বাংলা- Bangla Language WBBSE Madhyamik Class 10 - BOHURUPI বহুরূপী
BOHURUPI বহুরূপী STUDY NOTES of BOHURUPI বহুরূপী
আপনি এখানে শিখবেন এই অধ্যায়ে এবং বিষয়ের ফাউন্ডেশন অংশটা, এই বিষয়টিকে সহজ-সরলভাবে পড়িয়েছেন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ভিডিও লেকচার এর মাধ্যমে এবং এই পুরো অধ্যায়কে চার ভাগে খন্ডিত করে আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে
প্রথম খন্ডে আপনি শিখবেন ফাউন্ডেশন অংশটা যেখানে অধ্যায়ের ব্যাপারে আপনাকে বোঝানো হয়েছে তার মানে definitions,basics গুলো সহজভাবে. এবং এটাকে আপনি বুঝতে পারবেন যেটা আপনাকে পরীক্ষার জন্য ক্রীপের করতে সাহায্য করবে
দ্বিতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন MCQ মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন যেটা সাধারণত এক Marks’er আসে পরীক্ষায়
তৃতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন শর্ট অ্যানসার এবং কোয়েশ্চেন, যেটা আপনার পরীক্ষার সাজেশন মধ্যে পড়ে এবং এটা 3-4 marks’er প্রশ্ন আসে আপনার পরীক্ষা
চতুর্থ মডিউল আপনি শিখবেন লং আনসার এবং questions যেটা সাধারণত 5-6 marks er হয়
আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন যাতে কি আপনাকে আমরা সাহায্য করতে পারি
Here you will learn the basics of BOHURUPI বহুরূপী in a simple language it is for Bengali medium students who are studying under West Bengal Board of Secondary Education and preparing for their exam (Class 10 WBBSE) Here you will find all necessary and important WBBSE Madhyamik Suggestions, notes, solved sample question paper in Bangla along with video lectures from expert teachers
SOLVED QUESTIONS & ANSWERS of BOHURUPI বহুরূপী
1 MARKS QUESTIONS of BOHURUPI বহুরূপী
- “চমকে উঠলেন জগদীশবাবু”— জগদীশবাবু চমকে উঠলেন কেন?
উত্তর: সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে আদুর গা তার ওপর একটি ধবধবে সাদা উত্তরীয় এবং একটি ছোট বহরের সাদা থান পরিহিত এক সন্ন্যাসীকে হঠাৎ দেখে জগদীশবাবু চমকে উঠেছিলেন।
- বিরাগীর মতে ‘পরমসুখ’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: সুবোধ ঘোষের ‘বহুরূপী’ গল্পে বিরাগীর মতে ‘পরমসুখ’ বলতে বুঝিয়েছেন সমস্ত সুখের বাঁধন থেকে মুক্তি লাভ করা।
3.হরিদার কোন ধরনের কাজ পছন্দ ছিল না ?
উত্তর: হরিদার কোন দোকানে বিক্রি ওয়ালার কাজ বা অফিসের কাজ পছন্দ ছিল না।
- “হরিদার জীবন এইরকম বহুরূপের খেলা দেখিয়েই একরকম চলে যাচ্ছে”– হরিদার জীবন কি রকম খেলা দেখিয়ে চলে যাচ্ছে ?
উত্তর: সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে হরিদার জীবন কখনো পাগল কখনো বাইজি আবার কখনো বা পুলিশ বাউল কাপালিক নানান ধরনের ছদ্মবেশ ধরে ও খেলা দেখিয়ে কেটে যাচ্ছে।
- তীর্থযাত্রা সম্পর্কে বিরাগীর মত কি?
উত্তর: বিরাগীর মতে তার বুকের ভিতরই সব তীর্থস্থান অবস্থিত তাই আর ভ্রমণ করে দেখবার দরকার পড়ে না।
- “ছিল একদিন, সেটা পূর্বজন্মের কথা”— বক্তা এখানে ছিল একদিন বলতে কি বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: সুবোধ ঘোষের লেখা বহুরূপী গল্পের উদ্ধৃতাংশটিতে হরিদা রাগ নামক রিপুর কথা বোঝাতে চেয়েছেন।
- “নইলে আমি শান্তি পাবো না” — বক্তা কেন শান্তি পাবেন না?
