নেহময়ী নারী হিসেবে  বর্ণনা করেছেন। ইংরেজ হওয়া সত্ত্বেও, তিনি এবং তার স্বামী ভারতীয়দের অন্যান্য ইংরেজদের তুলনায় অসম্মান করেন না। তারা এখানে জনগণকে শাসন করতে আসেনি। উপরন্তু, স্বামীজির চিঠিতে মিস ম্যাকলাউড এবং মিসেস বুলকে অত্যন্ত সম্মানের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে। ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও, স্বামীজি মিস মুলারকে ‘তাঁর নিজের ভাবে’ ‘চমৎকার মহিলা’ হিসাবে উল্লেখ করেছিলেন । 

স্বামীজি স্বীকার করেছেন যে মিস মুলার তার ভালো এবং নির্দোষতার চিহ্ন হিসাবে, তাঁর আন্তর্জাতিক পরিচিতদের জন্য আবাসন প্রদানের জন্য কলকাতায় একটি বাড়ি ভাড়া নিতে চান। চিঠির বেশিরভাগ অংশে মিস নোবেলের প্রতি স্বামীজির স্নেহ এবং বিজ্ঞ পরামর্শ প্রদর্শন করে। 

মিস নোবেলকে এই দেশে আহবানের মধ্য দিয়ে এদেশীয় নারী জাতির উন্নতি, শিক্ষা ও সম্মানের জন্য তিনি যে গভীরভাবে ভাবিত তার প্রমাণ পাওয়া যায়। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, ‘ভারতের জন্য, বিশেষত এদেশে ভারতের নারীসমাজের জন্য, পুরুষের চেয়ে নারীর-একজন প্রকৃত সিংহীর প্রয়োজন’। আর মিস নোবেল হলেন সেই সিংহী। 

অন্যান্য দেশের মহিলাদের পাশাপাশি, স্বামীজির তাঁর নিজের দেশে এবং সারা বিশ্বের মহিলাদের সম্পর্কে একটি উদার দৃষ্টিভঙ্গি ছিল।

  1. স্বামী বিবেকানন্দের লেখা ‘চিঠি’ থেকে মিস ম্যাকলাউড এবং মিস মুলার সম্পর্কে যা জানা যায় লেখো।

উত্তর: 

মিস ম্যাকলাউড: স্বামীজি মিস নোবেলকে ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ শে জুলাই আলমোড়া থেকে যে চিঠি লিখেছিলেন তাতে মিস ম্যাকলাউড এবং মিস মুলারের উল্লেখ পাওয়া যায়। 

স্বামীজির অন্যতম ইউরোপীয় অনুসারী ছিলেন মিস জোসেফাইন ম্যাকলাউড। স্বামীজি আমেরিকার সংবাদ মাধ্যমের দ্বারা জানতে পারেন যে সেই বছর শরৎকালে মিস ম্যাকলাউড এবং মিসেস বুল ভারতে ভ্রমণে আসবেন । মিস নোবেল লন্ডনে থাকাকালীন ম্যাকলাউডকে প্যারিসের ফ্যাশন-দুরস্ত পোশাকে দেখেছিলেন। মিস নোবেলকে স্বামীজি সেই ম্যাকলাউডদের সাথে ভারতে আসার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন।

মিস মুলার: মিস মুলার একজন চমৎকার মহিলা হলেও তিনি বিশ্বাস করেন যে তিনি আজন্ম নেত্রী এবং টাকা ছাড়া আর কিছুর প্রয়োজন পড়েনা দুনিয়া বদলানোর । তিনি নোবেল, নিজের এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ থেকে আগত বন্ধুদের জন্য কলকাতায় একটি বাড়ি লিজ দিতে চান। এই দৃষ্টিকোণ থেকে তাকে সহৃদয় এবং দয়ালু হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে। অন্যদিকে, তার একটি অত্যন্ত অস্থির মানসিকতা রয়েছে এবং রুক্ষ মেজাজ রয়েছে। স্বামীজি মনে করেন তাঁর সাথে দূর থেকেই বন্ধুত্ব রাখাই ভালো হবে। তিনি এও বলেছেন মিস মুলারের সাথে নোবেল মানিয়ে চলতে পারবে না আর তাই, স্বামীজি পরামর্শ দেন মিস মুলার বা অন্য কারো উপর নির্ভর না করে মিস নোবেল যেন তাঁর নিজের কার্যক্ষেত্রে স্বাবলম্বী হন ।

  1. “যাঁরা এদেশীয়দের ঘৃণা করেন না;”—‘যাঁরা’ কারা? তাদের সম্পর্কে যা জান লেখো।

উত্তর: স্বামী বিবেকানন্দের চিঠি রচনায় যারা বলতে সেভিয়ার দম্পতির কথা বলা হয়েছে। 

ভারত আগমনের আগে বিবেকানন্দ মিস নোবেলকে এদেশের অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে  আগত ইউরোপীয় বা অন্য বিদেশিদের কার্যপ্রণালী সম্পর্কে ধারণা দিতে চেয়েছেন। 

এ বিষয়ে উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি ‘আজন্ম নেত্রী’ ভাবা মিস মুলার-এর কথা যখন বলেছেন তার পাশাপাশি তিনি মিসেস সেভিয়ারর কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি বিবেকানন্দের চোখে “নারীকুলের রত্নবিশেষ”। বেদান্ত প্রচারকে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য, মিসেস সেভিয়ার এবং তার স্বামী ক্যাপ্টেন জে এইচ সেভিয়ার স্বামীজির অনুরোধে “মায়াবতী অদ্বৈত আশ্রম” প্রতিষ্ঠা করেন। 

ইউরোপীয় হওয়া সত্ত্বেও, তারা এই জাতির বাসিন্দাদের কোনোরকম ঘৃণার চোখে দেখেনি । এমনকি তাঁরা তাদের উপর কোনোরকম প্রভুত্ব ফোলানোর চেষ্টা করেননি । বিবেকানন্দ এও জানিয়েছেন যে, এই দেশে সেভিয়ার দম্পতির কোনো নির্দিষ্ট কার্যপ্রণালী নেই । তবে সেভিয়ার দম্পতিই যে সহকর্মী হিসেবে বেশী গ্রহণযোগ্য তা বিবেকানন্দ নোবেলকে জানিয়েছেন।

error: Content is protected !!
Scroll to Top
×

এই ওয়েবসাইটের সব কনটেন্ট এক্সেস করুন শুধু একটা মেম্বারশীপের সাথে।  আজকেই ক্লিক করুন নিচে রেজিস্টার করার জন্যে।  অসুবিধে হলে হোয়াটস্যাপ করুন আমাদের  +919804282819