বাংলা- Bangla Language WBBSE Madhyamik Class 10 - প্রলয়োল্লাস -PROLOYULLAS
প্রলয়োল্লাস - PROLOYULLAS STUDY NOTES
আপনি এখানে শিখবেন এই অধ্যায়ে এবং বিষয়ের ফাউন্ডেশন অংশটা, এই বিষয়টিকে সহজ-সরলভাবে পড়িয়েছেন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ভিডিও লেকচার এর মাধ্যমে এবং এই পুরো অধ্যায়কে চার ভাগে খন্ডিত করে আপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে
প্রথম খন্ডে আপনি শিখবেন ফাউন্ডেশন অংশটা যেখানে অধ্যায়ের ব্যাপারে আপনাকে বোঝানো হয়েছে তার মানে definitions,basics গুলো সহজভাবে. এবং এটাকে আপনি বুঝতে পারবেন যেটা আপনাকে পরীক্ষার জন্য ক্রীপের করতে সাহায্য করবে
দ্বিতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন MCQ মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন যেটা সাধারণত এক Marks’er আসে পরীক্ষায়
তৃতীয় মডিউলে আপনি শিখবেন শর্ট অ্যানসার এবং কোয়েশ্চেন, যেটা আপনার পরীক্ষার সাজেশন মধ্যে পড়ে এবং এটা 3-4 marks’er প্রশ্ন আসে আপনার পরীক্ষা
চতুর্থ মডিউল আপনি শিখবেন লং আনসার এবং questions যেটা সাধারণত 5-6 marks er হয়
আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন যাতে কি আপনাকে আমরা সাহায্য করতে পারি
Here you will learn the basics of হারিয়ে যাওয়া কালী কলম- HARIYE JAWA KALI KOLOM in a simple language it is for Bengali medium students who are studying under West Bengal Board of Secondary Education and preparing for their exam (Class 10 WBBSE) Here you will find all necessary and important WBBSE Madhyamik Suggestions, notes, solved sample question paper in Bangla along with video lectures from expert teachers
SOLVED QUESTIONS & ANSWERS of প্রলয়োল্লাস -PROLOYULLAS
1 MARKS QUESTIONS of প্রলয়োল্লাস -PROLOYULLAS
- কাজী নজরুল ইসলামের কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতাটি?
উত্তরঃ ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।
- “দিগন্তরের কাঁদন লুটায়”—দিগন্তরের কাঁদন কোথায় লুটিয়ে পড়ে?
উত্তরঃ প্রলয়ােল্লাস কবিতায় কল্পনা করা দিগন্তরের কাঁদন রুদ্রদেবের আগুনরাঙা জটাজালে লুটিয়ে পড়ে।
- “প্রলয় নূতন সৃজন বেদন”—কথাটির অর্থ লেখো ?
উত্তরঃ ধ্বংসসাধন অন্তর্বেদনার সৃষ্টি করলেও নতুন ইমারত এরই উপর গড়ে উঠবে । নবারুণ আবার দেখা দেবে দিবসের অবসানে তাই নতুনের আগমন বার্তা ধ্বনিত হবে ।
- ‘বধূরা প্রদীপ তুলে ধর’–বধূরা কার উদ্দেশে’, প্রদীপ তুলে ধরবে কেন?
উত্তরঃ প্রদীপ তুলে ধরে বধূরা ভয়ঙ্কর রূপে আসা সুন্দরকে বরণ করবে |
- “সিন্ধু পারের সিংহদ্বার” এখানে কী বােঝানাে হয়েছে?
উত্তরঃ কবি নজরুল সন্ধপারের সিংহদ্বার’ বলতে একদিকে যেমন ইংরেজ শাসকদের বাজতন্ত্রকে বুঝিয়েছেন, তেমনি অন্যদিকে যেখানে ভারতীয় বিপ্লবীরা দ্বীপান্তরিত হয়েছিলেন, সেই আন্দামান স্থানটিকেও বুঝিয়েছেন।
- “ওই সে মহাকাল-সারথি রক্ত-তড়িৎ চাবুক হানে,” কী বােঝানাে হয়েছে মহাকাল-সারথি’ বলতে?