উত্তর: উদ্ধৃতাংশটিতে বক্তা হলেন বিরাগী সন্ন্যাসীর ছদ্মবেশ ধারণকারি হরিদা যিনি জগদীশ বাবুর বাড়িতে এসেছেন। সে জগদীশবাবুকে কিছু উপদেশ শুনিয়ে না গেলে শান্তি পাবেন না।
- “সন্ন্যাসী হাসলেন আর চলে গেলেন”— সন্ন্যাসী হাসলেন কেন ?
উত্তর: জগদীশ বাবুর বাড়ি থেকে সন্ন্যাসী যাওয়ার সময় জগদীশবাবু তার ঝোলায় একটি একশত টাকার নোট জোর করে ফেলে দিয়েছিলেন এতেই সন্ন্যাসী হাসলেন আর চলে গেলেন।
- “কি অদ্ভুত কথা বললেন”– হরিদা হরিদার কোন কথাকে এখানে অদ্ভুত
বলে উল্লেখ করা হয়েছে ?
উত্তর: একজন বিরাগী সন্ন্যাসী হয়ে যদি তিনি টাকা স্পর্শ করেন তবে তার ঢং নষ্ট হয়ে যাবে।
- “অপেক্ষা করেন হরিদা”– হরিদা অপেক্ষা করেন কেন?
উত্তর: জগদীশ বাবুর বাড়ি থেকে বিরাগী সন্ন্যাসী চলে যাওয়ায় হরিদা অপেক্ষা করে।
multiple choice questions - of BOHURUPI বহুরূপী 1 marks
জগদীশবাবুর বাড়িতে সন্ন্যাসির কতদিন ধরে ছিলেন?
- আট দিন
- সাত দিন
- চারদিন
- দশ দিন
- সন্ন্যাসী কোথায় থাকতেন?
- হিমালয়ের গুহাতে
- জঙ্গলে
- মরুভূমিতে
- কোনোটিই নয়
- জগদীশ বাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসীর বয়স আনুমানিক-
- একশো বছর
- পাঁচশো বছর
- হাজার বছর
- দু-হাজার বছর
- সন্ন্যাসী সারাবছর কি খেতেন-
- একটি আমলকি
- একটি হরীতকী
- চারটি রুটি
- দুধ ও সাবু
- “সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস” -দুর্লভ জিনিস টি হল-
- সন্ন্যাসীর আশীর্বাদ
- সন্ন্যাসীর সান্নিধ্য
- সন্ন্যাসীর পদধূলি
- সন্ন্যাসীর উপদেশ
- কিসের জন্য হরিদার আক্ষেপ ছিল?-
- সন্ন্যাসীর সঙ্গে থাকতে না পারায়
- সন্ন্যাসী কে নিজের বাড়ি এনে রাখতে না পারায়
- সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিতে না পারায়
- কোনটাই নয়
- জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর ঝোলায় ফেলেছিলেন-
- পাঁচশো টাকা
- পঞ্চাশ টাকা
- দুশো টাকা
- একশো টাকা
- সন্ন্যাসী নিজের পায়ের ধুলো দেন-
- অনাদিকে
- জগদীশবাবু কে
- হরিদা কে
- ভবতোষ কে
- সন্ন্যাসীর গল্প শুনে হরিদ্বার মুখভঙ্গি কি রকম হয়েছিল?-
- উৎফুল্ল
- কৌতুহলী
- গম্ভীর
- কোনটিই নয়
short questions - of BOHURUPI বহুরূপী 2-3 marks
- “গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা”- এখানে হরিদার কে? তিনি কেন গল্প শুনে গম্ভীর হয়ে গেলেন?
উত্তর: সুবোধ ঘোষের লেখা বহুরূপী গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হলেন হরিদা। তিনি পেশায় একজন বহুরূপী।
লেখক সহ হরিদার অন্য বন্ধুরা হরিদাকে জানিয়েছিলেন যে হিমালয় বসবাসকারী এক উচ্চমানের সম্প্রতি জগদীশবাবুর বাড়ি এসে
সাত দিন থেকে ছিলেন।
সন্ন্যাসী বয়সে হাজার বছরেরও বেশি বলে মনে করা হয়। তিনি হরিতকী খান আর কিছু খান না। সন্ন্যাসী কাউকে পদধূলি দেন না। কিন্তু জগদীশবাবু তাকে সোনার বোল লাগানো এক জোড়া কাঠের খড়ম পায়ে পরিয়ে দিতে গেলে সন্ন্যাসী পা এগিয়ে দেয় এবং সেই ফাঁকে জগদীশবাবু তার পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন।
- “এবার মারি তো হাতি লুটিত ভান্ডার” — এখানে বক্তাকে? তিনি কি জন্য একথা বলেছেন?