উত্তরঃ ‘মহাকাল-সারথি’ বলতে কবি তরুণ বিপ্লবীদের কথা বলেছেন। পরাধীন ভারতকে স্বাধীন করেতে বিপ্লবীরা মহাকালের মতাে রুদ্র রূপ ধারণ করেবে।
- “ওই নূতনের কেতন ওড়ে”–নূতনের কেতন’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? অথবা, “ওই নূতনের কেতন ওড়ে কালবােশেখির ঝড়।” কালবােশেখির ঝড়’ কীসের প্রতীক?
উত্তরঃ আলােচ্য কবিতাংশটিতে কবি পরাধীনতার বন্ধন থেকে মুক্তির প্রতীক হিসেবে ‘কালবােশেখির ঝড়’ এবং নূতনের কেতন’ শব্দ দুটি ব্যবহার করেছেন।
- “দিগম্বরের জটায় হাসে” – কে দিগম্বরের জটায় হাসে?
উত্তরঃ দিগম্বর’ হলেন দেবাদিদেব মহাদেব। জটায় থাকে শিশু চাঁদের কিরণ।
- “দেবতা বাঁধা যজ্ঞ-যুপে’– কোথাকার দেবতা যজ্ঞ-যুপে বাঁধা?
উত্তরঃ অসংখ্য ভারতীয় বিপ্লবী ইংরেজদের লােহার কারাগারে বন্দি। কবির ভাবনায় ওই বিপ্লবীরা দেবতার সঙ্গে তুলনীয়। তারা অন্ধ কারাগারের বন্ধকূপে বন্দি রয়েছে।
- “আসছে এবার অনাগত প্রলয়-নেশার নৃত্য পাগল।” কাকে ‘নৃত্য পাগল’ বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ নৃত্য পাগল’ বলতে নটরাজ শিবের কথা বলা হয়েছে, যাঁর দুই রূপ — সংহারক ও রক্ষক ।
multiple choice questions - of প্রলয়োল্লাস -PROLOYULLAS 1 marks
1.কেশের দোলায় ঝাপটা মেরে গগন দুলায়। কে?
- বাতাস
- চামর
- সাগর
- ঝামর
Ans-4
2.“বিশুপাতার বক্ষ কোলে” যা ঝােলে—
- ফুল
- ফল
- মুণ্ডু
- কৃপাণ
Ans-4
3.’এস্তা জটা’ যে বর্ণ
- লাল
- নীলাভ
- পিঙ্গাল
- কৃপাণ
Ans-3
4.জরায় মরা মুমূর্যদের প্রাণ লুকানাে রয়েছে
- প্রলয়ের মধ্যে
- ধ্বংসের মধ্যে
- সৃষ্টির মধ্যে
- বিনাশের মধ্যে
Ans-4
5.জীবনহারা অ-সুন্দর’কে ছেদন করতে আসছে?
- নবীন
- মহাকাল সারথি
- চিরসুন্দর
- প্রলয়
Ans-1
6.উল্কা ছুটায় নীল খিলানে। নীল খিলান’ বলতে বােঝানাে হয়েছে
- মহাকাশকে
- গাছপালাকে
- প্রাসাদকে
- আকাশকে
Ans-4
7.‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় ‘চিরসুন্দর হলেন
- শিব
- শক্তি
- কালবৈশাখী
- বিশ্বমাতা
Ans-1
- ঘােড়ার ক্ষুরের দাপট কোথায় লাগে?
- তারায়
- পাথরে
- ধুলায়
- ঘাসে
Ans-1
9.“সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে ধমক হেনে ভাঙল আগল। কে আগল ভাঙল?
- ব্রজশিখা
- নৃত্য পাগল
- মহাকাল
- কালবৈশাখী
Ans-2
10.কারা ভেঙে আবার নতুনের রূপদান করতে পারে?
- ধ্বংসকারীরা
- প্রলয়কারীরা
- ভয়ংকরের দল
- নবীনরা
Ans-4
short questions - of প্রলয়োল্লাস -PROLOYULLAS 2-3 marks
- “আসছে এবার অনাগত প্রলয় নেশার নৃত্য পাগল” একথা কাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে? কেন কথাটি তার সম্পর্কে বলা হয়েছে?
উত্তরঃ বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম এর ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতার উল্লিখিত অংশে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে উদ্যত নবীন বিপ্লবীদের কথা বলা হয়েছে।
কবি নজরুলের কাছে পরাধীনতার যন্ত্রণা ছিল অসহনীয়। দেশের তরুণদের তিনি এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্য উৎসাহিত করেছেন।
তরুণ বিপ্লবীদের দেখলে মনে হয় তারা যেন প্রলয় নেশার নৃত্য পাগল।
কারণ জীবনকে বাজি রেখে তারা বিপ্লবের পথে এগিয়ে চলে।
সমুদ্রপারে সিংহদ্বারের আগল ভাঙাই তাদের লক্ষ্য।
- “দিগম্বরের জটায় হাসে শিশু-চাদের কর”—দিগম্বর বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? ‘শিশু চাদের কর’-এর হাসার
অর্থটি বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম এর ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় দিগম্বর’বলতে কবি মহাদেবকে বুঝিয়েছেন।
‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় কবি মহাদেবকে সমাজ পরিবর্তনের কারিগর রূপে দেখেছেন।
তিনি মনে করেন যখন নতুন শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠা হবে তখন মহাদেবের ধ্বংসাত্মক শক্তির দ্বারা পুরাতন লুপ্ত হবে ।
সমজ প্রতিষ্ঠা হবে শিশু চাঁদের উপস্থিতিতে। মহাদেবের জটায় থাকা চাঁদেতে তারই ইঙ্গিত লক্ষ করা যাচ্ছে ।
ওই চাদের আলােতেই সমাজের অন্ধকার কেটে এক নতুন শক্তির আগমন হবে বলে কবি আশা করেছেন।
- “ভেঙে আবার গড়তে জানে সে চিরসুন্দর।” সে বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে ? ভেঙে আবার গড়ার বিষয়টি বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম এর ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতার উল্লিখিত অংশে ‘সে’ বলতে দেবাদিদেব মহাদেবের প্রতীকে দেশের তরুণ বিপ্লবীদের কথা বলা হয়েছে।
অসুন্দরের বিনাশ ঘটিয়ে মহাদেব সুন্দরের প্রতিষ্ঠা করেন।
দেশের তরুণ বিপ্লবীরাও একইভাবে ধ্বংসের প্রচণ্ডতা নিয়ে আবির্ভূত হয়।
সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজ সরকারকে আঘাত করাই তাদের লক্ষ্য।
তবে অনেকেই ‘বিপ্লব’তাকে সমাজ পরিবর্তনের জন্য ধ্বংসাত্মক বলে মনে করেন, কিন্তু কবির মতে সত্য-সুন্দরের প্রতিষ্ঠা হয় অসুন্দরকে ধ্বংস করেই নবরূপে সমাজ গড়ার মধ্য দিয়ে ।
- “ওই নূতনের কেতন ওড়ে কালবােশেখির ঝড়।” ‘নূতনের কেতন’ কী ?