উত্তর: উদ্ধৃতাংশ টি সুবোধ ঘোষের লেখা বহুরূপী নামক গল্পটি থেকে গৃহীত এখানে বক্তা হলেন গল্পের মুখ্য চরিত্র হরিদা ।
সারাদিন বহুরূপী সেজে হরিদার উপার্জন হয় খুবই সামান্য। তাই হরিদা যখন তার বন্ধুদের কাছ থেকে এক সন্ন্যাসীর জগদীশ বাবুর বাড়িতে এসে খাতির যত্ন সহ মোটা টাকা আদায়ের কথা শোনেন তখন হরিদার মাথায়ও এ রকমই একটি বুদ্ধি খেলে যায়। তিনি মনে করেন সারা দিন ঘুরে না বেরিয়ে কাঙালের মতো বকশিশ না নিয়ে এমন আদায় করবেন যাতে তার সারা বছর খুব ভালোভাবে কেটে যায়। এখানে সেই উদ্দেশ্যেই উদ্ধৃত বক্তব্যটি করা হয়েছে।
3.“তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যায়”– বক্তা কে? এখানে ঢং বলতে কী বোঝানো হয়েছে? তার কিসে ঢং নষ্ট হয়?
উত্তর: আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন লেখক সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদা।
এখানে ঢং বলতে হরিদা যে বহুরূপী সেজে অভিনয় করতেন তার কথা বলা হয়েছে।
কিছু অর্থ উপার্জনের আশায় হরিদা সন্ন্যাসী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে উপস্থিত হলে জগদীশবাবু তাকে প্রকৃত সন্ন্যাসী মনে করে তার সেবা করার অনুরোধ করেন। কিন্তু হরিদা সেবা গ্রহণে রাজি না হলে জগদীশবাবু তাকে তীর্থ ভ্রমণের জন্য একশত টাকা দিতে চান। অর্থ উপার্জনের আশায় গেলেও তিনি টাকা নিতে রাজি হন না। কারণ হরিদা মনে করেন তিনি গ্রহণ করলে তার বহুরূপীর ঢং নষ্ট হয়ে যাবে।
long questions - of BOHURUPI বহুরূপী 5 marks
- “এই শহরের জীবনে মাঝে মাঝে বেশ চমৎকার ঘটনা সৃষ্টি করেন বহুরূপী হরিদা।” – যে চমৎকার ঘটনাগুলি হরিদা ঘটিয়েছিলেন তার উল্লেখ করাে।
উত্তর: বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক সুবােধ ঘােষের বহুরূপী’ গল্পে হরিদা বহুরূপীর বেশে শহরের জীবনে মাঝে মাঝেই বিভিন্ন ঘটনা ঘটাতেন। বাঁধা ধরা জীবন পছন্দ নয় বলেই হরিদা বহুরূপীর জীবনকে বেছে নিয়েছিলেন।
একদিন হরিদা উন্মাদ পাগলের সাজে চকের বাসস্ট্যান্ডে আতঙ্কের হল্লা তুলেছিলেন। তাঁর মুখ থেকে লালা ঝরে পড়ছিল, দু’চোখ ছিল কটকটে লাল। কোমরে তাঁর ছেড়া কম্বল জড়ানাে, গলায় টিনের কৌটার মালা আর হাতে একটা থান ইট তুলে নিয়ে তিনি যাত্রীদের দিকে মাঝে মাঝে তেড়ে যাচ্ছিলেন।
আর এক কর্মব্যস্ত সন্ধ্যায়—“হঠাৎ পথের উপর দিয়ে ঘুঙুরের মিষ্টি শব্দ রুমঝুম করে বেজে বেজে চলে যেতে থাকে।” সবাই দেখে রূপসি বাইজি প্রায় নাচতে নাচতে রাস্তা দিয়ে চলে যাচ্ছে। রূপসি বাইজি মুচকি হেসে, চোখ টিপে তার ফুলসাজি দোকানদারের দিকে এগিয়ে দেয় আর দোকানদারেরাও হাসিমুখে তাতে এক সিকি ফেলে দেয়। পরে এক দোকানদার চিনতে পারে যে এই বাইজি আসলে বহুরূপী হরিদা ।
এখানেই শেষ নয়।-দয়ালবাবুর লিচু বাগানে নকল পুলিশের সাজে মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে ঘুসও প্রশংসা আদায় ছিল হরিদার বড়াে প্রাপ্তি।