উত্তরঃ বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম এর প্রলয়ােল্লাস কবিতাংশে উল্লিখিত ‘কেতন’-এর অর্থ হলাে পতাকা।
কবিতায় ‘নূতনের কেতন’ নতুন দিকের সূচনা করার ইঙ্গিত বহন করেছে।
ভারতে ইংরেজদের শাসন-শােষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য কবি নতুনের জয়গানে মুখরিত হয়ে উঠেছেন।
তারা কালবৈশাখী ঝড়ের মতাে, প্রলয়রূপী শিবের মতাে সর্বধ্বংসী প্রলয়ের আগমন বার্তা নিয়ে উপস্থিত।
- “আসছে নবীন—জীবনহারা অ-সুন্দরে করতে ছেদন!” উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য কী ।
উত্তরঃ কবি নজরুল ইসলাম ছিলেন সত্য, শিব ও সুন্দরের পূজারি। ভারতীয় বিপ্লবীদের বন্দিদশা তার কাছে ছিল খুবই অস্বস্তিকর।
তিনি বুঝতে পেরেছিলেন,দেশের অরাজকতার অবসান ঘটানাে সম্ভব নবীন বিপ্লবীদের দ্বারাই জরাজীর্ণ ও প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে ।
প্রলয়ের মধ্যে দিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে দেশের তরুণ বিপ্লবীরাই পারে ।
দেশের ভয়ংকর এবং দেশপ্রেমীরাই অসুন্দর অবস্থাকে একমাত্র নবীন পারে সুন্দর করে তুলতে। কবির এই স্বপ্নময় রূপটি উদ্ধৃত অংশটিতে ফুটে উঠেছে।
- “প্রলয় বয়েও আসছে হেসে”—উদ্ধৃতাংশটির কবি কে? প্রলয় বয়েও কারা, কেন হাসছে?
উত্তরঃ কাজী নজরুল ইসলাম হলেন প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় উদ্ধৃত অংশটির কবি ।
নজরুলের কাছে পরাধীনতা কবি ছিল অসহনীয়। তাই তিনি অরাজক পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে দেশের তরুণদেহ উৎসাহ দিয়েছেন ।
তিনি স্বপ্ন দেখতেন তরুণেরা সমস্ত অরাজকতার অবসান ঘটিয়ে দেশে নতুন সূর্যোদয় ঘটাবে।
এবার নবসৃষ্টি ঘটবে তারা জানে ।
আর কবি যেন মনের ভাবনায় “চমকিয়া উঠি—তবু জয় জয় তা সেই শুভ কীর্তির।”
- “এবার মহানিশার শেষে/আসবে ঊষা অরুণ হেসে”—মহানিশা’ কী ? মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে।
উত্তরঃ ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় ‘মহানিশা’ বলতে কবি কাজী নজরুল ইসলাম সামাজিক শােষণ ও পরাধীনতার জন্য বিশ্বব্যাপী যে অন্ধকারময় অবস্থা তাকে বুঝিয়েছেন।
আশাবাদী কবি মনে করেন যে অন্ধকার পরাধীনতা এবং সামাজিক শােষণ-বঞ্চনার মধ্য দিয়ে নেমে এসেছে তার অবসান ঘটে । মহাদেব ধ্বংসের দেবতা হলেও তার মাথায় থাকে শিশুচাদ। তাই ধ্বংসের মধ্যে দিয়ে যে সৃষ্টি সূচিত হবে তা সেই চাঁদের আলােয় বোঝা যায়।
long questions - of প্রলয়োল্লাস -PROLOYULLAS 5 marks
- প্রলয়ােল্লাস’ কবিতার মূলবক্তব্য সংক্ষেপে আলােচনা করাে। অথবা, ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় কবি প্রলয়ের মধ্যে দিয়ে যে উল্লাস অনুভব করেছেন তা উল্লেখ করাে। অথবা, ‘প্রলয়ােল্লাস’কবিতায় প্রলয় ও আশাবাদের সুর কীভাবে ব্যক্ত হয়েছে তা বুঝিয়ে লেখাে।
উত্তরঃ ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘প্রলয়ােল্লাস’কবিতাটি আসলে কবির জীবন উল্লাসের কবিতা।
‘তােরা সব জয়ধ্বনি কর’ এই আহ্বানসূচক পঙক্তিটি কবিতায় মােট উনিশ বার উচ্চারিত হয়েছে, যা বুঝিয়ে দেয় এই পঙক্তিটিকেই কবি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন।
কবি স্বাগত জানিয়েছেন স্বাধীনতা ও সাম্যের দ্বারা যার প্রতিষ্ঠা শােষণ-বঞ্চনা, পরাধীনতার নাগপাশ ছিন্ন করে জীবনের যে জাগরণ ঘটে তাকেই ।
যে বছর গ্রন্থাকারে প্রলয়ােল্লাস কবিতাটি প্রকাশ পায় ওই একই বছরে নজরুল ‘ধূমকেতু’ পত্রিকার একটি সংখ্যায় লেখেন, “পূর্ণ স্বাধীনতা পেতে হলে সকলের আগে আমাদের বিদ্রোহ করতে হবে।
সকল কিছু নিয়ম-কানুন, বাঁধন-শৃঙ্খল ও মানা-নিষেধের বিরুদ্ধে।
প্রলয়ােল্লাস কবিতায় দেখা যায়—
“সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে ধমক হেনে ভাঙল আগল।” অর্থাৎ কবি এই পঙক্তিটিতে স্পষ্টই বিদ্রোহের কথা বলেছেন। যে বিপ্লবী শক্তির আগমন প্রবল তেজ, বিপর্যয় নিয়ে ঘটে তা প্রাথমিকভাবে শঙ্কিত করতে পারে, কিন্তু সে-ই পাতে বিশ্বমায়ের আসন ।
কবি দেখেছেন—
“অন্ধকারার বন্ধ কূপে
দেবতা বাধা যজ্ঞ-শূপে”
—এই দেবতা এখানে স্বাধীনতার প্রতীক। এখান থেকে তার মুক্ত হয়ে আগমনের সময় হয়ে গিয়েছে।
কবি কাজী নজরুল ইসলামে ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় বলেছেন, ধ্বংস দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এই ধ্বংস আসলে প্রাণহীন অসুন্দরকে বিনাশ করতেই । এর পরেই প্রতিষ্ঠা ঘটবে চিরসুন্দরের। কবি তাকেই স্বাগত জানানাের জন্য সকলকে আহ্বান করেছেন ।
- “কাল ভয়ংকরের বেশে এবার ওই আসে সুন্দর”— কাকে কবি কাল ভয়ংকর বলেছেন? উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করাে।
উত্তরঃ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ‘অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত প্রলয়ােল্লাস শীর্ষক কবিতা থেকে প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটি গৃহীত হয়েছে।
কাল ভয়ংকর : কবি রুদ্ররূপী মহাকাল দেবাদিদেব শিবকে কবিতায় কাল ভয়ংকর’ বলে বুঝিয়েছেন। কবির আরও ইঙ্গিত এখানে রয়েছে যাতে বােঝা যায় কবি এক্ষেত্রে জন্মভূমির মৃত্যুভয়হীন বিপ্লবীদের বুঝিয়েছেন।