- হরিদার জীবনে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য আছে”—উদ্ধৃতাংশটি কোথা থেকে নেওয়া হয়েছে? বক্তার এরূপ উক্তির কারণ কী তা বিবৃত করাে।
উত্তর: উৎস : উদ্ধৃতাংশটি বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট লেখক সুবােধ ঘােষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
বক্তার এরূপ উক্তির কারণ : গল্পকথক অর্থাৎ লেখক তার কাছের মানুষ হরিদার সম্পর্কে খুবই সংবেদনশীল ছিলেন। হরিদার কাছে এসে তিনি বেশ কিছুটা সময়ও কাটান, সঙ্গে অবশ্য আরও দুই সঙ্গী ভবতােষ ও অনাদি থাকেন। চায়ের আড্ডাটা বসে হরিদার ঘরেই।
হরিদা কোনাে নির্দিষ্ট কাজ করেন না। যদিও যােগ্যতা অনুযায়ী ইচ্ছে করলেই হরিদা অফিস বা কোনাে দোকানে বিক্রিওয়ালার কাজ পেয়ে যেতেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে বেরিয়ে নির্দিষ্ট কোনাে কাজে হরিদার আপত্তি।
অভাবের সংসারে হরিদার কোনাে কোনাে দিন হয়তাে খাওয়াই হয় না। তার মধ্যেই হঠাৎ হঠাৎ বিচিত্র ছদ্মবেশে পথে বের হতেন। হরিদাকে কখনাে বাসস্ট্যান্ডের কাছে উন্মাদের বেশে তাঁকে দেখা যেত, কখনাে শহরের রাজপথে বাইজির বেশে ঘুঙুর বাজিয়ে চলে যেতেন।
বহুরূপী সেজে হরিদা যে অনেক টাকা রােজগার করেন তাও নয়। কিন্তু এতেই হরিদা আনন্দ পান। কখনাে বােচকা হাতে বুড়াে কাবুলিওয়ালা, কখনাে হ্যাট-কোট-প্যান্টালুন পরা ফিরিঙ্গি কেরামিন সাহেবের রুপেও হরিদাকে দেখতে পাওয়া যায়।
তাঁর বিচিত্র সব সাজ আর চরিত্রের সাথে তাল মিলিয়ে যথাযথ আচরণে মানুষ কখনাে হাসত, প্রশংসা করত আবার কখনাে-বা বিরক্ত হতাে। আর হরিদার যা সামান্য বকশিশ জুটত—“তাতেই তার ভাতের হাঁড়ির দাবি মিটিয়ে দিতে চেষ্টা করেন”, কিন্তু এই দারিদ্র্যের মধ্যেও হরিদার জীবনের এই বহুরূপী সেজে পথে বের হওয়াকেই লেখক নাটকীয় বৈচিত্র্য বলেছেন।
- জগদীশবাবুর বাড়িতে হরিদা বিরাগী সেজে যাওয়ার পর যে ঘটনা ঘটেছিল তা বর্ণনা করাে।
উত্তর: প্রখ্যাত সাহিত্যিক সুবােধ ঘােষের লেখা বহুরূপী’ গল্পে জগদীশবাবু হলেন বিত্তশালী মানুষ। জগদীশবাবুর বাড়িতে হিমালয়ের গুহা থেকে আগত এক সন্ন্যাসীর গল্প শুনে হরিদারও ইচ্ছা হয় বহুরুপী সেজে তার বাড়িতে গিয়ে মজা করে কিছু অর্থ উপার্জন করার।
সেই কারণেই জগদীশবাবুর বাড়িতে তিনি বিরাগী সেজে হাজির হয়েছিলেন।
হরিদার খালি গায়ে ছিল সাদা উত্তরীয় আর পরনে ছিল ছােটো বহরের একটি সাদা থান, গা ছিল ধুলাে মাখা, মাথায় ফুরফুর করে উড়ছিল শুকনাে সাদা চুল, হাতে ছিল একটি ঝােলা, আর তার ভিতরে ছিল শুধু একটা বই গীতা। তাঁর শীর্ণ শরীর দেখে মনে হচ্ছিল অশরীরী।
জগদীশবাবুকে বিরাগী বলেন—“.আপনি বােধ হয় এগারাে লক্ষ টাকার সম্পত্তির অহংকারে নিজেকে ভগবানের চেয়েও বড়াে বলে মনে করেন।” এই কথা শুনে জগদীশবাবু সিঁড়ি ধরে নেমে এসে বিরাগীরূপী হরিদার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন এবং তাঁকে রাগ করতে নিষেধ করেন।