তাৎপর্য : কবি সমাজের দিকে তাকিয়ে দেখেছেন—ইংরেজদের হাতে দেশের মানুষ অত্যাচারিত, প্রতিবাদে সােচ্চার হয়ে কত স্বদেশি ওঠার জন্য অন্ধকূপ কারাগারে বন্দি। কবির বিদ্রোহী মন এসব দেখে প্রতিবাদী হয়ে দেশের মানুষকে উজ্জীবিত করতে চেয়েছে। তাই কবি প্রলয় নেশার নৃত্য পাগল মহাকালকে আহ্বান জানালেন । তার ভয়ংকর রূপে, অট্টরােলের হট্টগােলে, যে মহাপ্রলয় ঘটবে তা মহাকালের জন্যই সংঘটিত হবে। প্রলয় আহ্বান করে বিস্মিত না হয়ে কবি বলেছেন– “মাভৈঃ মাভৈঃ জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে জরায়-মরা মুমূর্মুদের প্রাণ-লুকানাে এই বিনাশে!” কবির মনে করেন ধ্বংসের পর আসে সৃষ্টির মহালগ্ন। তাই তাে কবির কণ্ঠে শােনা যায়—
“এবার মহানিশার শেষে।
আসবে ঊষা অরুণ হেসে।”
কবির মনে করেন, মানুষের আশা দীর্ঘ বৎসর পর পূরণ হবে। তাই কবি নিষেধ করেছেন ‘কাল-ভয়ংকরকে দেখে ভয় পেতে । কারণ তিনি জানেন এটা এক চিরসুন্দর যা নবরূপে দেখা দেবে। তাই আলােচ্য প্রলয়ােল্লাস কবিতায় তারই জয়ধোনি করে কবি সবাইকে নব আনন্দে মেতে উঠতে বলেছেন।
- প্রলয়ােল্লাস কবিতায় একদিকে ধ্বংসের চিত্র আঁকা হয়েছে আবার অন্যদিকে নতুন আশার বাণী ধ্বনিত হয়েছে—কবিতা অবলম্বনে বিষয়টি আলােচনা করাে। অথবা, “তােরা সব জয়ধ্বনি কর”—কাদের উদ্দেশে, কেন কবি জয়ধ্বনি করতে বলেছেন?
উত্তরঃ ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরাধীন ভারতবর্ষের শােষিত-বঞ্চিত,অত্যাচারিত মানুষদের উদ্দেশে এই আহ্বান জানিয়েছেন। কবি কাজী নজরুল ইসলাম দেশবাসীকে পরাধীনতায় আবদ্ধ দেশমাতার স্বাধীনতার জন্য আন্দোলনে শামিল করতে চেয়েছেন ।
তিনি অনুভব করেছেন ভারতবাসীকে ঔপনিবেশিক শােষণ-বঞ্চনা, অত্যাচার মেরুদণ্ডহীন করে তুলেছে।
“তােরা সব জয়ধ্বনি কর” প্রলয়ােল্লাস কবিতায় মােট উনিশ বার এই আত্মানসূচক পঙক্তিটি উচ্চারিত হয়েছে, যা বুঝিয়ে দেয় এই পুঙক্তিটিকে কবি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।
আসলে ‘প্রলয়ােল্লাস’ হলাে ধ্বংসের মধ্য দিয়ে সৃষ্টির বন্দনা। যে তরুণের দল তাদের সাহস আর অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে সামাজিক বৈষম্যে,পরাধীনতার অবসান ঘটাতে চায় কবি তাদেরই জয়ধ্বনি করতে বলেছেন।
এই যুবশক্তির মধ্যে রয়েছে আপাত ধ্বংসের উন্মাদনা। কবির কথায় তারা হলাে—“অনাগত প্রলয়-নেশার নৃত্য পাগল”, সমাজের যাবতীয় শক্তির প্রচণ্ডতা অসুন্দরকে দূর করতে নিজেরা ভয়ংকরের বেশ ধরে।
এর মধ্যে দিয়ে পৃথিবীতে নবপ্রাণের প্রতিষ্ঠা ঘটে
“…জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে/জরায় মরা মুমূর্যদের প্রাণ লুকানাে ওই বিনাশ!” তাই তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাতে হবে সমাজকে সুন্দর করে তুলতে ।
কারণ তারাই হবে ধ্বংসের মধ্যে দিয়ে সৃষ্টির কারিগর। এই কারণেই কবি নজরুল ইসলাম। “তােরা সব জয়ধ্বনি কর” পঙক্তিটি বার বার ব্যবহার করেছেন।