তখন আগন্তুক বিরাগী বলেন—“আমি বিরাগী, রাগ নামে কোনাে রিপু আমার নেই।” এরপর জগদীশবাবু বিরাগীকে তাঁর বাড়িতে থাকার জন্য অনুরােধ করলে বিরাগী তাঁকে বলেন যে ধরিত্রীর মাটিতেই তাঁর স্থান, তাই তিনি এই দালান বাড়িতে থাকবেন না। খাওয়ার কথা বলা হলে বিরাগী বলেন যে তিনি কোনাে কিছু স্পর্শ না করে শুধু এক গ্লাস ঠান্ডা জল খাবেন।
বিরাগী জগদীশবাবুকে সবরকম মােহ থেকে মুক্ত হওয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন—ধন জন যৌবন সবকিছুই হলাে সুন্দর সুন্দর এক-একটি বনা যাকে পেলে সৃষ্টির সব ঐশ্বর্য পাওয়া যাবে। তার কাছাকাছি যাওয়ার উপদেশ দিয়ে বিরাগী চলে গেলেন। তীর্থ ভ্রমণের জন্য জগদীশবাবু বিরাগীকে একশাে এক টাকা দিতে চাইলে বিরাগী সেই টাকা না নিয়ে বলেন—“আমার বুকের ভেতরেই যে সব তীর্থ। ভ্রমণ করে দেখবার তাে কোনাে দরকার হয় না। এরই সঙ্গে তিনি সােনাও অনায়াসে মাড়িয়ে যাওয়ার কথা বলে জগদীশবাবুর বাড়ি থেকে চলে যান। এইসমস্ত দেখে জগদীশবাবু স্থির বিস্ময়ে দাঁড়িয়ে রইলেন।
4.‘বহুরূপী’ গদ্যাংশে হরিদার চরিত্র আলােচনা করাে।
উত্তর: প্রখ্যাত সাহিত্যিক সুবােধ ঘােষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পটির কাহিনি বিকাশলাভ করেছে হরিদার চরিত্রকে কেন্দ্র করে। অত্যন্ত গরিব মানুষ ছিলেন এই হরিদা। অভাব তার নিত্যসঙ্গী হলেও কাজের মধ্যে দিয়েই তিনি মুক্তি ও স্বাধীনতার আনন্দ খুঁজে নিতে চান বলেই বহুরূপীর পেশা গ্রহণ করেছিলেন হরিদা।
হরিদার চরিত্রের মধ্যে সামাজিকতার দিকটিও লক্ষণীয়। শহরের সবথেকে সরু গলিটার ভেতর হরিদার ছােট্ট ঘরটি ছিল কথক ও অন্য বন্ধুদের সকাল-সন্ধার আড্ডার ঘর। চা, চিনি, দুধ হরিদার বন্ধুরাই নিয়ে আসতেন আর হরিদা উনানের আচে জল ফুটিয়ে দিতেন।
কখনাে বাসস্ট্যান্ডের পাগল, কখনাে রাজপথ দিয়ে হেঁটে যাওয়া বাইজি, কাপালিক বাউল, বুড়াে কাবুলিওয়ালা, ফিরিঙ্গি কেরামিন সাহেব—এরকম অজস্র রপে তাকে দেখা গেছে। শুধু সাজ নয়, চরিত্রের সাথে মানানসই ছিল তার আচরণ, কিন্তু দিন শেসে দারিদ্রই হয়েছে তাঁর সঙ্গী।
হরিদার চরিত্রটি পরিণতির শীর্ষ ছুঁয়েছে কাহিনির শেষে। বিরাগীর বেশে তিনি জগদীশবাবুকে মুগ্ধ করলেও তাঁর আতিথ্য গ্রহণের অনুরােধ কিংবা প্রণামি হরিদা প্রত্যাখ্যান করেন। এভাবেই পেশাগত সততায় হরিদা অর্থলােভকে ত্যাগ করে তার বন্ধুদের বলেন—“শত হােক, একজন বিরাগী সন্ন্যাসী হয়ে টাকাফাকা কী করে স্পর্শ করি বল? তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও হরিদা বলেন—বকশিশ ছাড়া | বহুরূপীর জীবন আর কিছু আশা করতে পারে না। হরিদার একথা দীর্ঘশ্বাসের মতাে শােনালেও তা আসলে তাঁকে সততার আলােয় আলােকিত করে।
5.“কী অদ্ভুত কথাই বললেন হরিদা”—কী প্রসঙ্গে হরিদা অদ্ভুত কথা বলেছিলেন? কথাটি অদ্ভুত কেন?
উৎস : প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটি সাহিত্যিক সুবােধ ঘােষের লেখা বহুরূপী’ নামক গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
হরিদার অদ্ভুত কথা বলার প্রসঙ্গ : বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে গিয়ে হরিদা সেখান থেকে পাওয়া প্রণামির একশাে এক টাকা অবহেলায় প্রত্যাখ্যান করে চলে আসেন। এই ঘটনা তাঁর বাড়িতে চায়ের আড্ডায় উপস্থিত কথক এবং তার বন্ধুদের কাছে একটু বিস্ময়কর বলে মনে হয়। হরিদাকে তাঁরা বলেন—“এটা কী কাণ্ড করলেন, হরিদা? জগদীশবাবু তাে অত টাকা সাধলেন, অথচ আপনি একেবারে খাঁটি সন্ন্যাসীর মতাে সব তুচ্ছ করে সরে পড়লেন?” হরিদা উত্তরে জানান যে একজন বিরাগী সন্ন্যাসী হয়ে টাকা স্পর্শ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ তাতে তাঁর ঢং’ নষ্ট হয়ে যাবে—একথাকে কথকদের অদ্ভুত কথা বলে মনে হয়।।
কথাটি অদ্ভুত মনে হওয়ার কারণ : কথাটি অদ্ভুত বলে মনে হওয়ার কারণ: প্রথমত, হরিদা ছিলেন একজন পেশাদার বহুরূপী। পেশার টানেই ও মনােরঞ্জনের জন্য তাঁর এই বহুরূপী সাজ। তাই তাঁর পক্ষে সন্ন্যাসীর বেশ ধারণ করে, সন্ন্যাসীর জীবন ভাবনায় ভাবিত হয়ে যাওয়াটা ছিল যথেষ্ট বিস্ময়কর। দ্বিতীয়ত, বহুরূপী হরিদার ছিল অভাবের জীবন। জগদীশবাবুর বাড়ি যাওয়ার আগেই হরিদা বলেছিলেন, “এবার মারি তাে হাতি, লুঠি তাে ভাণ্ডার”—তার সারাবছরের প্রয়ােজনীয় অর্থ সন্ন্যাসী সেজে হাতিয়ে নেওয়াই ছিল লক্ষ্য।
যে মানুষটার দু’বেলা ভাত জোটে না তিনি যখন সন্ন্যাসীর ‘ঢং’ নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা বলেন তখন তা অদ্ভুত বলেই মনে হয়। কারণ এর ফলে সারাটা জীবন হরিদাকে শুধু অভাবের মধ্যে দিয়েই কাটাতে হবে।
6.“খাঁটি মানুষ তাে নয়, এই বহুরূপী জীবন এর বেশি কী আশা করতে পারে”—বক্তা কে? খাঁটি মানুষ নয় বলার তাৎপর্য কী?
উৎস : প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটি লেখক সুবােধ ঘােষের লেখা বহুরূপী’ শীর্ষক গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
বক্তা : বহুরূপী গল্পে প্রশ্নে উল্লিখিত অংশটির বক্তা হলেন বহুরূপী হরিদা।
খাটি মানুষ নয় বলার তাৎপর্য : হরিদা পেশায় ছিলেন বহুরূপী। জীবিকার প্রয়ােজনে কখনাে পাগল, বাইজি, কখনাে নকল পুলিশ এবং আরও অনেক কিছু সেজে তিনি উপার্জন করতেন। যদিও সে উপার্জন ছিল প্রয়ােজনের তুলনায় অত্যন্ত সামান্য।
এই হরিদা বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়ি থেকে অনেক উপার্জনের আশা করেছিলেন। হরিদার ছদ্মবেশ বুঝতে না পারায় প্রণামি হিসেবে জগদীশবাবু অনেক টাকাই হরিদাকে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বহুরূপী হরিদা সন্ন্যাসীর ছদ্মবেশে নিজেকে এতটাই একাত্ম করে ফেলেছিলেন, উদাসীনভাবে প্রণামির অর্থ ফেলে চলে আসেন।
কথক ও তাঁর সঙ্গীরা হরিদার এই আচরণ সমর্থন করতে পারেননি। তখন হরিদা জানান, “শত হােক, একজন বিরাগী সন্ন্যাসী হয়ে টাকা ফাকা কী করে স্পর্শ করি বল ? তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যায়। এরপর হরিদা অবশ্য জানান বকশিশের জন্য তিনি অবশ্যই জগদীশবাবুর কাছে যাবেন। কারণ বহুরূপী হিসেবে মাত্র আট-দশ আনাকেই তিনি নিজের প্রাপ্য বলে মনে করেন। খাটি মানুষ অর্থাৎ যে নিজের জীবনাচরণ ও জীবনদর্শনকে সদভাবে অনুসরণ করেন তাঁর হয়তাে অনেক পাওনা হতে পারে কিন্তু হরিদা নিজেকে বহুরূপী ভাবেন। পেশার আড়ালে তাঁর ভেতরের মানুষটা যে সমাজের কাছে হারিয়ে গিয়েছে—সেই বিষগ্নতাই প্রকাশ পেয়েছে হরিদার উচ্চারণে।
- “তেমনই অনায়াসে সােনাও মাড়িয়ে চলে যেতে পারি।”—উক্তিটি কার? কোন প্রসঙ্গে তার এই মন্তব্য? মন্তব্যের আলােকে বক্তার চরিত্রবৈশিষ্ট্য আলােচনা করাে।
উৎস : ছদ্মবেশী সন্ন্যাসী হরিদা আলােচ্য উক্তিটি করেছে।
হরিদা সন্ন্যাসী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে উপস্থিত হলে তিনি সন্ন্যাসীকে তীত ভ্রমণের জন্য একশাে টাকা দিতে চান এবং সন্ন্যাসীর কাছে ব্যাকুল স্বরে শান্তি প্রার্থনা করেন। সন্ন্যাসী হরিদার কাছে পার্থিব টাকা অতি তুচ্ছ, এ প্রসঙ্গেই তার প্রশ্নোদ্ধত মন্তব্য।
আলােচ্য উক্তিটিতে বক্তা হরিদার নির্লোভ মানসিকতা ফুটে উঠেছে। আর্থিক দিক থেকে হরিদা খুবই গরিব। অভাবের কারণে বেশিরভাগ সময়ই তার কপালে ভাত জোটেনি। ছদ্মবেশে হরিদা মানুষের মনােরঞ্জন করে দু-এক আনা উপার্জন করেছে, তাতে তার অন্নসংকুলান না হলেও কারাে কাছে অভিযােগ করেনি। তাই দেখা যায়, তিনি সারা বছরের জন্য অর্থ সঞ্চয় করার উদ্দেশ্যে সন্ন্যাসীর রূপ ধরে জগদীশবাবুর বাড়িতে উপস্থিত হলে তিনি সন্ন্যাসীকে একশাে টাকা দান হিসেবে দিয়েছেন। কিন্তু সন্ন্যাসী এই দান গ্রহণ করেনি, ফিরিয়ে দিয়েছেন পরিবর্তে ঠান্ডা জল চেয়েছে। আসলে নির্লোভ দরিদ্র হরিদা তার পেশাকে বিক্রি করতে চায়নি, সেই পেশার মধ্যেই সে মুক্তির স্বাদ গ্রহণ করতে চেয়েছে।
বাংলা- Bangla Language Subject WBBSE Madhyamik Class 10
Related posts:
- Kobita Osukhi Ekjon Solved Questions (কবিতা) অসুখী একজন Madhyamik WBBSE Bangla
- আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি Bangla Literature Subject WBBSE Madhyamik Class 10
- আফ্রিকা (Africa) Bangla (Bengali) Literature Subject Wbbse Madhyamik Class 10
- Shirajuddoula সিরাজউদ্দৌলা Bangla Natok Subject WBBSE Madhyamik Class 10